২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৩:৪০:১৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :


বর্তমান সময়ে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ মুল্যায়ন
বিএনপির কূটনৈতিক চালে বিপর্যস্ত আ.লীগ
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০৪-২০২২
বিএনপির কূটনৈতিক চালে  বিপর্যস্ত আ.লীগ বিএনপির ইফতার পার্টিতে বিদেশী রাষ্ট্রদুত, ছবি/সংগৃহীত


প্রচণ্ড হতাশা আর ক্ষোভ বিরাজ করছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে। এসব ক্ষোভ হতাশার আগুন গিয়ে পুড়ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সরকারের ভাবমূর্তি উন্নতিতে এ বিভাগটি তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেনি বলেই তাদের অভিমত। 

এ মন্ত্রণালয়ের যথার্থ পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় একের পর এক ইমেজ সংকটে পড়ছে সরকার। মাত্র কয়েক মাস আগে দেশে-বিদেশে এক ঘটনায় সরকার পড়ে মারাত্মক বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। তাহলো মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা। এটি দেয়া হয়, গত বছর ডিসেম্বরে। 

এরপরই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) তাদের ‘বৈশ্বিক প্রতিবেদন ২০২২’ প্রকাশ করে। সেখানে বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে বলা হয়, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে সংঘটিত বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন ও গুমের বিষয়ে ২০২১ সালে জাতিসংঘ, দাতা দেশ এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোর উত্থাপিত উদ্বেগ খারিজ করে দিয়েছে। বলা হয়েছে সরকার ২০২১ সালে এটা পরিষ্কার করে দিয়েছে যে এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার কোনো ইচ্ছাই তাদের নেই। 

এ নিয়ে সরকার নানাধরনের পদক্ষেপ আলাপ আরোচনা এমনকি লবিস্টও নিয়োগ করে ফেলে। আবারো আরো কিছুদিন না যেতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‌্যাব) জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে বাদ দিতে ১২টি সংস্থা জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়েরে ল্যাকবুয়াকে দেয়া চিঠিতে তোলপাড় শুরু হয়। মোটকথা, সরকারের ঘাড়ে একের পর দুর্নামের বোঝা ভারী হতে থাকে। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ?

এমন সব পরিস্থিতিতে সরকার অবশ্য একেবারে নীরব হয়ে বসে থাকেনি। তবে দেখা যাক, মন্ত্রণালয়ের কর্তধার কি কি করেছেন আর বলেছেন। ফেব্রুয়ারিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘বাজারে রটেছে যে বিদেশিরা বলেন বাংলাদেশ নাকি চীনের লেজুড় হয়ে গেছে! কারণ হিসেবে তারা বলেন, বাংলাদেশ নাকি শ্রীলঙ্কার মতো ঋণের ফাঁদে পড়ে যাচ্ছে। বাবা, ঋণের ফাঁদে পড়তে হলে তো ৪০ শতাংশ ঋণ নিতে হবে! 

জাতিসংঘসহ বিভিন্ন ফোরামে আলোচনার বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘যেহেতু আমরা রাজনৈতিক-কৌশলগত খুব ভালো অবস্থানে আছি। আমাদের আশপাশে বড় বড় দেশ এবং আমাদের সমুদ্রে অবাধে যাতায়াতের বিষয়ে তাদের অনেক বেশি আগ্রহ রয়েছে। সে জন্য এখন আমরা সবার চক্ষুকূল। আসল উদ্দেশ্য কিন্তু মানবাধিকার না, গুম-খুনও না। আসল উদ্দেশ্য এসব চাপ দিয়ে কিছু ফায়দা সংগ্রহ করা যায় কি না।’ 

তার এধরনের বক্তব্য সাহসী হলেও কূটনৈতিক মহলে বেশ সমালোচনা হয়। তবে এসব বক্তব্য বা মন্তব্য করা হলেও মন্ত্রণালয় বেশ তৎপর থাকে ইমেজ উদ্ধারে শোনা যায়। সরকার র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা  প্রত্যাহারসহ দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে। প্রতি মাসে ২০ হাজার ডলার (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা হিসেবে ১৭ লাখ টাকা) খরচ হবে এর পেছনে। 

