২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৬:১৭:৪৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


দেশকে বদিউল আলম মজুমদার
জাতির জন্য অশনি সংকেত
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-১০-২০২৩
জাতির জন্য অশনি সংকেত বদিউল আলম মজুমদার


সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, সঙ্কট সমাধানে তাই আমাদের সকলেরই সর্বশক্তি নিয়োগ করা দরকার। যাতে করে আমরা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারি। যেনো একটি সুন্দর সমঝোতায় পৌঁছি। সুষ্ঠু প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন নিশ্চিত করি। তা না করতে পারলে তা হবে জাতির জন্য অশনি সংকেত। এটা করতে না পারলে আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের সাথে বিশ্বাসঘাতকা করা হবে। আমেরকিা থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সাথে এক সাক্ষাৎকারে বদিউল আলম মজুমদার এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ। 

দেশ: আপনি একটি গণমাধ্যমে বলেছেন সম্ভবত একটি একতরফা নির্বাচন হতে যাচ্ছে। যদি একতরফা নির্বাচন হয়ে যায় সেক্ষেত্রে আপনি কি আশঙ্কা করছেন। কিন্ত কোনো এই আশঙ্কা?

বদিউল আলম মজুমদার: বর্তমান সরকার দেশে একটি নির্বাচন করতে বদ্ধ পরিকর। এব্যাপারে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতিও নিচ্ছে। অন্যদিকে বিরোধী দল নির্বাচন ঠেকাতে বদ্ধপরিকর। বিরোধী দল বর্তমান সাংগঠনিক কাঠামোতে অর্থ্যাৎ দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশই নেবে না। এই ধরনের পরিস্থিতির পরিণতি হতে পারে সংঘাত। আর এই সংঘাত যদি সৃষ্টি হয় আমরা কেউই নিরাপদ না। সরকার বিরোধী দল কিংবা সাধারণ নাগরিকদের কেউই নিরাপদ না। বিশেষত সাধারণ নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হবে। একিই সাথে আমাদের দেশে অর্থনৈতিক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। সঙ্কট সমাধানে তাই আমাদের সকলেরই সর্বশক্তি নিয়োগ করা দরকার।  যাতে করে আমরা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারি। যেনো একটি সুন্দর সমঝোতায় পৌঁছি। সুষ্ঠু প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন নিশ্চিত করি। তা না করতে পারলে তা হবে জাতির জন্য অশনি সংকেত। এটা করতে না পারলে আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের সাথে বিশ্বাসঘাতকা করা হবে। আমি আশা করি আমাদের সম্মানিত রাজনীতিবিদগণ এবং এ সংক্রান্ত বিষয়ে যারা সংশ্লিষ্ট আছেন- সব্বাই এটা অনুধাবন করবেন। দেশে এখন যে সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে যাচ্ছে তার থেকে সরে আসতে কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন। 

দেশ : আপনি কি মনে করে বিরোধী দল কিংবা সুশীল সমাজ বা নাগরিক সমাজ দেশে অত্যন্ত দুর্বল অবস্থানে আছে। আর একারণে সরকার সম্ভবত একটি একতরফা নির্বাচন করে ফেলার মতো সক্ষমতা দেখাচ্ছে। 

বদিউল আলম মজুমদার : আমরা জানি না কে দুর্বল বা কে সবল অবস্থায়। তবে এটা ঠিক যে আমরা সাধারণ মানুষেরা যেনো অসহায় হয়ে আছি। আমরা যারা সুষ্ঠু নির্বাচন কিংবা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে চাই- যারা দেশে একটি সুষ্ঠু প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন নিশ্চিত হউক এটা চাই- তারা এবং আমরা এই অবস্থায় অসহায়। এই অবস্থায় আমাদের দাবি, আকাংখা রাজনীতিবদিরা যেনো জনগণের স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে একটা সমঝোতায় পৌঁছে। 

দেশ: আসলে জনগণ চায় উন্নয়ন। তারা গণতন্ত্রকে এখন প্রাধান্য দিচ্ছে না। তারা এসরকারের আমলে উন্নয়ন দেখে সন্তুষ্ট- বিষয়টা কি এ-রকম? এজন্যই কি জনগণ জেগে উঠছে না। আর এসব কারণেই সরকার শক্ত অবস্থানে রয়েছে। 

বদিউল আলম মজুমদার: আমি মনে করি জনগণ দু’টোই চায়। জনগণ ভোটের অধিকার চায়। একিই সাথে তারা উন্নয়নও চায়। আর এদেশতো স্বাধীন হয়েছিলো মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা জন্য। ১৯৬৯ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরংকুশ বিজয় অর্জন করেছিল। কিন্তু সেই বিজয়কে ভুন্ঠুল করে বঙ্গবন্ধুকে সরকার গঠনে বঞ্চিত করেছে পাকিস্তানিরা। তার মধ্য দিয়েতো আমাদের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। আর এজন্যইতো মুক্তিযুদ্ধের সূচনা বাংলাদেশে। তাই বলতে হবে বাংলাদেশের জনগণ গণতন্ত্র চায়, ভোটাধিকার চায় এবং নি:সন্দেহে তারা বাংলাদেশকে একটি উন্নত সমৃদ্ধশালি দেশ হিসাবে দেখতে চায়। 

দেশ: সুশীল সমাজ বলি কিংবা নাগরিক সমাজই বলি-দেশে এই সঙ্কটকালীন সময়ে আপনারা কি কোনো উদ্যোগ নেবেন? সঙ্কট সমাধানে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে কোনো ভ’মিকা রাখবেন?

বদিউল আলম মজুমদার: আমরা এনিয়ে একটা চেষ্টা করে যাচ্ছি। একটা জনমত গঠনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য যেনো আমাদের রাজনীতিবিদরাও আমাদের কন্ঠস্বর শুনতে পারছেন না। বাংলাদেশে একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন শুধু দেশের মানুষই না। আন্তর্জাতিক বিশ্বও চাইছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বলে দিয়েছে, তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। একিই সাথে যুক্তরাষ্ট্র তাদের ভিসা নীতি গ্রহণ করেছে। তারা এই বার্তাই দিয়েছে যে আমাদের দেশে এই পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। এবং আলাপ আলোচনার মাধ্যমে যেনো আমরা এই সমস্যার সমাধান করি। 

দেশ: আপনি বিশেষ করে নাগরিক সমাজের বিশিষ্ট জনেরা যখন জনগণের বিভিন্ন দাবি নিয়ে কথা বলেন বা সোচ্চার হন তখন কেউ কেউ আপনাদের দেখে নেবেন বা পানিতে চুবানোর কথা বলেন- এই কারণেই কি নাগরিক সমাজ দেশের এই সঙ্কটকালীন সময়ে দূরত্ব বজায়ে চলছেন? অজানা আশঙ্কা বা অপদস্থ হওয়ার ভয়ে?

বদিউল আলম মজুমদার: এসব কথা বলার ব্যাপারে কিছু বলতেও লজ্জা করে। এসব কথা যারা বলেন বা বলে থাকেন তাদের নিজের মর্যাদাকেও ক্ষুন্ন করেন। আর এসব কথা বার্তা নিয়ে কথা বলতেও নিজের আত্মমর্যাদায় বাধে। 

শেয়ার করুন