ইউএস বর্ডার পেট্রোল
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস)-এর আঞ্চলিক নেতৃত্বে বড় ধরনের রদবদলের পরিকল্পনা নিয়েছে। এক ডজনেরও বেশি আইস ফিল্ড অফিস পরিচালককে সরিয়ে তাদের স্থলে বর্ডার প্যাট্রোল কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রশাসনের অভ্যন্তরে অভিযোগ উঠেছে, আইস প্রত্যাশিত হারে দৈনিক গ্রেফতার অভিযান চালাতে ব্যর্থ হচ্ছে। প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা স্টিফেন মিলার দৈনিক ৩ হাজার জন অভিবাসী গ্রেফতারের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলেন, কিন্তু সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেই সংখ্যা গড়ে মাত্র ১ হাজার ১৭৮ জনে সীমিত ছিল।
ডিএইচএস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা সীমান্ত টহল বাহিনীর আরো আক্রমণাত্মক কৌশল গ্রহণের পরিকল্পনা করছেন। এর মধ্যে রয়েছে ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার থেকে ভবনে র্যাপেল করে নামা, ভাড়া করা ট্রাক থেকে আকস্মিক অভিযান চালানো এবং বড় ধরনের সমন্বিত রেইড। প্রেসিডেন্টের বিশেষ উপদেষ্টা কোরি লেওয়ানডস্কি এবং বর্ডার প্যাট্রোল প্রধান গ্রেগ বোভিনো এই বদলির তালিকা প্রস্তুত করেছেন। প্রায় অর্ধেক ফিল্ড অফিস পরিচালকের স্থলাভিষিক্ত হবেন বর্ডার প্যাট্রোল কর্মকর্তারা। আইসিইয়ের মোট ২৫টি ফিল্ড অফিসের মধ্যে এই পরিবর্তন প্রায় অর্ধেককে প্রভাবিত করবে।
সীমান্ত টহল ইতিমধ্যেই বড় শহরগুলোতে দেড় হাজারের বেশি এজেন্ট মোতায়েন করেছে, যেখানে আইসিইয়ের এফআরও কর্মকর্তার সংখ্যা ৮ হাজার ৫০০। বর্ডার প্যাট্রোলের অভিযানগুলো কিছু শহরে প্রায় সামরিক কৌশলের মতো হয়ে গেছে, যা জনসাধারণ ও মানবাধিকার গোষ্ঠীর কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে। শিকাগোতে বর্ডার প্যাট্রোলের অভিযানের কারণে মামলাও চলছে, যেখানে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ এবং অপ্রত্যাশিত টিয়ার গ্যাস ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। বর্ডার প্যাট্রোল প্রধান বোভিনো এই মামলার সাক্ষ্য দিতে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে উপস্থিত হবেন।
আইসিই সাধারণত লক্ষ্যভিত্তিক গ্রেফতারে মনোযোগ দেয়, যেখানে বিশেষভাবে অপরাধমূলক অভিবাসীদের চিহ্নিত করা হয়, আর সীমান্ত টহল বড় স্কেলের অভিযানে মনোযোগ দেয়, যা দ্রুততার সঙ্গে সংখ্যা বাড়ানোর দিকে লক্ষ্য রাখে। আইসিইয়ের কাছে এমন কিছু সামরিক ও প্রযুক্তিগত সুবিধা নেই যা বর্ডার প্যাট্রোলের রয়েছে, যেমন হেলিকপ্টার ও বিশেষ রেইড ইউনিট। আইসিইয়ের কিছু কর্মকর্তা সীমান্ত টহলের অভিযানের কৌশল নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন, তবে প্রশাসন মনে করছে, সীমান্ত টহল যা করছে তা যথাযথ এবং আইসিই যথেষ্ট ফলাফল দেখাতে পারছে না।
হোয়াইট হাউস মুখপাত্র অ্যাবিগেইল জ্যাকসন এক বিবৃতিতে বলেছেন, প্রেসিডেন্টের নীতিমালা বাস্তবায়নে পুরো প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করছে। সীমান্ত সুরক্ষা ও অপরাধী অবৈধ অভিবাসীদের বহিষ্কারে অর্জিত সাফল্য নিজেরাই কথা বলে। বিশ্লেষকরা বলছেন, আইসিইয়ের পরিবর্তে বর্ডার প্যাট্রোলকে এগিয়ে দিলে অভিবাসন নীতি আরো কঠোর ও সামরিক কৌশলনির্ভর হতে পারে, যা শহুরে এলাকায় নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক বিতর্ককে আরও জোরদার করবে।