যুক্তরাষ্ট্রের
ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে
বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির মামলা বাতিলের দুটি আবেদন ১৩
জানুয়ারি খারিজ করে দেয় নিউইয়র্কের
আদালত। এবার আদালতের সেই
আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছে ফিলিপাইনের
রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন বা আরসিবিসি। খবর
রয়টার্স ও ম্যানিলা টাইমসের।
আরসিবিসি বলেছে, বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় কোনোভাবেই আরসিবিসির দায়বদ্ধতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ জন্য আরসিবিসি
মামলাটিকে জোরালোভাবে মোকাবিলা করতে থাকবে। পাশাপাশি
মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে
আপিল করাসহ সমস্ত বিকল্প বিবেচনা করবে।
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত
রাতে নিউইয়র্কের ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের
রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি
১০ লাখ মার্কিন ডলার
চুরির ঘটনা ঘটে। এর
মধ্যে দুই কোটি ডলার
শ্রীলঙ্কা থেকে উদ্ধার করা
হয়েছে। বাকি আট কোটি
ডলারের বেশি ফিলিপাইনের আরসিবিসি
ব্যাংক হয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি
ও প্রতিষ্ঠানের কাছে চলে যায়।
ওই অর্থ এখনো ফেরত
পায়নি বাংলাদেশ।
চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে ২০১৯
সালের ৩১ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের
ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট ফর দ্য সাউদার্ন
ডিস্ট্রিক্ট অব নিউইয়র্ক বা
ফেডারেল আদালতে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ মামলায় আরসিবিসিসহ ২০ ব্যক্তি ও
প্রতিষ্ঠানকে অভিযুক্ত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
পরে ওই মামলা বাতিলে
সংশ্লিষ্ট আদালতে আবেদন করে আরসিবিসিসহ ছয়
ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। আইনি
প্রক্রিয়া শেষে ফেডারেল আদালত
২০২০ সালের ২০ মার্চ মামলা
বাতিলের ওই আবেদন খারিজ
করে মামলাটি ফেডারেল আদালতের বদলে স্টেট কোর্টে
পরিচালনার নির্দেশ দেন। এরপর ২০২০
সালের ২৭ মে নিউইয়র্কের
সুপ্রিম কোর্ট তথা, স্টেট কোর্টে
নতুন করে মামলা করে
বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের করা এই মামলা
থেকে অব্যাহতি পেতে নতুন আদালতেও
মামলা বাতিলের আবেদন করে আরসিবিসিসহ ছয়
আসামি। তাদের এ আবেদনের ওপর
একাধিক দফায় শুনানি হয়।
সর্বশেষ ১৩ জানুয়ারি নিউইয়র্কের
সুপ্রিম কোর্ট আরসিবিসি ও ছয় আসামির
করা মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ করে দেয়। রায়ে
নিউইয়র্কের সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, নিউইয়র্কের ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের
রিজার্ভের অর্থ চুরির ক্ষেত্রে
আরসিবিসির উদ্দেশ্যপ্রণোদিত যোগসাজশ ছিল। আরসিবিসির নিউইয়র্কের
হিসাব এবং আরসিবিসির ফিলিপাইনের
অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের সহযোগিতা না থাকলে নিউইয়র্কের
ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে এ অর্থ
অন্য কোথাও যাওয়ার সুযোগ ছিল না।
নিউইয়র্কের আদালত আরসিবিসিসহ অভিযুক্ত আসামিদের আগামী ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে
তাদের জবাব দাখিলের নির্দেশ
দিয়েছেন। পাশাপাশি এ বিষয়ে মধ্যস্থতারও
নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। মামলা
খারিজের আবেদন বাতিলের সর্বশেষ রায়ের বিরুদ্ধে এবার আদলতে আপিল
করেছে আরসিবিসি।