২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৪:৩৭:৩৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :


কূটনীতিকদের তৎপরতায় আসলে কী হচ্ছে
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-০৮-২০২৩
কূটনীতিকদের তৎপরতায় আসলে কী হচ্ছে দুই কংগ্রেসম্যানের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন


বাংলাদেশে একের পর এক কূটনীতিকদের আগমন এবং তাদের বিভিন্ন ধরনের কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি বক্তব্যের আসল রহস্য নিয়ে ধোয়াশায় রয়েছে দেশের জনগণ। একদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও তার শরিকদের পক্ষ থেকে নেতৃবৃন্দ কূটনীতিকদের তৎপরতায় তাদের মত করে বক্তব্য দিচ্ছেন। অন্যদিকে মাঠের অন্যতম বিরোধী দল বিএনপি তার সাথে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকরাও বিভিন্ন ধরনের তাদের মতো করে বক্তব্য দিচ্ছেন। তবে বিদেশীদের এমন তৎপরতায় ধোয়াশায় পুরো দেশ। 

একের পর কূটনীতিক আসছেন বাংলাদেশে। বাজারে চাওর হয়ে অছে একটি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পাল্টে দিতে পারেন বা ক্ষমতাচ্যুত করতে পারে যে কাউকে- এমন বিশ্লেষণ আছে এসব কূটনীতিকদের। আর এজন্য তারা বাংলাদেশে বর্তমান সরকারের মেয়াদের শেষের দিকে কেনো এতো বেশি আসছেন তা নিয়ে জল্পনা কল্পনা শেষ নেই। প্রশ্ন হচ্ছে কূটনীতিকরা বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকেই আসা বেশির ভাগরা কি কোনো চুক্তি করতেই আসছে? তাদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের চাওয়াটি কি একটি বাহানা? বাংলাদেশের অধিকাংশ জনগণ মনে করেন পশ্চিমরা বিশেষ করে আমেরিকা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের পক্ষে আছে- এটা কি শুধু কথার কথা? কূটনীতিকদের আনাগোনার আড়ালে কি অন্য কিছু?

ক্ষমতা উল্টাতে-পাল্টাতে পারে আমেরিকা 

চলতি বছরের এপ্রিলে জাতীয় সংসদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলে ফেলেন, আমেরিকা চাইলে যেকোনও দেশের ক্ষমতা উল্টাতে-পাল্টাতে পারে। বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরো বলেন, তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে, আবার দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্তদের পক্ষ হয়েই তারা ওকালতি করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রকে বাদ দিয়ে এখানে এমন একটা সরকার আনতে চাচ্ছে-তার গণতান্ত্রিক কোনও অস্তিত্ব থাকবে না। অগণতান্ত্রিক ধারা। আর সেই ক্ষেত্রে আমাদের কিছু বুদ্ধিজীবী, সামান্য কিছু পয়সার লোভে এদের পদলেহন করে। কিন্তু কেনো তিনি এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তা জানা যায়নি। তিনি খোলাশা করেও বলেননি। তবে তার বক্তব্যের আগে থেকেই এদেশে এই বছরে পশ্চিমাদের কূটনৈতিক তৎপরতা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। 

