২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০২:১২:৫৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


হচ্ছেটা কী একের পর এক
খন্দকার সালেক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৪-২০২৩
হচ্ছেটা কী একের পর এক একটি সংবাদের জেরে গ্রেফতার করা হয় প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে।


বাংলাদেশ মিডিয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে কিছু ঘটনা আলোচনার ঝড় তুলেছে। এমনিতেই সামাজিক বিবর্তনের কারণে দেশে এখন বিপুলসংখ্যক ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়া। অনিয়ন্ত্রিত সামাজিক মিডিয়াও অনেক সরব। আর তাই ঘটনা দুর্ঘটনা আর আলোচনা-সমালোচনার কমতি বা খামতি নেই। রাজনীতি, অর্থনীতি, জ্বালানি সংকট এগুলোর পাশাপাশি আমলাদের স্যার সম্বোধন, বিচারকের স্কুলপড়ুয়া মেয়ের কৌলিন্য দাবি পরবর্তী বিচারক মায়ের বাড়াবাড়ি, জেসমিন নামের একজন সরকারি অফিসারকে র‌্যাব রাস্তা থেকে মৌখিক অভিযোগে তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ এবং সে সূত্র ধরে তার মৃত্যু অর্থাৎ হেফাজতে মৃত্যু, এর কিছুদিন আগেও আসামি ধরতে যেয়ে র‌্যাব কর্তৃক একজন বৃদ্ধের নিহত হওয়ার ঘটনা, স্বাধীনতা দিবসে একটি শীর্ষ স্থানীয় দৈনিকের স্পর্শকাতর শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ।

ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসানের নানা অর্জন-বিতর্ক, পুলিশ অফিসার খুনের অভিযুক্ত খুনির দুবাইয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী বনে যাওয়া থেকে ইন্টারপোলে রেড অ্যালার্ট তালিকায় নাম আসা। সম্প্রতি আলোচনায় মিডিয়ায় আলোচিত হিরো আলমের জনপ্রিয়তা নিয়ে নানা জনের নানা কথা। এরও আগে একটি ব্যাংকের অর্থ বহন করে নিয়ে যাওয়া প্রায় ১১ কোটি টাকা ছিনতাই হয়ে যাওয়াসহ পবিত্র রমজান মাসেও অনেক স্থূল বিষয়ের পাশাপাশি কিছু সূক্ষ্ম আলোচিত বিষয় নিয়ে ভাবনার অবকাশ আছে। 

সরকারি কর্মকর্তারা রাষ্ট্রের বেতনভুক চাকর। চাকরিরত সবাই চাকর, সাধারণ জনগণ দেশের মালিকানা পায়নি বিধায় চাকররা নিজেদের সেবক না ভেবে, মুনিব ভাবছে। এই মনোভাবের জন্য রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা সরকারের আমলা তোষণ নীতি দায়ী।  সরকারি কর্মকর্তারা নিজেদের সেবক ভাবলেই তারা যথাযথ সম্মান পাবেন। স্বাধীন দেশে ৫২ বছরে ঔপনিবেশিক মনোভাব চিরতরে পরিহার না হওয়া রাজনৈতিক সরকারের ব্যর্থতা। 

আর হিরো আলম একজন নাগরিক হিসেবে তার কাজ নিয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করলে অন্য কারো মাথাব্যথার কারণ হতে পারে না। আমি বিষয়টি নিয়ে আরেক জনপ্রিয় সাংস্কৃতিককর্মী চঞ্চল চৌধুরীর প্রণিধানযোগ্য কিছু প্রাসঙ্গিক কথা শুনলাম। একই প্রসঙ্গে কথা বলেছেন আরো একজন দেশবরেণ্য শিল্পী। পক্ষান্তরে তার ব্যাপারেও কথা তুলছেন কেউ কেউ। কারণ সমাজে তাদেরও যে দায়বদ্ধতা রয়েছে, তারা তার কতটা পূরণে সক্ষম হয়েছেন। হিরো আলমদের উত্থানে তাদেরও দায়ী হওয়া অস্বাভিক কিছু না। আসলে সমাজে রুচি সৃষ্টির জন্য অগ্রসরমাণ মানুষদের নিজ নিজ অবস্থানে থেকে অনেক কিছুই করার আছে।  

আর সবচেয়ে বিতর্কিত প্রসঙ্গের অবতারণা করেছে একটি প্রধান দৈনিক দ্রব্যমূল্য নিয়ে একটি শিশুকে উদ্ধৃতি করে সংবাদ ছাপিয়ে। সবাই জানে বৈষয়িক সংকট আর ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারসাজিতে বাংলাদেশের বাজারে নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্য। কিন্তু তাই বলে একটি অবুঝ শিশুকে মডেল বানিয়ে চটকদার সংবাদ প্রকাশ দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার পরিচায়ক নয়। যাহোক, সংশ্লিষ্ট পত্রিকা ভুল স্বীকার করে সংবাদ তুলে নিয়েছে। কিন্তু এরপর এটা নিয়ে তোলপাড় হওয়ার অবকাশ কতটুকু। যা নিয়ে এখন গোটা বিশ্ব থেকেই অনেকটা প্রতিক্রিয়া আসছে। কারণ যে আইন দেখিয়ে সংবাদপত্রের কর্মীকে আটক করা ও মামলা হয়েছে সেই ডিজিটাল নিরাপত্তার আইন ব্যবহার প্রসঙ্গে বিতর্ক দেশ-বিদেশে বহু পুরোনো। 

যে যেভাবেই এসব ঘটনার ব্যাখ্যা দিক না কেন, বাংলাদেশ কিন্তু একটি কঠিন সময় পার করছে। জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে এমন সব ঘটনা যা নিয়ে দেশ বিদেশে আলোচনা মোটেও কাম্য নয়। এতে নানা বিতর্কের অবতারণা ঘটে, যা দেশের জন্য দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রার জন্যও মঙ্গলকর নয়। এসব খুঁটিনাটি  মনে করার সুযোগ নেই। দক্ষতা সর্বক্ষেত্রে দেখিয়ে সব পক্ষ সমঝোতায় কন্ট্রোল করাও বড় একটা কাজ। 

ফলে বৈষয়িক সংকট এবং নিজেদের কিছু ভুলের ফলশ্রুতি সময়ে সামাজিক বিষয়গুলো নিয়ে সচেতন প্রতিক্রিয়া যেন সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করে। সবকিছুর ওপর দেশ ও দেশের জনগণ। উন্নয়নের দ্রুতগামী হাইওয়েতে দুর্ঘটনা ঘটলে পরিণতি ভয়াবহ হবে। 

শেয়ার করুন