২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৯:৩৮:৩৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :


আবারও তৃণমূল থেকে সূচনায় বিএনপি
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০২-২০২৩
আবারও তৃণমূল থেকে সূচনায় বিএনপি


বিএনপি আবারও তৃণমূলের আন্দোলনে ফিরেছে। গত ২০২২ সনের ফেব্রুয়ারিতে দেয়া ঘোষণা অনুসারে মার্চের প্রথম দিকে তৃণমূল থেকে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বিভাগীয় সমাবেশ করে ওই পর্বের সমাপ্তি টানে। আবারও তার এ বছরের সূচনায় সেই তৃণমূলে ফিরল তারা। সম্প্রতি নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত ঢাকার সমাবেশে মির্জা ফখরুল ১১ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে ‘গণপদযাত্রা’ অনুষ্ঠান করবে। 

যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ৪ ফেব্রুয়ারি দশ সাংগঠনিক বিভাগীয় সদরে সমাবেশ করেছে বিএনপি। সমমনা দলগুলোও একযুগে এই কর্মসূচি পালন করেছে। বিভাগীয় সমাবেশের পর দলটি ইউনিয়ন পর্যায়ে যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে ওই গণপদযাত্রার ঘোষণা। এ কর্মসূচি ঘোষণা করতে গিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘গ্যাস, বিদ্যুৎ, চাল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চলমান যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।’

ওইদিন বিএনপির পল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনের সড়কে অস্থায়ী মঞ্চে প্রধান অতিথি বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ঢাকায় কখন পদযাত্রা হবে, সেটা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে। সরকারের দমন-নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিরোধী দলের গ্রেফতার, নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং গ্যাস, বিদ্যুতের দাম কমানোসহ ১০ দফা’ দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করেছিল ঢাকা মহানগর বিএনপি। ওই সময়েই ফখরুল বলেন, ‘এবার আমাদের কর্মসূচি হবে ইউনিয়ন পর্যায়ে। এরপর উপজেলা, জেলা, মহানগর, সর্বশেষ কেন্দ্রীয় পর্যায়ে কর্মসূচি দিয়ে জনগণকে নিয়ে তাদের ক্ষমতার মসনদ দখল করে নেবো।’ 

এর আগে গত ২০২২ সনের ফেব্রুয়ারিতেও বিএনপি প্রথম ইউনিয়ন পর্যায়ে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করে আন্দোলনের সূচনা করেছিল। যার সুফল তারা পেয়েছিল বিভাগীয় সমাবেশে বিপুল পরিমাণ মানুষের উপস্থিতি। সরকার দলের বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে পায়ে হেঁটে, সাইকেলে করে বা নিজস্ব বাহনে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে সমাবেশে উপস্থিত হয়েছিলেন অনেকেই চিড়া-মুড়িসহ শুকনা খাবার নিয়ে। সে সময় ইউনিয়ন পর্যায়ে বা তৃণমূলে সভা-সমাবেশ, লিফলেট বিতরণ করার উদ্দেশ্য ছিল গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে।

সে সময় বিএনপির ১১ দিনের কর্মসূচি ছিল- ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ। ২৮ ফেব্রুয়ারি বিভাগীয় সদর ও মহানগরে বিক্ষোভ সমাবেশ। ২ মার্চ সারা দেশে সমস্ত জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ। ৫ মার্চ সারা দেশে উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ। ৬ মার্চ ছাত্রদলের উদ্যোগে সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ। ৮ মার্চ সার দেশে যুবদলের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ। ৯ মার্চে স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ। ১০ মার্চ কৃষক দলের উদ্যগো সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ। ১২ মার্চ বিএনপির উদ্যোগে সারা দেশে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে হাট, বাজারে সভা, পথসভা ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি। এরপর আবার দ্বিতীয় দফার কর্মসূচিতে থাকে বিভাগীয় পর্যায়ে মহাসমাবেশ। যা শুরু হয় চট্টগ্রাম থেকে এবং এক এক করে অনুষ্ঠিত হয়ে শেষ হয় ঢাকায় গোলাপবাগ মাঠে মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে। নাটকীয়তায় ভরা ঢাকার সমাবেশ নিয়ে প্রশাসন ও সরকারের সঙ্গে ঘটে অনেক কিছু। সমাবেশের আগে মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাস, রুহুল কবীর রিজভীসহ কেন্দ্রীয় বহু নেতাকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যাদের অনেকেই এখনো কারাগারে বন্দি। বিএনপির ওই আন্দোলনে অনেক কিছুর প্রমাণ দিয়েছে। অনেকেই ভাবতো এমনকি প্রকাশ্যেও সমালোচকরা বলতেন, বিএনপি শেষ। তাদের কোনো সাপোর্টই নেই। যোগ্যতা নেই। মানুষ বিএনপিকে পছন্দ করে না ইত্যাদি। বিএনপি গত ২০২২ সনের আন্দোলন এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলন প্রমাণ করে বিএনপির শক্তি অটুট এবং অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে সে সমর্থন দলটির আরো বেশি। 

বিএনপি তৃণমূল থেকে আবারও শুরু করতে যাওয়া এবারের আন্দোলন শেষ পর্যন্ত বড় ধরনের আন্দোলনে রূপ দেবে বলে জানা গেছে। কারণ এ বছরের শেষ মুহূর্তে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন। বিষয়টি আচ করে বিএনপির পাশাপাশি রাজপথে মহড়া দিচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও।

শেয়ার করুন