২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৭:২১:১৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


নিউজার্সিতে স্ত্রী খুনের অভিযোগে স্বামী গ্রেফতার
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-০৬-২০২২
নিউজার্সিতে স্ত্রী খুনের অভিযোগে স্বামী গ্রেফতার গ্রেফতারকৃত স্বামী আবদাল


মেয়ের জন্মদিনে নিউজার্সিতে স্বামীর হাতে খুন হন স্ত্রী ছায়মা তাসনিম শাপলা (২৪) নামের এক গৃহবধূ। তিনি বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের হাজরাই গ্রামের মরহুম মকদ্দুস আলীর একমাত্র কন্যা। ঘটনাটি ঘটেছে ৪ জুন যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিস্থ নিজবাসায়। স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর স্ট্রোক করেছে বলে কৌশলে ঘাতক স্বামী পুলিশকে কল করে বাসায় আনে। কিন্তু পুলিশের সন্দেহ হলে তাত্ক্ষণিক ঘাতক স্বামী আবদাল হোসাইনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের সময় স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যার বর্ণনা দেয়। আবদাল হাজরাই একই গ্রামের সমুজ আলীর ছেলে।

জানা যায়, ২০১৫ সালে বিয়ের পর ২০১৭ সালে স্বামী আবদাল হোসাইনের সাথে একমাত্র কন্যাসন্তান ফারিহাকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন ছায়মা তাসনিম শাপলা। সেখানে পৌঁছার পর বেশ সুখে-শান্তিতে তাদের সংসার চলছিল। প্রায় তিন বছর পর স্বামীর সাথে স্ত্রীর মনোমালিন্য দেখা দেয়। স্বামী অন্য মহিলার সাথে পরকীয়ার আসক্তের বিষয়টি স্ত্রীর চোখে ধরা পড়ায় তাদের মধ্যে এ কলহ দেখা দেয়। প্রায় সময় ঝগড়া লেগেই থাকতো। এছাড়া স্ত্রীর অ্যাকাউন্ট থেকে সমুদয় টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করে স্বামী। সর্বশেষ তিন সদস্যের পরিবার প্রায় তিন মাস আগে দেশে বেড়াতে আসলে স্ত্রী ও সন্তানকে রেখে হঠাত যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান স্বামী আবদাল। সেখানে পৌঁছে তিনি তার মা-বাবার বাসা মিশিগানে উঠে বসবাস শুরু করেন। 

এদিকে স্বামী একা চলে যাওয়ার পর ২৮ রমজান কন্যাকে সাথে নিয়ে ছায়মা তাসনিম শাপলা যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে নিজের বাসায় ওঠেন। কয়দিন পর স্বজনদের দফায় দফায় বৈঠকের এক পর্যায়ে ঘটনার প্রায় তিন সপ্তাহ আগে স্ত্রীর বাসায় আসেন স্বামী। আবারো তারা একসাথে বসবাস শুরু করে। গত ৪ জুন তাদের একমাত্র কন্যা ফারিহার ছিল জন্মদিন। ওইদিন রাতে সেখানে জন্মদিন পালন করে তারা ঘুমাতে যায়। স্থানীয় সময় রাত ৩টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যা নিশ্চিত করে ঘাতক স্বামী। তাত্ক্ষণিক তিনি পুলিশকে ফোন দিয়ে স্ত্রী স্ট্রোক করেছে এমন কথা বলে বাসায় ডেকে আনে। চৌকস পুলিশের সন্দেহ হলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বামী কর্তৃক স্ত্রী হত্যার কথা বেড়িয়ে আসে। নিহত ছায়মা তাসনিম শাপলার মা জাহানারা বেগম (৪৮) অভিযোগ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত শাশুড়ি মিনারা বেগম, ভাঁসুর আখতার হোসেনের প্ররোচনায় তার একমাত্র কন্যাকে গলাটিপে হত্যা করেছে স্বামী আবদাল হোসাইন। দেশ থেকে সুজনসহ আরো অনেকেই তাদের সহযোগিতা করেছে। তিনি তার কন্যা হত্যার বিচার চান। ঘাতকদের ফাঁসি চান জাহানারা। ঘটনার এক সপ্তাহ পর ১৩ জুন সকালে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বীমানবন্দরে লাশ পৌঁছে। সেখান থেকে বিকেলে অ্যাম্বুলেন্সযোগে মরদেহ বাড়িতে পৌঁছলে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখা যায়। স্বজনদের কান্নায় যেন ভারী হয়ে ওঠে সেখানকার বাতাস। কফিনে একমাত্র সন্তানের লাশ দেখে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন তার মা জাহানারা। মাঝে মাঝে জ্ঞানও হারিয়ে ফেলছেন। তাকে সান্ত¦না দেয়ার ভাষা নেই কারো। একমাত্র কন্যাকে হারিয়ে তিনি এখন একা। ঘাতক স্বামী আবদালসহ জড়িতদের ফাঁসি চান নিহতের পরিবার। এদিকে বাদ মাগরিব হাজরাই আতাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাজার নামাজ শেষে পিতার কবরের পাশে পঞ্চায়েতি কবরস্থানে লাশ দাফন সম্পন্ন হয়। জানাজার নামাজে ইমামতি করেন আতাপুর হাজরাই জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মওলানা ফারুক মাহদি। শেষে মোনাজাত পরিচালনা করেন সত্পুর দারুল হাদিস কামিল মাদরাসার শিক মওলানা জামাল উদ্দিন। এসময় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও বিপুলসংখ্যক লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন