১৮ জুন ২০১২, মঙ্গলবার, ০৭:৫৪:৫৯ অপরাহ্ন


বেনজীর আজিজ ইস্যু কী প্রভাব ফেলবে রাজনীতিতে
মাসউদুর রহমান
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৬-২০২৪
বেনজীর আজিজ ইস্যু কী প্রভাব ফেলবে রাজনীতিতে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ/ফাইল ছবি


কত টাকা আছে সাবেক আইজিপি বেনজীরের। জমি, ফ্লাট, কোন কোন খাতে ব্যবসা কত। দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বিদেশে কোথায় কোথায় সম্পদ। তার পরিমাণই বা কত। কিভাবে বেনজীর এগুলো উপার্জন করলো? বেনজীর এখন কোথায়? দেশে না বিদেশে। যদি দেশে না থাকে তাহলে সে এখন সিঙ্গাপুর না দুবাই। কিভাবে সে পালিয়ে গেল? নাকি তাকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করা হয়েছে। কে সে কাজ করলো? অনেক সম্পদ বিক্রি করে গেছেন। যাবার সময় শতকোটি টাকা নিয়ে গেছেন। কিন্তু এতগুলো টাকা কিভাবে তিনি নিয়ে গেলেন? সে তো যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশন তালিকাভুক্ত। তিনি কী পশ্চিমা দেশসমূহে যেমন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা,অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপের কোনো দেশে যেতে পারবেন? বেনজীরের সঙ্গে আরো কেউ কী আছে? 

এমন হাজারো প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছে বাংলাদেশের মানুষ। বাংলাদেশের মিডিয়া। বাংলাদেশের সুশীল সমাজ। রাজনীতিবিদগণ। যেমনটা শত প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তারা সাবেক সেনা প্রধান আজিজ আহমেদের যুক্তরাষ্ট্রে নিষেধাজ্ঞার দেয়া সংক্রান্ত ইস্যুতে। শুধু এখানেই থেমে নেই। বাংলাদেশে আরেকটি হট ইস্যু তিন তিনবারের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের ভারত সফরে গিয়ে খুন হওয়া। টুকরা টুকরা করে হলুদ মাখিয়ে লাগেছে ভরে কোথায় ফালানো হয়েছে সেটার হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ হত্যা অভিযোগ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে ভারতীয় কেউ জড়িত নন। সবাই বাংলাদেশী। এদেরকে অচিরেই ধরা হবে। ডিবি প্রধান হারুনও এ বিষয় তৎপরতা চালাচ্ছেন অপরাধী বা হত্যাকারীদের ধরতে ক্লু বের করতে। 

এসব ঘটনায় চাপা পরে আছে দেশের একটি বড় ইস্যু। রিজার্ভ সঙ্কট। ক্রমশ কমছে রিজার্ভ। সর্বশেষ, এক খবরে জানানো হয়েছিল ১৩ বিলিয়নের কিছু বেশি রয়েছে রিজার্ভ। তবে কর্তৃপক্ষ আশা করছেন এটা বাড়বে। সামনে কুরবানীর ঈদ। এ উপলক্ষে রিজার্ভ বৃদ্ধি, বা বাইরে থেকে রেমিটেন্স যোদ্ধাদের পাঠানো ডলারে কিছুটা হলেও রিজার্ভ ফুলে উঠতে পারে। তবে খরচাটাও কম না।

চলমান এসব আলোচনায় রাজনীতির মাঠ গরম

বাংলাদেশের সম্প্রতিক কালের এসব ঘটনায় তোলপাড় সাধারন মানুষের মাঝে। দেশের এক প্রান্তও অবশিষ্ট নেই যেখানে এ বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে, অভ্যন্তরে আলোচনা চলছে না। কিন্তু এর মাঝে একটা বিষয় খুব বড় করে দেখা দিয়েছে- সাম্প্রতিককালের ঘটনা কতদিন মাঠ গরম থাকবে। এর কোনো প্রভাব ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে পড়বে কি না। 

প্রায় দেড় যুগ হতে চলেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শাসনামল। ফলে প্রতি সেক্টরে ক্ষমতাসীন অনুসারী থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এরপরও বিশেষ করে বেনজীর প্রসঙ্গটা এভাবে প্রকম্পিত হবে এটা ভেবে অনেকেই ব্যাকুল। বেনজীর শুধু আইজিপি ছিলেন না, ছিলেন র‌্যাব প্রধানও। ফলে প্রচন্ড প্রভাবশালী। কথিত আছে বন্দুকের নলে কথা বলতেন তিনি। সুযোগ পেলে এমন ক্ষমতা দেখাতে পারেন অনেকেই। কিন্তু সুযোগ পেতে হবে। বেনজীর সেটা পেয়েছিলেন বলেই দেখিয়েছেন। রিটায়ার্ট করলেন খুব বেশি দিন হয়নি। এরই মধ্যে এমন কী হলো এমন এক প্রভাবশালী ব্যাক্তিত্বকে টেনে হিচড়ে ধুলায় মিশিয়ে দেয়া। এর পেছনে কী কারণ থাকতে পারে সেটাও খোঁজার চেষ্টা অনেকেরই। 

