২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০১:৩৩:৩১ পূর্বাহ্ন


বিএনপির ‘এক দফা’ আন্দোলন কবে কখন?
মাসউদুর রহমান
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৭-২০২৩
বিএনপির ‘এক দফা’ আন্দোলন কবে কখন? বিএনপির আন্দোলন


বিএনপির ঈদ-পরবর্তী আন্দোলন নিয়ে হাসিঠাট্টা কম হয়নি! ক্ষমতার বাইরে চলে গিয়ে বিএনপি বহুবার এমন আলটিমেটাম দিয়েছে, ঈদের পর কঠোর আন্দোলনে নামবে। কিন্তু বাস্তবে তেমনটা হয়ে ওঠেনি। ফলে এ নিয়ে ক্ষমতাসীন দল থেকেও বহু ব্যঙ্গাত্মক, তীর্যক বাক্য হজম করতে হয়েছে দলটিকে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বহুবার এ নিয়ে বলেছেন। আওয়ামী লীগও চাচ্ছিল বিএনপি সরব হোক। সরকারবিরোধী আন্দোলন হোক। এতে বহির্বিশ্বকে জানান দেওয়া যাবে, একতরফা রাষ্ট্রপরিচালনা করছে না ক্ষমতাসীনরা, বিরোধীরাও অ্যাকটিভ, তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়। দেশে গণতন্ত্র চর্চা হচ্ছে দারুণভাবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একবার (১১ এপ্রিল ২০২২) আফসোস করে বলেছিলেন, ‘শক্তিশালী বিরোধীদল আমরা পাচ্ছি না। অপজিশন বলতে যারা আছে, তার মধ্যে দুটিই হচ্ছে মিলিটারি ডিক্টেটর, একেবারে সংবিধান লঙ্ঘন করে, আর্মি রুলস ভঙ্গ করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল, তাদের হাতে গড়া। কাজেই তাদের ঠিক ওই মাটি ও মানুষের সাথে যে সম্পর্ক, সেই সম্পর্কটা তাদের মধ্যে নেই। তাদের কাছে ক্ষমতাটা ছিল একটা ভোগের জায়গা। সেক্ষেত্রে আসলে অপজিশন তাহলে কোথায়? এখানে একটা পলিটিক্যাল সমস্যা কিন্তু আছে।’ সে যা হোক বিএনপির এবারের ঈদের পরও একদফা বা চূড়ান্ত আন্দোলনের একটা কথাবার্তা মিডিয়ায় বিভিন্নভাবে উপস্থাপনা হলেও বাস্তবে সেটা কিন্তু হচ্ছে না। অর্থাৎ এবারও ঈদের পর বিএনপির কোনো বড় আন্দোলনের রূপরেখা বা কর্মসূচি এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। 

বাস্তবতা তাহলে কী

দিন যায়, মাস। তিলে তিলে বিএনপিও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। নানা কর্মসূচি শুরু করে। তৃণমূলে যে অগোছালো ছিল সংগঠন, সেটা সংগঠিত করায় মনোনিবেশ করে। কিন্তু ক্ষমতাসীনদের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেয়নি তারা। এখন তারা সুসংগঠিত। শক্তিশালী সর্বদিক থেকেই। কিন্তু এটাও এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে গেছে আওয়ামী লীগ ও তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন জোটের। ক্ষমতাসীন দলের কথাবর্তায় এখন শুধুই বিএনপি। যদিও বিএনপির তেমন কার্যকর অস্তিত্ব ক্ষমতাসীন দল স্বীকারই করে না, উপরোক্ত বক্তব্যে সেটা প্রকাশ। এমন প্রেক্ষাপটে বিএনপি মনে করছে, আন্দোলন-টান্দোলন আর কীসের। তাই ঘর গোছানোর কাজে মনোনিবেশ করে। 

বিএনপি নিজেদের প্রমাণে যথেষ্ট কিছু করে দেখিয়েছে (তাদের ভাষায়)। বিদেশিরাও বুঝতে পেরেছেন যে, দেশে কার্যকর বিরোধী পক্ষ রয়েছে। যেমন বিভাগীয় সম্মেলনসমূহ। সেখানে সরকার কর্তৃক যেভাবে মানুষ পরিবহন ধর্মঘটের মধ্যেও দীর্ঘপথ পায়ে হেঁটে, বিভিন্ন উপায়ে দুই-তিন দিন আগে এসে সম্মেলনে যোগ দিয়েছিল, তাতে দলটির প্রতি তাদের ভালোবাসা ও সমর্থনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিগুলো তো আছেই। যেগুলো করতে গিয়ে অন্তত কুড়ির অধিক (বিএনপির ভাষ্যমতে) মানুষ জীবন দিয়েছে। 

জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এ বছরের ডিসেম্বর অথবা পরের বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। কিন্তু সেই বিএনপি এখনো কোনো কার্যকর ও কঠোর আন্দোলন করছে না কেন? কারণ বিএনপির দাবি এ সরকারের পদত্যাগ করে যেন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ক্ষমতা দেওয়া হয় এবং তারা একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের আয়োজন করে। ক্ষমতাসীন দল বিএনপির এ দাবি যখন পাত্তাই দিচ্ছে না, এরপরও বিএনপি অনেকটাই ধীরে চলো নীতিতে কেন? উপরন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের নেতৃত্বাধীন জোট যখন তাদের প্রত্যাশা মোতাবেক সংবিধান অনুসারেই নির্বাচন আয়োজনের দিকে ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে। ফলে বিএনপি কঠোর আন্দেলন বা একদফার যে আন্দোলন তারা করবেন বলে দীর্ঘদিন বলে আসছে সেটা সূচনা করবেন তারা কবে? এ প্রশ্ন উঠে আসছে সর্বত্র। কারণ নির্বাচনের ৯০ দিন আগে ক্ষমতাসীন সরকারকে ছেড়ে দিতে হবে ক্ষমতা। যদিও সংবিধান অনুসারে তারা ক্ষমতায় না থাকলেও ক্ষমতার প্রভাবটা তাদের একরকম থাকবেই। কারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্বটা নির্বাচন কমিশনের এবং সেটা নিরপেক্ষ থেকে। ক্ষমতাসীনরা সেটাতে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না; কিন্তু বাস্তবতা কী সেটা হবে?  

কী হতে পারে এখন 

জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ চলছে। বিএনপি এখনো একদফা আন্দোলনের রূপরেখা তৈরিতে ব্যস্ত। কখনো তারা বলছে একদফা আন্দোলনেই তারা। আবার কখনো বলছেন, খুব শিগ্গিরই এ আন্দোলন শুরু হবে। কিন্তু এখনো বিএনপি নিজেদের ও শরিক দলের মধ্যে সলাপরামর্শে ব্যস্ত। তাহলে কবে সে আন্দোলন? একদফা কঠোর আন্দোলন? এ প্রশ্নে বিভোর এখন দেশের মিডিয়া ও একশ্রেণির মানুষ। প্রতিনিয়ত বিএনপির কাছে এ প্রশ্ন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সময় হলে সেটা সবাই জানতে পারবেন এবং বিএনপির আন্দোলনের একটা কৌশল রয়েছে। সে কৌশলেই বিএনপি এগোচ্ছে। 

মির্জা ফখরুলের বক্তব্য শতভাগ সত্যি। বিএনপি দীর্ঘদিন সরকারের বাইরে থেকে অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চার করেছে। তাই তারা কৌশলী হয়েছেন। কারণ বিগত সময়ে আন্দোলন করতে গিয়ে সাধারণ কর্মীদের ওপর নেমে এসেছে দমনপীড়ন, মামলা মোকদ্দমা। এতে বরং সাংগঠনিকভাবে বিএনপি ক্ষতির সম্মুখীন। বিএনপি জানিয়েছে ৩৫ লাখের ওপর যেখানে তাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা এরপরও আন্দোলনে নেমে সে সংখ্যা বাড়ালে মাঠে আর কর্মীই খুঁজে পাওয়া যাবে না। বিএনপির শীর্ষপর্যায় থেকে নিদের্শনা, অবশ্যই সব আন্দোলন অহিংস ও শান্তিপূর্ণ হতে হবে। বিএনপি সেটাই করছে। এতে করে একদফা আন্দোলন করতে গেলে বিএনপি ধরি মাছ, না ছুঁই পানি টাইপের হলে এতে কোনো ফায়দা নেই। কাজেই সময় বুঝে কঠোর আন্দোলন করবেন। এটাই দলের প্ল্যান এমনটা জানা গেছে। প্রশ্ন আসতে পারে সময়টা কখন? সেটা বিএনপিই ভালো জানেন। তবে অনুমান, বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার মুহূর্তে যখন নির্বাচন কমিশন সব দায়িত্ব নেবে, সেটার আগে বা সে মুহূর্তে। 

