২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৭:১৬:২০ পূর্বাহ্ন


হিরোতে বেকায়দায় আওয়ামী লীগ
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৭-২০২৩
হিরোতে বেকায়দায় আওয়ামী লীগ হিরো আলমের ওপর আক্রমণ


ঢাকা-১৭ উপনির্বাচন স্তব্ধ করে দিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে। স্বল্প মেয়াদের এ নির্বাচন নিয়ে মাথাব্যথা ছিল না কারোরই। বরাবরের মতই এতে অংশ নেয়নি বিএনপিসহ সমমনা দলসমূহ। এতেই এটা হয়ে যায় নিরুত্তাপ। কিন্তু এ কে জানতো এ নিরুত্তাপ উপনির্বাচনই এখন বিশাল রেফারেন্স হয়ে দাঁড়াবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে। 

২০১৪ ও ২০১৮ সনে বিরোধী দলবিহীন এক তরফা নির্বাচনের পরও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলছিল, যে তাদের অধীনেই নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ শীর্ষনেতারাও বারবার বলছেন, এমনকি মার্কিন প্রতিনিধি ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের বলে আসছেন, আওয়ামী লীগ সারাজীবন গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে গেছে। দেশে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করছে আওয়ামী লীগ। দ্বাদশ নির্বাচন তাদের অধীনেই সুষ্ঠু হবে। এ নির্বচন কমিশন নিরপেক্ষ থেকে শুরু করে হাজারো কথা। কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে এই এক উপনির্বাচনে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে যেভাবে রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছে তাতে উপরোল্লিখিত কথা যে নিষ্ফলা সেটারই প্রমাণ মিলেছে। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো দেখলো খোদ রাজধানীতে সবার নাকের ডগায় অনুষ্ঠিত একটি গুরুত্বহীন উপনির্বাচনই সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠান করতে ব্যর্থ ক্ষমতাসীনরা, ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন। কারণ এ নির্বাচনে ভোটারদেরও টানতে পারেনি। গত ২০১৪ ও ২০১৮ সনের নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে না পেরে নির্বাচনবিমুখ মানুষ। আস্থাহীনতা দায়িত্বশীলদের উপর। সেই আস্থাহীনতা এ ভোটেও প্রমাণ মিলেছে। 

ঢাকা-১৭ আসনে ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ২৫ হাজার ২০৫ জন। কিন্তু এ নির্বাচনে ভোট দেয়ার হার ১১.৫১ শতাংশ। যার মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ২৮ হাজার ৮১৬ ভোট পেয়েই নির্বাচিত হয়ে গেছেন সংসদ সদস্য। 

নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে রাজধানী বনানী বিদ্যানিকেতনে সরকারি দলের ব্যাজ পরিহিত লোকদের কর্তৃক হামলার শিকার হিরো আলম হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এ সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে তিনি আর যাবে না। নির্বাচনের সূচনাতে আরেক প্রার্থীও ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। সব মিলিয়ে দেরিতে হলেও বিএনপি ও সমমনারা যে অভিযোগ করে আসছিল যে এ সরকারের অধীনে বা বর্তমান প্রক্রিয়ায় কোনো সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব না। সেটার প্রমাণ মিললো ওই দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর বক্তব্যে। বিএনপি দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। নতুবা মানুষ ভোট দিতে আসবে না। সুষ্ঠু নির্বাচনও হবে না। সে কথার যৌক্তিকতার প্রমাণ মিললো জাতীয় নির্বাচনের একেবারে দ্বারপ্রান্তে এসে। 

ঢাকা-১৭-এর ঘটনার পর এখন কীভাবে এর ব্যাখ্যা বিদেশি পর্যবেক্ষকদের কাছে তুলে ধরবেন সেটাই এখন মুখ্য। ইতিমধ্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, একজন ইউটিউবার হিরো আলমকেও তারা সহ্য করতে পারছে না। সেখানে অন্যদের তারা কিভাবে মেনে নেবে। একজন প্রার্থীকে কীভাবে রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছে। তার কী অপরাধ। সে তো ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। তাকে এভাবে পেটাতে হবে কেন?  ভোটের দিনে বিশেষ করে প্রথম প্রহরে বিভিন্ন চিত্র ফুটে উঠেছে স্থানীয় পত্রিকার বিভিন্ন নিউজে। নিম্নে তা তুলে ধরা গেল দেশ এর পাঠকদের জন্য- 

এক ঘণ্টায় ১ ভোট : সমকাল

চলছে ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সোমবার সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়, যা চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও রাজধানীর জাহাঙ্গীর গেট সংলগ্ন বিএএফ শাহীন স্কুল কেন্দ্রে কেবলমাত্র একটি ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এই কেন্দ্রে সরেজমিন দেখা যায়, ভোটকেন্দ্রের প্রবেশ মুখে জাকের পার্টি মনোনীত প্রার্থীর এজেন্টদের দেখা যায়। একটু ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখা গেলো কেন্দ্রে ‘কোথাও কেউ নেই’। সামনে এগোতেই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর এজেন্টদের দেখা গেল। কেবলমাত্র প্রশাসন, এজেন্ট এবং ভোটগ্রহণের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা-আনসার ব্যতীত ভোটার উপস্থিতি চোখে পড়েনি। জানা গেছে, বিএএফ শাহীন স্কুল কেন্দ্রে ৩ হাজার ৩৯৪ জন ভোটার রয়েছেন। তবে অভিজাত এলাকার ভোটার হওয়াতে অনেকে দেরি করে ভোট দিতে আসবেন বলে ধারণা করছেন বিভিন্ন প্রার্থীর এজেন্ট ও স্থানীয়রা। ভোট কেন্দ্র থেকে বের হতেই দুই জন নারীকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেখা যায়। ভোটার ভেবে কথা বলতেই তারা জানায়, এখানকার ভোটার না। এলাকার ভাড়াটিয়া। 

এই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার অনিল কুমার চক্রবর্তী জানান, এই কেন্দ্রে প্রথম এক ঘণ্টায় একজন ভোট দিয়েছেন। পূর্বেও অভিজ্ঞতাতেও তিনি এমন দেখেননি। তিনি বলেন, এখানে খুবই কমসংখ্যক ভোটার। কেনো এমন হচ্ছে সেটা বলার কোনো উপায় নেই। তবে ঘণ্টা খানেক পর ভোটারের উপস্থিতি বাড়বে বলে আশা করছি। ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন আট জন। তবে এই কেন্দ্রে কেবলমাত্র দুই জন প্রার্থীর এজেন্ট দেখা গেছে। এই উপনির্বাচনে ভোট হচ্ছে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে। 

গুলশানের মানুষ দেরি করে ঘুম থেকে ওঠে : ইত্তেফাক 

ঢাকা-১৭ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলছে। ভোটগ্রহণ শুরু হয় সোমবার (১৭ জুলাই) সকাল ৮টায়। তবে সকাল ১০টা পর্যন্তও ভোটারের উপস্থিতি তেমন দেখা যায়নি। এ বিষয়ে ৬৬ নম্বর কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মো. লতিফ সরকার বলেন, গুলশান এলাকার লোকজন ঘুম থেকেই ওঠেনি। আমার কেন্দ্রে ৩-৪টি ভোট পড়েছে। আশা করছি, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটাররা ভোট দিতে আসবে। এ নির্বাচনে গুলশান-২-এর গুলশান মডেল হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে পাঁচটি কেন্দ্র রয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে তিন হাজারের বেশি ভোটার থাকলেও সকাল থেকে ভোট পড়ছে হাতেগোনা কয়েকটি। সকাল থেকেই এই কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিত কম দেখা যাচ্ছে। ঢাকা-১৭ আসনের বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, সকাল ৮ টা থেকে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিরতিহীনভাবে ব্যালট পেপারে সিল দিয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে এ ভোটগ্রহণ। ভোট শুরু হওয়ার আগে কেন্দ্রেগুলোতে ভোটারদের তেমন একটা উপস্থিতি ছিল না। সকালে ভোট দিতে আসা বেশিরভাগ ভোটার বয়স্ক। কেন্দ্রের কোন বুথে ভোট দেবেন ভোটাররা সে বিষয়ে সাহায্য করতে কেন্দ্রের বাহিরে প্রার্থীদের এজেন্টদের ভোটারদের সাহায্য করতে দেখা গেছে। ভোট শুরুর এ সময় ঢাকা-১৭ আসনের বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা অপ্রীতিকর পরিস্থিতি দেখা যায়নি। 

