২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৪:৬:৫৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


চ্যালেঞ্জের বোঝা নিয়েও এগিয়ে যাচ্ছে দেশ
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-০২-২০২৩
চ্যালেঞ্জের বোঝা নিয়েও এগিয়ে যাচ্ছে দেশ


বাংলাদেশের গণতন্ত্র, উন্নয়নসহ যাবতীয় বিষয়ে নানাজনের ভিন্নমত আছে। আমার নিজেরও অনেক সন্দেহ, সংশয় আর প্রশ্ন আছে। তবুও দুই মাসের (ডিসেম্বর ২০২২ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২৩) বাংলাদেশ সফর থেকে বলবো অনেক সমস্যা-সংকট কাঁধে নিয়েও ধীর লয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রপরিচালনার কিছু মৌলিক বিষয়ে (স্ট্র্যাটেজিক এরিয়া) জাতীয় ঐকমত্য থাকলে উন্নয়নের পথ অনেক সুগম হতো। জনগণের কল্যাণে সত্যিকার জবাবদিহিমূলক জনতার সরকার বর্তমান বাস্তবতায় কবে প্রতিষ্ঠিত হবে জানি না। তবে অর্জনসমূহের কথা বললে সেটা অন্যান্য সরকারের তুলনায় বর্তমান সরকার মন্দের ভালো। যদি বর্তমান সরকার তার তিন টার্মে ধুরন্ধর আমলা আর সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটদের কবল মুক্ত হয়ে দক্ষ অভিজ্ঞ পেশাদারদের ওপর নির্ভর করতো, যদি সর্বস্তরে দুর্নীতিমুক্ত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতো, তাহলে উন্নয়নের সুফলগুলো জনতার দোরগোড়ায় পৌঁছে যেতো। 

এবার স্বপ্রাণোদিত হয়ে আমি মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটি শিক্ষক এবং ছাত্রদের সঙ্গে জ্বালানি বিদ্যুৎ বিষয়ে মতবিনিময় করেছি। ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি গ্রিন ক্যাম্পাস সফর করে আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থাপনাসমূহ দেখে আশান্বিত হয়েছি। 

গ্যাস, বিদ্যুৎ সেক্টর। সড়ক যোগাযোগ সেক্টরের মেগাপ্রকল্পসমূহ পরিদর্শন করেছি। ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় জ্বালানি, বিদ্যুৎ আর খেলাধুলা নিয়ে কথা বলেছি। পটুয়াখালীর দূর দ্বীপচর মোন্তাজ সফর করেছি। খুলনা-মংলা সফর করার প্ল্যান রয়েছে। এর পাশাপাশি গ্যাস বিতরণ এলাকা মেঘনা ঘাট, আশুলিয়া, মাওনা, কালীগঞ্জ ব্যাপক সফর করে শিল্পখাতে জ্বালানি বিদ্যুৎ সংকটের প্রকৃত রূপ দেখেছি। আমার মতে, জ্বালানি সংকটের সময়ে সৌরবিদ্যুৎ, গ্যাসের বিকল্প এসএনজি (sng) ব্যবহারের ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। সরকারের উচিত অন্যান্য খাতে ব্যয় বরাদ্দ সমন্বয় করে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি ক্রয় করা, কয়লা আমদানি করা।   

ঢাকা শহরকে যানজট, শব্দজট, ধূলিকণা মুক্ত, মশা মুক্ত করার বিষয়ে আমার ব্যাপক হতাশা আছে। এক্ষেত্রে ঢাকার দুই মেয়রের করণীয় রয়েছে অনেক। ঢাকা সিটি করপোরেশনের সব এলাকায় উন্নয়ন ছোঁয়া পৌঁছানো প্রয়োজন। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। যদিও এখানে আর্থিক সংকটের একটা অজুহাত রয়েছে। কিন্তু ওইসব এলাকার মানুষকে বোঝানোর দায়িত্ব কার? মেয়রদের উচিত যেখানে উন্নয়নের আওতায় নিতে সময় লাগবে তাদেরকে বোঝানো, সান্ত¦না প্রদান, আশা দেখানো, কিন্তু সেটা হচ্ছে না। সাধারণ মানুষ সেখানে ক্ষিপ্ত, যা আগামী জাতীয় নির্বাচনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে ক্ষমতাসীনদের ভোটে। সব মিলিয়ে ঢাকার দুই মেয়র খুব সফল বলবো না। প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঝে সমন্বয়ের খুব অভাব। এছাড়াও জনসাধারণের বন্ধু বলা হয় পুলিশকে। কিন্তু সে পুলিশ কিন্তু আসলেই জনবান্ধব নয়। মানুষ পুলিশের কাছে যেতে ইতস্তত করে।   

বর্তমান অবস্থায় বাস্তবায়নাধীন কিছু মেগাপ্রকল্প যেমন মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস হাইওয়ে, বাস রেপিড ট্রানজিট স্বাভাবিক গতিতে শেষ হলে ঢাকার যানজট সহনীয় হবে বলেই আমি মনে করি। এর পাশাপাশি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, কর্তফুলী নদীর তলদেশের ট্যানেল, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ি গ্যাস-বিদ্যুৎ হাব, পদ্মা সেতু রেলসংযোগ দ্রুত শেষ করার জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, স্বচ্ছ জবাবদিহিমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিত্ব মূলক সরকার ক্ষমতায় আসা জরুরি।  

আমি নানা পর্যায়ে তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে আলোচনা করে আশার আলো দেখতে পেয়েছি। এবারের সফর শেষে আমি আশাবাদী হয়েই ফিরে যাবো আবাসস্থল অস্ট্রেলিয়ায়। জানি না, আবার কখন মায়ের দেশে ফিরে আসার সুযোগ হবে।  তবে নিশ্চিত করেই বলতে পারি বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং প্রত্যাশা এ ধারা অব্যাহত রেখে এগিয়ে যাবে প্রাণের বাংলাদেশ।

শেয়ার করুন