বিএনপি আরো একটা বিষয়ে কঠোর নজরদারি করছে। সেটা তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ ও মহাজোট। ক্ষমতাসীনরা নানা কারণে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে গেছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে প্রকাশ্যেই বলছে মহাজোটের শীর্ষনেতারা। ইশারা-ইঙ্গিতেও যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর সমালোচনা। এতে পশ্চিমা জোট কিছুটা হলেও ক্ষিপ্ত বা মনঃক্ষুণœ। ফলে তারাও একজোট, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন যাতে অবাধ সুষ্ঠু হয়, সে লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে। ইতিমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছে ভিসানীতি। যেটাতে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে বাধাদানকারী ও বাস্তবায়নকারীদের সে দেশে ভিসা দেবে না। উপরন্তু ভিসা থাকলেও তাদের ফ্যামিলি মেম্বারদের ভিসাও বাতিল করবে। একই বিষয় অনুসরণের ঘোষণা কানাডার। যদিও সরাসরি মার্কিন নীতি তারা ফলো করবে না, তবে ভিন্নভাবে। মার্কিনিরা যা করে, সেটাকে কে কে সাপোর্ট দেয়, সেটা ইউক্রেন- রাশিয়া যুদ্ধে স্পষ্ট। বাংলাদেশের বেলায়ও ওই জোটের নীতিগত একাত্মতা অসম্ভব কিছু না। 

আপাতত ক্ষমতাসীন রাজপথে বিএনপি ও তাদের সমমনাদের এবং বহির্বিশ্বে পশ্চিমা জোটকে সামলাতেই ব্যস্ত। এ দুইয়ের মধ্যে পশ্চিমা জোট সামলানোই কঠিন হয়ে গেছে। কোনোভাবেই বাগে আনা যাচ্ছে না বা পশ্চিমারা শুনছে না তাদের কথা। বরং তাদের প্ল্যানে রয়েছে অ্যাকটিভ। এরই মধ্যে অর্থাৎ ভিসানীতির পরও থেমে নেই। এ মাসে বাংলাদেশ সফরে আসছে চার সদস্যের একটি মার্কিন শীর্ষ প্রতিনিধিদল। যার নেতৃত্বে থাকবেন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের রাজনীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড। তবে জানা গেছে, দলটি একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে গড়া। ওই প্রতিনিধিদলে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লুর নামও রয়েছে। এর পাশাপাশি জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনের ঢাকা সফর, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বক্তব্যসহ বহির্বিশ্ব থেকে আসছে নানা চাপ।  

এটা এখন বড় প্রবলেম হয়ে গেছে। কারণ ২০১৪ ও ২০১৮-এর মতো যেন নির্বাচন না হয়, সেদিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি তাদের এবং ওই নির্বাচন পরিচালনা ও সহযোগিতায় যারা ছিলেন তাদের জন্যও এবং ভবিষ্যতে ২০২৩ বা ২০২৪-এর নির্বাচনে যারা নির্বাচন পরিচালনা করবেন, তারাও দুশ্চিন্তায়। কারণ ভিসানীতিটা খুবই অ্যাফেকটিভ হয়েছে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে, এ দাবি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। 

এমনি মুহূর্তে বিএনপিকে মাঠে নেমে আন্দোলন করার তেমন কিছু নেই। এতেই বিএনপি সবকিছুতে চোখকান খোলা রেখে এগোচ্ছে। আন্দোলন তারা করবেন, সময় মতো, কিন্তু তাই বলে এক্ষুনি তা নয়। কারণ বিএনপির যে কাজগুলো করতে হতো, সেগুলো বাস্তবায়নে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে পশ্চিমা জোট। বিএনপি মাঠে নেমে কেন অহেতুক মার খাবে, আন্দোলন করবে। বিএনপি এ কৌশলই সম্ভবত গ্রহণ করেছে। 