বস্তি এলাকার কেন্দ্রেও আড়াই ঘণ্টায় ৩৩ ভোট : মানবজমিন 

ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের সব কেন্দ্রেই ভোটারদের উপস্থিতি কম। অভিজাত এলাকা থেকে শুরু করে সর্বত্র একই অবস্থা। ভোটারের অনুপস্থিতিতে অলস সময় পার করছেন পোলিং এজেন্টরা। কেউ ঝিমুচ্ছেন আবার কেউ গল্প করে সময় পার করছেন। একই অবস্থা প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের। 

কড়াইল বস্তি এলাকার টি এন্ড টি আদর্শ মহিলা কলেজ কেন্দ্রে এসে দেখা যায়, এখানে ৩ হাজার ২৪ জন মহিলা ভোটারের জন্য ৬টি বুথে ভোট নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অথচ প্রথম আড়াই ঘণ্টায় বেলতলা, আদর্শনগর ও টিভি গেইট এলাকার ভোটারে এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে মাত্র ৩৩টি। এই সেন্টারের বাহিরে বিভিন্ন প্রার্থীদের ব্যাপক সমর্থক উপস্থিত থাকলেও ভেতরে ভোটারের দেখা নেই। অনেকর বাইরে থেকে সিøপ নিয়ে ভেতরে গিয়ে সিরিয়াল নম্বরের সঙ্গে মিল না পেয়ে ভোট দিতে পারছেন না। 

প্রিজাইডিং অফিসার ওবায়দুল হক ভূইয়া মানবজমিনকে বলেন, মাত্র ১.০৯ শতাংশ ভোট পড়েছে। ভেবেছিলাম এই সেন্টারে নিম্ন আয়ের বস্তি এলাকার ভোটার বেশি। তারা হয়তো আগ্রহ সহকারে এসে ভোট দিবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যা ভোট পড়েছে তা হতাশাজনক।

আরাফাত চিন্তিত ভোটার উপস্থিতি নিয়ে : বিডিনিউজ ২৪

ঢাকা-১৭ উপনির্বাচনে জয় নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহম্মদ আলী আরাফাতের কোনো ‘সংশয় নেই’, তার চিন্তা শুধু কতভাগ ভোটার কেন্দ্রে যাবেন, তা নিয়ে। সোমবার বেলা ১১টায় গুলশান মডেল হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে নিজের ভোট দিয়ে নৌকার প্রতীকের এ প্রার্থী বলেন, “জয়ের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। আমরা শুধু বলছি, ভোট দেন। আমরা বলছি না যে নৌকায় ভোট দেন। কারণ আমরা জানি, মানুষ নৌকায় ভোট দেবে। আমাদের চেষ্টা ছিল মানুষকে ভোট দিতে নিয়ে আসা।”

সোমবার সকাল ৮টায় এ আসনের ১২৪টি কেন্দ্রে ভোট শুরু হয়েছে। সোয়া তিন লাখ ভোটারের এ আসনে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। দিনের প্রথম ভাগে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি দেখা গেছে একেবারেই কম। অনেক কেন্দ্রে দেখা গেছে ভোটারের চেয়ে সাংবাদিকের সংখ্যা বেশি। আরাফাত বলেন, “আমার ক্যাম্পেইনের একটা বড় সেøাগান ছিল, ভোট দিতে আসেন। আমাদের একটা চ্যালেঞ্জ ছিল, মানুষকে ভোট দিতে আনা। কারণ মাত্র ৫-৬ মাসের নির্বাচন। একটা অনীহা থাকে।”

“আরেকটা অনীহা হল, নৌকার এত ভোট, যে সবাই ব্যক্তিজীবনে ভাবে যে আমি ভোট না দিলে কি আর হবে, কেউ না কেউ তো দেবেই। নৌকা জিতে যাবে। এটা একটা ভয়ঙ্কর চিন্তা। তবে এটা আমাদের জন্য খুব ভালো যে সমাজে নৌকার এত জনপ্রিয়তা। কিন্তু এই চিন্তাটা ভোটের ব্যালটে আনতে গেলে অনেকসময় বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।” অনেক কেন্দ্রে নৌকা ছাড়া অন্য প্রার্থীদের এজেন্ট নেই বলে অভিযোগ আসছে। এ বিষয়ে প্রার্থীদের সামর্থ্যরে কথা বলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তিনি বলেন, “১২৪টি কেন্দ্র আছে। বুথ আছে অন্তত ৬০০। ৬০০ এজেন্ট তো লাগবে। সাংগঠনিক শক্তি না থাকলে পারে না। আওয়ামী লীগের সেই সাংগঠনিক শক্তি আছে। আওয়ামী লীগের যারা কর্মী, তাদের আত্মীয়-স্বজনরা ভোট দিলেও তো ২০-২৫ হাজার ভোট পড়ে যাবে।” জয়ের আত্মবিশ্বাস জানিয়ে আরাফাত বলেন, “আমি বাই চান্স জিতবো না। আমি জিতলে বাই দ্য ফোর্স অব দ্য পিপল জিতবে কত শতাংশ পড়বে, তা জানি না। আমাদের চেষ্টা হল গত নির্বাচনের চেয়ে টার্ন আউটটা বাড়ানো।”

এক ঘণ্টায় ১৬টি ভোট : কালবেলা

ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। তবে এ আসনের মহাখালীর আবদুল হামিদ দর্জি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মাত্র এক ঘণ্টায় ১৬টি ভোট পড়েছে। সোমবার (১৭ জুলাই) সকাল ৮টা ১০ মিনিটে এ কেন্দ্রে ভোট শুরু হয়। কিন্তু সকাল ৯টা ১০ মিনিট পর্যন্ত ভোটার তেমন দেখা যায়নি।

জানা গেছে, মহাখালীর আবদুল হামিদ দর্জি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ভোটার দুই হাজার ২৬ জন। অথচ কেন্দ্রটির এক নম্বর কক্ষে সকাল ৯টা ১০ মিনিট পর্যন্ত ভোট পড়েছে দুটি। দুই নম্বর কক্ষে ভোট পড়েছে চারটি। তিন নম্বর কক্ষে ভোট পড়েছে তিনটি। এছাড়া চার নম্বর কক্ষে ভোট পড়েছে মাত্র সাতটি। এ ছাড়া দেখে গেছে, এ কেন্দ্রের পৃথক চারটি বুথে অলস সময় কাটাচ্ছেন এজেন্টরা। তবে কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মোহম্মদ আলী আরাফাতের সমর্থকদের উপস্থিতি দেখা গেছে। মহাখালীর আবদুল হামিদ দর্জি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মুর্শীদ আলম খান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে বলে আশা করেন তিনি। 

ভোট বর্জনের ঘোষণা : যুগান্তর 

ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. তারেকুল ইসলাম ভূঁঞা। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি। নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, এটা আবারও প্রমাণিত। তাই আমি এই নির্বাচন বর্জন করলাম। এ ছাড়া ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমও ভোট সুষ্ঠু হবে কিনা এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ভোটকেন্দ্রে নিজের এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের কিছু লোকজন তার কর্মীদের ওপর হামলা করেছে বলেও তিনি দাবি করেন। এর আগে সকাল ৮টা থেকে ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়, চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। 

নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা যা বললেন.. : ডেইলি স্টার বাংলা 

ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি কম হলে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি পাল্টাবে বলে ধারণা করছে নির্বাচন কমিশন। আজ সোমবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘ভোটার উপস্থিতি আমরাও দেখতে পাচ্ছি কম। কারণ হিসেবে আমার ব্যক্তিগত মতামত, এটা খুবই স্বল্প সময়ের নির্বাচন; সংসদের মেয়াদ খুবই স্বল্প সময়ের, জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। এটা একটা কারণ হতে পারে।’  ’এছাড়া ওটা একটা অভিজাত এলাকা। এই ভোটের ব্যাপারে ওনারা আগ্রহী হয়তো নাও হতে পারেন, আমি ঠিক জানি না কী হয়েছে। এটা আমরা জানতে পারবো আরো পরে। ভোট আগে হোক, ফলাফল হোক, কত শতাংশ হয় দেখা আমরা। গ্রহণযোগ্য পারসেন্ট হতেও তো পারে! আর আমি যখন গেছি তখন টিপটিপ বৃষ্টি হচ্ছিল। এটাও হতে পারে, বৃষ্টি কারণে ওই সময় ভোটাররা আসেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভোটার বাড়বে বলে আমাদের ধারণা’, বলেন তিনি।

৩ ঘণ্টার মাথায় স্বতন্ত্র প্রার্থী তরিকুলের ভোট বর্জন, বললেন ‘সুষ্ঠু পরিবেশ নেই’

