২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৮:৬:০০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠীর জন্য পৃথক দপ্তর দাবি
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩১-০৫-২০২৩
ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠীর জন্য পৃথক দপ্তর দাবি সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ


জাতীয় বাজেটে সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম ৫০০ কোটি টাকার পৃথক বাজেট বরাদ্দ ও পৃথক দপ্তর স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন আদিবাসী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, আদিবাসী মানুষগুলোর জীবন নানারকম অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সম্মুখিন।

মৈত্রী মিলনাতন পুরানা পল্টনে বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়নের উদ্যোগে জাতীয় বাজেট ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে আদিবাসীদের জন্য জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে এদাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে আদিবাসী নেত্রী রাখী ম্রংয়ের সভাপতিত্বে ধারণাপত্র পাঠ করেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক অবনী কান্ত হাজং। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে আদিবাসী ইউনিয়নের প্রধান উপদেষ্টা ডা. দিবালোক সিংহ, সাধারণ সম্পাদক শ্রীকান্ত মাহাতো, সিপিবির সহ সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ। 

এতে প্রধান উপদেষ্টা ডা. দিবালোক সিংহ বলেন, এ দেশে আদিবাসী মানুষগুলোর জীবন নানারকম অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সম্মুখিন। সমতলের ৮০% আদিবাসী দরিদ্র সীমার নীচে বসবাস করে। অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে ৬৫% আদিবাসী মানুষ দরিদ্র। বিশ্ব মহামারি করোনাকালীন সময়ে ৯২% আদিবাসী মানুষ দরিদ্র হয়ে পড়ে। যারা দরিদ্র ছিল না তারাও করোনার সময়ে নতুন করে দরিদ্র হয়ে পড়ে যা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি। মূলত বছরে বছরে বাজেটের আকার বাড়লেও তার  প্রতিফলন আদিবাসীদের জীবনে নেই বললেই চলে। কারণ জাতীয় বাজেট আদিবাসী বান্ধব হয় না। এ দেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামো মূল স্রোতের মানুষের চিন্তাধারা দ্বারা প্রভাবিত এবং নিয়ন্ত্রিত। বিগত বছরগুলোতে বাজেটে আদিবাসীদের জন্য পৃথক বাজেট উল্লেখ থাকলেও কয়েক বছর হয় তা বাদ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে সমতলের আদিবাসীদের জন্য  আলাদা কোন মন্ত্রণালয় বা অধিদদপ্তরও নেই।

অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বলেন, সামাজিক  নিরাপত্তা বেষ্টনী  কর্মসূচিগুলোর সুবিধা থেকেও আদিবাসীরা বঞ্চিত। বর্তমানে মানুষের মাথা পিছু গড় আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২,৮২৪ ডলারে। কিন্তু একজন গারো, হাজং, কোচ, বর্মণ, রাজবংশী, সাঁওতাল, মাহাতো, পাহান, মাহালি, মুণ্ডা, পাহাড়িয়া, মালো, বাগদী ও অন্যান্য যারা আছেন তাদের মাথা পিছু গড় আয়তো ২,৮২৪ ডলারে পৌছানোর আশা সুদুর পরাহত।

ধারণা পত্রে বলা হয় বাংলাদেশের আদিবাসীরা চরম বঞ্চনা ও বৈষম্যের স্বীকার, তারা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠি। জাতীয় বাজেটে আকার বড় হলেও আদিবাসীদের জন্য ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের বাজেট ছিল ৬৭,৮,০৬৪ কোটি টাকা। তার মধ্যে সমতলের আদিবাসীদের জন্য থোক বরাদ্দ ছিল ১শ’ কোটি টাকা। যা ৩০ লক্ষ আদিবাসী মানুষের জন্য গড় হিসাব করলে দাঁড়ায় মাত্র ৩৩৩ টাকা। এই পরিমাণ টাকা দিয়ে কি আদিবাসীদের উন্নয়ন সম্ভব? সমতলের  আদিবাসীদের জন্য এই বরাদ্দ তাদের প্রয়োজনের তুলনায় নগন্য এবং এই বরাদ্দ বন্টন এবং ব্যবস্থপনা প্রক্রিয়ার নানা জটিলতার কারণে আদিবাসী জীবনমান উন্নয়নে বরাদ্দকৃত এই বাজেট আদিবাসীদের জীর্ণকুটিরে পৌঁছায় না। জাতীয় বাজেটে সমতলের আদিবাসীদের জন্য ন্যূনতম ৫০০ কোটি টাকার পৃথক বাজেট বরাদ্দ ও পৃথক দপ্তর স্থাপনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ আদিবাসী ইউনিয়ন।

সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ সুপারিশ ও দাবিসমূহ তুলে ধরে বলেন, ১০০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি ভিজিডি, ভিজিএফ, কাবিখাতে দরিদ্র আদিবাসীদের অন্তর্ভুক্তিসহ তাদের জন্য স্থায়ী রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে। জাতীয় বাজেটে বাঙালী, পাহাড়ী ও সমতলের আদিবাসীদের বাজেট বৈষম্য নিরসন করতে হবে। ভূমিহীন আদিবাসীদের খাসজমি বন্দোবস্ত দেয়াসহ গৃহহীনদের জন্য ঘর বরাদ্দের বাজেট নিশ্চিত করতে হবে এবং বরাদ্দ বাড়াতে হবে। আদিবাসী তরুণদের জীবিকায়ন ও কর্মসংস্থানে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ ও দক্ষতাবৃদ্ধি প্রশিক্ষণের জন্য বিশেষ বাজেট বরাদ্দ রাখতে হবে।

শেয়ার করুন