২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৫:১৮:১৬ পূর্বাহ্ন


অতিরিক্ত ভোটার নিবন্ধনের নিন্দা ও প্রতিবাদ
বিয়ানীবাজার সমিতির নির্বাচন কমিশন গঠন
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০৮-২০২৩
বিয়ানীবাজার সমিতির নির্বাচন কমিশন গঠন


প্রবাসের অন্যতম আঞ্চলিক সামাজিক সংগঠন বিয়ানীবাজার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সমিতির আসন্ন নির্বাচন পরিচালনার জন্য গত  ১ আগস্ট পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন গঠন করেন উপদেষ্টা পরিষদ। প্রধান নির্বাচন কমিশনার মনোনীত হন মহিউদ্দিন আহমদ। কমিশনের সদস্যরা  হলেন হেলাল আহমদ, ছালেহ আহমদ মনিয়া, আব্দুন নুর ও নুরুল ইসলাম। গঠনতন্ত মোতাবেক কমিশন গঠনের পর কমিটি আগস্ট মাসের ৩০ তারিখের মধ্যেই নির্বাচন কমিশনের নিকট চূড়ান্ত ভোটার তালিকা হস্তান্তর করবেন। কমিশন চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রাপ্তির ১০ দিনের মধ্যেই নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করবেন।

এদিকে গত ৩০ জুলাই ওজনপার্কে বিয়ানীবাজার সমিতির নিজস্ব ভবনে সমিতির ইতিহাসে প্রথম বিয়ানীবাজার সমিতির সদস্য নিবন্ধন করা হয়। নিবন্ধন  শেষে  চূড়ান্ত সদস্য সংখ্যা জানানো হয় ৭ হাজার ৪৮৩ জন। হঠাৎ করে  গত ৪ আগস্ট প্রকাশিত এক  সংশোধনী সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় সাধারণ ১৭৬  ও সিনিয়র সদস্য ২০ জন যোগ করে অতিরিক্ত ১৯৬ সদস্য নিবন্ধনের কথা উল্লেখ করা হয়। ৩০ জুলাই ঘোষিত ৭ হাজার ৪৮৩ এর  পরিবর্তে ৭ হাজার ৬৭৯ সদস্য নিবন্ধন করা হয়েছে। সে  সঙ্গে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৯০৫ ডলারের জায়গায় ১ লাখ ৬২ হাজার ৪০০ ডলার হয়েছে। 

সংশোধনী সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি  

নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মিছবাহ-অপু প্যানেলের মতে চূড়ান্ত সদস্য নিবন্ধন ও প্রাপ্ত অর্থের হিসাব ৩০ জুলাই প্রবাসী বিয়ানীবাজারবাসীর উপস্থিতিতে ঘোষণার চার দিন পর সংশোধনীসংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নতুন করে ১৯৬ টি সদস্য নিবন্ধনকে কারসাজি, ভোটের ফলাফলকে পাল্টে দেওয়ার দূরভিসন্ধি। সদস্য যাচাই-বাছাইয়ে বর্তমান কমিটির ডাবল সদস্য নিবন্ধনে কমে যাওয়ার ক্ষতিকে পুষিয়ে নেওয়ার জন্য মান্নান-মাহবুব নেতৃত্বাধীন কমিটি রাতের অন্ধকারে অগঠনতান্ত্রিকভাবে অতিরিক্ত সদস্য নিবন্ধন মিছবাহ-অপু প্যানেল ও তার সমর্থকরা  মনে করেন। সভাপতি আব্দুল মান্নান সেক্রেটারি নাজমুল হক মাহবুবের সংশোধনসংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে সংক্ষুবদ্ধ হয়ে মিছবাহ-অপু প্যানেলের সমর্থকরা উপদেষ্টা বরাবর অতিরিক্ত ১৯৬ সদস্য নিবন্ধন প্রক্রিয়ার নিন্দা জ্ঞাপন ও  অগঠনতান্ত্রিক কাজের প্রতিবাদ জানিয়ে উপদেষ্টাদের প্রতিবাদলিপি প্রদান করেন। প্রতিবাদলিপিতে অতিরিক্ত ১৯৬ সদস্য পদ ভোটার তালিকায় তালিকাভুক্ত না করার জন্য আবেদন করা হয়। উপদেষ্টাদের কাছে দেওয়া প্রতিলিপিতে বলা হয়, নির্ধারিত সময়ের পরে ভোটার তালিকায় ১৯৬ জন  সদস্য নিবন্ধনকে গঠনতন্ত্রের ১৪ ধারা মোতাবেক অগঠনতান্ত্রিক, এই নিবন্ধন অগ্রহণযোগ্য। প্রতিবাদলিপিতে  ভোটার তালিকায় ১৯৬ সদস্যদের তালিকাভুক্ত না করা, সে সঙ্গে প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করে বলা  হয়, বিতর্কিত ১৯৬ টি ভোটার তালিকায় তালিকাভুক্ত হলে আসন্ন বিয়ানীবাজার সমিতির নির্বাচন নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্যতা  হারাবে। সে সঙ্গে নির্বাচন বিতর্কিতও হবে। অগ্রহণযোগ্য ও অগঠনতান্ত্রিকভাবে অতিরিক্ত ১৯৬  সদস্য নিবন্ধন ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করার জন্য উপদেষ্টাদের দেওয়া প্রতিবাদ লিপিতে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবাদলিপিতে স্বাক্ষর করেন আজিজুর রহমান পাখি, মকবুল রহিম চুনই, আজিমুর রহমান বুরহান, মোজাহিদুল ইসলাম, হারুন মিয়া, সাম্স্উদ্দীন, মিছবাহ আহমদ, মুহিবুর রহমান রুহুল, রেজাউল আলম অপু। প্রতিবাদলিপি প্রাপ্তির কথা উপদেষ্টা সিরাজ উদ্দীন আহমদ স্বীকার করেন।