ভোটগ্রহণ শুরু ৩ ঘণ্টার মাথায় 'সুষ্ঠু পরিবেশ নেই' অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. তরিকুল ইসলাম, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রাশেদা সুলতানা বলেন, আমরা তদন্ত করব, সত্যি কি না মিথ্যা দেখবো। অভিযোগ কিন্তু নানা জন, নানাভাবে আনতে পারে। অভিযোগ এলেই সত্য বা মিথ্যা-তা কিন্তু না। সেটার সত্যতা যাচাই করা দরকার। সত্যতা যাচাইয়ের পরে নিশ্চয়ই আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো। এতো অল্প সময়ের মধ্যে উনি কেন বর্জন করলেন, আমি সেটা বুঝতে পারলাম না। উনি তো পরিবেশটা দেখতে পারতেন, সারা দিন ভোট আছে, ৪টা পর্যন্ত। কন্টিনিউ করলে কী হতো? চলেও যেতে (পাস করতে) পারত। দিনের শুরুতেই ’আমি ন্যায্য অবস্থাটা পাচ্ছি না’ বললে মুশকিল তো একটু হয়। আমার মনে হয়, ভোট ৪টা পর্যন্ত, ওনি দেখতে পারতেন ভোটটা ওনার চাওয়া মতো হচ্ছে কি না, বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগ আমার এজেন্টদের বের করে দিচ্ছে: হিরো আলম

হিরো আলমের অভিযোগ প্রসঙ্গে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ’আমাদের কাছে অভিযোগ ওইভাবে আসেনি। যদি সেটা হয়েও থাকে ওনি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জানাতে পারতেন। জানিয়েছেন কি না তা-ও জানি না। আমরা খোঁজখবর নেব, যদি ঘটনা ঘটে থাকে...এখন ভোট চলছে তো! ভোট বন্ধ হয়ে গেছে এ রকম তো নেই! হয়তো ক্ষণস্থায়ী সময়ের জন্য কিছু...জানি না কী হয়েছে। আমরা অবশ্যই এটার তথ্য নেব এবং ব্যবস্থা নেবো।’ 

প্রথম দেড় ঘণ্টায় কোনো ভোটই পড়েনি : ইনকিলাব 

ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ সোমবার (১৭ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে এ ভোটগ্রহণ শুরু হলেও ৬৭ নং কেন্দ্রে (মহিলা) প্রথম দেড় ঘণ্টায় কোনো ভোটই পড়েনি। ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ৩ লাখ ২৫ হাজার ২০৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭১ হাজার ৬২৫ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৮০ জন। ১২৪টি কেন্দ্রের ৬০৫টি কক্ষে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে।

গুলশান-২ নম্বরে অবস্থিত গুলশান মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে মোট পাঁচটি কেন্দ্র। ৬৩, ৬৪, ৬৫, ৬৬ ও ৬৭ নং কেন্দ্রের মধ্যে ৬৬ ও ৬৭ নং মহিলা কেন্দ্র। সরেজমিনে ৬৭ নং কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, ভোটগ্রহণ শুরুর পর প্রথম দেড় ঘণ্টায় কোনো ভোট পড়েনি। সেখানে ভোটারের দেখাও মেলেনি। এ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের কক্ষ মোট পাঁচটি। ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ৫৮।

ভোটগ্রহণ সম্পর্কে জানতে চাইলে ৬৭নং কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার মো. আতাউর রহমান বলেন, প্রথম দেড় ঘণ্টায় কোনো ভোট পড়েনি। তবে প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা পর মাত্র দুইটি ভোট পড়েছে। ভোটারের উপস্থিতি কেন কম জানতে চাইলে এ প্রিজাইডিং অফিসার বলেন, ভোটাররা এখনো আসতে শুরু করেননি। এ এলাকা তো ভিআইপি ও সিআইপিদের এরিয়া। সঙ্গত কারণে বোঝা যাচ্ছে না ভোটারের উপস্থিতি কম হবে না বেশি হবে। তবে এখন পর্যন্ত ভোটার উপস্থিতি খুবই নগণ্য।

গুলশান-২ মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকা সরজমিনে দেখা যায়, প্রত্যেকটি ভোটকেন্দ্রেই ভোটারের চেয়ে সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নির্বাচনী এজেন্ট ও কর্মীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলেও ভোটারের উপস্থিতি খুবই নগণ্য। 

‘১০-১২টা কেন্দ্রে আমার এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি’ : এনটিভি অনলাইন 

ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আলোচিত ইউটিউবার মো. আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম কয়েকটি কেন্দ্রে তার এজেন্টদের ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। হিরো আলম বনানী মডেল স্কুল পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমে বলেন, ‘১০-১২টা কেন্দ্রে আমার এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বনানী মডেল স্কুলে আমি এসে এজেন্ট ঢুকিয়েছি। এর আগে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমার এজেন্টদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে৷ এখন বাজে সকাল ১০টা। সারা দিন কী হবে জানি না। এরাম হলে তো ভোটই হবে না।’ হিরো আলম আরও বলেন, ‘যেসব কেন্দ্রে এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি, আমরা সেসব কেন্দ্রে যাব। কী কারণে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, কেন তাদের বের করে দেওয়া হলো; আমরা সেসব জানার চেষ্টা করবো। এরকম হলে ভোটার ভোট দিতে আসবে না। এক তরফা নির্বাচনের জন্য এরকম চিন্তা করেছে মনে হয়। আমি নির্বাচনি কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তারা দেখবে বলেছে। তারা দেখার ওপর আছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে ফলাফল মেনে নেব কি না সেটা পরের বিষয়। তবে, আমরা লাস্ট সময় পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকতে চাই। কারণ, আমরা দেখতে চাই, তারা কতটা আমার ওপর অত্যাচার করে, কতটা এজেন্ট বের করে দেয়, জোর করে কতটা সিল মারে। দেশের জনগণ দেখবে, আপনারও দেখবেন।’ 

মূল চ্যালেঞ্জ ছিল মানুষকে কেন্দ্র আনার - আরাফাত : ৭১ টিভি অনলাইন 

ঢাকা-১৭ আসনে ভোটের পরিবেশে সন্তুষ্ট জানিয়ে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেছেন, জয়ের বিষয়ে আমি খুব আশাবাদী। মানুষ নৌকা ছাড়া ভোট দেবে না, তাই বিজয় সুনিশ্চিত। সোমবার বেলা ১১টার দিকে গুলশান-২ নম্বরের গুলশান মডেল হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।  আরাফাত বলেন, মানুষ ভোট দিতে আসলে নৌকাতে দেবে, মূল চ্যালেঞ্জ ছিল মানুষকে কেন্দ্র আনার।

কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, পাঁচ মাসের নির্বাচনে ভোটারদের আগ্রহ কম থাকবে আগেই জানতাম। আওয়ামী লীগ বড় সংগঠন হওয়ায় কেউ কেউ ভোট না  দিলেও তাদের প্রার্থী জিতবে মনে করেন অনেক মানুষ, সেই জন্যও ভোটার উপস্থিতি কম হয়ে থাকতে পারে। তিনি বলেন, সকালে কয়েকটা কেন্দ্রে ঘুরেছি এবং খোঁজ নিয়েছি। সকালে একটু বৃষ্টি পড়েছে, বৃষ্টির কারণে ভোটার টার্ন আউট কম হয়েছে। গুলশান, বারিধারা, বনানীর ভোটাররা এমনিতে একটু দেরি করে ঘুম থেকে ওঠে, কিন্তু কালাচাঁদপুর শাহজাদপুর বা নদ্দার দিকে গেলে আপনারা দেখবেন ভোটার অনেক এসেছে। ভাসানটেকের দিকে গেলে দেখবেন ভোটার অনেক এসেছে। এখন কিন্তু ভোটের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আরাফাত বলেন, ভোট দিতে পেরেছি ভালো লাগছে। ভোট তো সবসময় নৌকায় দিয়েছি, এবারও নৌকায় দিচ্ছি। প্রার্থী হয়েছি কি হইনি তার গুরুত্ব নেই, নৌকায় ভোট দেওয়াটাই সবচেয়ে বড় কথা আমার। 

জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী আরাফত বলেন, কত শতাংশ ভোট পড়বে তা এখনি বলা যাবে না। এদিকে আসনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. তারেকুল ইসলাম ভূঁঞা অনিয়ম ও বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেছেন। আসনটির উপনির্বাচনে তিনি ট্রাক প্রতীকে লড়ছিলেন।

সোমবার সকাল ৯টায় তিনি বনানী মডেল স্কুল কেন্দ্রে এসে কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। তার অভিযোগ, প্রথমে আমাকে কেন্দ্রেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি। প্রতিটা কেন্দ্রে জোর করে নৌকা প্রতীকে সিল মেরে নিচ্ছে। আওয়ামী লীগ ও প্রশাসন পরস্পরের সহযোগিতায় প্রহসনের নির্বাচনের আয়োজন করেছে। এ কারণে আমি প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করছি।

