২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৪:০৯:৪৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


দেশ’কে দেবব্রত পাল
শ্রীলঙ্কা সিরিজে মূল দায়িত্ব ব্যাটসম্যানকেই নিতে হবে
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-০৪-২০২২
শ্রীলঙ্কা সিরিজে মূল দায়িত্ব ব্যাটসম্যানকেই নিতে হবে সাকিব আল হাসানের ব্যাটিংয়ের একটি মুহুর্ত ,ছবি/সংগৃহীত


দরজায় কড়া নাড়ছে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশ টেস্ট সিরিজ। অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে এ সিরিজের গুরুত্ব ক্ষানিকটা বেশি। হোক না আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের পার্ট। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যেকার ম্যাচগুলো এখন বিভিন্ন কারণে আলাদা গুরুত্ব বহন করে। কারণটা অনেকেরই জানা! বাংলাদেশ দল এখন আর শ্রীলঙ্কাকে মোটেও ফেবারিট মানতে নারাজ। এরপর হোমে যখন সিরিজ। তখন আবদারটা বাংলাদেশেরই বেশি। ফলে এটা কিসের পার্ট বা কিসের পার্ট না, ওগুলোর চেয়েও দু’দেশের প্রেস্টিজ ইস্যুটাও এখানে বেশ কাজ করে। 

আসন্ন দুই টেস্টের এ সিরিজের প্রথম ম্যাচ আগামী ১৫ মে থেকে শুরু হবে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম,চট্টগ্রামে ও দ্বিতীয়টি ২৩ মে থেকে মিরপুর শেরেবাংলায়। এ ব্যাপারে দেশ পত্রিকার এ প্রতিনিধি মুখোমুখী হয়েছিল, সাবেক ক্রিকেটার, ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশন (কোয়াব)’র সাধারণ সম্পাদক, ম্যাচ রেফারী, ক্রিকেট গবেষক দেবব্রত পালের সঙ্গে। 

দেবব্রত পাল/ফাইল ছবি 

শ্রীলংকা সিরিজ নিয়ে তিনি বলেন,‘আসন্ন সিরিজটা দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপুর্ন। আমি বলবো দুটি দেশই তাদের সর্বশেষ সিরিজে হেরে এসেছে। ভারতে শ্রীলঙ্কা খুব ভাল করতে পারেনি। ভাল ব্যাবধানে হেরে এসেছে। বাংলাদেশের অবস্থাও সবার জানা, দক্ষিণ আফ্রিকায় কী হয়েছিল। ফলে দুটি দলই এ সিরিজে তারা নিজস্ব মার্কে ফিরতে চাইবে। তাছাড়া বাংলাদেশর কন্ডিশন,আবহাওয়া সবই শ্রীলঙ্কার মতই। দুটি মাঠ সম্পর্কেও শ্রীলঙ্কানদের অজানা কিছু নেই। ফলে দুই দলের মধ্যে এ সিরিজটা বেশ উত্তেজনা ছড়াবে।’

তবু অ্যাডভান্টেজ বলে একটা কথা আছে। সেটা কার দিকেই বেশি মনে হয়। তিনি বলেন,‘আমি এ ক্ষেত্রে অ্যাডভান্টেজ দেবো বাংলাদেশকে। নিজের মাঠে খেলছে, এটা সবার জন্যই হয়, হোম ম্যাচের অ্যাডভান্টেজ বেশিই হয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে এটা টেস্ট ম্যাচ। এটাতে সাফল্য পেতে হার্ডওয়ার্কিং লাগবে। সেটা করতেই হবে। নতুবা বললাম হারাবো। ক্যাজুয়াল খেলে জিতে যাব, এটা ভাববার সুযোগ নেই।’

দেবব্রত পাল বলেন,‘দলে সাকিবের ফেরাটা টনিক এর মত কাজ করছে। দলের সবাই উচ্ছ্বাসা প্রকাশ করছে। সাকিব মানে ১২ জনের দল হয়ে যাওয়া। সাকিব অন্তত দুইজনের দায়িত্বটা পালন করতে সক্ষম। এটা চমৎকার অ্যাডভান্টেজ। পাশাপাশি একটা দুঃসংবাদও তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। মেহেদি হাসান মিরাজকে প্রথম টেস্টে না পাওয়া। দ্বিতীয় টেস্টেও তাকে না পাওয়ার একটা শঙ্কা রয়েছে।’ 

