২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৩:৩০:০৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


উত্সবমুখর পরিবেশে জালালাবাদের নির্বাচন : দেশ জরিপ সঠিক
বদরুল-মঈনুল প্যানেলের ভূমিধস বিজয়
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০৬-২০২২
বদরুল-মঈনুল প্যানেলের ভূমিধস বিজয় নবনির্বাচিত ও সাধারণ সম্পাদককে ফুলেল অভিনন্দন


প্রবাসের অন্যতম আঞ্চলিক সংগঠন জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন আনন্দ-উচ্ছ্বাস এবং উত্সবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ৫ জুন নিউইয়র্ক, নিউজার্সি এবং ফিলাডেলফিয়ার ৫টি কেন্দ্রে এই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। ভোটগ্রহণ শেষে রাতেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার আতাউর রহমান সেলিম নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন। জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরি পরিষদের ১৯টি পদের মধ্যে মাত্র ৫টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মনোনয়নপত্র দাখিলের দিনই কোনো প্রতিদ্ব›দ্বী কোনো প্রার্থী না থাকায় বদরুল-মঈনুল প্যানেলের ১৪ জন প্রার্থী নির্বাচিত হন। যে ৫টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় সেগুলো হলো সভাপতি, সহ-সভাপতি (সিলেট), সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, সাংগঠনিক সম্পাদক। বেসরকারি ফলাফলে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্বাচিত হন বদরুল হোসেন খান এবং সাধারণ সম্পাদক পদে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মঈনুল ইসলাম। কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ আলিম এবং সাগঠনিক সম্পাদক পদে ইফজাল চৌধুরী। এবারের নির্বাচনে ১১ হাজার ৪৪ জন ভোটারের মধ্যে ৩৭১৫ জন।

জালালবাদ অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনটি করোনার কারণে পিছিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। যদিও এর আগের টার্ম নির্বাচন হয়নি। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পরপরই নির্বাচন যে হবে তা পরিষ্কার হয়ে যায়। সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকেন। বিশেষ করে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মঈনুল ইসলাম নির্বাচন করবেন। যে কারণে আটঘাট কষেই মাঠে নামেন। যেই কথা সেই কাজ। তিনি প্যানেলও ঠিক করেন। সভাপতি পদে প্রার্থী আসেন বদরুল হোসেন খান। গঠন করা হয় বদরুল-মঈনুল প্যানেল। এই প্যানেলেই সদস্য পদ জমা দেয়ার দিন বিয়ের রাতেই বিড়াল মারার ব্যবস্থা করেন। অর্থাত সদস্য পদ জমা দিয়েই তাদের নির্বাচনী বৈতরণী পারের ইঙ্গিত দেন। এই প্যানেলের পক্ষ থেকেই প্রায় ১১ হাজার ভোটারের মধ্যে ৮ হাজারের ওপরে ভোটার করা হয়। কিন্তু তারপরও কথা থেকে যায়। নির্বাচন বলে কথা। শঙ্কা একটা থাকেই। যাদের মাথায় জালালাবাদের উন্নয়ন নয়, নিজেদের ঢোল পেটানোর অভ্যাস- তাদের মতোই কয়েকজন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। মনোনয়নপত্র দাখিল করেই জানান দেন, কাউকে বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেয়া হবে না। জালালাবাদ গোল্লায় যাক, তারা মহান প্রার্থী! বিশাল নেতা!! প্রচার তো হবে। কথায় আছে না- নিজের নাক কেটে অন্যের যাত্রা ভঙ্গ করা। তারাও করেছেন তাই। নিজেরাই জানতেন গো হারাভাবে হারবেন, তারপরেও নির্বাচন করবেন। কারণ গণতান্ত্রিক উপায়! হাসির পাত্রও বটে। শ্রাদ্ধ হলো জালালাবাদের প্রায় ১ লাখ ডলারের। শেষ পর্যন্ত গো হারাভাবেই হারলেন। দাঁড়িয়ে গেলেন পাঁচজন। তাও আবার স্বতন্ত্র প্রার্থী। অদ্ভুত এক নজির স্থাপন করলেন।