তবে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক আসন নিয়ে ক্ষমতা কন্টিনিউ করা আওয়ামী লীগের এসব ঘটনায় কোনো প্রভাব পড়বে না বিন্দুমাত্র। এগুলো নিয়ে ক্ষমতাসীনরা চিন্তিত হবেন এমন কোনো কারণ নেই। বিশেষ করে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের মত একটা নির্বাচন যেভাবে দক্ষতার সঙ্গে এককভাবে করে ফেলতে পেরেছে, তাদের কাছে বেনজীর, আজিজ, আনারের মত ইস্যু কোনো বিষয়ই নয়- এটাই বাস্তবতা। বিগত সময়ও বড় বড় ইস্যু এসেছে, ইস্যু বিলীন হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবকিছুই দক্ষহাতে সামাল দিয়েছেন। এবারেরগুলোও সে তুলনায় মামুলি। এটাও সামাল দেয়া সম্ভব। মিডিয়া যে কদিন সোচ্চার ওই কদিনই। এরপর সব ঠান্ডা। নতুবা সাংবাদিক সাগর রুনীর হত্যাকান্ডের এক যুগ পেরিয়ে যাবার পরও কোনো ক্লু নেই। সাংবাদিকরা বলতে বলতে খেই হারিয়ে ফেলছেন! 

এটাও ঠিক, বেনজীরের মত লোকজন বিগত সময়ে বর্তমান সরকারকে বিভিন্নভাবে সার্ভিস দিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু এরা বিশেষ করে আজিজ আহমেদ ও বেনজীর আহমেদ কিন্তু আওয়ামী লীগের কেউ নন। এরা পাবলিক সার্ভিস করেছে মাত্র। আর সে কাজ করতে যেয়ে ক্ষমতা দেখিয়ে যদি অন্যায় কোনো কাজ করে থাকে বা করেছে এর দায় আওয়ামী লীগ কেন নেবে। তার জন্য দেশে প্রচলিত আইন রয়েছে। আইন তো নিজস্ব গতিতে চলছেই। দুদক যেভাবে বেনজীরকে উপস্থাপন করছে তাতে বিন্দুমাত্র সহায়তার মনভাব থাকলে হয়তো এমনটা হতো না। 

বলতে দ্বিধা নেই যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বেনজীর ও আজিজ আহমেদের সার্ভিস নিয়েছে। সফলতা তুলেছে। এটা ক্ষমতায় যে দল থাকবে প্রয়োজন মনে করলে নিতেই পারে। এখানে আওয়ামী লীগের দোষ আছে কি নেই সেটা সাধারণ মানুষ বুঝবে। তবে পাবলিক সার্ভেন্ট হয়ে যারা জনগণের স্বার্থের বাইরে যেয়ে যদি কিছু করে থাকেন, বিশেষ করে তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো উঠছে, সেগুলোতে তাদের শাস্তি হতেই পারে। এ বিষয়টা ইতিমধ্যে ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন যে আজিজ আহমেদের বিচারটা সেনাবাহিনী আর বেনজিরেরটা তো দুদক করছেই। 

ক্ষমতায় দল আসবে। দেশ পরিচালনা করে জনগন পছন্দ করলে আবার তারা ক্ষমতায় বসবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু নিয়ম হলো যারা জনসাধারণের চাকর। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় যাদের বেতন হয়, সংসার চলে তাদের এ ধরনের অপকর্ম করা উচিৎ কি না। 

বিচারের যে বিষয়টি খোদ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেই বলা হচ্ছে তাহলে সেটা হয়তো হবে। এ দল ক্ষমতায় থাকলে কিছুটা গড়িমসি থাকলেও পরের যে কোনো দল ক্ষমতায় আসলে তারা প্রয়োজন মনে করলে বিচার কার্য হবে। দোষী হলে তার শাস্তি হবে। কিন্তু এমন ক’জনেরই বা হয়েছে বা হবে। পিকে হালদারের মত বহু সরকারি চাকরি করা তথা জনগণের ট্যাক্সের পয়সা থেকে বেতন নেয়ারা দুর্নীতি করেছে। পারও হয়ে গেছে। কথিত আছে পিকে হালদার তো তিন হাজার কোটি টাকা নিয়ে পার হয়ে গেছেন। এমনকি তিনি দেশে থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর তার বিরুদ্ধে যখন দেশ ত্যাগের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয় আদালত থেকে এরপর তিনি দেশ ছেড়েছেন। কারণ তার দেশ ত্যাগের নিষেধাজ্ঞা গিয়েছিল কাগজে সময় নিয়ে। যেটা ইমিগ্রেশনের হাতে পৌঁছানোর অল্প কয়েক মিনিট আগে তিনি পার হয়ে যান ভারতে বেনাপোল দিয়ে। এমন অনেকেই রয়েছে পার হয়ে যাবার তালিকায়, যারা জনগণের অর্থ অবৈধভাবে লুট করেছেন, চুরি করেছেন। কিন্তু কিছুদিন মিডিয়া ট্রায়াল হওয়ার পর সেটা নিমিষেই মিলিয়ে গেছে। 

