২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৭:১২:৫৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ওয়েষ্টইন্ডিজ সফর
অন্ধকার ঠেলে সুর্যের আলো ক্যারিবিয়ান দ্বীপে
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-০৭-২০২২
অন্ধকার ঠেলে সুর্যের আলো ক্যারিবিয়ান দ্বীপে সাফল্যের আনন্দে ভাসছে মিরাজ, সাথে দলও/ছবি সংগৃহীত


অবশেষে পরাজয়ের নিকষ কালো দিনশেষে জয়ের রোদেলা সকাল দেখলো বাংলাদেশ ক্রিকেট। কাকতলীয় ভাবে দিনটি ছিল ঈদের আনন্দ দিনে। এদিনেই অন্ধকার ঠেলে সুর্যের আলো ক্যারিবিয়ান দ্বীপে । বাংলাদেশ ক্রিকেট দল যখন- ই দেশের মাটিতে বা বিদেশে যে কোনো ফরম্যাটে খেলে, টাইগার প্রেমিকরা স্বপ্ন  দেখে। অনেক সময়েই স্বপ্ন গুলো হতাশায় মিলিয়ে যায় হতাশার নীলে। প্রতিটি জয় সৃষ্টি সুখের উল্লাসে উল্লসিত করে, বাংলাদেশের আবাল,বৃদ্ধ বনিতা সবাইকে। আমি নিশ্চিত বাংলাদেশের জয় ঈদ উৎসবে মত্ত বাংলাদেশিদের উৎসব রঙিন করেছে। 

ইদানিং সব ফরম্যাটে পরজয়ের বৃত্তে। বাংলাদেশ ক্রিকেট আজ ব্যাঘ্র বিক্রমেই ফিরেছে নিজেদের প্রিয় ওডিআই ফরম্যাটে। টেস্ট সিরিজে কৃষ্ণ ধোলাই আর টি -২০ সিরিজে (২-০) বিধস্ত হবার পর ৬ উইকেটে  প্রথম ওডিআই ম্যাচ জয় বাংলাদেশিদের জন্য টাইগার বাহিনীর ঈদ উপহার। 

বৃষ্টি বিঘ্নিত প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে খেলা শুরুতে বিলম্ব হয়েছিল। ওভার সীমিত করে ৪১ করা হলো। টস জয়ী বাংলাদেশ অধিনায়ক নির্দ্বিধায় বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিলেন। এই ম্যাচ দিয়ে ওডিআই ক্রিকেট শুরু করা বাম হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের প্রথম ওভারেই বল গ্রিপ করলো। দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে প্রথম বলেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রধান ব্যাটসম্যান শাই হোপকে চমৎকার বলে ফিরিয়ে দিলো। তামিম মুহূর্তেই বুঝে নিলেন এই উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিপদে ফেলার মতো বোলিং সম্পদ হাতে আছে।

শরিফুল, মিরাজ এবং অবশ্যই নাসুমের নিখুঁত লাইন, লেংথ বোলিং কোনঠাসা করে ফেললো স্বাগতিক ব্যাটসম্যানদের। ইনিংসে সর্বোচ্চ স্কোর অর্জন করা সামারাহ ব্রুকস কিন্তু শুরুতেই ফায়ার যেতে পারতো। মিরাজের বলে আম্পায়ার এলবিডব্লিউ সিদ্ধান্ত দিলেও বিতর্কিত ভাবে সিদ্ধান্ত পাল্টে দিলো টেলিভশন আম্পায়ার।

যাহোক বাংলাদেশের তুখোড় বোলিং একসময় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৯/১১০ আটকে দিয়েছিল। চার চারটি ক্যাচ ফস্কালো বাংলাদেশ। মাহমুদুল্লাহ একাই দুটো ফেলে দিলো। আফিফ একবার এবং মুস্তাফিজ নিজের বলে নিজেই একবার সুযোগ হাত ছাড়া করলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ জুটি অবিচ্ছিন্ন ভাবে ৩৯ রান যোগ করে দলের সংগ্রহ নিয়ে গেলো ১৪৯/৯। আশা করি, বাংলাদেশের কোচিং স্টাফ দলের ফিল্ডিং বিষয়ে বিশেষ যত্ন নিবেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল বাংলাদেশের উন্নত বোলিং আক্রমণের সামনে হচকচিয়ে গিয়েছিলো।

