২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৪:২২:০৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


দেশকে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন
বিএনপির কর্মসূচি থেমে থাকবে না
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-০২-২০২৩
বিএনপির কর্মসূচি থেমে থাকবে না ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন


একের পর এক পাল্টা কর্মসূচি আসছে বিএনপির ডাকা কর্মসূচির বিরুদ্ধে। এছাড়া সারা দেশের বিভিন্ন স্থানেও বিএনপির কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও দেয়া হচ্ছে বাধা। সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে বিরোধীদল বিএনপির নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইউনিয়ন পর্যায়ে দেশব্যাপী শনিবারের পদযাত্রা ও সমাবেশে হামলা, সংঘর্ষ ও গুলির যে সব ঘটনা ঘটেছে। এনিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে দেশের জনগণ।

বিএনপির এসব কর্মসূচিতে দেশের অনেক জায়গায় দলে নেতাকর্মীর ওপর আওয়ামী লীগ ও পুলিশ হামলা করেছে। অনেক জায়গায় এই দুইটি দলের কর্মীরা সংঘাতেও জড়িয়ে পড়েছে। আর এর বিষয়ে প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশি বিএনপির বর্তমান ও ভবিষ্যৎ অবস্থান জানতে চাওয়া হয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের কাছে। তার মতামতটি নিয়েছেন দেশ পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ। 

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার যদি তাদেরকে তাদের জনসমর্থন দেখাতে হবে মনে করে সেটি তারা দুই দিন পরেও দেখাতে পারে বা তারা দুই দিন আগেও দিতে পারতো। কিন্তু আমরা যেদিনই কর্মসূচি দেই, সেদিনই তারা দেয়। এর মানেই হচ্ছে সরকার রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে এবং অন্তঃসারশূন্য হয়ে গেছে। তারা এখন ক্ষমতায় আছে। গায়ের জোরে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেয়ার জন্যই এমন পালটা কর্মসূচি দিচ্ছে আর আমাদের দল গণতান্ত্রিক মধ্যমপন্থী। আমরা সব সময় শান্তিপূর্ণ কমসূচিতে বিশ্বাস করি। এ পর্যন্ত যত কর্মসূচি হয়েছে তার প্রত্যেকটি সমাবেশের আগে সরকার বলেছে আমরা সন্ত্রাস করবো। বলা হয়েছিল বিশৃঙ্খলা করবো। তার জন্য কি ধরনের বাধা দিয়েছে সরকার তাতো দেশবাসী দেখেছে। পরিবহন ধর্মঘট দিয়েছে।  কিন্ত আমরা কিন্তু সুশৃঙ্খলভাবেই সব কর্মসূচি পালন করেছি। এরপরও অনেক কর্মসূচি পালন করেছি। ঢাকা শহরে পদযাত্রা করেছি। নিয়মতান্ত্রিকভাবেই এসব কর্মসূচি পালন করেছি। এগুলোর মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করেছি যে বিএনপি শান্তিপূর্ণ নিয়মতান্ত্রিকভাবেই আন্দোলন করছি। কিন্তু এর বিপরীতে সরকার যদি পালটা কর্মসূচি দিতে চায়, তাহলে তার দায়দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। কারণ পালটা কর্মসূচি কোনো গণতান্ত্রিক আচরণ না। 

এ প্রসঙ্গে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের কাছে জানতে চাওয়া হয় বিএনপির কর্মসূচি কি বাতিল হয়ে যাবে?

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাদের কর্মসূচি এজন্য থেমে থাকবে না। আমাদের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চলবেই। দেখেন সরকার বাধা দিয়ে আমাদের কি করেছে. হয়তো যেখানে এক লাখ লোক বেশি হতো, সেখানে এর চেয়ে একটু কম হয়েছে। জনগণ তো আমাদের কর্মসূচিতে অংশ নেয়া থেকে বিরত রাখতে পারেনি। সরকার আমাদের কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে নিজেদের মধ্যেই নানান বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। যারা আসতে পারেনি তাদের মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। দেখা যাচ্ছে এসব করে সরকারের জনসমর্থন হারাচ্ছে। এমনিতেই তো নির্বাচনি ব্যবস্থা ধবংস করে দেশে ভয়াবহ ক্ষতি করে ফেলেছ। সারা বিশ্বই কিন্তু এখন বলছে যে আগের জাতীয় নির্বাচনগুলো আসলে সুষ্ঠুভাবেই হয়নি। জাপানি অ্যাম্বাসেডরও বলেছেন, দিনের ভোট রাতে হয় এমন কথা তিনি জীবনেও শোনেননি। এখন অবশ্য এ সরকারের জনসমর্থন হারানোর ভয় নেই, এটা তারা তোয়াক্কাও করেনি। কারণ তারা জনসমর্থন ছাড়াই তো সবকিছু করতে পারে। তবে আমাদের তো কোনো লস (ক্ষতি) নেই। আমরা শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়েই যাবো। যেখানে গায়ে পড়ে বাধা দেবে, সেখানে জনগণই বিচার করবে। বিচার করার সময়ও এসে পড়েছে।  

