২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৬:৫৫:৩৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


একজন বললেন অভিনেতা এবং অপরজন বললেন ক্রিকেটার হতে চাইনি
বাংলাদেশের দুই সাকিব একই মঞ্চে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-০৮-২০২২
বাংলাদেশের দুই সাকিব একই মঞ্চে


শোটাইম মিউজিকের কাজই হচ্ছে অসম্ভবকে সম্ভব করা। এক মঞ্চে তুলেছিলেন বাংলাদেশের দুই জনপ্রিয় শিল্পী রুনা লায়লা এবং সাবিনা ইয়াসমীনকে। এবার এক মঞ্চে তুললেন দুই জগতের দুই কিংকে। একজন চলচ্চিত্রের কিং শাকিব খান, আরেকজন মাঠের কিং সাকিব আল হাসানকে। শাকিব খান এখনো পর্যন্ত দু’দেশের চলচ্চিত্রে দাপটের সাথে অভিনয় করছেন। তার প্রতিদ্ব›দ্বী এখন বাংলাদেশে নেই বললেই চলে। আরেকজন বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার। বলা যায়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সেরা ক্রিকেটারদের একজন।

একজন বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গনের অ্যাম্বাসেডর, আরেকজন সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অ্যাম্বাসেডর। বিশ্বের বুকে তারা বাংলাদেশকে তুলে ধরছেন। তাদের তুলনা তারা নিজেই। এই দুজন কিংকে একই মঞ্চে উপস্থাপনা করেছেন শোটাইম মিউজিকের আলমগীর খান আলম। অনুষ্ঠানটি গত ২৯ জুলাই সন্ধ্যায় ওয়ার্ল্ড ফেয়ার মেরিনা রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয়। খুবই পরিচ্ছন্ন এবং চমৎকার একটি অনুষ্ঠান ছিলো। উপস্থাপনায় ছিলেন আলমগীর খান আলম নিজেই। অনুষ্ঠানটি সাজানোও হয়েছিলো অন্যভাবে। আমন্ত্রিত অতিথিরা মঞ্চে গিয়েছেন এবং প্রশ্ন করেছেন।

আবার তাদের হাতে দুই কিংকে দিয়ে সম্মাননা তুলে দেয়া হয়। যার মধ্যে ছিলেন বিশিষ্ট রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর নূরুল আজিম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রিসিলা ফাতেমা, গোল্ডেন এজ হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট শাহ নেওয়াজ এবং ডিরেক্টর রানো নেওয়াজ, ডা. চৌধুরী সারওয়ারুল হাসান, বিশিষ্ট অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, উৎসব ডট কমের রায়হান জামান, রাহাত মুক্তাদির, ইঞ্জিনিয়ার আবু হানিপ, জেবিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ সোলায়মান, লিবার্টি রিনোভেশনের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আজাদ, হেলাল মিয়া, ইমরান খান, খলিল বিরিয়ানী হাউজের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খলিলুর রহমান, লায়ন্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট আহসান হাবিব, বাংলা চ্যানেল ও শাহ ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট শাহ জে. চৌধুরী, সিপিএ মোহাম্মদ চিশতি, ডা. বর্ণালী হাসান, ডা. মাহফুজুর রহমান, বারী হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট আসেফ বারী টুটুল, ভাইস প্রেসিডেন্ট মুনমুন হাসিনা বারী, হযরত আলী ইমরান ও শেখ সায়েম উল্যাহ।

এক প্রশ্নের জবাবে অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসান বলেন, আমরা দেশের জন্য খেলি। দলকে জেতাতে চেষ্টা করি। দেশের মানুষ আমাদের ভালো সময় এবং মন্দ সময়- দুই সময়েই ভালোবাসে, সাপোর্ট দেয়। তিনি বলেন, যে কোনো কাজে সফলতা পেতে হলে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। কঠিন পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। কঠোর পরিশ্রমের পাশাপাশি ভাগ্যও একটা ব্যাপার।

