২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৪:৫৬:৪০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


তত্ত্বাবধায়ক প্রশ্নে কঠোর অবস্থানে খালেদা জিয়া
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০৫-২০২৩
তত্ত্বাবধায়ক প্রশ্নে কঠোর অবস্থানে খালেদা জিয়া খালেদা জিয়া


তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রশ্নে কঠোর অবস্থানেই বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এই দাবি আদায়ে তিনি দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সমমনা রাজনৈতিক দলগুলিকে  ইস্পাত কঠিন ঐক্য ধরে রাখার আহবান জানিয়েছেন। এর পাশাপাশি এদাবি আদায়ে অহিংস পথেই আন্দোলনে জোর দিয়েছেন তিনি। 

গত ৮ মে সোমবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাসা ফিরোজায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না সাক্ষাতেই এসব কথা উঠে আসে। এব্যাপারে মাহমুদুর রহমান মান্না কোনো গণমাধ্যমেই এ-রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কিস্তারিত জিছুই বলেননি। তবে শুধু বলেছেন, সোমবার রাত সোয়া ৮ টার দিকে গুলশানে খালেদা জিয়ার ভাড়া বাসা ফিরোজায় প্রবেশ করেন তিনি। আর রাত ১০টার দিকে তিনি বের হন। এ সময় যে তিনি কেবল বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক খোঁজ নেন এবং কুশলাদি বিনিময় করেন। 

খালেদা-তারেক-মান্না কথা বলেন..

তবে রাজনৈতিকি বিশ্লেষকদের মতে, মাহমুদুর রহমান মান্নার সাথে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতটি শুধু শারীরিক খোঁজ খবর আর কুশলাদি বিনিময়েই সীমাবদ্ধ থাকেনি। কেননা এমন সময় হয়েছে যাতে কি-না নানান ধরনের সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। তা ছিল ৬ মে শনিবার গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে গণ অধিকার পরিষদ বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়টি। যা রাজনীতিতে ভিন্ন মাত্রা দেয়। এমন ধরনের নাটকীয় ঘটনা বিএনপিসহ জোটের অনেককেই অবাক করে দেয়। আর সরকারের সমর্থকরা বেশ উৎফল্ল বোধ করেন। আর এমন সময়ই খালেদা জিয়ার সাথে মান্নার সাক্ষাতটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। জানা গেছে, এব্যাপারে খালেদা জিয়া বিস্তারিত জানতে চান মান্নার কাছে। তবে কেবল এই আলোচনা গণ অধিকার পরিষদ নিয়েই সীমাবদ্ধ থাকেনি। একটি বিশেষ সূত্র জানায়, মাহমুদুর রহমান মান্না নিজেও দেশে আন্দোলনের এই চূড়ান্ত সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রশ্নে বিএনপি’র অবস্থান সর্ম্পকে পরিস্কার ধারণাই নিতে গেছেন যেমন সত্য তেমনি আরো অনেক বিষয়ও ছিল। জানা গেছে, খালেদা-মান্নার এই সাক্ষাতের এক পর্যায়ে লন্ডন থেকে দলের চেয়ারপারসন তারেক রহমানও সম্পৃক্ত হন অনলাইনে। আর এসময়ে একটি বিষয় উঠে আসে, যা ছিল দলের ও জোটের ইস্পাত কঠিন ঐক্য। যদিও এসব ব্যাপারে মান্না গণমাধ্যমে কিছু বলেননি। তবে আলোচনায় উঠে আসে আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে এর পেছনে সরকারের ইন্ধন রয়েছে বলে সন্দেহ করেন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান উভয়ই। আর এসময় খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রশ্নে বিএনপি’র কঠোর অবস্থানটি যেমন তুলে ধরেন তেমনি এনিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম যেনো অহিংসই থাকে সে ব্যাপরেও পরামর্শ দেন। খালেদা জিয়া- তারেক রহমান উভয়ই বলেন, আন্দোলনকে সংহিসতায় নিতে সরকারেরর নানা ধরনের তৎপরতা রয়েছে। আবার নানান ধরনের লোভ-টোপও আছে বলে সর্তক করে দেন। 

তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে কঠোর অবস্থানের আরো নমুনা..

দলের একটি সূত্র জানায় গত মাসে বর্তমান সরকারের অধীনেই বাংলাদেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে শতভাগ গ্যারান্টার হতে চায় আমেরিকা-এমন খবর উঠে আসে। বলা হয় এসরকারকেই ক্ষমতায় রেখে আমেরিকা সেধরনের নির্বাচনী আয়োজনে পরামর্শ দেয়। তবে এখন পর্যন্ত এমন পরামর্শ বিএনপি নিয়েছে বলে সামান্য আঁচও করা যাচ্ছে না। বরং গত সোমবারই বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গুয়েন লুইস সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল। দুপুরে রাজধানীর গুলশানে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কের বাসভবনে এ বৈঠক হয়। বিএনপি নেতারা সেখানে মধ্যাহ্নভোজেও অংশ নেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে গুয়েন লুইসের সঙ্গে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের দুজন সদস্য বৈঠকে অংশ নেন। এসন সাক্ষাৎ নিয়ে নানান ধরনের প্রশ্ন দেখা দেয়। বলা হচ্ছে বিএনপি যদি সত্যিই সরকারের সাথে কোনো ধরনের দফা-রফায় আগ্রহী হতো তাহলে এভাবে তারা গুয়েন লুইসের সাথে ঠিক ঐ দিন যেতো না। উল্লেখ্য গত মাসে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক এই সমন্বয়ক গুয়েন লুইসের সাথে। এপ্রিলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তিনি ড. মোমেনের সঙ্গে দেখা করেন এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনসহ বাংলাদেশে চলমান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেন। এসময় আব্দুল মোমেন বাংলাদেশের অঙ্গীকারের কথা জানান।

শেষ কথা..

বিএনপি’র এবারের অবস্থানের অতীতের অবস্থান থেকে সর্ম্পূণ আলাদা বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। তারা বলেন, বিএনপি জানে এবারের সিট ভাগাভাগি বা গোপনে দরকষাকষিতে গেলে দলের ভাঙ্গন খুবই দ্রুত হবে। এমনকি দলটির বিলীন হয়ে যাওয়া কেউ ঠেকাতে পারবে না। অন্যদিকে বিএনপি এটা বুঝে গেছে, যে সরকার এই দলটিতে একবার নির্বাচনে দিকে নিয়ে গেলে তাদের আর কিছু করার থাকবে না। এমনকি আঁতাতের নির্বাচনেও সরকার কৌশলে বিএনপি’র ভেতরে থাকা সরকার ঘেষা একধরনের সমর্থকদেরই বিজয়ী করে আনতে পারে। আর সেজন্যই বিএনপি এখন আগের চেয়ে অনেক কঠোর অবস্থানে আছে। আর এবারের মান্নার সাথে সাক্ষাতে এসব বিষয়ও উঠে আসে বলে বিভিন্ন সূত্র জানায়। এখন দেখা যাবে সরকারের কাছে সামনে কি কৌশল আছে বিএনপি’কে নির্বাচনমুখী করার। কারণ রাজনৈতিক অঙ্গনে মে-জুন অনেক নাটক অনেক খেলা দেশবাসী দেখতে হতে পারে জোর গুঞ্জন আছে।

শেয়ার করুন