প্রসঙ্গ সেন্ট মার্টিন চায় আমেরিকা

যুক্তরাষ্ট্রের দুজন কংগ্রেস সদস্য এখন ঢাকায়। ইতোমধ্যে ঢাকা সফর করে গেছেন দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈশ্বিক দুর্নীতি দমন বিভাগের সমন্বয়কারী। অন্যদিকে এ মাসেই আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের পরিচালক। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদল এসে নানান বিষয় পর্যবেক্ষণ করে চলে গেছেন দিন পনের আগে। অন্যদিকে চীন রাশিয়াও বসে নেই। প্রকাশ্যে তেমনভাবে এই দেশটির কেউ তৎপরতা না দেখালেও মাঝে মাঝে তাদের কেউ কেউ কয়েক ঘন্টার জন্য এখানে উড়াল দিয়ে যান। কিন্তু আসলে কেনো? কি কারণে পশ্চিমা কূটনীতিকরা এমন তৎপর? যদিও বেশ উঁচু স্বরেই গণমাধ্যমে আসে যে  বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পাশ্চাত্য দেশগুলোর তৎপরতার নানামুখী চলছে। বাংলাদেশে এদেশগুলি সুষ্ঠু নির্বাচন এমনকি আমেরিকার মতো গণতন্ত্র চায়। কিন্তু আসলে কি? এব্যাপরে খটকা লাগিয়ে দেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অন্যতম শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি বলে বসেন, আমেরিকা সেন্ট মার্টিন চায়। দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ হচ্ছে সেন্টমার্টিন। এনিয়ে রাশেদ খান মেননের সুরেই প্রতিধবনি ঘটান খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রী। এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে, মার্কিন দূতাবাস মুখ খুলে। ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কাউন্সেলর শন ম্যাকিনটোশ গণমাধ্যম জানিয়ে দেয় যে, বাংলাদেশের কোনও ভূখন্ডের ওপর দাবি করেনি তারা। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে। আর অন্যদিকে বিএনপি’র পক্ষ থেকে এর নেতারা বলেছেন, সেন্টমার্টিন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও তার ক্ষমতার শরিকদের বক্তব্য রাজনৈতিক কৌশলের অংশ মাত্র। 

কী বলছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কূটনৈতিকদের এমন বিচরণে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন একের সময় একেক ধরনের বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। কখনো বলে যাচ্ছেন পশ্চিমারা বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। কিন্তু তার সর্বশেষ বক্তব্য নিয়ে অবারো জল্পনা কল্পনায় ঘি ঢেলে দেয়া হয়। তিনি বলেছেন, নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ মনে হয় না তড়িঘড়ি করে কোনো দেশের সঙ্গে নতুন চুক্তি করবে। আমরা একটি স্বাধীন অবস্থান নিয়ে আছি। আমরা  একটা ব্যালেন্সড ফরেন পলিসি চালিয়ে আসছি। তাই নির্বাচনের আগে তড়িঘড়ি কোনো চুক্তিতে আমরা যাব বলে মনে হয় না। এর আগে এর আগে যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠক করেন মোমেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তিনি ব্লিঙ্কেনকে বলেন, ‘সামরিক বাহিনী থেকে জন্ম নেয়া দলটি ছাড়া সব দল নির্বাচনে আসে। তাদের নির্বাচনে আনা একটি চ্যালেঞ্জ। তাদের ভোটে নিয়ে আসুন।’ তার এবক্তব্য নিয়ে দেশে বিদেশে তোলপাড় হয়ে যায়। আবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন ‘আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারত সরকারকে সেটা করার অনুরোধ করেছি।’

