৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ৬:১৫:৫৩ অপরাহ্ন


বাংলাদেশে চীনা ম্যানুফ্যাকচারিং হাব গড়ার আহ্বান ড. ইউনূসের
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-০৬-২০২৫
বাংলাদেশে চীনা ম্যানুফ্যাকচারিং হাব গড়ার আহ্বান ড. ইউনূসের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীর বৈঠক


বাংলাদেশকে বিনিয়োগের আদর্শ গন্তব্যস্থল উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চীনা ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিয়ে আসার এবং ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।

গত ১ জুন ঢাকায় বাংলাদেশ-চীন বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা চীনা বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আজ আমরা একসঙ্গে এই যাত্রা শুরু করছি, আমি আপনাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি বাংলাদেশে বিদ্যমান বিপুল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে। টেক্সটাইল ও পোশাকশিল্প থেকে শুরু করে ওষুধ, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, পাট, মৎস্য ও তথ্যপ্রযুক্তি- প্রতিটি খাতেই বিনিয়োগ ও অংশীদারত্বের উপযোগী সুযোগ রয়েছে। এখানে বিনিয়োগ করে ম্যানুফ্যাকচারিং হাব তৈরি করুন।’ 

এ সম্মেলনে চীনের ১০০টি কোম্পানির প্রায় ২৫০ বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ ও চীন সরকার যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) মালটিপারপাস হলে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

চীনা বিনিয়োগকারীরা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশের অর্থনীতি পাল্টে দিয়েছে উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘সম্মেলনে আপনাদের অংশগ্রহণ বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনার প্রতীক। চীনা বিনিয়োগকারীরা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশের অর্থনীতি পাল্টে দিয়েছে। আমরা আশা করি, এ সফর বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও একটি অনুরূপ রূপান্তরের সূচনা করবে।’

বাংলাদেশ এক পরিবর্তনের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে রয়েছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের অন্তর্বর্তী সরকার বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করতে, নীতিমালা সহজ করতে এবং ব্যবসার জন্য অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞভাবে সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এ উদ্যোগগুলোর লক্ষ্য বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত এবং আমাদের তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা।’

তিনি বলেন, এই সরকারের ১০ মাসে আমরা ইতোমধ্যে সংস্কারের সুফল দেখতে পাচ্ছি। গত এপ্রিলে সফলভাবে বাংলাদেশ বিজনেস সামিট সম্পন্ন হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কোম্পানিগুলো পাঁচ দিনব্যাপী এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে। সবচেয়ে বড় প্রতিনিধিদল এসেছিল চীন থেকে। সামিট চলাকালীন একটি শীর্ষ চীনা টেক্সটাইল কোম্পানি কেবল স্পিনিং খাতে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দেয়।

ড. ইউনূস বলেন, অনেক বছর ধরেই বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার কেন্দ্রস্থলে একটি কৌশলগত অবস্থান হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। আমাদের ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে অর্ধেকেরই বয়স ২৬-এর নিচে। এই কর্মক্ষম জনশক্তি বাংলাদেশকে বিনিয়োগের আদর্শ গন্তব্য হিসেবে গড়ে তুলছে। তবুও বহু দশক ধরে বাংলাদেশ বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। বহু অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হয়েছিল, কিন্তু সেগুলো খালি পড়েছিল, গরু চরানোর জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। ব্যাপক দুর্নীতি, শাসনের ব্যর্থতা ও স্বৈরশাসন সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের দূরে সরিয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘লাখ লাখ তরুণের নেতৃত্বে সংঘটিত জুলাই বিপ্লব, সেই অন্ধকার যুগের অবসান ঘটিয়েছে। এই বিপ্লবের পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকার বিডাকে একটি কার্যকর প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করেছে। আমরা এর পরিচালনায় বেসরকারি খাতের সেরা মেধাবীদের নিয়োগ দিয়েছি। আমরা বিনিয়োগকারীদের সমস্যা দেখভাল করার জন্য রিলেশনশিপ ম্যানেজার নিয়োগ করছি। এছাড়াও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতি মাসে প্রাতঃরাশ বৈঠকের আয়োজন করছি, যাতে তাদের উদ্বেগের সমাধান, অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা যায়।’