মিছবাহ-অপু প্যানেল মনে করে এবারের নির্বাচন বিগত নির্বাচন থেকে ভিন্ন। ইতিমধ্যেই তারা জয়ের পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছেন। তাদের এ জয়কে বাধাগ্রস্ত করতে অথবা ডাবল সদস্য নিবন্ধনের ঘাটতি পূরণ করতে মান্নান-মাহবুবের নেতৃত্বাধীন কমিটি অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। জানা যায়, সদস্য নিবন্ধন সংশোধনী  বিজ্ঞাপনে বই নম্বর ৩০৪ ও ২০৮এ সাধারণ সদস্য ২০+২১=৪১, সিনিয়র সদস্য ৭ জনসহ সর্বমোট ৪৮ জন সদস্য ৩০ জুলাই সদস্য নিবন্ধনকালীন সময়ে  নিবন্ধন করা হয়। অথচ সংশোধনী সংক্রান্ত  বিজ্ঞপ্তিতে এ দুটি রশীদ বইয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই  দুটি রশিদ বইয়ের সদস্য নিবন্ধনের প্রমাণ  জমা দানকারীদের হাতে রয়েছে।

সভাপতি আব্দুল মান্নানের বলেন অতিরিক্ত  ১৯৬ সদস্য নিবন্ধন সঠিক।  তাদের কাছে প্রমাণাদি আছে। অতিরিক্ত সদস্য নিবন্ধন ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি  না করার জন্য উপদেষ্টাদের কাছে চিঠি দেয়ার ব্যাপারে বলেন, উপদেষ্টারা এ বিষয়ে তদন্ত করে  সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। অতিরিক্ত ১৯৬ সদস্য নিবন্ধনের ব্যাপারে সাবেক নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সময়ের বাইরে অতিরিক্ত সদস্য নিবন্ধন অবৈধ, অগঠনতান্ত্রিক। তিনি অতিরিক্ত সদস্য নিবন্ধন বাতিল করার কথা বলেন। আরেক সাবেক নির্বাচন কমিশনার আব্দুস শহিদ মাস্টার বলেন, শেষ তারিখ শেষ সময়ের পরে  চূড়ান্ত সদস্য নিবন্ধন ঘোষণার পর নতুন করে অন্তর্ভুক্তি সঠিক নয় বলে মনে করেন। সাবেক নির্বাচন কমিশনার আনোয়ার হোসেন বলেন, অতিরিক্ত সদস্য নিবন্ধনের প্রমাণাদি যদি থাকে, তাহলে ঠিক। এদিকে মিছবাহ-অপু প্যানেল অবৈধ অগঠনতান্ত্রিকভাবে সদস্য নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে।

শেয়ার করুন