এছাড়াও সরকার যুক্তরাষ্ট্রের মন পেতে নানান ধরনের পদক্ষেপও নেয়। এর মধ্যে সর্বশেষ ছিল ইউক্রেনের পক্ষে বাংলাদেশের ভোট দেয়া। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার জেরে সৃষ্ট মানবিক সংকট নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া প্রশ্নে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আনা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়ে দেয় বাংলাদেশ। এরপরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লেখেন, যাতে বলা হয় আগামী ৫০ বছরে ওয়াশিংটন ও ঢাকার মধ্যে অংশীদারিত্ব আরও বাড়ানোর ব্যাপারে দৃঢ় আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ৫০ বছরের মাইলফলক পালন উপলক্ষে লেখা ওই চিঠিতে তিনি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে আমাদের অংশীদারিত্ব আগামী ৫০ বছর এবং তার পরও বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। অন্যদিকে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষে এক ভিডিও বার্তায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক আরও গভীর হচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনকে একটি চিঠিও দিয়েছেন তিনি। 

এ ধরনের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও সরকারে ব্যাপক তোলাপাড় সৃষ্টি করে, নেতা-কর্মীরা বেশ উৎফুল্ল বোধ করে। কিন্তু এপরপরই আরেক খবরে সম্পূর্ণ বিষয়টি পাল্টে যায়।  ৫ এপ্রিলে এক খবরে বলা হয়, র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা তুলতে দীর্ঘ প্রক্রিয়া পার হতে হবে। ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কের সাথে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

এর পাশাপাশি জানানো হয় যে দায়িত্ব পালনকালে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) জবাবদিহি নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতো কিছুর পর এমন ফলাফলে সরকার ও আওয়ামী লীগ মোটেই প্রস্তুত ছিল না। র‌্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রশ্নে যে মার্কিন সরকার অনড় আছে তা স্পষ্ট হয়ে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তটা একটি প্রক্রিয়াগত বিষয়। ফলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা দেখা দেয়। 

তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরো হাস্যকর হয়ে ওঠে যখন আরেকটি খবর বের হয়। তাহলো বিএনপিকে নির্বাচনমুখী করতে যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য চেয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবেদন। এ নিয়ে সরকার সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়কেও মুখ খুলতে হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য ব্যক্তিগত, সরকার বা দলের নয় বলে তথ্যমন্ত্রীকে মন্তব্য করতে দেখা যায়। এরপরও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বেশ আশাতেই ছিল যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভালো কিছু।

কিন্তু সব ভুল ভেঙে দেয় যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদন। বাংলাদেশের ২০২১ সালের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম ও নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দায়মুক্তি ভোগ করে। বিচার বিভাগেও দুর্নীতি ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ঘটছে। বলা হয় আসলেই সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়। 

এ প্রতিবেদনে গত বছরের বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে দেয়া বিবরণে বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নাগরিকদের প্রতি নিষ্ঠুর, অমানবিক ও অপমানজনক আচরণ, রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার এবং অন্য দেশে অবস্থানরত ব্যক্তির ওপর রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক পদক্ষেপ নেয়া হয় বলেও বলা হয়। 

প্রতিবেদনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ওপর বেআইনি হস্তক্ষেপ, কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ উঠলে তার পরিবারের সদস্যদের শাস্তি দেয়া, বাকস্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের ওপর গুরুতর বিধিনিষেধ, সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা ও হুমকি, অন্যায়ভাবে গ্রেফতার বা বিচারের মুখোমুখি করা, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের স্বাধীনতার ওপর গুরুতর বিধিনিষেধ, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ওপর হস্তক্ষেপ, সংগঠন, তহবিল বা বেসরকারি সংস্থা ও নাগরিক সংগঠনের ওপর বিধিনিষেধমূলক আইনের বিষয়টিও চলে আসে।

এমনকি প্রতিবেদনে খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গও উঠে আসে। এতে বলা হয়, দুর্নীতি ও তহবিল তছরুপের দায়ে ২০১৮ সালে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয় খালেদা জিয়াকে। যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় আইনজীবীদের অভিমত বলে উল্লেখ করে বলা হয় খালেদাকে দোষীসাব্যস্ত করার মতো উপাদান এই মামলায় ছিল না, বরং তাকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে রাখার কৌশল ছিল।