কূটনীতিকদের তৎপরতা নিয়ে বিএনপি

প্রায় প্রতি মাসে কিংবা কোনো কোনো ক্ষেত্রে সপ্তাহেই বিএনপি’কে দেখা যায় কূটনৈতিকদের সাথে বৈঠকে। অবশ্য এসব বৈঠকের আয়োজকরা কারা সেব্যাপারে অনেক কথা শোনা যায়। তবে বিএনপি আসলে বিদেশী কূটনীতিকদের কি বলছেন সে ব্যাপারে একিই বক্তব্য চলে আসে গণমাধ্যমে। তা হলো পশ্চিমারা সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলকের পাশাপাশি এদেশে সুশাসন চায়। বিদেশেীদের তৎপরতা কি কেবল গণতন্ত্র কিংবা সুশাসনই চাওয়ার মধ্যে রয়েছে সেব্যাপারে গণমাধ্যমে তেমন কিছু আসে না। কূটনৈতিকদের তৎপরতা কি ভূ-রাজনৈতিক কি-না সেব্যাপারেও বিএনপি কিছু বলেনি। তারা শুধু বলে থাকে কূটনৈতিকরা চায় সুশাসন, মানবাধিকার। এমনকি বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে বিএনপি’র ওপর চাপ দিচ্ছে কি-না তা-ও খোলাশা করে বলেনি বিএননি। তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে কিছুটা খোলাসা করে বলেছেন, এবারের আন্দোলনে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতেই থাকবে বিএনপি। হরতাল, অবরোধ বা জ্বালাও-পোড়াওয়ের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়-এমন কোনো কর্মসূচি দেবে না দলটি। মূলত শান্তিপূর্ণ অবস্থানের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থান ঘটাতেই তৎপর থাকবে তারা। এরই অংশ হিসেবে সংগঠনকে শক্তিশালী করাসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হচ্ছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন বিএনপির নেতারা। বলা হচ্ছে পশ্চিমা কূটনীতিকরা বিএনপিকে মোটা দাগে দুটি পরামর্শ দিয়েছেন। এগুলো হচ্ছে-অহিংস কর্মসূচিতে থাকা এবং নির্বাচন বর্জন না করা। তবে এর আগে ২৫ দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বিএনপির রুদ্ধদ্বার বৈঠকের খবরও গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। এতে দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঢাকায় অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরেছে বিএনপি-এমনতাই বলা হয়। 

আসলে কি হচ্ছে?

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, পার্লামেন্ট বিলুপ্তি, শেখ হাসিনার পদত্যাগসহ বিএনপির কোনো দাবি মেনে নেওয়া হবে না। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। মন চাইলে নির্বাচনে আসবে, না হয়, যা মন চায় তা-ই করবে। এর পাশাপাশি ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশেই ওয়াশিংটন হস্তক্ষেপ করতে পারে না, শুধু বাংলাদেশেই পান থেকে চুন খসলে নিষেধাজ্ঞা দেবে, ভিসা নীতি দেবে- এমন হুমকি-ধমকি দেয়। আর এটা নিয়ে মির্জা ফখরুল ও বিএনপি লাফালাফি করে। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ক্ষমতায় থাকতে বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিতে চায়নি, এখন কেন আন্দোলন করছে? এমন প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, গ্যাস বিক্রির অঙ্গীকার করে সরকারে আসে বিএনপি। আওয়ামী লীগের দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসার লোভ নেই। মাত্র দু’দিন আগে দেয়া এমন বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষণ মহল মনে করে বাংলাদেশে পশ্চিমা কূটনীতিকদের তৎপরতা বা পদচারণা যা-ই বলা হোক না কেনো এর পেছনে অনেক কিছু আছে। যা আসলে সরকার পক্ষ খোলাসা করে কিছু বলছে না। পাছে সব হারায়। অন্যদিকে বিরোধী দলও এসব বৈঠক সভা তাদের পক্ষ যাচ্ছে বলে জোড় গলায় প্রচার করে যাচ্ছে। 