আজিজ, বেনজীর আনারের ঘটনাও এভাবেই মিলিয়ে যাবে সহসাই। কিন্তু রাজনীতি, রাজনীতিবিদন রয়েছেন। থাকবেন। জাতীয় নির্বাচন হতে আরো সাড়ে চার বছর বাকি। বাংলাদেশের মানুষ এগুলো মনে রাখবে কী? মনে হয় না। এরই মধ্যে হয়তো নতুন অনেক ইস্যুর উদয় ঘটবে। মিলিয়ে যাবে। এভাবেই চলছে। চলবে। এ কথাই বাস্তব ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এ সব বিষয় নিয়ে সমালোচনা অনেকেই হয়তো করছে। করবেও। বিশেষ করে বিরোধী দল বিএনপিসহ অন্যান্য দল। কিন্তু বিগত সময়েও এমনটা ঘটেনি তা কিন্তু নয়। ফলে কথা ও বক্তব্যের লড়াইটা ঢেউ তুলবে বেশ কিছুদিন। সাড়ে চারবছর পর মানুষ আবার ভোট দেয়ার সুযোগ পেয়ে কাকে ভোট দিবে সেটা নিছক তাদের বিষয়। ভোটের পরিবেশ কতটা নিশ্চিত হয় সেটাও দেখার বিষয়। 

মূল সমস্যা রিজার্ভ 

যে যাই বলুক না কেন, বেনজীর আজিজ বা আনার নিয়ে চিন্তিত নয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। তাদের মাথায় এ মুহূর্তে রিজার্ভ, আর রিজার্ভ। কারণ দীর্ঘদিন থেকে রিজার্ভ কমছে। এটা কোনোভাবেই ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে না। সম্প্রতি যে সব রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে তাতে দেখা গেছে, বাংলাদেশের গত দুই মাসের আমদানি বিল পরিশোধের পর ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৩ বা ১৪ বিলিয়ন (প্লাস মাইনাস) ডলার নেমে আসছে। এবং এমন খবর প্রকাশ হওয়ায় পরিস্থিতি আরও সংকটময় হয়ে ওঠার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে অনেকের মধ্যে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ রিজার্ভ সংক্রান্ত তথ্যে দেখানো হচ্ছে যে গ্রস বা মোট রিজার্ভ ২৫ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেয়া সাম্প্রতিক কিছু পদক্ষেপের কারণে সামনে রিজার্ভ পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। তবে সেটা কী বিস্তারিত জানা যায়নি। বাংলাদেশ ব্যাংক অবশ্য মোট ২৫ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ দাবি করলেও আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল বা আইএমএফের হিসেবে রিজার্ভ আছে ১৯ দশমিক ৯৭ (আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের পদ্ধতি- বিপিএম৬ বিলিয়ন ডলারের মত। যা সর্বশেষ দেখানো হিসেবের চেয়ে একটু ভাল। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে খবর এসেছে যে এই রিজার্ভের মধ্যে এই মুহূর্তে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ তের বিলিয়ন ডলারের একটু কম যেটা এখন একটু উন্নতি ঘটেছে। তবে এ সংক্রান্ত এক সূত্র বলেছে, আইএমএফ এর এসডিআর হিসেবে থাকা ডলারসহ সব ধরনের দায় দেনা শোধের জন্য জমা রাখা অর্থ বাদ দিয়ে রিজার্ভের যে হিসাব তৈরি করা হয়, সে অনুযায়ী এখনই ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ ১৩ বা ১৪ বিলিয়নের (প্লাস মাইনাস) ডলারের মত, যাকে গণমাধ্যমে নিট রিজার্ভ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কখনোই নিট রিজার্ভের তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করে না।

বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধরে রাখতে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত কয়েক মাসে কিছু পদক্ষেপ নিলেও রিজার্ভ প্রতিমাসেই কমছে। অর্থনীতিবিদরা এজন্য বৈদেশিক মুদ্রার আয় ও ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্য না থাকাকেই দায়ী করে আসছেন। বাংলাদেশে ২০২১ সালের অগাস্টে সর্বোচ্চ রিজার্ভ ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার। কোভিড মহামারি পরবর্তী সময়ে হুট করে আমদানি ব্যয় ব্যাপক বেড়ে গেলে রিজার্ভ কমতে শুরু করে। এরপর আর কখনোই এটিকে উর্ধ্বমূখী করা যায়নি। ওই প্রতিবেদনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বরাত দিয়ে আরো বলা হয়, গণমাধ্যমে নিট রিজার্ভ যেভাবে হিসেব করা হচ্ছে সেটি সঠিক বলে তারা মনে করেন না। বর্তমানে যেসব ‘ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তাতে সামনে পরিস্থিতি ভালো হবে’ বলে মনে করেন তিনি।

সর্বশেষ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বক্তব্যের জবাবে বলেছেন, ‘বেনজীর আহমেদ যদি দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয় তাহলে তাকে দেশে ফিরে আসতেই হবে।’ রোববার (২ জুন) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বেনজীর আহমেদের বিষয়টি দুদক তদন্ত করছে। এটা একটা প্রক্রিয়া। সরকার আগ বাড়িয়ে কিছু করতে পারে না। মানি লন্ডারিংয়ের কথা বলতে হলে তারেক রহমানের কথা আগে বলতে হবে। তারেক দ-িত হয়ে পাচারকৃত টাকা দিয়ে বিদেশে বসে আয়েশি জীবনযাপন করছে।’

দুর্নীতি কোনো দেশে হয় না, এ দাবি কেউ করতে পারে না বলে মন্তব্য করে সরকারের প্রভাবশালী এ মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে দুর্নীতির মহোৎসব শুরু হয় বিএনপির আমলে। আমাদের সরকার প্রধান দুর্নীতি করেন বা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেন এমন অভিযোগ কেউ করতে পারবে না। তিনি সৎ জীবন যাপন করেন।’ মন্ত্রী বলেন, ‘বেনজীর আহমেদের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করছে। তদন্ত-মামলা-গ্রেপ্তার-সবকিছুর একটা আইনি প্রক্রিয়া আছে। সরকার এখানে দুদককে ডিঙিয়ে আগ বাড়িয়ে কেন ব্যবস্থা নেবে? সরকারের দুর্নীতি বিরোধী যেসব সংস্থা আছে তাদের কোনো ব্যর্থতা থাকলে তারও বিচার হবে।’

আওয়ামী লীগ সম্পাদক বলেন, ‘এ দেশে ৭৫ পরবর্তীকালে কোনো শাসক ও সরকার দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সৎ সাহস দেখাতে পারেনি। শেখ হাসিনার সরকার সেটা দেখিয়েছে। ব্যক্তি দুর্নীতি করতে পারে। দুর্নীতি করার পর সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি কি সেটা দেখতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’ 

ফলে সবকিছুতেই রাজনীতি। একজন সত্যিকারের জনগনের কষ্টের টাকা লুট করা দুর্নীতিবাজ মানুষকে কেউ সঠিক অর্থে দুর্নীতিবাজ বললেও তার বিপরীতে রাজনৈতিক বক্তব্য দাঁড় করানো হয়ে যায়। এটা লজ্জাজনক। জাতির জন্য দুর্ভাগ্য ছাড়া কিছু না। বিএনপি অপকর্ম করলে তার শাস্তি তারা ভোগ করছে। দেড় যুগ ধরে ক্ষমতার বাইরে। নেতাকর্মীরা মামলা জেল জরিমানায় জর্জরিত। এটা শাস্তি। তাই বলে চতুর্থ টার্ম টানা ক্ষমতায় থেকেও যদি রেফারেন্স হিসেবে শাস্তিপ্রাপ্তদের তুলে ধরা হয় তাহলে মানুষ কাদের বিশ্বাস করবে? নতুন করে কাদের নিয়ে ভাববে যে এ দলটা দিয়ে ক্ষমতা পরিচালনা করালে জনগণ স্বস্তি পাবে। রাজনীতিবিদদের রাজনীতি করাই তাদের ব্যবসা। কিন্তু সবকিছু বেখেয়াল হয়ে কথাবার্তা বললে মানুষের ভালবাসা কী পাওয়া যাবে? সবাই তো চিরদিন ক্ষমতায় থাকবে না। ক্ষমতার বাইরে থাকলে মানুষ তখন কী বলবেন সে উত্তরটাও তৈরি করে রাখা উচিৎ। যেটা অনেক ক্ষেত্রে বিএনপিকেও হজম করতে হচ্ছে এখন!

শেয়ার করুন