২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৪:১৩:৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


‘মহকুমা সংগ্রাম পরিষদ‘র প্রয়াত চার সংগঠককে স্মরণ
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-১২-২০২৩
‘মহকুমা সংগ্রাম পরিষদ‘র প্রয়াত চার সংগঠককে স্মরণ অনুষ্ঠানে আয়োজকদের কয়েকজন


গাইবান্ধা সোসাইটি অব আমেরিকা আয়োজিত স্মরণ অনুষ্ঠান থেকে বাংলাদেশের গণপরিষদের প্রথম স্পিকার শাহ্ আব্দুল হামিদের নামে জাতীয় সংসদে একটি কক্ষের নাম এবং মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য গাইবান্ধার ৬ জন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ ও আন্তর্জাতিকভাবে গণহত্যার স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

গত ২৩ মার্চ সন্ধ্যায় নিউইর্কর জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলে সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক লুৎফর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়ালিউর রহমান রেজা, সদস্য শাহ্ আব্দুল হামিদ ও সদস্য ডা. মফিজার রহমানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন নিউইয়র্কর সর্বস্তরের মানুষ।

রসকোর্স ময়দানে ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে প্রতিটি এলাকায় সংগ্রাম কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। তার সেই নিদের্শেই গাইবান্ধা মহকুমায় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে ‘যারা এঁকেছে এই মানচিত্র’ শিরোনামে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সঙ্গীতশিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নিউইয়র্ক বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নাজমূল হুদা। অতিথি হিসেবে মঞ্চে ছিলেন প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদউল্লাহ, সাংবাদিক মুহম্মদ ফজলুর রহমান, বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়্যার ভেটেরান্স ১৯৭১ ইউএসএ‘র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ, উদীচী যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত বিশ্বাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা খুরশীদ আনোয়ার বাবলু ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আকবর রিচি।

এছাড়াও বক্তব্য দেন ওপেন আইজ নিউইয়র্ক‘র অন্যতম সংগঠক মুজাহিদ আনসারী, যুক্তরাষ্ট্র একুশে চেতনা পরিষদের সভাপতি ড. উবায়দুল্লাহ মামুন, প্রয়াত ডা. মফিজার রহমানের পুত্র এম মাসুদুর রহমান, প্রয়াত ওয়ালিউর রহমান রেজার ভাগিনা ইসাম হায়াত সংংকেত, প্রোগ্রেসিভ ফোরামের নেতা জাকির হোসেন বাচ্চু প্রমুখ।

মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে অনুষ্ঠানের উদ্বোধনে করতে গিয়ে রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, যদি সেই সময় সংগ্রাম পরিষদের নেতারা বাঙালিদের সংগঠিত না করতেন, দিকনিদের্শনা না দিতেন তা হলে হয়ত মুক্তিযুদ্ধ আরও দেরি হতো।

আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সনজীবন কুমার। স্বাগত বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক রেজা রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মাহফুজুল ইসলাম তুহিন ও মুক্তি সরকার। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন দীলিপ মোদক। অনুষ্ঠানে চার সংগঠকের জীবনী পাঠ করেন নাজমা বেগম, প্রতীমা সরকার, ফাহমিদা চৌধুরী লুনা ও প্রশান্ত সরকার।

প্রধান অতিথির ভাষণে কনস্যাল জেনারেল নাজমুল হুদা মুক্তিযুদ্ধে চার সংগঠকের ঐতিহাসিক ভূমিকার কথা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের গৌরবময় ইতিহাসের কথা আমাদের বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে। তিনি উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে বলেন, আপনারা মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা,আদর্শ-উদ্দেশ্য বিভিন্ন পর্যায়ে তুলে ধরুন,যাতে করে সঠিক ইতিহাস প্রতিষ্ঠিত হয়।

‘যারা এঁকেছে এই মানচিত্র, অনুষ্ঠানকে ‘পিপলস্ হিস্ট্রি’র অনন্য উদাহরণ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়, সেই বিভ্রান্তির বিপক্ষে আজকের মত অনুষ্ঠান ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে।

সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, উগ্র সাম্প্রদায়িকতার মূলোৎপাটন করাই এখনকার চ্যালেঞ্জ। সব গণতান্ত্রিক, দেশপ্রেমিক ও অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে এক হয়ে উগ্র সাম্প্রদায়িক অপশক্তির মূলোৎপাটন করতে হবে।

গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ বলেন, জাতীয় মুক্তি-সংগ্রামে এই সংগঠকরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। এনাদের মত সংগঠকদের নেতৃত্বে মানুষ মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন । 

সুব্রত বিশ্বাস বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে ৭২ সালের চার মূলনীতি পুন:প্রতিষ্ঠিত করলেই মুক্তিযোদ্ধারা যে স্বপ্ন ও আশা নিয়ে যুদ্ধ করেছিল তার বাস্তবায়ন হবে। 

অন্যান্য বক্তারা বলেন, এই সংগঠনটি যে উদ্যোগ নিয়েছে তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং এই আয়োজন এখানকার বাংলাদেশিদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। তারা বলেন, নিউইয়র্কের প্রতিটি আঞ্চলিক সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের উচিত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাস তুলে ধরা।

অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় কথা বলেন ওয়ালিউর রহমান রেজার কন্য ওয়াফি রহমান অনন্যা। অনুষ্ঠানে পরিবারের সদস্যদের কাছে চার সংগঠকের প্রতিকৃতি হস্তান্তর করেন কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা। সবশেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন শিল্পী শাহ ও মাহবুব,সাংস্কৃতিক সম্পাদক মুক্তি সরকার, চামেলী গোমেজ, সোন্দর্য রায়।

শেয়ার করুন