খেলার ধারা অনুযায়ী ১১৫ বা ১২০ রানে গুটিয়ে যাওয়া ম্যাচের ধারা অনুযায়ী যথাযথ হতো। চমৎকার বল করা শরিফুল ৫ উইকেট পাওয়া সঙ্গত হতো। ইদানিং মাহমুদুল্লার ফিল্ডিং দক্ষতায় ভাঁটা পড়েছে। সীমিত ওভার ক্রিকেটে ফিল্ডিং উন্নত প্রধান অস্ত্র। কিন্তু ক্যাচ ফস্কানো খেলার অংশ। তবে অনেক সময় এটি সংক্রমিত হয়। না হলে দলের তুখোড় ফিল্ডার আফিফ কেন সহজ ক্যাচ ফেলে দিবে। বাংলাদেশ পেসাররা উইকেট অনুযায়ী পেস পরিবর্তন করেছে, স্পিনার্সরা উইকেট অনুযায়ী বল করেছে। উইকেট অনেকটাই বাংলাদেশের উইকেটের মতো ছিল। 

বিরতিতে বোলিং কোচ অ্যালেন ডোনাল্ড বোলিং নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও ক্যাচ ফস্কানো নিয়ে কিছুটা বিরক্তি প্রকাশ করেন। উনি দুটো সুসৃঙ্খল ব্যাটিং পার্টনারশিপ আশা করেন ম্যাচটি জেতার জন্য। ডোনাল্ডের মেনটরিংএ বাংলাদেশ পেস বোলারদের উন্নতির ধারা সুস্পষ্ট। 

বাংলাদেশের ইনিংস শুরুতে ধাক্কা খেয়েছিলো লিটনকে আকিল হোসেন ফিরিয়ে দেয়ায়। তামিম শান্ত চমৎকর ব্যাটিং করছিলো। তামিম ছিলেন দারুন ছন্দে। ৫ ওভারে ৪০ রান যোগ হয়েছিল। অস্থির তামিম দ্রুত রান নেয়ার প্রয়াসে অ্যান্ডার্সন ফিলিপের সরাসরি থ্রোতে রান আউটে কাটা পড়লো। ২৫ বলে ৩৩ রান করা তামিমের আরো একটি ইনিংস আবারো মুকুলেই ঝরে গেলো। শান্ত- রিয়াদ পরিস্থিতি অনুযায়ী দেখে শুনে খেলে দলকে স্বস্তির অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু নিজের ৩৭ রানের মাথায় অকারণে এই ম্যাচ দিয়ে ওডিআই শুরু করা গুরুকেশ মতির বলে পুরাণের হাতে ধরা পড়লেন শান্ত। উইকেটে থিতু হয়ে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের শিখতে বাকি কিভাবে ম্যাচ জয় করে ফায়ার আসতে হয়। শান্ত আউট হবার পরেই আউট হতে পারতেন রিয়াদ। পুরানের বলটি সৌভাগ্য ক্রমে নো বল ছিল।

নিকোলাস পুরান সম্প্রতি নিজেই বোলিং করছে। উইকেটের গ্রিপ , টার্ন বিচক্ষণতার সাথে ব্যবহার করে আফিফের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দেয় পুরাণ।  অকারণে আক্রমণাত্মক হতে চেষ্টা করে উইকেট বিসর্জন দেন আফিফ। ফিলিপ চমৎকার ক্যাচ লুফে নিয়ে আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখে। বিপদ হতো বাংলাদেশের যদি পুরান রিয়াদের বিরুদ্ধে নিজের বলে এলবিডব্লিউ জন্য ডিআরএস নিতেন। যাহোক আর কোনো বিচ্ছুটি ঘটেনি। 

মাহমুদুল্লাহ সোহান ৫ ম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন থেকে ৪০ রান যোগ করে বাংলাদেশকে চলতি সফরে প্রথম জয় এনে দিলো। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে এটি নবম ধারাবাহিক ওডিআই ম্যাচ জয়।সাকিব, মুশফিক,ইয়াসির আলী , সাইফুদ্দিন ছাড়াই এই জয় বিশেষ কৃতিত্বের দাবি রাখে। একটি জয় বাংলাদেশকে অনেক উজ্জীবিত করবে সন্দেহ নেই।


শেয়ার করুন