বিনিয়োগ সম্মেলনে চীনা ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করায় তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের সবাইকে ঢাকা শহরে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাতে পেরে আমি গভীর আনন্দ ও সম্মান অনুভব করছি। এটি আমাদের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এ বছর বাংলাদেশ ও চীনের দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের ৫০ বছর পূর্তি হচ্ছে। এই সম্মেলন আমাদের সম্পর্ক ও ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক অংশীদারত্বের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।’ তিনি বলেন, আপনাদের উপস্থিতি আমাদের দুই দেশের মধ্যকার সুগভীর সম্পর্ক এবং পারস্পরিক অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করে। কয়েক মাস আগে বেইজিং সফরের কথা স্মরণ করে ড. ইউনূস বলেন, আমি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে বাংলাদেশে চীনা কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে অনুরোধ জানাই। কারণ আমরা আমাদের দেশকে এই অঞ্চলের একটি উৎপাদন ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আমি সম্মানিত যে, প্রেসিডেন্ট শি তার কথা রেখেছেন। চীনা কোম্পানিগুলো বিশ্বজুড়ে উৎপাদনে সর্বাগ্রে। বাংলাদেশে তাদের বৃহৎ বিনিয়োগ আমাদের অর্থনীতির জন্য একটি গেম চেঞ্জার হতে পারে। সেই সঙ্গে আমাদের লাখ লাখ তরুণ, যারা ভালো চাকরির অপেক্ষায় রয়েছে তাদের জন্যও।

বাংলাদেশের পাটের হারানো গৌরব স্মরণ করে ড. ইউনূস দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করতে পাটের পুনরুজ্জীবন এবং এর ব্যবহার বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘যখন আপনি পাট নিয়ে কথা বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য একটি আবেগের বিষয়। এই দেশটি একটি অনন্য দেশ, যে দেশ বহু বছর ধরে বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক তন্তু উৎপাদন করে আসছে।’ তিনি বলেন, ‘পাটকে এখনো শুধু বস্তা তৈরির তন্তু হিসেবে বিবেচনা করা হয়, অথচ এটি এমন একটি প্রাকৃতিক তন্তু, যাকে আমরা পরিবেশ ও পৃথিবী রক্ষার কাজে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছি।’

ড. ইউনূস তার বক্তব্যের শুরুতে বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে পাটকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সঠিক জায়গা দেওয়ার জন্য এক দারুণ সূচনা করতে পারি।’ বাংলাদেশ জামদানি এবং অন্যান্য বহু কাপড়ের আবাসভূমি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পাটের বহুমুখী ব্যবহার সম্ভব।’ এ উপলক্ষে তিনি ঢাকাই মসলিনের হারানো গৌরবের কথাও স্মরণ করেন, যেটি একসময়ে ছিল পৃথিবীখ্যাত ও মূল্যবান।

সম্মেলনে চীনের ১০০টি কোম্পানির প্রায় ২৫০ বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী অংশগ্রহণ করেছেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।

ড. ইউনূসের সঙ্গে চায়না বাণিজ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎ 

সফররত চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও বলেছেন, কৃষি, পাট, সামুদ্রিক মাছ ধরাসহ গবেষণার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তার দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও ব্যবসায় সহযোগিতা বাড়াতে প্রস্তুত। গত ১ জুন ঢাকায় চীন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্মেলনে চীনা ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তাদের বড় একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন ওয়েনতাও। এরপর তিনি ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ মন্তব্য করেন। তিনি প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বলেন, ‘যেসব চীনা কোম্পানি আমার সঙ্গে এসেছে তারা খুবই উৎসাহিত। আপনি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের যে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, তা প্রশংসনীয়। এসব কোম্পানি আমাকে বলেছে, আপনার উদ্যোগ দেখে তারা এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী।’

বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান ভোক্তাবাদ প্রসঙ্গে চীনা মন্ত্রী জানান, রাত ১০টার পরও বিপণিবিতানে ক্রেতাদের উপস্থিতি তাকে মুগ্ধ করেছে। তিনি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের নবম বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে পরিণত হবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে এখনো বিপুল সম্ভাবনা অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে, বিশেষ করে কৃষি এবং গভীর সমুদ্র ও নদীভিত্তিক মাছ চাষে। তিনি বলেন, ‘চীনের সহযোগিতায় বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামকেই একটি উৎপাদন ইউনিটে রূপান্তর করা সম্ভব।’ এ প্রসঙ্গে চীনা মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জানতে আগ্রহী যে, কৃষির কোন কোন খাতে পূর্ণমাত্রায় সহযোগিতা সম্ভব।’ তিনি চাষের জমি উন্নয়ন, পানি সংরক্ষণ ও আধুনিক চারা রোপণ প্রযুক্তির কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন, ‘আমার দৃষ্টিতে কৃষি শুধুই একটি শিল্প নয়, বরং এটি একটি সামাজিক সংগঠনের রূপ।’ মাছ ও সামুদ্রিক অর্থনীতি প্রসঙ্গে ওয়েতাও চীনের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব চান। তিনি বলেন, ‘গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার প্রযুক্তিতে চীন বিশ্বে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।’

চীনা মন্ত্রী উল্লেখ করেন, চীন-বাংলাদেশ সম্মেলনে ড. ইউনূসের পাটখাত পুনরুজ্জীবনের সম্ভাবনা নিয়ে দেওয়া বক্তব্য তাকে আকৃষ্ট করেছে। তিনি বলেন, চীন প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১০ কোটি মার্কিন ডলারের পাট আমদানি করে, যা বাংলাদেশের মোট পাট রফতানির প্রায় ১০ শতাংশ। গবেষণা ও পণ্যের বৈচিত্র্য আনতে পারলে এর পরিমাণ বহুগুণ বাড়তে পারে।

তিনি আরো বলেন, ‘আপনার বক্তব্যের পরপরই চীনা পাট ব্যবসায়ীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা বাংলাদেশের পাটপণ্য নিয়ে গবেষণা শুরু করবে।’ চীনা মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সহযোগিতা কেবল ব্যবসা পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়। গবেষণাতেও যৌথভাবে কাজ করা উচিত। যদি বাংলাদেশ এই গবেষণায় অংশ নেয়, তাহলে পাট চীনের জন্য একটি উপযুক্ত পণ্য হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের পাটপণ্য ডিজাইনাররা চীনা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে পারেন। তিনি চীনা মন্ত্রীর এই আন্তরিকতা ও বন্ধুত্বপূর্ণ অবস্থানের প্রশংসা করেন এবং চীনকে বাংলাদেশের পাশে বন্ধুর মতো থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান।

ড. ইউনূস চীনা মন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার কথা আমার কানে সংগীতের মতো শোনায়।’ তিনি চীনা মন্ত্রীর উষ্ণ ভাষণ এবং বড়সংখ্যক চীনা বিনিয়োগকারী নিয়ে আসার জন্য সাধুবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আজকে আপনার ভাষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এতো বেশি বিনিয়োগকারী এসেছেন, যা আমাদের জন্য একটি ভালো বার্তা পুরো জাতি এটি লক্ষ করেছে।’ তিনি তার সাম্প্রতিক চীন সফরের কথা স্মরণ করে বলেন, সেখানে দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয়, বিশেষ করে বাণিজ্য ও ব্যবসা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের সফরের সময় অনেক আন্তরিক আলোচনা হয়েছে। আপনার সফর এই সম্পর্ককে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে।’

শেয়ার করুন