২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ১০:৪৯:১৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের প্রতিভা বিকাশে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না’ সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬


সেপ্টেম্বর থেকে নির্বাচনকালীন সরকার
এক দফার আন্দোলনের হুমকি ও বাস্তবতা
খন্দকার সালেক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-০৭-২০২৩
এক দফার আন্দোলনের হুমকি ও বাস্তবতা


এখন জুলাই মাস। সরকারের বর্তমান টার্ম শেষ হবে আর পাঁচ মাস সময়ে ডিসেম্বর ২০২৩। প্রকৃতপক্ষে সেপ্টেম্বর থেকে নির্বাচনকালীন সরকার বহাল হবে। ডিসেম্বর শেষ অথবা জানুয়ারি ২০২৪ পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সরকারি দল বারবার বলছে অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের অঙ্গীকারের কথা। কিন্তু প্রধান বিরোধীদল এবং কিছু স্যাটেলাইটে দল সরকার পতনের একদফা দাবিতে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে। এমনি আন্দোলন আমরা দেখেছিলাম সেনা শাসক জেনারেল হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে ১৯৯০ দশকের শুরুতে। তখন কিন্তু সেই আন্দোলনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতসহ সব দল রাজপথে একসঙ্গে বা যুগপৎভাবে।

তিন টার্মে প্রায় ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে সাফল্য-ব্যর্থতার যুগল মিশ্রণে বর্তমান সরকার দেশের খোল নলচে পাল্টে দিয়েছে। অর্থনীতি অনেক সম্প্রসারিত, দেশের শতকরা শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সরবরাহের আওতায়, সারাদেশ আলোয় আলোকিত, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া সড়ক পথে সংযুক্ত, অগুণিত জাতীয় এবং আঞ্চলিক প্রিন্ট এবং উল্লেখযোগ্য ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কারণে মুহূর্তেই অনেক কিছুই অবগত হচ্ছে সবাই। অবশ্য দুর্নীতি, অর্থপাচার, জ্বালানি বিদ্যুৎ সংকটসহ নানা সমস্যা অনুষঙ্গ হিসাবে  আছে। কিন্তু সরকার পতনের একদফা আন্দোলনের মতো পটভূমি বা জনসমর্থন আছে বলে মনে হয় না। এই পথে অর্থ সময় অপচয় না করে বিরোধীদলগুলো কনস্টিটিউশনের আওয়তায় কেন স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য রূপরেখা ঘোষণা করছে না? কেন জনঘনিষ্ঠ দাবি-দাওয়া তুলে সমাধানের  নিয়ে তাদের প্রতাবগুলো জনগণের সামনে প্রকাশ করছে না। 

নিরপেক্ষভাবে বিচার করুন দেশ বিদেশে সরকারবিরোধী প্রোপাগান্ডা এবং গুজব ছড়িয়ে বাংলাদেশি জাতির ভাবমূর্তি বিনষ্ট করে করা লাভবান হচ্ছে? কিছু বিতর্কিত মানুষ প্রধানমন্ত্রী আর তার পরিবারসহ কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে সত্য-মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে কি অর্জন করতে চাচ্ছে? এই যে পদ্মা বহুমুখী সেতু, কর্ণফুলী যদি তলদেশের সুড়ঙ্গ, মেট্রো রেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস হাইওয়ে, পায়রা, মাতারবাড়ি বন্দর নির্মাণ, মেগা বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর সাফল্য কি জনগণের কাছে দৃশ্যমান নয়? 

স্বীকার করতে দ্বিধা নেই দুর্নীতি আক্রান্ত না হলে হয়তো এগুলোর সুফল আরো বেশি জনগণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যেতো। কিন্তু সেই সব দুর্নীতিতে সরকারি দলঘনিষ্ঠ মহল ছাড়াও বিরোধীদলের নেতা-নেত্রীরাও কম লাভবান হননি। অধিকাংশ  রাজনীতিবিদ, আমলা (সিভিল এবং মিলিটারি) দুর্নীতির আওতার বাইরে না। দেশে কৃষক, শ্রমিক, সীমিত আয়ের জনগোষ্ঠী কিন্তু দুর্নীতি করে না।  কিন্তু তারা এখন পরিস্থিতির কারণে সবচেয়ে অসহায়। প্রকৃতপক্ষে দেশবাসী চায় না অর্থহীন আন্দোলন আর সংঘাতে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হোক।  

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে এবারের মতো আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এবারের মতো আলোচনা সমালোচনা দৌড়ঝাঁপ আগে হয়নি। সরকারি দল এবং বিরোধীদল বিশেষের কারণে বিশ্ব মোড়লেরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অপমানজনকভাবে নাক গলাচ্ছে। বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি কিন্তু কোনোভাবেই সমর্থন করে না যে, বাংলাদেশে কোনো দল বা গোষ্ঠীকে বাইরের কোনো দেশ বা শক্তি ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত করবে। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, পচিম ইউরোপ, রাশিয়া ফায়েদা লুটবে। বাংলাদেশের নিজস্ব সমস্যা এবং সংকট নিজেদেরই সমাধান করতে হবে। বাংলাদেশ কিন্তু যুদ্ধ জয়ী দেশ। কারো দয়ার  দানে স্বাধীনতা অর্জন হয়নি। 

সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো দেশ জাতির বৃহত্তর স্বার্থে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়গুলো আলোচনার টেবিলে ন্যূনতম পর্যায়ে সমাধান করে প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করে নির্বাচন করুক। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নধারা বজায় রাখুক। মুক্তিযুদ্ধের  হিসাবে এই বিষয়ে স্বাধীনতার সপক্ষ শক্তিগুলোকে সোচ্চার হওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। জনগণের সম্মিলিত শক্তির কাছে অশুভ মহল কখনই বিজয়ী হবে না।

শেয়ার করুন