২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৫:৩৪:৫১ পূর্বাহ্ন


ছাত্রলীগ নেতা পেটানো রহস্যের শেষ নেই
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-০৯-২০২৩
ছাত্রলীগ নেতা পেটানো রহস্যের শেষ নেই রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুন, এডিসি সানজিদা ও এডিসি হারুন


থানায় দুই ছাত্রলীগ নেতাকে পেটানোর ঘটনা নিয়ে রহস্যের যেনো কুলকিনারা নেই। কেনো ঠিক এমন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এধরনের ঘটনা ঘটে গেলো তার কেনো কুরকিনারা পাচ্ছে না বিশ্লেষকরা। অন্যদিকে এমন মারাত্মক অপমানজনক ঘটনার পরও এর বিপরীতে ভুক্তভোগী নেতাদের সংগঠন ছাত্রলীগের অস্বাভাবিক নিরবতা এমনকি মামলা পর্যন্ত না হওয়ায়ও বিভিন্ন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন এমন ঘটনার পেছনে সাদামাটা কেনো কিছু নেই। এর পেছনে আছে আরো বড়ো ধরনের রহস্য। 

কি ঘটে গেলো..

চারিদিকে চাওর হয়ে গেছে যে, ব্যক্তিগত বিষয়কে কেন্দ্র করে এসপ্তাহের শুরুতে গত ৯ সেপ্টেম্বর শনিবার রাতে ছাত্রলীগের দুজন কেন্দ্রীয় নেতাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে মারধর করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার হারুন অর রশিদ এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, রমনার সাবেক এডিসি হারুন হচ্ছেন বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ৩১ ব্যাচের কর্মকর্তা। বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ৩৩ ব্যাচের এক নারী কর্মকর্তার সঙ্গে ৩১ ব্যাচের কর্মকর্তা এই হারুনের ‘সম্পর্কে’র জের ধরে ঘটনার সূত্রপাত। ওই নারী পুলিশ সদস্যের স্বামীর (বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তা) উপস্থিতিতেই শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে বেদম পিটিয়ে আহত করেন হারুনসহ ১০-১৫ জন পুলিশ সদস্য। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে কর্মরত নারী পুলিশ কর্মকর্তার স্বামীই ছাত্রলীগ নেতাদের ডেকে নিয়েছিলেন। পরে তার স্বামীকেও মারধর করা হয় থানায়। অবশেষে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে তাদের থানা থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। 

শনিবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতাকর্মী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান। হারুনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তারা। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। আহত দুই ছাত্রলীগ নেতা হলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাবির ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম। এই দুজনের বাড়িই গাজীপুরে। অভিযুক্ত নারী পুলিশ কর্মকর্তার স্বামীর বাড়িও গাজীপুরে। হামলায় আহতরা ডিএমপি কমিশনারের কাছে এ বিষয়ে লিখিতভাবে জানানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। আহতদের স্বজনরা হারুনের চাকরিচ্যুতি ও গ্রেফতার দাবি করেছেন। এ অবস্থার মধ্যে ১০ সেপ্টেম্বর রোববার দুপুরে এডিসি হারুনকে রমনা জোন থেকে প্রত্যাহার করে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) সংযুক্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। সর্বশেষ খবর হলো ছাত্রলীগের তিন কেন্দ্রীয় নেতাকে থানায় মারধর করার ঘটনায় পুলিশের রমনা বিভাগ থেকে বদলি হওয়া অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

ছাত্রদলের প্রতিবাদ

ছাত্রলীগের দুই নেতাকে ‘থানায় নিয়ে’ নির্মমভাবে মারধরের ঘটনায় নিন্দা ও হতাশা প্রকাশ করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। এ ঘটনাকে ‘একটি পুরোনো ছাত্রসংগঠনের অমর্যাদাকর অবস্থান’ আখ্যা দিয়েছে বিএনপির ছাত্রসংগঠনটি। পাশাপাশি অতীতের সব পুলিশি নির্যাতনের দায়ে পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশিদকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে তারা। ১০ সেপ্টেম্বর রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি খোরশেদ আলম ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম এ দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, ১৫ বছর ধরে পুলিশের সহযোগিতায় ছাত্রলীগ সারা দেশের ক্যাম্পাসগুলোতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। ছাত্রদলসহ সব বিরোধী ছাত্রসংগঠন এবং সাধারণ ছাত্রদের নির্মম নির্যাতন করেছে নির্যাতিত, মুমূর্ষু ছাত্রদের তারা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। পুলিশ তাঁদের গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে এনে আবার নির্যাতন করেছে।

পেটানোর ঘটনা কি সুপরিকল্পিত..

হারুন অর রশিদকে প্রথমে পুলিশের রমনা বিভাগ থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) সংযুক্ত করা হয়। পরে তাঁকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন-এপিবিএনে বদলি করা হয়েছে। আর সর্বশেষ খবর মিলেছে অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এমন ঘটনা অবশ্যই নানান দিক বিবেচনা নিলে বলতে হয় কোনো না কোনোভাবেই এটি পরিকল্পিত। বিষয়টি যে খুবই পরিকল্পিত ও ভায়বহ তা একটি খবরে জানা যায় যে, ঘটনার আগে এই তিনজনের মোবাইল ফোন জিম্মায় নিয়ে সব ধরনের তথ্য ডিলিট করে দেন এডিসি হারুন ও তার সহযোগী পুলিশ সদস্যরা। আবার খবর বেরিয়েছে যে, পিস্তলের বাঁট দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয় নাঈমের দাঁত। থানায় নিয়ে কেনো এই নির্যাতন প্রসঙ্গে গণমাধ্যমে আনোয়ার হোসেন নাঈম জানিয়েছেন যে শনিবার রাতে তিনি এবং ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম শাহবাগের বারডেম হাসপাতাল হয়ে ক্যাম্পাসের দিকে আসছিলেন। এরপর তারা বারডেম হাসপাতালের সামনে তাদের বড় ভাই বিসিএস কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুনকে দেখতে পান। তিনি তখন লিফটে করে কার্ডিওলজি বিভাগের সামনে চলে যান। 

নাঈম বলেন, ৫ থেকে ৭ মিনিট পরে গিয়ে আমরা দেখি, মামুন ভাই এবং এডিসি হারুনের মধ্যে কথাকাটাকাটি হচ্ছে। এরপর আমি এবং মুনিম ঘটনার মীমাংসা করার চেষ্টা করি। পরে সেখানে সেটা মীমাংসা হয়। এর কিছুক্ষণ পর এডিসি হারুন ১০ থেকে ১৫ জন পুলিশকে ফোন দিয়ে সেখানে নিয়ে আসেন। তখন পুলিশ সদস্যরা মামুন ভাই, আমি এবং মুনিমের ওপর চড়াও হয়। এরপর সেখান থেকে মারতে মারতে মুনিমকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি জানান, ‘এই ঘটনার পর তিনি শাহবাগ থানায় যান। থানায় ঢুকলে এডিসি হারুন উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের দেখিয়ে বলেন, ‘এ আমাকে মারছে। একে তোরা মার।’ এরপর তার নেতৃত্বে শুরু হয় পৈশাচিক নির্যাতন। নাঈম আরো বলেন, পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার (এডিসি হারুন) সঙ্গে আমার কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল না। আরেক সরকারি কর্মকর্তার ফোন পেয়ে থানায় গেলে আমার ওপর নির্যাতন শুরু হয়। ভেতরে আগে থেকেই মামুন ভাই ও হারুনসহ কয়েকজন অবস্থান করছিল। আমি থানার ভেতরে প্রবেশ করে ওসির কক্ষে গেলে আমি আমার পরিচয় দিই। ফজলুল হক ফলের সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদক এটা বলে পরিচয় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমার ওপর আক্রমণ করে। নির্যাতনের একপর্যায়ে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। পরে নিজেকে আবিষ্কার করি ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে। এসময় আমার শার্ট রক্তে ভেজা ছিল। কানে গাল বেয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। তিনি জানান, নির্যাতনকারীরা সবাই মুখোশ পড়েছিল। তাদের যে নেমপ্লেট তাও খুলে রেখে আমাকে পিটিয়েছে। তবে আমি দুই-তিনজনের মাস্ক টেনে ছিঁড়ে ফেলেছিলাম। তাদের আমাদের সামনে উপস্থিত করলে তাদের শনাক্ত করতে পারব।

তবে পুরো ঘটনা জানতে শনিবার রাতেই এডিসি হারুন-অর-রশীদের সঙ্গে গণমাধ্যমের সাথে কথা বললে তিনি অন্য কথা বলেন। তিনি দাবি করেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। যদিও ওই গণমাধ্যমেই প্রতিবেদন প্রকাশের পর তাকে প্রথমে রমনা বিভাগ থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) বিভাগে বদলি করা হয়। বিকালে পুলিশ সদর দপ্তরের এক আদেশে তাকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) বদলি করা হয়েছে। কিন্ত একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা কিভাবে পুরো ঘটনা অস্বীকার করে ফেলেন তা নিয়ে রহস্য দেখা দেয়। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যা বললেন

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এডিসি হারুন অবশ্যই অন্যায়ের শাস্তি পাবেন। পুরো কর্মকান্ডের জন্য তাকে জবাবদিহি করতে হবে। রাতে পুলিশ সদর দপ্তর তাকে এপিবিএন-এ বদলির প্রজ্ঞাপন জারি করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদারকি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। ডিএমপির এক এডিসি এ বিষয়ে জানাতে রোববার বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যান।

কেন্দ্রীয় নেতাদের ভূমিকায় ছাত্রলীগে অসন্তোষ 

এদিকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের ভূমিকায় তৃণমূলে অসন্তোষ দেখা দেয় যার বহি:প্রকাশ ঘটেছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।  ছাত্রলীগের তিন নেতাকে থানায় বেধড়ক মারধরের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩টি হল শাখা ছাত্রলীগ বিচার চেয়ে বিবৃতি দিয়েছে। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ কোনো বিবৃতি দেয়নি। অন্যদিকে একই ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ছাত্রদল ও ছাত্র ইউনিয়ন। আর নিরবতায় আছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ১১ সেপ্টেম্বর সোমবারে এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি। তবে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ গত ১০ সেপ্টেম্বর রোববার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ঘটনার বিচার দাবি করেন। এর পাশাপাশি সোমবার  ছাত্রলীগের নেতারা ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কার্যালয়ে গিয়ে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের দেখা করে বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। এডিসি হারুন ইস্যুতে ডিএমপিতে আড়াই ঘণ্টার বৈঠক, বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের সাথেম কথাও বলেন। বেঠক শেষে সংগঠনটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে এডিসি হারুনের মারধরের ঘটনায় ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশের বিভাগীয় তদন্তে আস্থা রাখতে চায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। মামলার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বিষয়টি এড়িয়ে যান। এমনকি এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এখন পর্যন্ত কোনো মামলার কথাও ভাবছেন না বলে জানা গেছে। তবে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান একটি গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতার ঘাটতি দেখলে কর্মসূচি ঘোষণা করবেন তারা।

