২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৬:০০:৬ পূর্বাহ্ন


ব্রুকলিনে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ বাংলাদেশী জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-০৭-২০২৩
ব্রুকলিনে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ বাংলাদেশী জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে হাসপাতাল বেডে শাওন এবং (ডানে) ট্রাকের নিচ থেকে উদ্ধার করা হচ্ছে ফাতেমা কামালকে


মাত্র ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে নিউইয়র্ক সিটির বাংলাদেশী অধ্যুষিত ব্রুকলিনে দু’টি সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন ২ জন বাংলাদেশী। এদের মধ্যে একজন সৈয়দ মোহাম্মদ সানমুন হাসান শাওন এবং অপরজন হলেন মহিলা। তার নাম ফাতেমা কামাল। দুই জনের অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর। তবে শাওনের জ্ঞান ফিরেছে। কিন্তু কোন দিন সুস্থ্যভাবে জীবন যাপন করতে পারবে না বলে জানা গেছে। অন্যদিকে ফাতেমা কামালের অবস্থাও খারাপ। তার শরীরের নিচের অংশের অবস্থা খুবই নাজুক, পুরোপুরি ডেমেজ হয়ে গিয়েছে। তারও পুরোপুরি সুস্থ্য হবার সম্ভাবনা কম। অন্য আরেকটি সূত্রে জানা যায়, তারা এখনো পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত নয়।

জানা গেছে, গত ৯ জুলাই রোববার মধ্যরাতে শাওন বাইকে করে বাসায় আসার পথে গাড়ির ধাক্কায় গুরুতরভাবে আহত হন এবং গত ১০ জুলাই সোমবার দুপুরের দিকে ফাতেমা কামাল রাস্তা পারাপারের সময় দুর্ঘটনাকবলিত হন।

শাওনের চাচাতো ভাই, সাইদ মফিজ উদ্দিন দেশ পত্রিকাকে বলেন, শাওন আমার বাসায় থাকতো (ইস্ট ৪৩ স্ট্রিট)। আমরা কিছুই জানতাম না। রাত প্রায় পৌনে ২টা দিকে একজন বাংলাদেশী পুলিশ অফিসার আমার স্ত্রীর ফোনে কল করেন এবং পরিস্থিতি আমাদের বর্ণনা করে ঘটনাস্থলে যাবার অনুরোধ করেন। তারপর আমরা ঘটনাস্থলে যাই।

তিনি বলেন, আমরা যতটুকু জেনেছি, তা হলো- রাত ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার দিকে ব্রুকলীনের ফোরটিনথ এভিনিউ এবং থার্টি নাইনথ স্ট্রিটের সংযোগস্থলে রাস্তা পার হতে থাকা শাওনের বাইককে আঘাত করে ভিন্ন দিক থেকে আসা একটি জিপ। ধাক্কায় বাইক এবং শওন কিছুটা দূরে গিয়ে ছিটকে পড়েন। পুলিশ কল দেয়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ এবং অ্যাম্বুলেন্স এসে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত শাওনকে মাইমোডিস হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। কয়েক ঘন্টা সংজ্ঞাহীন থাকলে, পরে তার সংজ্ঞা ফিরেছে। কৃত্রিমভাবে সে শ্বাস নিচ্ছে। জনাব মফিজ জানান, তার কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে, তার ফুসফুলের অবস্থাও খারাপ। ৪৮ ঘন্টা পর তার শারীরিক অবস্থার সবশেষ জানাবে চিকিৎসকরা। শাওন গত বছরের ডিসেম্বর মাসে আমেরিকায় আসেন। আমেরিকায় এসে সে তার চাচাতো ভাই সাইদ মফিজ উদ্দিনের বাসায় উঠেন। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে সে ব্রুকলীন কলেজে ভর্তি হয়েছে এবং নিয়মিত ক্লাস করছে। সে কোন কাজ করতো না। শুধু লেখাপড়া করতো। তার বাবা সিলেটের মৌলভীবাজার জেলায় চাকরি করেন। তার বাবা সিলেটে থাকলেও শাওন কুমিল্লায় লেখাপড়া শেষ করে ঢাকায় নটাডেম কলেজে ভর্তি হয় এবং আমেরিকায় আসা পর্যন্ত তিনি সাভারে থাকতেন। তার দেশের বাড়ি কুমিল্লায়। দেশের বাড়িতে তার বাবা- মা এবং দুই বোন রয়েছেন।

বাংলাদেশীদের অতি পরিচিত স্থান চার্চ-ম্যাকডোনাল্ড এভিনিউ এলাকায় ফাতেমা কামাল নামে এক মহিলা রাস্তা পার হচ্ছিলেন ১০ জুলাই সোমবার দুপুর দিকে। সেই সময় এক ট্রাকের ধাক্কায় তিনি গুরুতরভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন। হাসপাতালে ভর্তির পর অস্ত্রোপচার শেষে উনার জ্ঞান ফিরেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আরো কয়েক দফা তার অস্ত্রোপচার হতে পারে। ফাতেমা কামালও বাংলাদেশী এবং ব্রুকলিনের বাসিন্দা। বাংলাদেশে জন্ম সন্দ্বপী। জানা গেছে, ফাতেমা কামাল যে লরি তাকে ধাক্কা দেয় সেই লরির নিচে চলে যান। এই সময়জন বাংলাদেশীও এগিয়ে যান। ফাতেমা কামাল তাদের সাথে কথা বলেন। জানান, তার স্বামীর নাম হাজী মোস্তফা। তার অবস্থা খুবই গুরুতর। তার বুকের তিনটি পাজর ভেঙ্গে যায় এবং কোমর থেকে নিচ পর্যন্ত ভেঙ্গে যায়।

শেয়ার করুন