২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৪:৩০:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


অ্যাসাইলাম অফিসে দ্বিতীয় সাক্ষাৎকার যাতনার আরেক রকমফের
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-০৬-২০২২
অ্যাসাইলাম অফিসে দ্বিতীয় সাক্ষাৎকার  যাতনার আরেক রকমফের


ইদানীং অ্যাসাইলাম অফিসেই প্রথমবার ইন্টারভিউয়ের পর দ্বিতীয়বার ইন্টারভিউয়ের ডাক পড়ছে অনেকের। আমার জানা শোনা অনেক অ্যাসাইলাম প্রার্থী বলেছেন এ কথা। অনেক ক্ষেত্রে শোনা যাচ্ছে, তৃতীয়বারও ডাকা হচ্ছে।

দ্বিতীয়বার ডেকে অ্যাসাইলাম মঞ্জুর না করে তা আবার কোর্টেই পাঠানো হচ্ছে। কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট হিসেবে এবং আইনের ছাত্র হিসেবে অনেক আবেদনকারীর সঙ্গে পরিচয় আছে। তারা অভিযোগ করছে, দ্বিতীয়বার ডেকেও অনেকের আবেদনের রায় না দিয়ে তা ফাইল চাপা দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন পণ্ডিত ও আইনবিশেষজ্ঞরা এই দ্বিতীয় অ্যাসাইলাম সাক্ষাৎকার নিয়ে যেসব উপদেশ দিচ্ছে তা নিয়ে এই লেখা।

সবার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় সাক্ষাৎকার নেয়া হয় না। তবে ক্রমাগত তার সংখ্যা বাড়ছে। কেন দ্বিতীয় সাক্ষাৎকার নেয়া হয়, তার মতলবও পরিষ্কার নয়। অনেকের মতে, ৫ শতাংশ মামলা দ্বিতীয় সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হচ্ছে। এই হিসেবে ৪ লাখ ৩৫ হাজার স্থগিত অ্যাসাইলাম অফিসের মামলার মধ্যে ২১ হাজার ৭৫০ জনকে দ্বিতীয় সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হবে। এই সংখ্যা অনেক। তাই প্রশ্ন উঠেছে, কেন এই দ্বিতীয় সাক্ষাৎকারের প্রয়োজন?

সেখানে মনে হয় কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন কারণ রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে অ্যাসাইলাম অফিসার সাক্ষাৎকার সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু আবেদনকারীর কাছ থেকে সম্পূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতে পারেননি। সম্ভবত অফিসারের সুপারভাইজর, যিনি অবশ্যই সকল সিদ্ধান্ত অনুমোদন করবেন, তার আরো অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর জানা চাই। অন্য সময় সিকিউরিটি ব্যাকগ্রাউন্ড তথ্য যাচাইয়ের সময় নতুন তথ্য বেরিয়ে আসে, যা পুনঃব্যাখ্যার প্রয়োজন অথবা অ্যাসাইলাম অফিস নতুন ফ্যাক্ট আবিষ্কার করে থাকে, যেটা সম্পর্কে তারা জানতে চায়। অন্য অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, সম্ভবত অ্যাসাইলাম অফিসার চাকরি ছেড়ে দেন বা অবসরে যান। আর সে সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করতে পারেন না। আর দেখা যায়, তার গৃহীত নোট সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য পর্যাপ্ত নয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেশের কন্ডিশন পরিবর্তন হয়ে যায়। আর তাতে নতুন প্রশ্ন্রে সৃষ্টি হয় অথবা সম্ভবত তা আরো অতিরিক্ত প্রশ্নের উদ্ভব করে অথবা বিধিবিধানে পরিবর্তনের কারণে আবারো সাক্ষাৎকারের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। দুর্ভাগ্যবশত দ্বিতীয় সাক্ষাৎকারের পূর্বে জানায় কোনো পথ নেই, কেন অ্যাসাইলাম অফিসার দ্বিতীয়বার সাক্ষাৎকারের দিনক্ষণ নির্ধারণ করেছে। এই সাক্ষাৎকারের প্রস্তুতি নেয়া অনেক কঠিন। কারণ দ্বিতীয় সাক্ষাৎকারের সময় কি ঘটেছে, তা তার প্রয়োজন কেন, তার ওপর নির্ভর করে। 

