০৮ মে ২০১২, বুধবার, ১০:১০:১৭ অপরাহ্ন


বাংলাদেশের মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করতে বাংলা শিখছে এ্যামি
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০১-২০২৩
বাংলাদেশের মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করতে বাংলা শিখছে এ্যামি এ্যামি


আমি কোরিয়া থেকে এসেছি। দেখতে এসেছি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে কিভাবে প্লাস্টিক মুক্ত করা যায়? বাংলাদেশে কিভাবে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এটা করছে? তা দেখতে ব্যবস্থা করায় আয়োজকদের ধন্যবাদ।

ভাঙ্গা ভাঙ্গা বাংলায় এ কথাগুলি বলল দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আসা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ্যামি। টেকসই পরিবেশ নিশ্চিত করতে এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন- এসডো “প্লাস্টিক মুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার উদ্যোগ” গ্রহণ করেছে। গত ২২ জানুয়ারি রোববার ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য ছিল মানব স্বাস্থ্য ও পরিবেশের উপর প্লাস্টিকের বিষাক্ততা সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মকে সচেতন করা; পরবর্তী প্রজন্মের নেতৃত্ব তৈরি এবং তরুণ শিক্ষার্থীদের একবার-ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জনে উদ্বুদ্ধ করা। আর এমনই অনুষ্ঠানে এ্যামির পরিচয় পর্বে তার অনুভুতি ও পরিচয় বাংলায় তুলে ধরে। এতে উপস্থিত সকলে তাকে হাতে তালি দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়।

পুরো অনুষ্ঠানে যখন অনেকে বাংলাদেশী হয়েও নিজেদের পরিচয় অবস্থান ইংরেজিতে দিতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করছিল তখন সুদূর দক্ষিণ কোরীয়ার এই মেয়ে বাংলায় পরিচয় তুলে ধরা উপস্থিত সকলকে মুগ্ধ করেছে। অনুষ্ঠানের এক ফাকে এ্যামির সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। জানতে চাওয়া হয়, কিভাবে কেনো সে বাংলা ভাষা তাকে আকৃষ্ট হয়েছে? জানতে চাওয়া হয় আরো অনেক কিছু? সবচেয়ে বড়ো কথা হচ্ছে সারাক্ষণই হাসিমুখে থাকা এ্যামির  যেনো বাংলাদেশের মানুষকে বেশি ভালো লেগে গেছে। 

এ্যামির কোরীয় ভাষায় নাম হচ্ছে ইয়ু জিইওংগ। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে সে গত বছর ডিসেম্বরে এসেছে বাংলাদেশে। মাত্র দু’মাসেই সে বাংলা শিখে ফেলেছে? হাসি মুখে বলল..হা..কিন্তু কেনো? বাংলা ভাষায় কি পেয়েছে এই মেয়ে ঠিক এতটুকু বয়সে বাংলা শিখতে গেলো? জানতে চাইলে বললো.. এদেশের (বাংলাদেশের) মানুষগুলি অনেক সুন্দর মনের, অনেক মিশুক। এরা অনেক সম্মান করে বিদেশীদের। সহজেই বরণ করে নিতে পারে অতিথিদের। আর বাংলাদেশের মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করতেই সে বাংলা শিখছে বলে জানায়। এ্যামির কথা.. এদের মনে এতো রাখ-ডাক নেই--। তবে এ্যামির এসব অনুভূতি আর কথাগুলি তার থেকে আদায় করা গেছে ইংরেজিতেই। কারণ এখনো পুরোপুরি বাংলায় সে শিখেনি। খুব সুন্দর করে ধন্যবাদ দেয়া কিংবা তোমার নাম কি? কিংবা তোমাকে বেশ সুন্দর লাগছে... এমন কিছু খুচরো শব্দ এ্যামির ভালো করেই বলতে পারে।  

এ্যামির কাছে জানতে চাওয়া হয় বাংলাদেশের কি কি খাবার তার পছন্দ? এমন প্রশ্নে তার হাসি থামিয়ে রাখা গেলো না। মিস্টি হাসি থামিয়ে জানালো সবই তো ভালো লাগে.. তবে ঢাকার বিরিয়ানি খুব পছন্দ করে বলে সে।  মাত্র তিন মাসে ঢাকায় কোথায় কোথায় গিয়েছে জানতে চাইলে এ্যামি জানায় সে ধানমন্ডি লেকে বেড়াতে গিয়েছিল.....আর এটা তার খুব ভালো লেগেছে বলেও জানায়। অনেক সবুজ ধানমন্ডি লেক... এ্যামি বললো। এ্যামি জানায় বাংলাদেশের কক্সবাজারে সে যেতে চায়। এমন সমুদ্র সৈকত তাকে আকৃষ্ট করছে..ছুটির এক ফাঁকে সে বাংলাদেশে প্রকৃতির এমন সুন্দর সমুদ্র সৈকতে সে যাবেই...  

সব শেষে এ্যামির কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল বাংলাদেশের পরিবেশ কেমন লাগে..?  হাজার হলেও অন্য দেশতো.. তাই একজন বিদেশী হয়ে এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে ইততস্থই করছিল এ্যামি.. তবে বাকা হেসে বললে, বেশি ভালো না.. বায়ু দুষণের কথাও তার মুখে উঠে আসে। এসব ব্যাপারে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মাথা নেড়ে নেতিবাচক উত্তরই দিচ্ছিল এ্যামি। তবে একটু দু:খ করে এ্যামি বললো...এতো সুন্দর বাংলাদেশ.. পরিবেশটা ভালো হলে আরো ভালো হতো....।

শেয়ার করুন