চলচ্চিত্রের কিং শাকিব বলেন, শীর্ষে উঠতে হলে আবশ্যই পরিশ্রম করতে হবে। পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। আমার কাজ হচ্ছে কাজ করা। আর তার মূল্যায়ন করবে বাংলাদেশের মানুষ।

আরেক প্রশ্নের জবাবে কিং শাকিব বলেন, আসলে আমি কতটা জনপ্রিয় সেটা আমি জানি না। তবে এটা বলতে পারি বাংলাদেশের মানুষ আমাকে ভালোবাসে। আমি ভালো সময় এবং মন্দ সময় তাদের সাপোর্ট পেয়েছি। আসলে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি এতো বড় নয়। আমরা সোনালি যুগ পাইনি। আমাদেরই গড়ে নিতে হচ্ছে। বাংলাদেশের ছবি এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রদর্শিত হচ্ছে। এভাবেই এক সময় আমাদের চলচ্চিত্র সারা বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়বে।

সাকিব আল হাসান বলেন, ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন হতে হলে আমাদের আরো অনেক কাজ করা প্রয়োজন।

আরেক প্রশ্নের জবাবে সাকিব আল হাসান বলেন, ভবিষ্যতের কথা জানি না। আমি বর্তমান নিয়ে ভাবতে চাই এবং আমি বর্তমান নিয়ে ভাবতে পছন্দ করি। ভবিষ্যতে যদি থাকতে চাই তাহলে অ্যাটর্নি সাহেব আপনার নম্বর আমি রেখে দিবো।

কিং খান বলেন, অসুবিধা নেই, ভবিষ্যতে থাকতে চাইলে আপনি তো আছেন।

সুপারস্টার শাকিব খান বলেন, ‘ভাগ্য লাগে। সেটি নির্ধারণ করেন আল্লাহ তায়ালা। এটাই বড় সত্য, আমি চেষ্টা করে আসছি। এই চেষ্টা জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠতে সহায়তা করে অনেককেই। 

সাকিব আল হাসান বলেন, ‘আমি বাস্তববাদী মানুষ। বর্তমান নিয়েই ব্যস্ত থাকি। তাই মারা যাওয়ার পর কে কী ভাবলেন সেটি তো আমি জানতে পারবো না। তবে আমি জানি যারা একান্তই কাছের মানুষ তারা স্মরণ করবেন, দোয়া করবেন। আর যদি সমগ্র জাতির কল্যাণে কিছু করছি বলে বিবেকসম্পন্নরা অনুধাবনে সক্ষম হন, তাহলে তারাও স্মরণ রাখবেন বহুদিন। ’ 

বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেটের প্রসারে কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে ক্রিকেটার সাকিব বলেন, ‘অবশ্যই করার ইচ্ছা আছে। নতুন প্রজন্মে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে ক্রিকেটের প্রতি। সেই আবেগ কাজে লাগাতে সচেষ্ট রয়েছেন সকলেই।’ আমি এখনো খেলছি এবং একটি একাডেমিও রয়েছে। আগামীতে সেখানেই সময় দেবো। 

মার্কিন মূলধারার চলচ্চিত্রে প্রতিভাধরদের নিয়ে সম্পৃক্ততার কোনো চিন্তাভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে ঢালিউডের কিং শাকিব বলেন, ‘বাংলাদেশিসহ এশিয়ানদের মেধা এবং প্রতিভা অত্যন্ত প্রখর- এটি মার্কিন মুল্লুকের বিদগ্ধজনেরা ইতিমধ্যেই উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছেন। এ আর রহমান, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া এর অন্যতম উদাহরণ। নিশ্চয়ই আমরাও একই অবস্থানে উঠতে সক্ষম হবো। এজন্যে নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।’ এ আর রহমান ইতিমধ্যেই অস্কার পেয়েছেন। আমি শুরু করেছি। ছবির মহরত হয়েছে। একজন বিদেশীতো নায়িকা হচ্ছেন।

