২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ১০:০৮:১২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


সব কিছুই মাফিয়া গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে : আনু মুহাম্মদ
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-০২-২০২৪
সব কিছুই মাফিয়া গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে : আনু মুহাম্মদ বক্তব্য রাখছেন অপ্যাপক আনু মুহাম্মদ


অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোসহ ক্ষমতাসীন দলের লাঠিয়াল বাহিনী যেভাবে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে বল প্রয়োগ করছে, মজুরি বৃদ্ধির দাবি করায় শ্রমিকের ওপরে যেভাবে গুলি করা হলো তা দেখলে স্পষ্ট বোঝা যায় এটা একটা শ্রেণিযুদ্ধ। এই শ্রেণিযুদ্ধে রাষ্ট্র একটা পক্ষে দাঁড়িয়েছে। আজ একথা বলার অপেক্ষা রাখে না, সব কিছুই মাফিয়া গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। রাষ্ট্র তাদের হয়ে ভূমিকা পালন করছে মাত্র।

জাতীয় শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদ-এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন। অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ আরো বলেন, কারো কারো এই বিভ্রান্তি হয়েছিল যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয় ইউনিয়ন বাংলাদেশে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ভূমিকা রাখবে। এই বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারাই তাদের সাফল্য। প্রকৃত অর্থে তারা নিজেদের স্বার্থ নিয়েই কাজ করে। তাদের ওপরে নির্ভর করে শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে না। শ্রমিকের অধিকার আদায়ে জোড়ালো শ্রমিক আন্দোলন ছাড়া কোন বিকল্প নেই। 

তোপখানা সড়কে বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে ‘শ্রমিক হত্যা, জবরদস্তিমূলক শ্রম পরিস্থিতি, নিবর্তনমূলক আইন ও ন্যায্য মজুরী বঞ্চিত শ্রমিক: গণতান্ত্রিক ও শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় শ্রমিক কর্মচারি সংগ্রাম পরিষদ-এর আহ্বায়ক বর্ষীয়ান শ্রমিকনেতা মনজুরুল আহসান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রারম্ভিক লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারি ফেডারেশনের সভাপতি জহিরুল ইসলাম। জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক শামীম ঈমামের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিযন সংঘের সভাপতি চৌধুরী আশিকুল আলম, গার্মেন্ট শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু, শ্রমিকনেতা হারুনার রশিদ ভুইয়া, এএএম ফয়েজ, সাদেকুর রহমান শামীম, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোস্তাক, সুশান্ত সিনহা, মোজাফফর হোসেন, উজ্জল রায়, আব্দুল কুদ্দুস, মোহাম্মদ গোফরান, আব্দুল হাশিম কবির প্রমুখ। মতবিনিময় সভায় চা-বাগান, পাটকল, পরিবহন, চাতাল ও রাইস মিল, পাদুকা শিল্প, গার্মেন্ট, টেঙ্গাইলসহ বিভিন্ন শিল্প ও খাতের শ্রমিক প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।

মনজুরুল আহসান খান বলেন, জাতীয় শ্রমিক কর্মচারি সংগ্রাম পরিষদ ১১ দফা দাবির ভিত্তিতে আন্দোলন করছে। সরকার শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি না মানলে সারাদেশের সংগঠিত ও অসংগঠিত সকল খাতের শ্রমিকদের একত্রিত হয়ে সর্বাত্মক ধর্মঘটসহ কঠোর আন্দোলনে নামতে হবে। তিনি আরো বলেন, অতীতের মত এবারও শ্রমিক আন্দোলন দেশের মানুষের ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় পত দেখাবে।

রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, দেশে সংগঠিত শিল্প খাতের বাইরে বিপুল জনগোষ্ঠী অসংগঠিত বিভিন্ন খাতে কাজ করছে। সেবাখাতসহ বহু অসংগঠিত পেশার শ্রমজীবী মানুষ শ্রম আইনের আওতার বাইরে থেকে যাচ্ছে। ফলে তারা আইনগত সকল সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিক আন্দোলনে মজুরি ও অন্যান্য দাবিতে যতটা জোর দেয়া হয় ততটা জোরালোভাবে শ্রম আইন নিয়ে আন্দোলন হয় না। যার ফলে শ্রমিকস্বার্থ বিরোধী শ্রম আইন দ্বারা শ্রমিকরা কাঠামোগতভাবে শোষণ, বঞ্চনার শিকার হচ্ছে। 

সভায় মোশরেফা মিশু বলেন, সরকার শ্রমিক বিদ্বেষী ও মালিক শ্রেণির আজ্ঞাবহ। সীমাহীন দুঃখ ও যন্ত্রণা নিয়ে মানুষ বেঁচে আছে। শ্রমিকের পক্ষে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর সংগঠন ও নেতৃত্বের অভাবপূরণ করে অগ্রসর হতে হবে।

শেয়ার করুন