২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ১১:০১:৪০ অপরাহ্ন


জালালাবাদের সংবর্ধনায় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী
সিলেট নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়েছে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-১১-২০২২
সিলেট নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়েছে বক্তব্য রাখছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী


সিলেট অসাম্প্রদায়িক এলাকা। রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতির স্থান। সিলেট পুরো বাংলাদেশের মধ্যে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এবং একটি মডেল। বিভিন্ন ধর্ম পালন ও রাজনৈতিক মতাদর্শের মধ্যেই সিলেটবাসী এক ও অভিন্ন। গত ৬ নভেম্বর বিকেলে অনুষ্ঠিত কুইন্সের গুলশান টেরেসে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকা আয়োজিত সংবর্ধনা সভায় সিলেট নগরীর দুইবারের নির্বাচিত জনপ্রিয় মেয়র আরিফুল হক এব কথা বলেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি বদরুল হোসেন খান। 

অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের সেক্রেটারি ময়নুল ইসলাম। মেয়র আরিফুল হক তার বক্তব্যের প্রারম্ভে জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীসহ মুক্তিযুদ্ধে যারা আত্মাহুতি দিয়েছে, সেই সাথে সম্প্রতি করেনায় আক্রান্ত হয়ে যারা মারা যান তাদের রুহের মাগফিরাতসহ এম সাইফুর রহমান, হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী, দেওয়ান ফরিদ গাজী, এএসএম কিবরীয়া, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, এম এ মুহিত, বদর উদ্দীন কামরান, আ ফ ম কামালসহ সিটি কাউন্সিলের যে সকল কাউন্সিলর মারা যান, তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন। মেয়র আরিফুল হক বলেন, সিলেট আজ নেতৃত্ব শূন্য। সে শূন্যস্থান পূরণ হবার নয়। কেননা সিলেট প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা। মেধাবীরা বিদেশে পাড়ি জমানোর পর আর ফিরে আসে না। অন্য দেশে স্থায়ী আবাস গড়ে তোলে। তিনি প্রবাসীদের লেখাপড়া শেষ করে দেশের কাজে নিয়োজিত হবার আহ্বান জানান। এর ফলে দেশ ও জাতি উপকৃত হবে। প্রবাসীদের প্রতি করোনাকালীন সময়ে সাহায্য ও সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, করোনাকালীন সময়ে সিলেট মহানগরে ৭৪ হাজার পরিবারের জন্য ১৫ দিনের খাবার পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছেন। সিলেটে জলাবদ্ধতার কারণ উল্লেখ করে বলেন, মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী দুটি হাওর দখলের কথা বলেন। তবে কোনো দুটি হাওর নাম উল্লেখ করেননি। তিনি বলেন, বৃষ্টি হলে সে হাওরের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় সে পানি ড্রেন দিয়ে শহরের ভিতর ঢুকে এবং শহর জলাবদ্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়াও পাহাড় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে খাল ভরে যায়। শহরের জলাবদ্ধতা দূর করা শুধু সিটি করপোরেশন দ্বারা সম্ভব নয়। এজন্য সরকারিভাবে পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, গত ১০০ বছরে সুরমা নদী খনন হয়নি। তিনি সুরমা নদী খনন ও বেড়িবাঁধ নির্মাণের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। প্রবাসীদের উদ্দেশ্য মেয়র বলেন, এখন ডিজিটাল ব্যবস্থার মাধ্যমে ট্যাক্স দিতে পারবেন। এ ছাড়া প্রবাসীদের জন্য তথ্যের কেন্দ্রের কথা উল্লেখ করে বলেন, ইতিমধ্যেই তথ্যকেন্দ্রের লজিস্টিক সমর্থনের কাজ আরম্ভ হয়েছে। সে কাজের জন্য জালালাবাদ অ্যাসোসিয়শনের সহযোগিতার কথা বলেন। তিনি প্রবাসীদের উদ্দেশ্য বলেন, ৬ নভেম্বর একটি স্মরণীয় দিন উল্লেখ করে বলেন, এদিন তার স্ত্রীর জন্মদিন। ৬ নভেম্বর স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সকলের প্রতি মোবারক, ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন।

সভার প্রারম্ভে পবিত্র কোরআন তেলওয়াত করেন হাফীজ জুবায়ের আহমদ। এর পরে বাংলাদেশের ও আমেরিকার জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন মূলধারার রাজনীতিবিদ ডা. জিয়া উদ্দীন আহমদ, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আজমল হোসেন কুনু, নিউজার্সি থেকে আগত কাউন্সিলম্যান শাহীন খালিক, বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সভাপতি আজিমুর রহমান বুরহান, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রানা ফেরদৌস চৌধুরী, বাংলাদেশ সোসাইটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী, বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি মোজাহিদুল ইসলাম, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল আহমদ চৌধুরী, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম, স্পোর্টস কাউন্সিল অব আমেরিকার সাবেক সভাপতি ও জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের সাবেক সেক্রেটারি মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু, জাসদের সভাপতি দেওয়ান শাহেদ চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জেড চৌধুরী জুয়েল, বর্তমান কমিটির কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলীম, বিশিষ্ট ছাত্রনেতা মিজানুর রহমান, বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, বিয়ানীবাজার সমিতির বর্তমান সভাপতি আব্দুল মান্নান, ট্রাস্ট্রি বোর্ডের সাবেক সদস্য আব্দুস শহীদ, হাজি লেইছ চৌধুরী, সাবেক সহ-সভাপতি আহবাব চৌধুরী খোকন, সোসাইটির বর্তমান সহ-সভাপতি ফারুক চৌধুরী, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সহ-সেক্রেটারি এবাদ চৌধুরী, সাইফুল খান হারুন, আতিকুল হক আহাদ, সিলেট সদর থানা সমিতির একাংশের সভাপতি আব্দুল মালেক লায়েক, খলকুর রহমান, শাহীন আজমল, কুইন্স বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি শামস উদ্দীন, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের বর্তমান সহ-সাধারণ সম্পাদক রোকন হাকিম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয় এবং জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

সভাপতি বদরুল হোসেন খান সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম অনুষ্ঠানকে সফল এবং সার্থক করার জন্য সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

শেয়ার করুন