২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৯:৪৬:০১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে রওশনের নির্দেশ
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-০৩-২০২৩
নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে রওশনের নির্দেশ রওশন এরশাদ


নির্বাচনি বছরের মার্চ পেরিয়ে এপ্রিল শুরু হতে চললো। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাকি ৮-৯ মাসের মত। এ সময়ে বাংলাদেশের রাজনীতির মাঠ টালমাটাল। প্রতিটা জাতীয় নির্বাচনের আগে এমনটা হলেও এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। সব দলের অংশগ্রহণ ও একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান উন্নয়ন সহযোগী দেশসমূহের। যাদের প্রত্যাশাকে বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিতেই হচ্ছে। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশসমূহ দীর্ঘদিন থেকেই ওই প্রত্যাশা রেখে চলেছে। বিশেষ করে ২০১৪ ও ২০১৮ সনের নির্বাচনের মত যেন না হয় সে তাগিদ। ফলে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলসমূহের একটি বিএনপির দাবি নির্বাচনে অংশ নেবে তারা, কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন। বর্তমান নির্বাচন কাঠামোতে নয়। এ নিয়ে এখন রাজনীতির মাঠে তোলপাড়। যোগ দিয়েছেন এতে ভিনদেশীরাও। তারা তাদের অবস্থান থেকেও সরছে না। সব দলের অংশগ্রহণে হতে হবে নির্বাচন। এমনি মুহূর্তে চলছে নানামুখী দেন দরবার। বিদেশীদের কাছে ধরনা দেয়াও চলছে দেশের প্রধান দুই দলের। 

এই সময়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান শরীক দল জাতীয় পার্টির ঘোষণা- বর্তমান নির্বাচন কাঠামোতেই আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে জাতীয় পার্টি। জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ এমপি ওই ঘোষণা দিয়ে দিয়েছেন। এতে করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শক্তি ও তারা যে দাবিটা নিয়ে রয়েছে তাতে আরো জোরালো হলো। কেননা দেশে এ মুহূর্তে জাতীয় পার্টি দেশের তৃতীয় বৃহৎ শক্তিশালী দল। 

দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় পার্টিতে অস্বস্থি ছিল। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের এমপি জড়িয়ে ওই দ্বন্দ্বে। আপাতত সেগুলো কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছেন তারা। জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ এমপি বলেছেন, জাতীয় পার্টিতে কোনো বিভেদ নেই। এরশাদের রেখে যাওয়া নির্দেশনা মতে চলবে পার্টি।

একই সঙ্গে তিনি কিছুটা হুমকির ছলেও চলেছেন, যারা তার (এরশাদের রেখে যাওয়া) নির্দেশনা মানবেন না, তারা পার্টি ও নিজের ক্ষতি ডেকে আনবেন। নতুন পুরাতন নবী-প্রবীণসহ ত্যাগী নেতাকর্মীদের একসঙ্গে নিয়েই দলের কর্মকা- পরিচালনা করলে পার্টি শক্তিশালী হবে। 

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গ 

পার্টি উপদেষ্টা ও সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতা রওশন এরশাদ এমপি বলেন, গণতন্ত্রের মূল শর্ত হচ্ছে নির্বাচন। যথাসময় (বাংলাদেশে) জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।  সাংবিধানিক ধারা মেনেই হবে সেই নির্বাচন।  জাতীয় পার্টি বরাবরই নির্বাচনমুখী দল। প্রতিষ্ঠার পর থেকে পার্টি সব নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। তাই আগামী নির্বাচনেও অংশ নেবে জাতীয় পার্টি। 

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে হবে। দলকে তৃণমূল পর্যায়ে আরও সুসংগঠিত করতে হবে। এখন থেকেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিজ নিজ আসনে গণসংযোগ শুরু করতে হবে।  এজন্য সর্তকতার সঙ্গে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। সম্প্রতি (গত সোমবার) রাজধানীর গুলশানে একটি কনভেশন সেন্টারে মহান স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভা,  ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রওশন এরশাদ এ কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশ নানা বিবর্ণ সময় অতিক্রম করে এখন উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত। যার পথধারায় দেশের স্বর্ণোজ্জ্বল উন্নয়নের ইতিহাসে ৯ বছরের সফল রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নাম লেখা রয়েছে। অসহায় হতদ্ররিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফোটাতেই রাজনীতি ও সরকার পরিচালনা করে গেছেন পল্লীবন্ধু।  জাতীয় পার্টির শাসনামলে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে এরশাদ ছিলেন কঠোর। আর রমজান মাসে নিত্যপণ্য সাধারণ মানুষের ক্রয়-ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিতে তার ছিল কঠোর নজরদারি। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা  

রওশন এরশাদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর (শেখ হাসিনা) চেষ্টায় উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা পবিত্র রমজানের সিয়াম সাধনাকে তোয়াক্কা না করে সব নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করে চলছে। দ্রব্যমূল্যের ভয়াবহ ঊর্ধ্বগতি নিম্নআয়ের মানুষের জীবন জীবিকা দুর্বিষহ করে তুলছে। এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে নিত্যপণ্যের এমন কোনো দ্রব্য নেই, যার দাম বৃদ্ধি পায়নি? এদের জন্য দেশের গণতন্ত্র, স্থিতিশীলতা আর উন্নয়নের উজ্জ্বলতা ম্লান হয়ে পড়ছে। এতে স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মাহুতি দানকারী শহিদদের আত্মা কষ্ট পাচ্ছে। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন- রাহগির আল মাহি সাদ এরশাদ এমপি, সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী মামুনূর রশীদ, মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা, মশিউর রহমান রাঙ্গা, সাবেক প্রতিমন্ত্রী গোলাম সরোয়ার মিলন, প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু এমপি, সাবেক উপদেষ্টা রফিকুল হক হাফিজ, প্রেসিডিয়াম সদস্য নাজমা আক্তার এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য ক্বারী হাবিবুল্লাহ বেলালী, সাবেক প্রেসিডিয়াম ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা রওশন আরা মান্নান এমপি, সাবেক উপদেষ্টা জিয়াউল হক মৃধা ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম নূরু। 

তবে অনুষ্ঠানে ছিলেন না দলের চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের এমপি। মহাসচিব মো: মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কো-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি প্রমুখ। 

শেয়ার করুন