দলটির একটি সূত্র জানায়, বিএনপি সিদ্ধান্তই নিয়েছে বড় কোনো আন্দোলন এ মুহূর্তে নয়। একই সঙ্গে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদেরও ফ্রন্টফুটে গিয়ে এমন কিছু না করতে যাতে মামলা, ধরপাকড়ের শিকার হতে হয়। নিজেদের শক্তি অক্ষুণ্ণ রেখে কেন্দ্রের নির্দেশনা যখন আসবে, সে অনুসারে পদক্ষেপ গ্রহণেরই তাদের ওই নির্দেশনা।

কী বলছে বিএনপি 

গত শনিবার (১ জুলাই) বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ঈদ-পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়কালে চলমান আন্দোলন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সারা দেশে ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ হচ্ছে। সামনে আমাদের পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু হবে। আশা করি, একদফা নিয়েই আমরা আন্দোলনে যাবো। আমাদের যে পূর্বঘোষিত ১০ দফা এবং অন্য যুগপৎ আন্দোলনকারী দলগুলোর যেসব দফা আছে সব মিলিয়ে একদফার আন্দোলনে যাবো। আর সেটা হচ্ছে, এই অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে এবং নতুন নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠান। এগুলোকে নিয়ে আমরা একটি জায়গায় আসছি। সেটা হচ্ছে এ সরকারের পদত্যাগ। মির্জা ফখরুল বলেন, এবার আন্দোলনের ধরনে পরিবর্তন আসবে। ভিন্নধারার আন্দোলনে জনগণের সম্পৃক্ততাও বাড়বে। আমরা শুরু থেকেই জনগণকে সম্পৃক্ত করে আন্দোলন করছি। আমি বিশ্বাস করি, আগামী দিনের একদফার আন্দোলনের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে সরকার নতি স্বীকার, পদত্যাগ এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে বাধ্য হবে।

একদফার আন্দোলনের ধরন কেমন হবে-এমন এক প্রশ্নের উত্তরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি, আমরা হরতাল-অবরোধের মতো কোনো কর্মসূচিতে সচেতনভাবে চাচ্ছি না। আমাদের ভায়োলেন্সে যাওয়ার প্রশ্নই উঠতে পারে না। সরকার যদি কোনোভাবে আমাদের সহিংসতার দিকে ঠেলে দেয়, তবে সে দায় সরকারের। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে চূড়ান্ত পর্যায়ে যেতে চাই। 

পরিশেষে 

বিএনপির এবার এগোচ্ছে এ সরকারের বিপক্ষে অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে। কারণ ২০১৪-এর নির্বাচনের আগে কঠোর আন্দোলনে বিএনপিকে অনেক সমালোচনা ও অপবাদের দায় মাথায় নিতে হয়েছে। যার মধ্যে আগুনে মানুষ পুড়িয়ে (কথিত আগুন সন্ত্রাস) মারা। বাসে পেট্রল বোমা নিক্ষেপসহ অনেক অভিযোগ। বিএনপি এর বিরুদ্ধে বলে আসছে। এবং তারা এমন কাজ করেনি, বলে অস্বীকার করে আসছে। কিন্তু হরতাল ধর্মঘট, রাজপথে মিছিল করে যাওয়ার বা আগে ওই সব দুর্ঘটনা, নাশকতা তাদের ওপরই গেছে। ফলে এবার সেই পূর্বের ঘটনার আবারও নতুন করে হওয়ার সুযোগ তারা আর তৈরি করবে না। মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি করে আন্দোলনটা তারা আর করতে যাচ্ছে না। যা-ই করবে, সেটা শান্তিপূর্ণ। তাছাড়া বিএনপির প্রতিটা কর্মসূচির দিনে জানমাল রক্ষার স্বার্থে এমন দোহাই দিয়ে রাজপথে থাকছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও। বলা হচ্ছে, শান্তি মিছিল বা সভা। এটাও সম্ভাব্য সংঘর্ষের একটা ভয় তাদের। 

তাছাড়া বিএনপি তাদের করা দাবি যে সঠিক এটা ইতিমধ্যে বাংলাদেশের দাতাসংস্থা বা উন্নয়নসহযোগী বা পশ্চিমা জোট যারা গোটা বিশ্বের অর্থনীতিসহ সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করছে, তাদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছে, এটাই আপাতত তাদের বড় প্রাপ্তি। 

ফলে সব মিলিয়ে তাদের কৌশলানুসারে সময়মতোই কঠোর আন্দোলনটা করবে- দলের প্রস্তুতিটা সম্ভবত অমনই।

শেয়ার করুন