নেপথ্যের জল্পনা-কল্পনা

বাংলাদেশে মার্কিন কর্মকর্তাদের একের পর এক সফরের মধ্যেই এবার আসলেন দুই কংগ্রেসম্যান। তারা দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ১২ আগস্ট শনিবার ভোরে স্ত্রীসহ ঢাকায় পৌঁছান রিপাবলিকান দলের জর্জিয়ার কংগ্রেসম্যান রিক ম্যাক্রোরমিক। ১৩ আগস্ট রোববার ভোরে ঢাকা পৌঁছান হাওয়াই রাজ্যের ডেমোক্রাট দলের কংগ্রেসম্যান এড কেইসের। এরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ১৪ আগস্ট সোমবার গেছেন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে। আসলেই এসব সফরের রহস্য কি? বাংলাদেশে গণতন্ত্র রক্ষায় একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন কি কারণে মার্কিনীদের এজেন্ডায় এতো গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকদের মতে, বাংলাদেশে পশ্চিমাদের এমন তৎপরতার পেছনে অবশ্যই অন্য কারণ বিশেষ করে ভূ-রাজনীতি আছে। যুক্তরাষ্ট্র ইন্দো-প্যাসেফিক জোটে বাংলাদেশকে চাইছে। আর বাইডেন প্রশাসন কি চায় তা মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আসার আগে কিছুটা আঁচ করা গিয়েছিলো। নির্বাচনী প্রচারণা যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রশক্তির সাথে সম্পর্ক মেরামতের কথাও বলেছিলেন জো বাইডেন, যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। বিশেষ করে প্রতিরক্ষা জোট নেটোর সঙ্গে। সাবেক এই ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, বাণিজ্যে ভারসাম্যহীন পরিবেশের জন্যে চীনকে জবাবদিহি করতে হবে। তবে তিনি বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশগুলোর সঙ্গে মিলে একটি আন্তর্জাতিক জোট করার কথা বলেছেন যা চীন উপেক্ষা করতে পারবে না। তবে তার এই প্রস্তাবে মর্মার্থ কী সেটা খুবই অস্পষ্ট বলে একটি গণমাধ্যমে মন্তব্য করা হয়। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে বাইডেন গণতান্ত্রিক দেশগুলোর সঙ্গে মিলে একটি আন্তর্জাতিক জোট করার কথা তার নির্বাচনী প্রচারাণা তুলে ধরেন । সেজন্যই বলা হয় যে ভূরাজনৈতিক স্বার্থ আর কৌশলগত কারণে বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের আগ্রহ বাড়ছে ঠিক। তেমনি রয়েছে আরেকটি বড়ো ইস্যু। তা হচ্ছে এঅঞ্চলে বিশেষ করে মার্কিনী প্রশাসনের মতে, বাংলাদেশে লম্বা সময় ধরে গণতন্ত্র নেই। নেই সুশাসন। অথচ বাইডেন প্রশাসন ক্ষমতায় এসেছে দক্ষিণ এশিয়ায় গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপোষহীন ভূমিকা রাখবে। আরেকটি বিষয় অনেকে মনে করেন, তা হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনদের একটি অংশ খোদ সেদেশেই ভিন্ন ভূমিকা রাখে। যা বাইডেন প্রশাসনের নজরে এসেছে। আর সেকারণে তারা বাংলাদেশে বর্তমান সরকারের শাসনামলকে ভিন্নভাবে দেখছে। তবে তাদের এমন দেখা বা পর্যবেক্ষণ অন্যদিকে বাংলাদেশের মাটিতে কূটনৈতিক তৎপরতা শেষমেষ কোন দিকে যায় তা সময়ই বলে দেবে। তবে এটাও অনেকে মনে করেন কূটনীতিকদের এমন তৎপরতার লাভ যে বিএনপি ঘরে আসবে তা বলা যাচ্ছে না। আবার এর বিপরীতে বর্তমানে বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে কোনোভাবেই যাচ্ছে না দিন দিন তা স্পস্ট হয়ে উঠছে । কারণ মার্কিন চাপ বা তৎপরতা খুব ভালোভাবেই বর্তমান সরকার মোকাবেলা করতে পারছে না বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন। বিশেষ করে বলা হচ্ছে, ডোনাল্ড লু’এর ব্যাপারে। বলা হয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্রের অব্যর্থ অস্ত্র ডোনাল্ড লু। ডোনাল্ড লু মার্কিন রাজনীতিতে এক বিশ্বস্ত নাম। মার্কিন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে তিনি ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করে চলেছেন। এর সাথে যোগ হয়েছে ঢাকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। একারণে বাংলাদেশের এমন ব্যক্তিদের তৎপরতা কোনো ঝানু কূটনীতিকই হালকাভাবে নিতে নারাজ।

শেয়ার করুন