শেষ হয়েও হচ্ছে না

থানায় দুই ছাত্রলীগ নেতাকে পেটানোর ঘটনা অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছেন। আর এমন ব্যবস্থার পর ধরে নেয়া হয়েছিলো ঘটনার সমাপ্তিই এখানেই। আর এমন পদক্ষেপই ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন চেয়েছিলেন বলে ধারণা করা যেতে পারে। কারণ সাদ্দাম হোসেন  বলেছিলে যে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে এডিসি হারুনের মারধরের ঘটনায় ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশের বিভাগীয় তদন্তে আস্থা রাখতে চায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। আর এজন্যই মামলার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বিষয়টি এড়িয়ে যান। কিন্ত প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ডিবিপ্রধান হারুনের গত ১২ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবারের বক্তব্যে। তিনি বলেন, এডিসি হারুনের ঘটনার সূত্রপাত বারডেমে, সেখানে ঠিক কি ঘটেছিল তা তদন্ত হওয়া দরকার। তিনি বলেন, শাহবাগ থানায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় ডিএমপির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে ও দুজনকে বদলির করা হয়েছে। তবে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ বলেন, ঘটনার নেপথ্যের কারণ খুঁজে বের করা দরকার। ঘটনার সূত্রপাত বারডেম হাসপাতালে। সেখানে ঠিক কি ঘটেছিল তা তদন্ত হওয়া দরকার। মঙ্গলবার দুপুরে ডিবি কম্পাউন্ডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে ডিবিপ্রধান বলেন, থানায় নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাদের নির্যাতনের ঘটনার সূত্রপাত বারডেম হাসপাতালে। রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হক মামুনই আগে বরখাস্ত এডিসি হারুনের ওপর হামলা করেছিল, এমন তথ্য পাওয়া গেছে। সেটিও তদন্তে আসা উচিত। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ডিবিপ্রধান হারুন কেনো বলছেন না যে পুরো ঘটনার সিসি টিভিতে কি আছে? কেনো ছাত্রলীগের দুই নেতার ওপর হামলায় মুখোশ পড়া হয়েছিলো? কেনো সাধারণ ড্রেসে তারা হামলা চালায়? কেনো তদন্তে আসছে না থানায় হামলায় কে কি ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে? আর এজন্যই বলা হচ্ছে শেষ হয়েও হচ্ছে না শেষ। আবার এসব নিয়ে সরকারি দলের ছাত্র সংগঠনের নিরবতাও প্রশ্নবিদ্ধ। তবে এধরনের ঘটনা একটা ছাত্রসংগঠনের জন্য অমর্যাদাকর বলে মনে করেন সচেতন মহল। এর পাশাপাশি পুলিশের ইমেজেও বড় ধরনের ধাক্কা যার দায়ভার শেষ বিচারে ক্ষমতাসীনদের ওপরই পড়বে বলে পর্যবেক্ষকমহল মনে করেন। তবে পুরো ঘটনাটি বিচারে নিলেই বোঝা যায় এটি এমন সময় ঘটানো হয়েছে যখন রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে দেশে বিদেশে বির্তক চলছে। তার মধ্যে এটি ছিল যে বাংলাদেশে আইন শৃংখলা বাহিনীর আচার আচরণের পাশাপাশি মানবাধিকারের বিষয়টি। এধরনের ঘটনায় ক্ষমতাসীন সরকারের আমলে আইন শৃংখলা বাহিনীর এমন আচরণে কি তা প্রকাশ্য হয়ে গেলো না মানবাদিকারের বিষয়টি? আরেকটি বিষয় হচ্ছে যে কেনো আইন শৃংখলা বাহিনীর একেবারে শীর্ষ থেকে ক্ষমতাসীনদের একেবার কলিজার টুকরা বলে পরিচিত ছাত্রলীগের নেতার ওপর এমন পৈশাচিক নির্যাতনে যেতে হলো? বরখাস্ত হওয়া অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদ সরকারকে কি কোনো নেতিবাচক বার্তা দিতে চেয়েছিল এমন ঘটনার মধ্য দিয়ে? তাই পুরো ঘটনার শেষ দেখতে আরো কিছুদিন অপেক্ষায় থাকতে হতে পারে বলে কারো কারো অভিমত। ডিবিপ্রধান হারুনের গত মঙ্গলবারের বক্তব্যে তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে কেউ কেউ মনে করেন।

শেয়ার করুন