২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ৬:০৮:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


গোটা জাতি ভয়ঙ্কর জঙ্গলের মধ্যে
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-১২-২০২৩
গোটা জাতি ভয়ঙ্কর জঙ্গলের মধ্যে রুহুল কবীর রিজভী


রাশিয়া ও ভারতের ওপর ভর করে সরকার ‘একতরফা’ নির্বাচন করার পাঁয়তারা করছে’ বলে মন্তব্য করেছেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, গোটা জাতি এক ভয়ংকর জঙ্গলের মধ্যে বাস করছে। এক অন্ধকার জঙ্গল যেখানে চারিদিকে ঘিরে আছে ভয় ও আতঙ্কের ব্যারিকেড। এই ভয় ও আতঙ্ক তৈরি করাই হয়েছে একদলীয় নির্বাচনকে সুসম্পন্ন করা, ভোটারবিহীন নির্বাচনকে নিশ্চিত করা। এব্যাপারে শেখ হাসিনা একেবারেই বেপরোয়া। গত ১৯ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘উনি ভাবছেন রাশিয়া আছে, ভারত আছে, আমার আবার ভয় কিসের? রাশিয়া ও ভারত আমাকে সমর্থন দিলে আমার কিসের ভোট সেন্টার লাগবে, কিসের ভোটার লাগবে, কিসের স্বচ্ছ নির্বাচন লাগবে?’ রিজভী বলেন, তাদের (রাশিয়া ও ভারত) কর্তা ব্যক্তিরা মাঝে-মধ্যে স্টেটমেন্ট দিচ্ছেন। তাতো দেবেনই। বাংলাদেশে গণতন্ত্র থাকুক বা না থাকুক-এটাতে ভারতের কোনো কিছু যায় আসে না, আর রাশিয়ার তো মোটেও যায় আসে না, আর নিজের দেশে গণতন্ত্রের বিশাল ঘাটতি একনায়তন্ত্রের শাসন। সুতরাং আজকে তাদের সমর্থনে শেখ হাসিনার আজকে পোয়াবারো। ভারত নিজে গণতান্ত্রিক দেশ কিন্তু সে অন্য দেশের গণতন্ত্র বা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বা গণতান্ত্রিক সমাজ গঠিত হোক এটা তারা চাচ্ছেন না। যে ক‘জন কর্তা ব্যক্তিরা এসেছেন তারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছা ও আকাংখার বিরুদ্ধে-আজকে জনসমর্থনহীন সরকারকে সমর্থন দিচ্ছেন। এটা বাংলাদেশের মানুষ বিস্মিত-হতবাক। ভারতের কাছ থেকে তো এটা কামনা করা যায় না। কিন্তু যারা আধিপত্যবাদী শক্তি তারা সব সময় চায় তার আশে-পাশের ছোট দেশগুলোকে কবজা করতে।

ভারতের বর্তমান অবস্থানকে ‘বড় দুর্ভাগ্যজনক’ অভিহিত করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আমি জহরলাল নেহেরু সাহেবের একটি বই পড়েছিলাম- ‘অব ইন্ডিয়া’। তাতে এক জায়গায় তিনি বলেছেন, ফর এসমল নেশন স্ট্যাট ইজ গ্রুথ ইট ওয়াজ সারভাইভ অনলি কালচারাল অটোনোমাস এরিয়া বাট নট পলিটিক্যাল ইন্ডিপেন্ডেট এরিয়া। আজকে কি সেই পলিসি বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে ভারত? যে তারা তাদের আশে-পাশে ইন্ডিপেনডেন্ট টেরিটোরি দেখতে চায় না-বড়জোর একটা কালচারাল অটোনোমাস সাংস্কৃতিক স্বায়ত্বশাসিত এরিয়া তাদের পরিচালনায়- এই মনোবৃত্তিরই পরিপূরক প্রতিফলন আমরা দেখতে পাচ্ছি। এটা বড়ই দুভারগ্যজনক। আমি বলতে চাই, একাত্তর সালে আমাদের ভরসা ছিলো জনগণ, মুক্তিযুদ্ধে আশ্রয় দিয়েছে, খাবার দিয়েছে এবং পথ চিনিয়ে দিয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ের। আমরা গণতান্ত্রিক সংগ্রাম করছি, আমরা সশ্বস্ত্র বিপ্লব করছি না।

