২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৬:০০:৩২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :


যুক্তরাষ্ট্রে স্টুডেন্ট ভিসায় আগতদের সামনে স্বপ্নের হাতছানি
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০৩-২০২৩
যুক্তরাষ্ট্রে স্টুডেন্ট ভিসায় আগতদের সামনে স্বপ্নের হাতছানি


গত দেড় দুই বছরে ব্যাপকসংখ্যক বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী উন্নত শিক্ষা গ্রহণ এবং উন্নত জীবনের আসায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসছেন। বর্তমান বাইডেন প্রশাসনের আমলে যে পরিমাণ স্টুডেন্ট বাংলাদেশ থেকে আসছে তা এর আগে আর দেখা যায়নি। বাংলাদেশের অবস্থা খারাপ দেখে অনেকেই জীবনবাজি রেখে নদী-পাহাড় বনজঙ্গল এবং নদী পেরিয়ে জেল খেটে আমেরিকায় আসছিলেন। তাদের মধ্যে অনেকেই সীমান্তে আসার আগেই মৃত্যুবরণ করেন। আবার সীমান্তবর্তী নদীতে বেশ কয়েক জন প্রাণ হারিয়েছেন। আবার তাদের মোটা অংকের অর্থ খরচ করে দালালালের মাধ্যমে আসতে হয়েছে। কিন্তু সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। এখন বাংলাদেশ থেকে লিগ্যাল ওয়েতে অল্প অর্থে আমেরিকায় এসে লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছেন। স্টুডেন্ট হিসাবে যারা আসছেন তারা আসার পর যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন, সেখানে এক বছরের মতো অবস্থান করেন। তার পর তারা সুযোগ বুঝে নিজেদের পছন্দের স্টেটগুলোতে আসছেন ট্রান্সফার নিয়ে।

স্টুডেন্ট ভিসায় বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা শিক্ষার্থীর বড় একটি অংশ অর্থসংকটের কারণ নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন স্টেটে অড জব করছেন। কারণ তাদের হাতে আর কোনো অফসন নেই। তারা অড জবের পাশাপাশি লেখপড়াও চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের মধ্যে কেউ রেস্টুরেন্টে, আবার কেউ গ্রোসারি কিংবা খুচরা স্টোরে কাজ নিচ্ছে। প্রত্যাশা অনুযায়ী পারিশ্রমিক তারা পাচ্ছেন না। আর তাদের সীমাবদ্ধতার সুযোগ নিচ্ছেন দোকান মালিকরা।

উল্লেখ্য, প্রতি বছর ৫ লাখের অধিক ছাত্রছাত্রী বিদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চীন ও ভারতীয়। গত বছর বাংলাদেশ থেকেও এসেছেন ১০ হাজার ৫৯৭ জন। অন্যদিকে ভারতীয় এসেছেন ১ লাখ ২৫ হাজার। স্টুডেন্ট ভিসাপ্রাপ্তরা বিবাহিত হলে সঙ্গে তার স্বামী/স্ত্রী এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানও আসতে পারেন। তারা ভিসার আবেদনের সময় নিজের আর্থিক সক্ষমতার পক্ষে ডকুমেন্ট সাবমিট করেন। অনেকে আসার সময় মোটা অংকের অর্থও সঙ্গে আনেন। পরে তারা অভিভাবককে বিব্রত করতে চান না বলে অনেকেই পরিচিতজনের মাধ্যমে কাজে লিপ্ত হন। অভিভাবককে দেখাতে চান যে নিজে অর্জিত অর্থে লেখাপড়া করছেন। এটি বাস্তবে সম্ভব হলেও কর্তৃপক্ষ যখন জানতে পারে যে, বেআইনিভাবে ছাত্রটি কাজ করছে, তখন সঙ্গে সঙ্গে তার ভিসা বাতিল হয়ে যায়। ভিসা বাতিল হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ছাত্রছাত্রীর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস একেবারেই অসম্ভব হয়ে ওঠে। তবে যারা ভিসা বহাল থাকাবস্থায় সিটিজেনকে বিয়ের মাধ্যমে কিংবা রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা অথবা নির্যাতিত হিসেবে স্ট্যাটাস অ্যাডজাস্টের সুযোগ পান, তাদের কথা আলাদা। অন্যথায় ভিসা লঙ্ঘনকারীরা কখনোই স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের সুযোগ পান না। অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করে বলেছেন, যারা বৈধভাবে আসছে তাদের কষ্ট করে হলেও লেখপড়া চালিয়ে যাওয়া উচিত। কাজের প্রয়োজন হলে তারা নিজের বিশ্ববিদ্যালয়েও কাজে সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেন এবং লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারেন। আবার বেশ কয়েক জন আইনজীবী বলেছেন, তারা ভালো ফলাফল করলে এবং লেখাপড়া শেষ করলে চাকরি নিয়ে স্থায়ী বৈধভাবে বসবাসের সুযোগ পাবেন। সুতরাং এই সুযোগটি হাতছাড়া করা উচিত হবে না। মাত্র কয়ে বছর কষ্ট করলেই তারা স্বপ্নের দেশে তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারবেন। সুতরাং এটা তাদের জন্য আপার সম্ভাবনা।

শেয়ার করুন