২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০১:৬:০৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :


দেশকে ফজলুল হক মিলন
এ সরকারের অধীনে নির্বাচনেই যাবো না
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-০৭-২০২২
এ সরকারের অধীনে নির্বাচনেই যাবো না ফজলুল হক মিলন /ফাইল ছবি


গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি এ কে এম ফজলুল হক মিলন বলেছেন,এ সরকারের অধীনে নির্বাচনেই যাবো না, এটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। তাছাড়া সরকারতো এখন নাজুক অবস্থায় রয়েছে।

আমেরিকা থেকে প্রকাশিত জনপ্রিয় দেশ পত্রিকার সাথে এক সাক্ষাৎকারে ফজলুল হক মিলন একথা বলেন। এ কেএমফজলুল হক মিলন একজন দক্ষ সংগঠক তিনি ৯০ দশকে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনের অগ্রভাগের সৈনিকদের অন্যতম। তিনি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও পরে সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। তিনি ২০০১ সালে গাজীপুর-৩ বতর্মানে ৫ আসন (কালীগঞ্জ) থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রার্থী হিসেবে সংসদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। নিচে সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো।


দেশ: আপনাদের দল ঘোষণা করেছে যে তারা এ সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। এটার ওপর আপনার দলের শীর্ষ পর্যায়ে কতটা আস্থা আছে? এটা কি কথার কথা বলেছেন?

ফজলুল হক মিলন: এটা বিএনপির নীতিনিধারক পর্যায়ের সিদ্ধান্ত। কাজেই এব্যাপারে কারো কোনো সন্দেহ থাকার অবকাশ নেই। এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনেই বিএনপি অংশ নেবে না। এটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। এদের অধীনে নির্বাচনে গেলে কেউ ভোটাধিকার পাবে না। তাই শুধু শুধুতো এদের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। 


দেশ: সম্প্রতি কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে হয়ে গেলো নির্বাচন। এরপর কি ইভিএমের ব্যাপারে আপনাদের কোনো সন্দেহ থাকতে পারে? তাহলে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবেন না?

ফজলুল হক মিলন: ইভিএম নিয়ে সন্দেহতো কেবল আমাদের না। পুরো বিশ^বাসীর। উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও ইভিএমের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। তাই এটা নতুন না। এর মাধ্যমে যে ভোট জালিয়াতি সম্ভব তা নতুনভাবে প্রমাণিত হয়েছে, আমাদের দেশে। তবে এর মাধ্যমে যে জালিয়াতি সম্ভব তা কিন্তু নতুন না। কুমিল্লার নির্বাচনে হলো নতুন সংযোজন। তাই ইভিএমের মাধ্যমে ভোট হবে না এদেশে। 


দেশ: তাহলে কি ধরে নেবো ইভিএমে না হয়ে যদি আগে যেভাবে যে পদ্ধতিতে নির্বাচনের আয়োজন করা হতো তা করা গেলে তাতে আপনারা অংশ নেবেন?

ফজলুল হক মিলন: নো নো প্রশ্নই আসে না। ভোট ইভিএমে যেমন হবে না, তেমনি এসরকারের অধীনেও বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না। ইভিএম ছাড়া এবং এসরকারমুক্ত নির্বাচনেই বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে। এসরকার মুক্ত দেশ প্রতিষ্ঠা করা গেলেই জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। সে নির্বাচনই সুষ্ঠু হবে,জনগণ নির্বিঘ্ন ভোট দিয়ে তাদের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। 


দেশ: আপনারা যেভাবে মাঠ কাঁপানো বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন, তেমন অবস্থা কি দেশে তৈরি করতে পেরেছেন? আপনারাই কি আন্দোলনে জনগণের আস্থা অর্জন করতে পেরেছেন? মাঠে কি তার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে?

ফজলুল হক মিলন: সরকারের কথায়তো তেমন লক্ষণ দেখা যাবে না। আসলে জনগণ প্রস্তুত,আমরাও প্রস্তুত। তাই এক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। তারা পারবেও না তাদের করতে দেয়াও হবে না। 


দেশ:কিন্তু মাঠেতো বিএনপির তেমন জোরালো কর্মসূচি দেখছে না জনগণ। আপনারা শুধু বক্তৃতা বিবৃতিতে সরকার হটিয়ে দেবেন হুঙ্কার মারছেন, জনগণের এমন আভিযোগের ব্যাপারে কিছু বলুন...