‘সরকার এখন জঙ্গি নাটক ও নাশকতার নাটক করবে’

রিজভী বলেন, ট্রেনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা কে করেছে তা এখন জনগণের কাছে সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আর পুলিশ কমিশনার সাহেব আপনি কোনো কিছু তদন্ত না করেই বলেদিলেন যে, এটা অবরোধ-হরতালকারীরা করেছে? এই অবরোধ-হরতালকারীদের ওপর দায় চাপানো এটা একটা পূর্ব পরিকল্পিত পরিকল্পনা-এটা আমরা বার বার বলি যে সরকার এখন জঙ্গি নাটক করবে, নাশকতার নাটক করবে, বিভিন্ন জায়গা থেকে এটা বলে আসছি। সেটা এখন বাস্তবে প্রতিফলিত হতে দেখা যাচ্ছে আজকের রেলওয়ের ঘটনাটাও তাই। ঢাকা-মোহনগঞ্জ ট্রেন বার বার কেনো ‘নাশকতার ঘটনা ঘটছে’ প্রথম বার ওই পথে দুর্ঘটনার পর সরকার কেনো এই রুটে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

রিজভী বলেন, গোটা দেশ সাধারণ মানুষ বিরোধী দল গণতন্ত্র ফেরানোর জন্য, নিজের ব্যক্তি স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য আজকে লড়াই করছে, সবাই ভয়ে আছে, সবাই আতঙ্কে আছে। কেউ যদি সরকারের ন্যূনতম সমালোচনা করে ডান দিকে বাম দিকে তাঁকায় কেউ শুনলো কিনা? কেউ দেখলো কিনা? একাত্তর সালে এজন্যই এতো মানুষের প্রাণ গেলো, এতো নারীর সম্ভ্রম গেলো যে ৫২/৫৩ বছর পরেও ক্ষমতাসীনদের ভয়ে সবসময় কুন্ঠিত থাকতে হবে, ডানে-বামে সবসময় তাকাতে হবে, সামনে-পেছনে লক্ষ্য রাখতে হবে যে আমি সরকারের যতটুকু সমালোচনা করলাম সেটা সরকারের লোকেরা শুনতে পেলো কিনা। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাধারণ মানুষের কোনো ক্ষমতা নেই, সাধারণ মানুষ বন্দি। আজকে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে গোটা সমাজ, গোটা রাষ্ট্র শেখ হাসিনার পক্ষে। কখন কার বাসায় ধেয়ে চলে যাবে যে, যাকে লক্ষ্য করে যাবে তাকে না পেলে তার ছোট ভাইকে ধরবে, না হলে তার বাবাকে ধরবে, না পেলে তার স্ত্রীকে ধরে নিয়ে যাবে। এটা একাত্তর সালে খান সেনাদের বর্বরতা থেকে কতটুকু পার্থক্য রয়েছে?

‘জনিকে ক্রসফায়ারে হত্যা করেছে ২০১৫ সালের আন্দোলনে। কে করেছে? দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এবারে জনির বাবাকেও ধরে নিয়ে গেছে, একজন বয়স্ক মানুষ। এই ঘটনা এই অমাবিকতা এই পুলিশি তান্ডব আজকে গ্রাম-গঞ্জ থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত প্রত্যেকটি জায়গায়। শুধু সন্তান বিএনপি করে, বাবা বিএনপি করে, ভাই বিএনপি করে অথবা বোন বিএনপির মহিলা দলের সদস্য এই কারণে তাকে যদি না পায় অন্য যারা আছে ভাই-বোনেরা তাদের ওপর নেমে আসে অত্যাচারের খড়ক। এই পরিস্থিতি এই দৃশ্য সারাদেশব্যাপী।’ গত ২৪ ঘন্টায় সারাদেশে পুলিশ আরো ২২৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার এবং ৮টি মামলায় ৭৯৫ জনের অধিক নেতা-কর্মীকে আসামী করেছে বলে দাবি করেন রিজভী।

‘আন্দোলনের নতুন ঘোষণা বুধবার’

রিজভী বলেন, ২০ ডিসেম্বর বুধবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়েক তারেক রহমান চলমান আন্দোলনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেবেন।

শেয়ার করুন