২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৭:২৫:৪০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের শুভেচ্ছা
ডব্লিউইউএসটির সমাবর্তন সমাপ্ত
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৬-২০২৩
ডব্লিউইউএসটির সমাবর্তন সমাপ্ত


যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের একটি শুভেচ্ছাপত্র পেলেন ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির গ্র্যাজুয়েটেড শিক্ষার্থীরা। গত ১৭ জুন ছিল এই গ্র্যাজুয়েশন সেরিমনি। ক্লাস অব টোয়েন্টি টোয়েন্টি থ্রি। গাউন ও হ্যাট পরে শিক্ষার্থীরা গ্র্যাজুয়েশন প্যারেডে অংশ নেন। আর গ্রহণ করেন গ্র্যাজুয়েশন সনদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬ জন শিক্ষার্থী পেলেন এই সমাবর্তন। এক আলো ঝলমল বিকালে ভার্জিনিয়ার জর্জ সি মার্শাল হাইস্কুল প্রাঙ্গণটি ভরে উঠেছিল কালো ও কমলার গাউন পরা সদস্য গ্র্যাজুয়েটদের আনাগোনায়। আর অভ্যাগত অতিথিরা পরেছিলেন কালোর সঙ্গে আরো হরেক রঙ মিশিয়ে-কোনোটি নীল, কোনোটি মেজেন্ডা বা লাল। সব মিলিয়ে এক বর্ণিল গ্র্যাজুয়েশন। 

সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের পাঠানো শুভেচ্ছাবার্তা বহন করে এনেছিলেন তারই সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা বব জে ন্যাশ। চিঠিতে সাবেক ইউএস প্রেসিডেন্ট ডব্লিউইউএসটির কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। ডব্লিউইউএসটি যেভাবে শিক্ষার সেবা দিয়ে যাচ্ছে এই সেবা যেন অব্যাহত থাকে তার আহ্বান জানান।  অন্যদিকে গ্র্যাজুয়েটেড শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘পরিবর্তনশীল পৃথিবীটাকে সঠিক পথ ধরে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব এখন আপনাদের।’

সমার্তন শুরু হয় দুপুর ২টায়। তখন গাউনধারী শিক্ষার্থীরা গ্র্যাজুয়েশন প্যারেড করে নির্ধারিত নিজ নিজ আসনে বসেন। ওদিকে আগে থেকেই মঞ্চ ততোক্ষণে ঝলমল গুরুত্বপূর্ণ সবার উপস্থিতিতে। তাদের সঙ্গে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ, শিক্ষকরাও। জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠানের মূল পর্ব।

এরপর মঞ্চে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর আবুবকর হানিপ। তুলে ধরেন তার জীবনের গল্প। সাফল্যের পথটি যে নয় মসৃণ। সেখানে কত থাকে উত্থান-পতনের গল্প তা তুলে ধরেন। আনুষ্ঠানিক সমার্বতন বক্তৃতায় তিনি গ্র্যাজুয়েটেড শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, জীবনের প্রকৃত যুদ্ধ এখান থেকেই শুরু, একটা দৃঢ়চেতা মন নিয়ে অব্যাহত চেষ্টাই পারবে জীবনের অগ্রযাত্রা নিশ্চিত করতে। 

সমাবর্তনে প্রধান অতিথি ও কিনোট স্পিকার ছিলেন সাবেক ইউএস রিপ্রেজেনটেটিভ জিম মোরান। তার উপদেশমূলক বক্তব্য মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শোনেন শিক্ষার্থী তথা, অভ্যাগত অতিথিরা। নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা, প্রতিদিন নতুন কিছু শেখা এবং নিজেকে একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার পরামর্শ রাখেন তিনি। 

গেস্ট স্পিকার ছিলেন ভার্জিনিয়ার ফেয়ারফ্যাক্সের স্টেট সিনেটর চ্যাপ পিটারসেন। মাস্টার্স সম্পন্ন করা গ্র্যাজুয়েটদের তাদের শিক্ষার আলো নানাভাবে সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।  তিনি বলেন, ডাইভারসিটিই যুক্তরাষ্ট্রের সেরা সৌন্দর্য। একজন প্রথম বাংলাদেশি আমেরিকান হিসেবে আবু বকর হানিপ এখানে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলেছেন, যা আমাদের গৌরবান্বিত করে, বলেন চ্যাপ পিটারসেন। 

ভিডিওবার্তার মাধ্যমে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির গ্র্যাজুয়েটদের এবং কর্তৃপক্ষকে শুভেচ্ছা জানান ইউএস সিনেট মেজরিটি লিডার চাক শুমার। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে সব সেক্টরেই রয়েছে শিক্ষার্থীদের সুযোগ, এই সুযোগকে কাজে লাগাতে এগিয়ে যেতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সেটা পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সিনেটর চাক শুমার। 

ভিডিওবার্তা পাঠান কংগ্রেসম্যান গ্যারি কন্নলী ও কংগ্রেস উইম্যান গ্রেস মেং। 

অনুষ্ঠানে অভ্যাগত অতিথি হয়ে এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে স্বীয় ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত আরো অনেক বাংলাদেশি-আমেরিকান। যারা এই গ্র্যাজুয়েশন-কনভোকেশনে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশি-আমেরিকান জর্জিয়ার ডেমোক্র্যাট স্টেট সিনেটর শেখ রহমান তুলে ধরেন তার জীবনে গল্প। একটি বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি তার জীবনটাকে কীভাবে বদলে দিয়েছে তা তুলে ধরেন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে। টেম্পল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল মেডিসিনের অধ্যাপক ড. জিয়াউর রহমান তার বক্তব্যে তুলে আনেন কতগুলো ডিগ্রি তাকে নিতে হয়েছে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে, নেতৃত্বের দিকে এগিয়ে নিতে। আইটি বিশেষজ্ঞ ও আইটি উদ্যোক্তা  ড. ফয়সাল কাদির সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশে তুলে ধরেন পরবর্তী করণীয় দিকগুলো। প্রকৌশল উদ্যোক্তা ও ফিলানথ্রপিস্ট, মোলি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি সৈয়দ জাকি হোসেন বলেন, অসীম সম্ভাবনা দেশ এই যুক্তরাষ্ট্র। শিক্ষার্থীদের সামনে রয়েছে অপার সুযোগ। বক্তব্য রাখেন ডব্লিউইউএসটির উপদেষ্টা মো. মিজানুর রহমান,  উপদেষ্টা মো. সিদ্দীক শেখ। 

বিশ্ববিদ্য্যলয়ের সিএফও ডব্লিউইউএসটির সিএফও ফারহানা হানিপ শিক্ষা উদ্যোগে তার পারিবারিক ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরে বলেন, ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থীরা তাদের পরিবারকেই খুঁজে পাবে এই ক্যাম্পাসে।  

শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্কুল অব বিজনেসের কেলি ডি আলসেন্টারা এবং ইনফরমেশন টেকনোলজিতে মাস্টার্স সম্পন্ন করে সনদপ্রাপ্ত অফুনি এডা আগাডা। তারা তাদের এগিয়ে যাওয়ার উদ্দীপনার কথা তুলে ধরেন। যা তারা পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টিদের কাছ থেকে। পরে একে একে শিক্ষার্থীদের মাঝে তাদের গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রির সনদ তুলে দেওয়া হয়। প্রথমেই মঞ্চে আসে স্কুল অব আইটির গ্র্যাজুয়েটরা। এই স্কুলের পরিচালক অধ্যাপক ড. পল এপোস্টোলস আগাসপোলস শিক্ষার্থীদের হাতে সনদ তুলে দেন। আর স্কুল অব বিজনেসের গ্র্যাজুয়েটদের সনদ দেন এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মার্ক রবিনসন। শিক্ষার্থীরা সনদ নিয়ে ছবি তোলার সুযোগ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর আবু বকর হানিপ ও প্রেসিডেন্ট ড. হাসান কারাবার্কের সঙ্গে। পরে সনদ হাতে শিক্ষার্থীরা নিজ আসনে বসলে তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রিপ্রাপ্ত হিসেবে ঘোষণা করেন ড. হাসান কারাবার্ক। শিক্ষার্থীরা তাদের গ্র্যাজুয়েশন হ্যাটে ট্যাসলটি ডান দিক থেকে বাম দিকে সরিয়ে দিয়ে গ্র্যাজুয়েশন রিচুয়াল শেষ করে।

শেয়ার করুন