২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০১:৪১:৩৭ পূর্বাহ্ন


রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান এখনো অধরা
নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-০৮-২০২৩
রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান এখনো অধরা বাংলাদেশে রোহিঙ্গা


মায়ানমারে জাতিগত গণহত্যার বিচার দাবি পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর দ্বিচারিতার অভিযোগ এসেছেন কক্সবাজার সিএসও এবং এনজিও ফোরাম (সিসিএনএফ) ইক্যুইটি অ্যান্ড জাস্টিস ওয়ার্কিং গ্রুপ বাংলাদেশের (ইক্যুইটিবিডি) নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, ছয় বছর হয়ে গেলেও রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান এখনো অধরা রয়ে গেছে।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মায়ানমার সামরিক জান্তার গণহত্যা ও নৃশংস নির্যাতন থেকে বাঁচতে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। দুঃখজনক ওই ঘটনার ষষ্ঠতম বছর উপলক্ষে যৌথ এক সংবাদ বিবৃতিতে আরো বলা হয়, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের, বিশেষ করে ধনী দেশগুলোর দ্বিচারিতা করছে। 

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয় যে, ছয় বছর হয়ে গেলেও সংকটের টেকসই সমাধান এখনো অধরা রয়ে গেছে। নিপীড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জীবন বাঁচাতে সীমান্ত খুলে দিয়ে এবং তাদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্বজুড়ে মানবতার একটি বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে বাংলাদেশ। এই সংকটের সঙ্গে কোনভাবেই সম্পৃক্ত না হলেও প্রকারান্তরে সংকটটির দায়ভার এখন বাংলাদেশের ওপর এসে বর্তেছে। সংকট মোকাবিলায় তেমন কোনো ভূমিকা পালন না করেও এর জন্য দায়ী মায়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলেও অনেক দেশ এবং সংস্থা ক্রমাগত নানাভাবে বাংলাদেশের ওপর চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে। সিসিএনএফ এবং ইক্যুইটিবিডি এ ধরনের চাপ প্রয়োগের প্রবণতার তীব্র প্রতিবাদ জানায়।  

বিবৃতিটিতে আরো উল্লেখ করা হয় যে, বেশকিছু সদস্য রাষ্ট্রের নেতিবাচক ভূমিকার কারণে জাতিসংঘ মায়ানমারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণে ভীষণভাবে ব্যর্থ হচ্ছে। এই ধরনের ব্যর্থতা বিশ্ব শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।  

যৌথ এই বিবৃতিটিতে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বেশ কয়েকটি দেশ ও সংস্থার অসংগতিপূর্ণ ও বৈপরীত্যপূর্ণ ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানানো হয়, কারণ অনেকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শরণার্র্থীদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার ভূমিকা রাখলেও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিষয়ে তাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। এতে আরো বলা হয়, মায়ানমারে সামরিক জান্তা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে জাতিগত গণহত্যা চালাচ্ছে। অথচ এই বর্বরতার জন্য সামরিক জান্তাকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হচ্ছে না। জাতিগত গণহত্যার অনস্বীকার্য প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও, জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। অথচ সেসব দেশ এবং সম্প্রদায় বাংলাদেশকে রোহিঙ্গাদের অধিকারের ব্যাপারে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে। এগুলো ভণ্ডামি এবং দুঃখজনক। সিসিএনএফ এবং ইক্যুইটিবিডি পশ্চিমা দেশগুলো এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে শুধু কথা না বলে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। বিবৃতিতে রোহিঙ্গা কর্মসূচিতে ক্রমাগতভাবে অর্থায়ন কমে যাওয়ার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, গত জুন পর্যন্ত ২০২৩ সালের জন্য ২৪ দশমিক ৬ শতাংশ সংগ্রহ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে কমানো হয়েছে পরিবার প্রতি খাদ্য বরাদ্দ। 

যৌথ বিবৃতিতে অবিলম্বে সমন্বিত বৈশ্বিক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়, পাশাপাশি জরুরি তহবিল প্রদান, নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য কূটনৈতিক চাপ এবং মিয়ানমার সরকারকে জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

শেয়ার করুন