কূটনৈতিক মহলের সাথে বিএনপির ইফতার 

এদিকে আরেকটি খবরে চমক লাগে রাজনৈতিক অঙ্গনে। এতে দেখা যায় ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সম্মানে যে ইফতার মাহফিলের করেছে বিএনপি তাতে এতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসন, ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীসহ বিদেশি কূটনীতিকের উপস্থিতি। 

এর পশাপাশি আরো আলোচনার জন্ম দেয় রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে অনুষ্ঠিত ওই ইফতারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হওয়া ও  বক্তব্য দেয়া। এছাড়া এতে খালেদা জিয়ার ওপর একটি ভিডিও দেখানো হয়। ইফতারের আগে কূটনীতিক ও মিশন প্রধানদের উদ্দেশে দেয়া স্বাগত বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আগে সব সময় আমাদের দলের চেয়ারম্যান খালেদা জিয়া আপনাদের সঙ্গে ইফতারে করতেন। তিনি আজ গৃহবন্দি অবস্থায় আছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আজ বিদেশে অবস্থান করছেন।’

এর বিপরীতে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ইফতারের আয়োজন করেছিল আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটি। এতে উপস্থিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তবে ইফতার পার্টি বলে এ সময় তিনি কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য দেননি। মাত্র এক মিনিটের কম সময়ে বক্তব্য শেষ করেন তিনি। সবাইকে রমজানের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, এটা ইফতার পার্টি। 

এখানে কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে চাই না। এ সময় বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সঙ্গে আরো দৃঢ় সম্পর্ক গড়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। এ নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেছেন ভিন্নকথা। বিষয়টির মধ্যে আসলে ফুটে ওঠে সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নানান ধরনের দুর্বলতা। বোঝা যাচ্ছে, সরকারের সাথে বিদেশিদের একটা ভালো গ্যাপ তৈরি হয়েছে। ইফতার কূটনীতিতেও সরকার পারদর্শিতা দেখাতে পারেনি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকমহল মনে করেন ইফতারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হওয়া ও  বক্তব্য দেয়াটা কুটনৈতিক মহলের সাথে তাদের একটা সর্ম্পকের ব্যাপারে সরকারের প্রতি একটা মেসেজ। 

শেষ কথা

দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক সামর্থ্যরে অনুপাতে ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কোনো ধরনের ঝুঁকিতে নেই। বরং খুব ভালো অবস্থানে আছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ গ্রহণযোগ্য। এর মধ্যে জিডিপির ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বিদেশি ঋণ থাকতে পারে। বর্তমানে বাংলাদেশের এ হার ৩২ দশমিক ৪ শতাংশ। জিডিপির আকার এখন ৪১৬ বিলিয়ন ডলার। 

অন্যদিকে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোয় বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি চলতি অর্থবছরে তাদের আগের প্রাক্কলনের চেয়ে ১ দশমিক ৩ শতাংশ পয়েন্ট বেড়েছে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। বিশ্বব্যাংক বলেছে, রফতানি খাতের পুনরুদ্ধার আর ভোগব্যয় বৃদ্ধির কারণে তাদের আগের হিসাবের চেয়ে প্রবৃদ্ধি বেশি হবে। বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রাক্কলন অনুযায়ী গত জুনের প্রাক্কলনের তুলনায় ভুটান ও মালদ্বীপের প্রবৃদ্ধি কমানো হয়েছে, ভারতের একই প্রাক্কলন রয়েছে। ২০২২ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন ভারতের ৭ দশমিক ৫, পাকিস্তানের ৩ দশমিক ৪, নেপালের ৩ দশমিক ৯, ভুটানের ৩ দশমিক ২, শ্রীলঙ্কার ২ দশমিক ১ এবং মালদ্বীপের ১১ শতাংশ। 

দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের জন্য বিশ্বব্যাংকের এধরনের রিপোর্ট খুবই ভালো। দেশবাসীর জন্যও উৎসাৎব্যঞ্জক বটে। কিন্তু পররাষ্ট্র ক্ষেত্রে সরকার ইমেজ উদ্ধারে খুব একটা তৎপরতা দেখাতে পারছে না। যা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বিশেষ করে আওয়ামী লীগসহ শরিকদের মধ্যে বেশ প্রভাব ফেলছে আর সৃষ্টি করছে হতাশা ও অস্বস্তি।



শেয়ার করুন