দেশ পত্রিকার পক্ষ থেকে এ সময় ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের কাছে আরো জানতে চাওয়া হয় বিএনপির নেতারা বিদেশিদের দ্বারস্থ হচ্ছে-এমন অভিযোগ আপনাদের বিরুদ্ধে। আন্দোলন করতে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন দেশে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার ব্যাপারে কাজ করছে, এ ব্যাপারে কিছু বলুন..

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা কোনো দাবি-দাওয়া নিয়ে বিদেশিদের দ্বারস্থ হয়েছি তার কোনো প্রমাণ তারা দেখাতে পারবে না। আমরা সরকারের অন্যায় কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে মিছিল-মিটিং করলে তাতো বাংলাদেশি পত্রপত্রিকায় ওঠে। দেশ-বিদেশের পত্রপত্রিকায় এসব খবর প্রকাশিত হলে বাংলাদেশ সম্পর্কে যারা আগ্রহী তারা দেখে। তারা জানতে পারে এ সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য গুম করেছে। গুম করা বা মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করা তো আমাদের সংবিধানে নেই। কিন্তু সরকার এসব কাজ প্রতিনিয়তই করে যাচ্ছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এসব নেই। সেখানে এ সরকার গুমের মতো জঘন্য কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। আমরা এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে মানবাধিকারসহ বিভিন্ন সংস্থাকে জানিয়েছি। এটাতো দ্বারস্থ হওয়া না, এটা বড় অন্যায়। অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ করেছি। আর এই ধরনের প্রতিবাদ বা অভিযোগ নিয়ে কেউ অগ্রসর হয় এবং অগ্রসর হয়ে তদন্ত করে সত্যতা পায়, তাহলে তো তারা প্রতিক্রিয়া দেখাতেই পারে। দেশে মানবাধিকার না থাকলে অন্য গণতান্ত্রিক দেশও তো এ ব্যাপারে কথা বলতে পারেই। যেমন আমেরিকা গণতান্ত্রিক কনভেনশন করেছে, সেখানে বাংলাদেশকে তারা আমন্ত্রণ করেনি। এটা নিয়ে অনেক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে তারা বলেছে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। এটা হাইব্রিড সরকার দ্বারা পরিচালিত। তো এ নিয়ে আমাদের তো করার কিছুই নেই। 

এসব কথা তো আমরা তাদের বলতে বলিনি। এজন্য বলবো সরকার এসব বিষয় ঢাকা দিতে এধরনের কথা বলছে। তাদের অপকর্ম চাপা দিতে এসব বলে বেড়াচ্ছে যে বিএনপি বিদেশিদের দ্বারস্থ হচ্ছে। আমরা কোথাও অফিসিয়ালি বলিটি বা দ্বারস্থ হয়নি। এদেশে কাউকে নিষেধাজ্ঞা দিতেও বলিনি। এ ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না। এসব নিষেধাজ্ঞা কেবল বাংলাদেশকেই দেয়নি। অতীতে আরো অনেক দেশকেও তারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। অতএব নিষেধাজ্ঞা দেবে আমেরিকা আর দোষ দেয়া হবে বিএনপির বিরুদ্ধে, এটা কোন ধরনের কথা। তারা কি বলতে পারবে বিএনপির কোনো প্রতিনিধিদল গিয়ে আমেরিকাকে বলেছে, বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে? কিন্তু আমরা তো ভিন্নচিত্র দেখেছি। তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমেরিকা গিয়া বলেছে যে, তারা (আমেরিকা) যেন বিএনপিকে নির্বাচনে আসতে বলে। বিএনপিকে নির্বাচনে রাজি করাতে আমেরিকাও কি অধিকার আছে?  নির্বাচনের পরিবেশ হলে বিএনপি এমনতিইে নির্বাচনে অংশ নেবে।

শেয়ার করুন