৩০ এপ্রিল ২০১২, মঙ্গলবার, ১১:১৭:২৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের প্রতিভা বিকাশে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না’ সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬


সনদ আছে, সনদ নেই বিতর্ক
দুই ভাগ হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ল’ সোসাইটি
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-১২-২০২৩
দুই ভাগ হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ল’ সোসাইটি


আজ থেকে প্রায় ২০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ ল’ সোসাইটি। বাংলাদেশ থেকে যে সব আইনজীবী বা ল’ পাস করে এসেছেন এবং আমেরিকায় আইন পেশায় জড়িত রয়েছেন তাদের নিয়ে বাংলাদেশ ল’ সোসাইটি গঠন করা হয় ২০০৩ সালে। সেই সময় সদস্য সংখ্যা ছিল ২৫ থেকে ৩০ জনের মত। সেই সময় একটি গঠনতন্ত্রও তৈরি করা হয়। সদস্য সংখ্যা কম হওয়ার কারণে সনদ এবং নন সনদ নিয়ে বিতর্ক ছিল না। সবাইকে কমিটিতে রাখা হয়। যদিও অন্য একজন বলেছেন, প্রথম গঠনন্ত্রেও বিষয়টি ছিল। কিন্তু যখন নন-সনদিরা দায়িত্বে আসে তারা গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে নানা সময়ে নানা সমস্যার সৃষ্টি হলেও কখনো চূড়ান্ত ভাঙনের সৃষ্টি হয়নি। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং নানা কারণে অনেক আইনজীবী আমেরিকায় আসেন। তারা প্রায় সবাই বাংলাদেশ ল’ সোসাইটির সদস্য হন। এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা এখন প্রায় ১৭৮ জনের মতো। সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি এবং সনদিদের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে সংগঠনে নতুন করে সমস্যার তৈরি হয়। এবার সনদি এবং নন-সনদি ইস্যুকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ ল’ সোসাইটির আনুষ্ঠানিকভাবে বিভক্তির পথে। জানা গেছে, বাংলাদেশ ল’ সোসাইটির বর্তমান কার্যকরি কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন এবং সাধারণ সম্পদকের দায়িত্বে রয়েছেন জুনাল সাইদ। অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন এবং জুনাল সাইদের নেতৃত্বাধীন কমিটি সাধারণ সভার আহবান করে গত ১৮ নভেম্বর। সেই সাধারণ সভায় পাশ করা হয় যাদের সনদ রয়েছে তারা ছাড়া অন্য কেউ ৫টি গুরুত্বপূর্ণ পতে নির্বাচন করতে পারবে না। এই ৫টি পদ হচ্ছে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ভাইস প্রেসিডেন্ট, সহকারি সাধারণ সম্পাদক এবং কোষাধ্যক্ষ। যদিও বাংলাদেশ ল’ সোসাইটির কার্যকরি কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৫। সাধারণ সভায় সাবেক কয়েকন সভাপতি, সাবেক কয়েকজন সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমানে উপদেষ্টাদের কয়েকজন মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন। তাদের মধ্যে বর্তমান উপদেষ্টা মোর্শেদা জামান, মোহাম্মদ আলী বাবুলসহ আরো কয়েকজন এর বিরোধিতা করেন। তারা বলেন, যারা সারা বছর চাঁদা দেবে, সংগঠনের কাজ করবে তারা নির্বাচন করতে পারবে না-এটা যুক্তিসংগত নয়। তারপরও সাধারণ সভায় একটি অংশ এই বিতর্কিত আইন পাশে শক্ত অবস্থান নেন। তারা এই আইনটি পাস করে নেন। এর প্রতিবাদে সাধারণ সভা থেকে ১০/১২ জনের মতো সদস্য ওয়ার্ক আউট করেন। তারা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, সাধারণ সভায় কোনো আইন পাস করতে হলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দুই-তৃতীংশ সদস্যের অনুমোদন লাগে। কিন্তু তারা সেই দিকেও তোয়াক্কা করেনি। সাধারণ সভায় উপস্থিতির সংখ্যা ছিল ৪০ জনের মতো। তারা জানান, ওই সাধারণ সভায় নির্বাচন কমিশনও গঠন করা হয়। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন কার্যকরি কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন এবং তাদের সুবিধাভুক্ত পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রচার করেন।

এই অচলাবস্থা নিরসনে এবং বিতর্কিত আইন বাতিলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আব্দুল কাইয়ুমের বরাবরে চিঠি দেন সাবেক সভাপতি এবং বর্তমান উপদেষ্টা মোহাম্মদ আলী বাবুল। কিন্তু প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাদের চিঠির কোনো উত্তরই দেননি। অন্যদিকে কুইন্স ডেমোক্রেটিক লিডার অ্যাট লার্জ অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী সমঝোতার উদ্যোগ নিলেও বর্তমান কমিটির অসহযোগিতার কারণে সেই সমঝোতার উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। যাদের সনদ রয়েছে তাদের দাম্ভিকতার কারণেই সমঝোতা হচ্ছে না, বাংলাদেশ ল’ সোসাইটির একতরফা নির্বাচন করতে যাচ্ছে। যারা এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছেন, দীর্ঘদিন থেকে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্য দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের তোয়াক্কাই করছেন। ভাবখানা এমন মুই কী হনুরে। একজন তো বলেই ফেললেন, তারা আসলে আসবে, না এলে আমাদের কিছু করার নেই। মনে হচ্ছে, তাদের প্রতি যেন করুণা করা হচ্ছে। কয়েক বছরের মধ্যে এসেই তারা এত্ত বড় নেতা হয়ে গেলেন? যারা ২০ বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে দায়িত্ব পালন করেছেন, অর্থ এবং শ্রম দিয়েছেন তারা যেন সনদিদের কাছে অপাঙক্তেয়। সনদিরা যেন পুরোনো কর্মকর্তাদের হাতির পাঁচ পা দেখাচ্ছেন। ভুলে গেলেন ওই সনদহীনরা তাদের এই সংগঠনের সদস্য বানিয়েছেন। তাদের কারণেই প্রাচীন এই সংগঠনটি বিভক্ত হয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ ল’ সোসাইটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৩ ডিসেম্বর। এই নির্বাচনে সনদিরা তাদের কার্যকরি কমিটি গঠন করবেন। অন্যদিকে সনদহীনরা নতুন সংগঠন গঠনের লক্ষ্যে আগামী ১৮ ডিসেম্বর জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্টুরেন্টে মিলিত হচ্ছেন। জানা গেছে, সেখানেই আরেকটি সংগঠন প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেওয়া হবে এবং নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।

শেয়ার করুন