আমেরিকার ক্রিকেট নিয়ে সাকিব আল হাসান বলেন, আমেরিকা ক্রিকেট ভালো করছে। পরবর্তী বছরে তারা টি-টোয়েন্টি খেলার আশা করছে। একদিনের ক্রিকেটে তাদের টার্গেট ২০২৪ সালে কোয়ালিফাই করা এবং ২০১৭ সালে ক্রিকেট ওয়ার্ল্ডকাপ খেলা। আমি বলতে পারি একসময় আমেরিকায় বেস বলের জায়গা দখল করে নেবে ক্রিকেট। আমার সাথে কথা হচ্ছে একটি একাডেমি করার। সুযোগ থাকলে বা আমন্ত্রণ জানালে এখানকার ক্রিকেট বোর্ডের সাথে কাজ করা।

বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সাকিব আল হাসান বলেন, ক্রিকেট নিয়ে আমাদের যে জায়গায় যাওয়ার কথা ছিলো, আমরা সেখানে যেতে পারিনি। একদিনের ক্রিকেট এবং স্টেটে আমরা প্রত্যাশা পূরণ করতে পারিনি। তবে টি-টোয়ান্টি ভালো করছি। একদিনের ক্রিকেটে ও স্টেট প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারাটা দুঃখজনক। তবে বিসিবি পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং নতুন নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। আমাদের আরো সময় প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। তিনি স্মরণ করে দিয়ে বলেন, ভারত দেড়শো বছরের ইতিহাসে দুইবার শিরোপা পেয়েছে।

কলকাতায় সিনেমা করা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কিং খান বলেন, আমাদের তুলনায় চরচ্চিত্রে ভারত অনেক এগিয়ে। আমি যখন কলকাতায় ছবি করি, সেখানে বাংলাদেশিরা যায় দেখতে। বলে আমাদের নায়ক। আর কলকাতায় অভিনয়ের ক্ষেত্রে আমি কোন অসুবিধা দেখি না।

জীবনের লক্ষ্যে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সাকিব আল হাসান বলেন, ছোটবেলায় আমি ফুটবল খেলতাম। আমার ফুফাতো ভাই এবং বাবাও ফুটবল খেলতেন। কিন্তু প্রফেশন হিসেবে নিয়েছি ক্রিকেট।

গ্রিনকার্ড নিয়ে কিং খান বলেন, গ্রিনকার্ড তো অনেক আগে পেয়েছি। এখন সময় এসেছেন দেশে চলে যাবার। আলমগীর খান আলমের অনুরোধে আজকের অনুষ্ঠানের জন্য থেকে গেলাম।

এ নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দেননি সাকিব আল হাসান। আইপি এল নিয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে সাকিব আল হাসান বলেন, এখানে আসলে আবেগের কোন জায়গা নেই। আমি আইপিএল গেলে বিশ্বের সেরা সেরা খেলোয়াদের সাথে খেলার সুযোগ পাই, তাদের সাথে কথা বলে অনেক কিছু জানতে পারি। এখনো আমার শেখার অনেক কিছু আগে। বড় বড় টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে আমি শিখছি এবং তা দেশে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি।

জীবনে কী হতে চেয়েছিলেন এই প্রশ্নের জবাবে সাকিব আল হাসান বলেন, ছোট বেলায় আমার ইচ্ছার পরিবর্তন হতো। কখনো ডাক্তার, কখনো পাইলট হতে ইচ্ছে হতো। তবে এটা সত্যি আমি কখনো ক্রিকেটার হতে চাইনি।

কিং খান বলেন, আমি অভিনেতা হতে চাইনি।

নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত দেশ পত্রিকার প্রশ্ন ছিলো একজন আরেকজনকে মূল্যায়ন করার। এই প্রশ্নের জবাবে সাকিব আল হাসান বলেন, কিং খান আমার ভাই, তিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরছেন এবং আমাদের পরিচিত করছেন। কিং খান বলেন, সাকিব আমার ভাই। তিনি বাংলাদেশকে পৃথিবীময় ছড়িয়ে দিচ্ছেন। তিনি শুধু নিজে যাচ্ছেন না। আমাদের দেশ এবং ক্রিকেটকে নিয়ে যাচ্ছেন।

 

শেয়ার করুন