দ্বিতীয় সাক্ষাৎকারে কি আশা করা যায়, সে প্রশ্নে আপনি শুধুমাত্র কয়েকটি উদ্দেশ্যহীন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে পারেন। অন্যদিকে আপনাকে হয়তো আপনার সাক্ষাৎকার আরো বিশদভাবে বিস্তারিত বলতে হতে পারে। প্রথম সাক্ষাৎকারে যা সংক্ষিপ্তভাবে বলেছেন, তা বিস্তারিত বলতে হতে পারে। অন্য মামলায় অ্যাসাইলাম অফিসারের এই মামলাসংক্রান্ত কোনো বিষয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। কাজেই আপনি যদি না জানেন কেন দ্বিতীয় সাক্ষাৎকার নেয়া হবে, তাহলে তার জন্য প্রস্তুতিও নিবেন কীভাবে?

স্বাভাবিক উত্তর হচ্ছে, সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকা। অন্য কথায় আপনাকে তৈরি থাকতে হবে যে, আপনার সাক্ষাৎকার আবার নেয়া হবে এবং সেভাবে প্রস্তুতি নেয়া তার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎকারের কোনো নোট যদি আপনি লিখে থাকেন, পরবর্তীতে তা পর্যালোচনা করে দেখতে পারেন। মনে রাখতে হবে, অ্যাসাইলাম অফিসারের কাছে আপনার অ্যাটর্নি আপনার কোনো প্রশ্ন সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিতে পারবেন না বা বলে দিতে পারবেন না, যদি না অ্যাসাইলাম অফিসার তা জিজ্ঞেস করে থাকেন। আপনি আপনার নোট পর্যালোচনা করতে পারেন, যদি অ্যাটর্নি নিয়ে থাকেন, তাহলে অনেক অ্যাটর্নি নোট নেন বা অনেকে নোট নেন না। কাজেই নিজের স্মৃতির ওপর নির্ভর করাই এক্ষেত্রে ভালো। প্রথম সাক্ষাৎকারে কি কিছু অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটেছিল? কোনখানে অ্যাসাইলাম অফিসারের প্রশ্ন বেশি আলোকপাত করেছে। আপনি কি কোনো ভুল করেছেন উত্তর দিতে?

মনে রাখবেন, প্রথম সাক্ষাৎকারে দেয়া উত্তরের সাথে যেন দ্বিতীয় সাক্ষাৎকারের উত্তরে কোনো গরমিল না হয়। আর তা যদি হয়, সহজেই অ্যাসাইলাম অফিসার ধরে নিতে পারেন যে, আপনি সত্য বলছেন না। কাজেই উত্তর দেয়ার সময় সাবধানে থাকবেন। যদি কোনো প্রশ্ন না বোঝেন অফিসারকে সরাসরি বলুন, আপনি প্রশ্ন বোঝেননি। আপনি যদি কোনো উত্তর না জানেন বা কোনো উত্তর স্মরণ না করতে পারেন, তা অফিসারকে বলুন।্ আন্দাজে উত্তর দেবেন না, যদি আন্দাজ করেন আর তা যদি পূর্বের উত্তরের সঙ্গে সামঞ্জস্য না হয়, তাহলে আপনার মামলা প্রত্যাখ্যান হতে পারে।

যদি মনে করেন, দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতি আপনার মামলার জন্য সুবিধাজনক হবে, তবে তা দাখিল করুন। দ্বিতীয় সাক্ষাৎকার মানে, আপনার সিদ্ধান্ত যে সহসা জানানো হবে তা নয়। আমি এমন একজনকে জানি দ্বিতীয় সাক্ষাৎকারের পর ৬ মাস হয়ে গেছে, তার উত্তরের কোনো পাত্তা নেই। প্রায় সময় অফিসার জানে না কখন উত্তর আসবে। অনেক সময় অবশ্য কয়েক সপ্তাহ বা মাসের মধ্যে উত্তর আসে। দ্বিতীয় সাক্ষাৎকার আসলে কোনো ইতিবাচক বা নেতিবাচক কিছুই বোঝায় না।

দ্বিতীয় সাক্ষাৎকার কেউ পেলেও তা অবশ্যই সিরিয়াসলি দেখা দরকার। প্রথম সাক্ষাৎকারের সাথে দ্বিতীয় সাক্ষাৎকার মিল থাকলে আবেদনকারী যদি উত্তর সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে দেয় বা তাদের সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক পরবর্তী ধারণা সৃষ্টি না হয়, তাহলে তাদের সফলতার সম্ভাবনা বেশি। 


শেয়ার করুন