২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৯:২৯:০৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


দেশকে অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী
কিছু একটা ঘটে যেতে পারে
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-১২-২০২৩
কিছু একটা ঘটে যেতে পারে এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী


গণফোরাম একাংশের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেছেন, একটা কথা বলে রাখি শুধু বাংলাদেশের মানুষই না আন্তর্জাতিকভাবে তিনি ধিকৃত হবেন। এর পরিণতি থেকে কখনোই পার পাওয়া যাবে না। এখন যা দেখছেন সবই সাময়িক। কিছু একটা ঘটে যেতে পারে। আমেরিকা থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকারা সাথে সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ। 

দেশ: যেভাবেই বলি না কেনো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেই আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েই যাচ্ছে। বিএনপিসহ সমমনা সব দলই এই নির্বাচনের বিরুদ্ধে যুগপৎ কর্মসূচি পালন করেছে এবং করেও যাচ্ছে। কিন্তু কোনো কিছু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। এতে করে কি বলা যায় বিএনপিসহ সমমনা সব দলই ব্যর্থ হয়েছে আন্দোলনে। 

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী : আরে না এটাতো নির্বাচন না- এটা তামাশা। নির্বাচনের নামে তামাশা হচ্ছে (হেসে হেসে )। এধরনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্যতো বাংলাদেশ মহা সংকটের দিকে চলে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী এই নির্বাচনতো গ্রহণ করবে না। নিজেরা নিজেরা খেলতেছে। ভাগ-বাটোয়ারা হয়ে যাচ্ছে। কার কতো সিট (আসন) হবে, পাবে। এক ব্যক্তিই সব কিছু করতেছে। এই যে নির্বাচন কমিশন? (আবারা হাসি দিয়ে) এটা কি? এটা তো শেখ হাসিনা (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) যা বলবে তা-ই করবে। এদের দিয়ে কিছু হবে না। দেশতো সর্বগ্রাসি পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। 

দেশ: কিন্তু একথা কি মানেন যে পুরো আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে। অর্থাৎ নির্বাচন রুখে দেযার যে আন্দোলনে নেমেছিলেন তা-তে কি সফলতা এসেছে?

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী: আরে এই নির্বাচনের ফলাফলতো আগে থেকেই নির্ধারিত হয়ে গেছে। ২০১৪ তে একটা করা হয়েছে। ২০১৮ তে-ও করা হয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশে স্বৈরাচাররা এধরনের নির্বাচন করেছে। এখন বাংলাদেশে শেখ হাসিনা মডেল (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে) চালু করেছে। লিবিয়ার গাদ্দাফিকে দেখেছি। মিশরের হোসনী মোবারককে দেখেছি। এক্ষেত্রে বিশ্বে শেখ হাসিনার নামও প্রবেশ করলো আরকি। এগুলো করেতো পার পাওয়া যাবে না। 

দেশ: পার পাওয়া যাবে না কিভাবে দাবি করেন? নির্বাচনতো হয়েই যাচ্ছে-আপনাদের মতে ২০১৪ বা ২০১৮ সালে যদি কোনো নির্বাচন না-ই হয়ে থাকে সে নির্বাচনতো করেতো দেশ শাসন করা হয়েছে। 

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী: আরে এমন পরিস্থিতিতি তো হতেই পারে। যখন একটা ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় দিনের পর দিন থাকে-সব কিছুই যখন নিজের কুক্ষিগত করে। এরা গণতান্ত্রিক মানবাধিকার এমন কি বিচার বিভাগকেও এরা তছনছ করে দিয়ে দিয়েছে। উনি যা বলবেন তা-ই তো হচ্ছে। লাখ লাখ নেতাকর্মীরা বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হচ্ছে। মুরগির ছানার মতো যা-কে যেখানে পাচ্ছে কারাদন্ড দিচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ড করে অতীতেও অনেক স্বৈরাচার ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেষ্টা করেছে কিন্তু দিন শেষে পার পাওয়া যাবে না। সেটাই বড়ো প্রশ্ন।

দেশ: আপনাদের কথা বোঝা যাচ্ছে আপনারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বা যাচ্ছেন- আরেকটি বিষয় হচ্ছে আপনারাসহ আরো অনেকে আশঙ্কা করছে বাংলাদেশে এধরনের নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপ প্রকট আকার ধারণ করবে। 

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী: এটাইতো বলে যাচ্ছি আমরা যারা আন্দোলন করছি। এখন উনারা যদি ক্ষমতার লোভে-অর্থসম্পদ বৈভব এবং উন্নত পারিবারিক জীবন যাত্রা, বিদেশে টাকা প্রাচার করা, আত্মীয়স্বজনদের সব জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করে দেয়া- আমিতো সেটাই বললাম। একটা কথা বলে রাখি শুধু বাংলাদেশের মানুষই না আন্তর্জাতিকভাবে তিনি ধিকৃত হবেন। এর পরিণতি থেকে কখনোই পার পাওয়া যাবে না। এখন যা দেখছেন সবই সাময়িক। কিছু একটা ঘটে যেতে পারে। 

দেশ: এটা বারবারই চলে আসে আপনারা তেমনভাবে আন্দোলন করছেন না, আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে চাপ আসবে। 

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী: আন্তর্জাতিক চাপ তো আছেই। যা কিন্তু আমরাতো বাহির থেকে বুঝবো না। কিন্তু সরকারের বডি ল্যাংগুয়েজেতো তা বোঝা যায়। তারাতো কোনো কিছুই সহ্য করতে পারে না। সিপিডি একটা তথ্য দিয়েছে, অন্যদিকে রেহমান সোবহান সাহেব কিছু বলেছেন, ব্যাস সরকারের প্রতিক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। সিপিডি একটা নির্মোহ রির্পোট প্রকাশ করেছে। অথচ সরকার এটাতে ষড়যন্ত্র দেখে। কেনো এই সময়ে এটা দেয়া হলো-এটা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করা হচ্ছে। গন্ধ খোঁজা হচ্ছে ষড়যন্ত্রের। রেহমান সোবহান সাহেব বলেছেন যে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি কিন্তু মুক্তি আসেনি। স্বাধীনতার স্বাদ পাইনি। এখন যারা কিছু কথা বলার চেষ্টা করবে তাদেরকে নানাভাবে নিগৃহিত করা হবে। তবে এটা যুগে যুগে নানা দেশেই হয়েছে। আমি মনে করি বাংলাদেশ একটা চরম অবস্থা পার করছে। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন এটা চোরের দল। এখন দেখছি এটা ডাকাতের দল। এখন আওয়ামী লীগকে একটা ডাকাতের দলে পরিণত করা হয়েছে। 

দেশ: আচ্ছা এসব বিষয় নিয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছেন এর সফলতার ব্যাপারে কি আপনি আশাবদি?

অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী: অবশ্যই আশাবাদি। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে আন্দোলন করে যাচ্ছি। কোনো দলকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছি না। বাংলাদেশে একটি নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার বলি বা নির্বাচনকালীন সরকারের জন্যই আন্দোলন করছি। জনগণ যেনো তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। আমরা মনে করি জনগণের একটা চয়েজ থাকবে। এখনতো তেখা যাচ্ছে নিজেরাই নিজেদেরটা ঠিক করে ফেলছে। কে কোনটাতে যাবে, কোনটা পাবে। আমরাতো গত ১৫ বছর ধরে সে-ই আন্দোলন করে যাচ্ছি। জনগণ তার নিজের ভোট নিজেই দেবে।

শেয়ার করুন