আগেই নিউইয়র্কের পাঠকপ্রিয় পত্রিকা দেশ নির্বাচনের আগের সপ্তাহে জরিপ প্রকাশ করে। জরিপে বলা হয়েছে বদরুল-মঈনুল পরিষদ এগিয়ে। নির্বাচনের দিন দেখা গেল সেই চিত্র। নির্বাচন হয়েছে একেবারেই এক তরফা। যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন তাদের ছিলো না কোনো ভোট। অর্থাত ছিলো প্রতিরোধের ব্যবস্থা। যে কারণে তাদের অসহায় আত্মসমর্পণ। লম্পঝম্প করেছেন- দেখানোই সার। নিউইয়র্কে জালালাবাদের তিনটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান কেন্দ্র ছিলো এস্টোরিয়ার এনটিভি ভবনে। ওজন পার্কে ছিলো ১টি, ব্রঙ্কসে ছিলো ১টি, নিউজার্সিতে ১ টি এবং ফিলাডেলফিয়ায় ১টি। সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। আবার দেরিতে শুরু হওয়ায় কোনো কোনো কেন্দ্রে ১ ঘণ্টা দেরিতে ভোটগ্রহণ করা হয়। সারাদিন উত্সবমুখর এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন শেষে স্ব স্ব কেন্দ্রে নির্বাচন কমিশনারা নির্বাচনে ফলাফল ঘোষণা করেন। বেসরকারিভাবে চ‚ড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয় এনটিভি ভবনে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার আতাউর রহমান সেলিম নির্বাচনের চ‚ড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন। নির্বাচন কমিশনার মিনহাজ আহম্মেদ সাম্মুর পরিচালনায় এ সময় নির্বাচন কমিশনের সদস্য আহমেদ এ হাকিম, মোশাররফ আলম, সাব্বির হোসাইন, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান চৌধুরী শেফাজ, সভাপতি প্রার্থী বদরুল হোসেন খান, মাসুদুল হক সানু, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মঈনুল ইসলাম এবং তাদের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যসহ সমর্থক এবং জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী বদরুল হোসন খান ২৬৬৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্ব›দ্বী মাসুদুল হক সানু পেয়েছেন ৯৮০ ভোট। সহ-সভাপতি পদে (সিলেট) লুকমান হোসেন ২৫৮৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্ব›দ্বী মিজানুর রহমান পেয়েছেন ৮৮০ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে মঈনুল ইসলাম ২৩৫৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। প্রতিদ্ব›দ্বী সাইকুল ইসলাম পেয়েছেন ১২১৪ ভোট। কোষাধ্যক্ষ পদে মোহাম্মদ আলীম ২৩৮৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্ব›দ্বী মিসবাহ উদ্দিন আহমেদ পেয়েছেন ১১৬৩ ভোট। সাংগঠনিক সম্পাদক ইফজাল চৌধুরী ২৪৭১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্ব›দ্বী শহিদুল হক রাসেল পেয়েছেন ১০২৬ ভোট।

ফলাফল অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নবনির্বাচিত সভাপতি বদরুল হোসেন খান, পরাজিত প্রার্থী মাসুদুল হক সানু, নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মঈনুল ইসলাম, বর্তমান সভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল।

আতাউর রহমান সেলিম তার বক্তব্যে নির্বাচিত প্রার্থী এবং পরাজিত প্রার্থীদের ধন্যবাদ জানান। তিনি ধন্যবাদ জানান নির্বাচন কমিশনের সকল সদস্য, বর্তমান কার্যকরি কমিটি, কমিশনে সহযোগিতাকারী সকলকে সেই সাথে জালালাবাদবাসীকে। তিনি বলেন, আপনাদের সকলের সহযোগিতায় আমরা একটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে পেরেছি।

নির্বাচিত সভাপদি বদরুল হোসেন খান নির্বাচন কমিশন এবং জালালাবাদবাসীকে ধন্যবাদ জানান এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সকল সদস্যদের প্রতি। নির্বাচন কমিশনকেও ধন্যবাদ জানান সুন্দর একটি নির্বাচন উপহার দেয়ার জন্য। তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনের সময় যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছি আপনাদের সহযোগিতায় আমরা তো পূরণ করবো।

সাধারণ সম্পাদক মঈনুল ইসলাম সবাইকে ধন্যবাদ জানান তাদের বিশ্বাস করে ভোট দেয়ার জন্য। তিনি বলেন, আপনারা যে বিশ্বাসে আমাদের প্যানেলকে ভোপ দিয়ে নির্বাচিত করেছেন, আমরা আপনাদের সেই বিশ্বাস রক্ষা করবো। তিনি বলেন, আমি আশা করছি এস্টোরিয়াতেই জালালাবাদবাসীর স্বপ্নের ভবন হবে।

শেয়ার করুন