তিনি বলেন,‘মিরাজ এ মুহূর্তে ভাল খেলছে। দক্ষিণ আফ্রিকায়ও ভাল করেছেন। ওকেও দরকার ছিল। তবু সাকিব -তাইজুল মিলে ওর শুন্যস্থানটা পুরণ হয়ে যেতে পারে। তবে শ্রীলঙ্কানরা বাংলাদেশের স্পিনটা বেশ ভাল খেলবে। ওরা এমন কন্ডিশনে স্পিন খেলে অভ্যস্ত। পেসও মন্দ নয়। আমাদের তাসকিন নেই। এটা মিস করছি। তবে এটাও ঠিক, সাকিব ছাড়াও বাংলাদেশ কিন্তু জিতেছে।

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে। তবু সাকিব মানেই দলের মধ্যে অন্য একটা প্রেরণা।’ বাংলাদেশের বোলিং প্রসঙ্গে দেবব্রত বলেন,‘একটা বিষয় লক্ষণীয়, শ্রীলঙ্কার কুড়ি উইকেট নেয়ার মত বোলিং স্কোয়াড বাংলাদেশের রয়েছে। এটা মানতেই হবে। বোলাররা সেটা পারবেও। তবে মূলদায়িত্বটা কিন্তু ব্যাটসম্যানদেরই নিতে হবে। ব্যাটসম্যানরা দলীয় স্কোর একটা পর্যায়ে নিয়ে গেলে, ম্যাচ জেতানোর কাজটা বোলাররা করে দিতে পারবে। ম্যাচ জেতানোর কাজটা বোলারদের উপর নির্ভর করলেও মূলদায়িত্বটা কিন্তু ব্যাটসম্যানদেরই নিতে হবে।’ 

দু’দলে ক্রিকেটারদের অভিজ্ঞতার বিশ্লেষণ করে সাবেকএ ক্রিকেটার বলেন,‘বংলাদেশ দল এ ক্ষেত্রে এগিয়ে। তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম প্রমুখ ক্রিকেটারদের অনেক অভিজ্ঞতা। শ্রীলঙ্কায় এমনটা কম। ফলে সেটার আলোকে বাংলাদেশ বেশ এগিয়েই আমি বলবো।’

বাংলাদেশ দল দক্ষিন আফ্রিকায় তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে জয়ের উৎসব করলেও টেস্ট সিরিজে অনেকটা দুর্বল দক্ষিণ আফ্রিকাকে পেয়েও ব্যাটিং ব্যার্থতার জন্য জিততে পারেনি। অথচ দুটি টেস্টেই প্রচন্ড লড়াইয়ের সুযোগ ছিল। কিন্তু ব্যাট হাতে চরম ব্যার্থতার পরিচয় দিয়েছে। বিশেষ করে প্রোটিয়া স্পিনের সামনে একেবারেই নাজেহাল হয়েছে দল। মহারাজ ও হার্মারে বিধ্বস্ত। খেলতেই পারেনি। স্পিনে বাংলাদেশ এতটা ভীতি সেটা কল্পনাও করেনি এর আগে কেউ। এবারও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সে ভীতি কাজ করবে কি-না বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। ফলে চট্টগ্রামের টেস্ট ম্যাচটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

চট্টগ্রামের উইকেট প্রসঙ্গে বলতে যেয়ে তিনি বলেন,‘ওখানকার উইকেট বেশ ভাল। একটা পারফেক্ট টেস্ট ম্যাচ হওয়ার মতই উইকেট হয়। ওখানে লড়াই হবে। হার্ডওয়ার্ক করতে হবে। হ্যাঁ, আফগানিস্তানের সঙ্গে টেস্ট ম্যাচের কথা মনে আছে। বাংলাদেশ হেরে গিয়েছিল। তবে ভাল কিছু স্মৃতিও আছে ওখানে। তবে টেস্ট ম্যাচ ১৫ সেসনের। প্রতিটা সেসনেই রয়েছে অনেক হিসেব নিকেষ। সেটা নিশ্চয়ই দু’দল মাথায় রেখেই খেলবে।’ 

তিনি বলেন,‘আমি মনে করি দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের রেজাল্ট হবেই। পাঁচ দিনের টেস্ট। বাংলাদেশের কন্ডিশনে রেজাল্ট না হওয়ার কারণ নেই। উইকেট অমনই। ফলে বাংলাদেশকে আরো সতর্কতার সঙ্গেই খেলতে হবে। জিতবোই,এভাবে ওভার কনফিডেন্স না নিয়ে হার্ডওয়ার্কে মনোনিবেশ জরুরি। এটাই টেস্টে জয়ের সহজ হিসেব।’ 


শেয়ার করুন