কেন্দ্র থেকে সাংবাদিকদের বের করে দিলেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা : বাংলানিউজ২৪.কম 

পরিচয় পাওয়ার পরও ঢাকা-১৭ আসনের একটি কেন্দ্র থেকে সাংবাদিকদের বের করে দেওয়া হয়েছে। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড আদর্শ বিদ্যানিকেতন কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। নির্বাচন কমিশন বলেছে, সাংবাদিকদের সঙ্গে অন্যায় হয়েছে, এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

সোমবার (১৭ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর মানিকদি এলাকার ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড আদর্শ বিদ্যানিকেতনের ২য় তলা থেকে সাংবাদিকদের বের করে দেওয়া হয়। ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চারটি কেন্দ্র। বেলা পৌনে ১২টায় উত্তর পাশের দ্বিতীয়তলার পুরুষ কেন্দ্রে যান প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সামছুর রহমান। তিনি বারান্দায় দাঁড়িয়ে ভোটকেন্দ্রের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তার হাতে মোবাইল ফোন ছিল। এ সময় ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সঞ্জয় চন্দ্র বাইরে আসেন। তিনি বলেন, সাংবাদিক মোবাইল নিয়ে কেন্দ্রে আসতে পারবেন না।  

সাংবাদিক মোবাইল নিয়ে কেন্দ্রে আসতে পারবেন না- এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের লিখিত নির্দেশনা দেখাতে বলেন সামছুর রহমান। এতেই তিনি উত্তেজিত হয়ে যান। সাংবাদিককে নিয়ে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা তার কক্ষে যান। তিনি মোবাইলে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুনীর হোসাইন খানের সঙ্গে কথা বলেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা সামছুর রহমানের সঙ্গেও কথা বলেন। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের কেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে প্রবেশে কোনো বাধা নেই। গোপনকক্ষ বাদে সব জায়গায় যেতে পারবেন।

 এ সময় প্রিজাইডিং কর্মকর্তার কক্ষে উপস্থিত হন বাংলানিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট মিরাজ মাহবুব ইফতি, বাংলা ট্রিবিউনের স্টাফ রিপোর্টার জুবায়ের আহমেদ ও বার্তা২৪-এর স্টাফ করেসপনডেন্ট রাকিব হাসান। তারা প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে বোঝানোর চেষ্টা করতে গেলে আরো উত্তেজিত হয়ে পড়েন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা।  

তিনি চিৎকার করে বলতে থাকেন, বের হন আপনারা কেন্দ্র থেকে। এই মুহূর্তে বের হন। সাংবাদিকদের এভাবে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়টি জানানো হলে নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান বলেন, সাংবাদিকরা গোপনকক্ষ ছাড়া যে কোনো জায়গায় যেতে পারেন। এটি অন্যায় হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সামছুর রহমান বলেন, আমরা সবাই পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলাম। সে সময় এই প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আমাদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না বলে চোটপাট শুরু করেন। তখন আমি রিটার্নিং কর্মকর্তা মুনীর হোসাইন খানের সঙ্গে এই প্রিজাইডিং কর্মকর্তার কথা বলিয়ে দিই। রিটার্নিং কর্মকর্তা তাকে গোপন কক্ষ বাদে সব জায়গায় মোবাইল ব্যবহার করা যাবে বলে জানান। তবুও এই প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সাংবাদিকদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সঞ্জয় চন্দ্র বলেন, এটা একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। উনি সাংবাদিক পরিচয় দেননি। 

এদিকে ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে বনানী বিদ্যানিকেতন কেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাননি। রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রসির (আরএফইডি) সাধারণ সম্পাদক মুকিমুল আহসান হিমেল বলেন, নির্বাচন কাভারেজে ইসির নতুন নীতিমালার কারণে সাম্প্রতিক ভোটগুলোতে সাংবাদিকদের নানারকম হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। সাংবাদিকদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়টি অভিযোগ আকারে নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে। আমাদের দাবি, বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সেই সঙ্গে অবিলম্বে ইসির নতুন নীতিমালা সংশোধনেরও দাবি জানাই আমরা।

শেয়ার করুন