২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৫:০০:৪৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


এবার বিশ্বকাপে বিশ্বসেরা হওয়ার লড়াই
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-১০-২০২৩
এবার বিশ্বকাপে বিশ্বসেরা হওয়ার লড়াই


বিশ্বের লাখো কোটি ক্রিকেট ভক্ত অনুরাগীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আজ (৫ অক্টোবর’২৩) ভারতের আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী আইকনিক স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে ১০ জাতির আইসিসি বিশ্বকাপ ২০২৩। ইংল্যান্ড -নিউজিলান্ড শ্বাসরোধী ফাইনাল দিয়ে যেখানে শেষ হয়েছিল বিশ্বকাপ ২০১৯ ইংল্যান্ডের লর্ডস ক্রিকেট ময়দানে, সেখান থেকেই শুরু হবে আজ আরেক বিশ্বকাপের সূচনা। সাধারণত স্বাগতিক দল খেলে বিশ্ব কাপের উদ্বোধনী ম্যাচ। এবারে ব্যাতিক্রম। ভারত ৮ অক্টোবর প্রথম ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে চেন্নাইতে।


বর্তমান শিরোপা ধারী অসামান্য শক্তিধর ইংল্যান্ড এবারেও খুব সুসমন্বিত এবং এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট।  দুর্ভাগ্যজনক ভাবে ২০১৫ বিশ্বকাপ ফাইনালে সুপার ওভারে নাটকীয়ভাবে হেরে যাওয়া নিউজিল্যান্ড শক্তি , মেধা ,ফর্ম এবং অভিজ্ঞতায় কম কিছু নয়। অতি সম্প্রতি দল দুটি ইংল্যান্ডে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেছে। টুর্নামেন্টের আগে পাকিস্তান এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দুটি গা গরমের ম্যাচ জিতেছে নিউ জিল্যান্ড। ইংল্যান্ড - ভারত ম্যাচটি বৃষ্টি বাঁধায় পন্ড হয়েছে।  অপর ম্যাচে ইংল্যান্ড বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দাপুটে জয়ে শক্তিমত্তার পরিচয় দিয়েছে। দুটি দলের অনেক খেলোয়াড় ভারতে নিয়মিত আইপিএল খেলে থাকে। ভারতের উইকেট। মাঠ ,পরিবেশ এবং আবহাওয়ার সঙ্গে খেলোড়াদের পূর্ব পরিচিতি আছে। খেলাটি তাই হবে সেয়ানে সেয়ানে।

ইংল্যান্ড ২০১৯ শিরোপা জয় ছাড়াও ১৯৭৯ ইংল্যান্ডে। ১৯৮৭ ভারতে এবং ১৯৯৬ অস্ট্রেলিয়ায় ফাইনাল খেলেছে। অন্যদিকে প্রতিবারের টুর্নামেন্টে ভালো শুরু করেও নিউজিলান্ডের সাফল্য একটি স্তরে এসে থমকে যায়। ২০১৯ ফাইনাল ছাড়াও ,২০১৫ ফাইনালে ব্ল্যাক ক্যাপসরা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে এমসিজিতে ফাইনালে হেরেছে ওদের সোনালী প্রজন্মের কয়েকজন ক্রিকেটারের জন্য এবার শেষ সুযোগ। নবীন প্রবীনের সমন্বয়ে গড়া দলটি নীরবে ফাইনালে পৌঁছে শিরোপা জিতে নিলে বিস্মিত হবো না।
ইংল্যান্ড: জস বাটলার ( অধিনায়ক) , মঈন আলী, গাস আটকিন্সন , জনি বেয়ারস্টো , সাম কুরান , লিয়াম লিভিংস্টোন, ডেভিড মালান , আদিল রশিদ , জো রুট, বেন স্টোকস ,রিসি টপলি , ডেভিড উইলি ,মার্ক উড এবং ক্রিস ওকস।



নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট কিংবদন্তী ব্রেন্ডান মাকুলাম হেড কোচ হওয়ার পর থেকেই ওদের ক্রিকেট দর্শন পাল্টে  । ফেলেছে। টেস্ট ক্রিকেট এবং ওডিআই ক্রিকেটেও  করছে টি ২০ ঢঙে।  জনি বেয়ারস্টো ,ডেভিড মালান ,জো রুট,মঈন আলী ,লিয়াম লিভিংস্টোন ,বেন স্টোকস  ব্যাট হাতে বেপরোয়া ব্যাটিং করে। স্যাম কুরান ,আদিল রাশিদ ,ক্রিস ওকস ১-১০ পর্যন্ত ওদের আছে তুখোড় ব্যাটিং। ৩০০-৩৫০ এমনকি ৪০০ করেছে নিয়মিত। দেখতে হবে শক্তিশালী এবং বহুমুখী বোলিং শক্তির বিরুদ্ধে ভারতের অপেক্ষাকৃত ধীর গতির ঘূর্ণি উইকেটে ওদের "বাজবল " কৌশল কতটা লাগসই হয়। তুখোড় পেস ( উড ,টপলি ,কুরান ,ওকস ১৪০+ কিলোমিটার বেগে ক্রমাগত বল করে) এবং কার্যকরী স্পিন ( আদিল রশিদ ,মঈন আলী, লিভিংস্টোন ) নিয়ে বোলিং আক্রমণ সুসংহত।  শিরোপাধারী ইংল্যান্ড শিরোপা ধরে রাখার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। আজ প্রথম ম্যাচটি অবশ্যই জয়ের জন্য খেলবে। ইংল্যান্ডের ঘুরে দাঁড়ানো শুরু হয়েছে ২০১৫ এডিলেড ওভালে বাংলাদেশের কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ার পর. করোনা মহামারীর পর পরিকল্পনা করে ইংল্যান্ড প্রথম ক্রিকেটে ফিরে আসে।

নিউজিল্যান্ড :  কেন উইলিয়ামসন ( অধিনায়ক) ,টম লাথাম ,ডেভন কোনওয়ে , গ্লেন ফিলিপ্স, উইল ইয়ং, মার্ক চ্যাপম্যান, ডেরিল মিচেল, জেমস নিশাম ,রাচীন রাভিন্দ্রা ,মিচেল সান্টনার ,ট্রেন্ট বোল্ট, লোকি ফার্গুসন ,মাঠ হেনরী ,ইশ সোধী এবং টিম সৌদি।

দক্ষিণ গোলার্ধের শান্তি সমৃদ্ধির দেশ নিউজিল্যান্ড কিন্তু চির দিন ধারবাহিকভাবে ভালো ক্রিকেট খেলে সেমিফাইনাল পর্যন্ত আসে কিন্তু এর পর এগুতে পারে না সবসময়। ১৯৯২ এবং ২০১৫ অস্ট্রেলিয়া মহাদেশে অনুষ্ঠিত দুটি বিশ্বকাপে ওরা একটা পর্যায় পর্যন্ত অপ্রতিরোদ্ধ ছিল। ১৯৯২ ইমরান খানের কর্নার্ড টাইগার্সদের সঙ্গে সেমিফাইনালে বিদায় নেয়। ২০১৫ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার সামনে ফাইনালে ন্যুয়ে পরে। ২০১৯ কিন্তু ভালো খেলেই ফাইনালে পৌঁছেছিল। দুর্ভাগ্য ম্যাচটি টাই হবার পর সুপার ওভারে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে যায়।

দলের মূল ব্যাটিং ভরসা সর্বযুগের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। বেশ কিছু দিন আনফিট থাকার পর ফিরছে। দুটি গা গরমের ম্যাচে ভালো ব্যাটিং করলো। প্রথম ম্যাচ খেলবে কিনা নিশ্চিত নয়। টম ল্যাথাম, ডেভন কোনওয়ে ,গ্লেন ফিলিপ্স, উইলি ইয়ং ,ড্যারিল মিচেল অনেক দলের সেরা ব্যাটসম্যানদের মত তারকা খ্যাতি না থাকলেও অনেক শক্তিশালী ব্যাটিং ইউনিট। ওরা আছেও এখন ফর্মে। মার্ক চ্যাপম্যান , জেমস নিশাম ,রাচীন রাভিন্দ্রা ব্যাটিং  অর্ডারকে গভীরতা দিয়ে থাকে। ট্রেন্ট বোল্ট ,টিম সৌদী সমসাময়িক বিশ্ব ক্রিকেটে অন্যতম সেরা পেস বোলিং জুটি। লকি ফার্গুসন এবং মাঠ হেনরী কম কার্যকরী নয়। লেগ স্পিনার  ইস সৌদি ,বাম হাতি স্পিনার মিচেল সান্টনার এবং অফ স্পিনার রাচীন রাভিন্দ্রা ঘূর্ণি উইকেটের ফায়েদা নিতে কার্যকরী। সর্বোপরি দলটির ফিল্ডিং নিখুঁত এবং তুখোড়।
দুই সমশক্তির খেলাটি আজ সেয়ানে সেয়ানে লড়াই হবে বলা যায়।



শেয়ার করুন