ফজলুল হক মিলন: কে বলেছেন এমন কথা? মাঠে ব্যাপক তৎপরতা চলছে। আমরা আজ দু’মাস যাবত ত্রাণ তৎপরতায় ব্যস্ত। বিএনপি একটি জনগণ সম্পৃক্ত দল। আপনিই বলুন, বন্যায় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো কি একধরনের আন্দোলন সংগ্রাম না? আমরা তো মানুষের জন্য রাজনীতি আন্দোলন করি? জনগণকে সুখ দেয়াই বিএনপির কাজ। জনগণ সুখেই তো আমাদের সুখ। এখন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্দেশ দিয়েছেন সব সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকবে। আর্তমানবতার সেবায় তিনি ঝাঁপিয়ে পড়তে নির্দেশ দিয়েছেন। তাই আমরা বন্যাত জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছি। এটাই তো আন্দোলনের অংশ। জনগণের দুঃখ-দুর্দশার পাশে দাঁড়ানো কি আন্দোলন না? মানুষের কল্যাণের জন্যই তো আন্দোলন। হরতাল অবরোধ যা-ই করি একটা টার্গেট নিয়েই করা হয়ে থাকে,তাই নয় কি? জনগণ যেখানে বন্যায় কষ্ট পাচ্ছে সেখানে তাদের পাশে দাঁড়ানোই বিএনপি আন্দোলন মনে করে। 


দেশ: আপনারা ত্রাণ দিতে বাধা পাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন। এমন বাধা সরকার দিচ্ছে কেনো ? এব্যাপারে আপনার অভিমত কি?

ফজলুল হক মিলন: আমি নিজেই ত্রাণ দিতে প্রচণ্ড বাধা পেয়েছি। এর কারণ তো আছেই। আসলে আপনারা সাংবাদিকরা তো বেশি লম্বা করে লিখবেন না। তা-ও বলি। কোনো লোক যখন কোনো কাজ করতে ব্যর্থ হন তখন ওই কাজটা অন্য লোক করুক-এই ক্রেডিটটা কেউ দিতে  চায় না। সরকার তো এখন নাজুক অবস্থায় রয়েছে। তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। তারা ত্রাণ কাজে নেই। লুটপাটে ব্যস্ত। জনগণের টাকায় লুট করে তা টাকা ভাগবাটোয়ারায় আছে। মেগা প্রকল্পের নামে আছে মেগা লুটপাট। অতএব তাদের নেতাকর্র্মীরাও এখন তাদের কথা শুনছে না। কিন্তু এর বিপরীতে বিএনপি ত্রাণ কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছ্ েযে কাজটা সরকার করতে না। করতে পারছেও না। কারণ তারাতো লুটপাটে ব্যস্ত। আর একাজ আমরা করছি, এটাও তাদের সহ্য হচ্ছে না। তাদের এমন ব্যর্থতার গ্লানি থেকে বাঁচার জন্যই এমন আক্রমণাত্মক ভূমিকায় নেমেছে। এর কারণ এরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার না। ভোটারবিহীন সরকার বলে জনগণের প্রতি তাই তাদের দায়বদ্ধতাও নেই। তাদের মধ্যে কোনো দায়বদ্ধতা নেই। মানবতা নেই। এটা একটা অমানবিক সরকার। 


দেশ:  এরশাদবিরোধী আন্দোলন জনগণ দেখেছে। সেসময় জনগণ এতে যেভাবে সম্পৃক্ত হয়েছিল সেভাবে তো আপনাদের আন্দোলনে জনগণকে সম্পৃক্ত হতে দেখা যাচ্ছে না-এর কারণ কি?

ফজলুল হক মিলন: মানুষ ব্যাপকভাবে ফুঁসে উঠেছে। এরশাদবিরোধী আন্দোলন জনগণ দেখেছেন। এধরনের আন্দোলনে একেক সময় একেকটা মুহূর্ত থাকে। তাই বলবো জনগণ এখন প্রস্তুত। জনগণের হৃদয়ের আগুন এখন প্রস্তুত। বিপ্লবের আগুন যে কোনো সময়ে জ¦লে উঠবে। এবং জনগণ এসরকারকে বিদায় করবে।


শেয়ার করুন