২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৩:৫৮:৪৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


চবি অ্যালামনাইয়ের অভিষেক ও স্বাধীনতা দিবস পালন
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০৪-২০২২
চবি অ্যালামনাইয়ের অভিষেক ও স্বাধীনতা দিবস পালন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কমিটির শপথ গ্রহণ


নিউইয়র্কসহ অন্যান্য স্টেটে বসবাসরত ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রছাত্রীদের সংগঠন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক (২০২২-২-২৩) এবং স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মিলিত স্বাধীনতা দিবসের এই আয়োজনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাথে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাইসহ অন্যান্য অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন। বর্ণাঢ্য এই আয়োজটি ছিল জমজমাট। হলভর্তি অডিটোরিয়ামটি মুখরিত হয়ে ওঠে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ এবং তাদের পরিবারের স্বতঃস্ফ‚র্ত অংশগ্রহণে। এ ছাড়াও ছিলেন কমিউনিটির সকল শ্রেণি-পেশা ও প্রতিনিধিত্বশীল বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। পুরো অনুষ্ঠানে ছিল প্রাণের ছোঁয়া। ছিল আলোচনা, নতুন কমিটির অভিষেক, স্মৃতিচারণ এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল অ্যালামনাই পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন পরিবেশনা। আজ থেকে ২৩ বছর পূর্বে গঠন করা হয়েছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন। অনুষ্ঠানে ছিলেন সেই প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর শাহনেওয়াজ ডিকেন্স, সেক্রেটারি শামীম আল মামুন, প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ের প্রধান নির্বাচন কমিশনার, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবু জাফর মাহমুদ ছিলেন অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা। এ ছাড়াও প্রতিষ্ঠাকালীন অধিকাংশ সদস্য ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের সদস্য সচিব দেলোয়ার এম হাসান। নবনির্বাচিত কমিটিকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রধান নির্বাচন কমিশনার সামসুদ্দীন আজাদ। অভিষিক্ত কর্মকর্তারা হলেন- সভাপতি মাহমুদ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক এস এম ইকবাল ফারুক, সিনিয়র সহ-সভাপতি সেকান্দার চৌধুরী, সহ-সভাপতি হাসান মাহমুদ, কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ আসিফ নজরুল, সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহেদ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক কবিতা সেন, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফাহমিদা জিগার জাহান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ছন্দা বিনতে সুলতান, ক্রীড়া সম্পাদক এম এ সবুর খান। কার্যকরি সদস্য- মোশরফ হোসেন, আনোয়ারুল করিম, রুবিনা মাহমুদ, নাহিদা আলী, জামিলা ইলিয়াস, রফিকুল ইসলাম, বিষ্ণু গোপ, শামীম আল মামুন, দেলোয়ার এম হাসান, আব্দুল আউয়াল শামীম।

শপথ গ্রহণের পর নবনির্বাচিত কমিটিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান নির্বাচন কমিশনার ড. গোলাম মোহাম্মদ এবং দেলোয়ারা আক্তার। বক্তব্য রাখেন নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এস এম ইকবাল ফারুক, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ফাহমিদা জিগার জাহান।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল নবনির্বাচিত সভাপতি মাহমুদ আহমেদ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের মঞ্চে আমন্ত্রণ জানান। প্রতিনিধিদের শুভেচ্ছা বক্তব্যের পর শুরু হয় সমবেত পরিবেশনা। এতে অংশগ্রহণ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাইসহ অন্যান্য অ্যালামনাই পরিবারের সদস্যরা। পরিবশনার মধ্যে ছিল সংগীত, নৃত্য এবং কবিতা আবৃত্তি। কবিতা আবৃত্তি করেন গোপন সাহা, কবির করিন, ছন্দা বিনতে সুলতান, রওশন হাসান, সৈয়দা পারভীন আকতার পলি, শাহেদ আলী, নাসিমা আকতার প্রমুখ। সংগীত পরিবেশন করেন গায়ত্রী সাহা, শারমীন সুলতানা, উম্মে ফেরদৌস বাধন, হাসান মাহমুদ, ফাহমিদা জিগার জাহান, প্লামি দাস, লিলি মজুমদার, উদীপ্ত চৌধুরী এবং নৃত্যে ছিল নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি নারমিন হায়দার।

প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর ডিকেন্স মঞ্চে আমন্ত্রণ জানান অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদকে। আরো বক্তব্য রাখেন নবনির্বাচিত সভাপতি মাহমুদ আহমেদ, প্রধান নির্বাচন কমিশনার সামসুদ্দীন আজাদ, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম, রানা ফেরদৌস চৌধুরী, অধ্যাপক জাহাঙ্গীর শাহ নেওয়াজ ডিকেন্স, বিষ্ণু গোপ, শামীম আল মামুন, জসিম চৌধুরী, পরেশ সাহা, ডেমোক্রেটিক লিডার অ্যাট লার্জ অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী। ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন ড. জমীর চৌধুরী, ড. ইমাম আলী, সিকান্দার চৌধুরী, ড. মিজানুর রহমান মিয়া প্রমুখ।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে আবু জাফর মাহমুদ নবনির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এই সংগঠন এর আগেও বিভিক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু আমরা সেই সময় শক্ত এবং সময় উপযোগী পদক্ষেপ নিয়েছিলাম- যে কারণে বিভক্ত হয়নি। তিনি বলেন, স্বাধীনতা আনন্দের। আমাদের স্বাধীনতা ভারত- পাকিস্তানের মত ছিল না। যুদ্ধ করে, রক্ত এবং সম্ভ্রম দিয়ে আমরা অর্জন করেছি এবং তা উদযাপন করছি। আমাদের স্বাধীনতার ৫১ বছর। আমি এই দেশের একজন যোদ্ধা। যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। দেশ স্বাধীনের পর আমি অন্য দশজনের মত দলবাজ ছিলাম। আমরা এখনো দলবাজির রাজনীতি করছি- যা রাষ্ট্র চিন্তায় প্রতিফলন হয়নি। তিনি বলেন, আমাদের সবার একটি কথা মনে রাখতে হবে রাষ্ট্র ঠিক থাকলে সব কিছু ঠিক থাকবে। আমি ৩০ বছর ধরে আমেরিকায়। এই ৩০ বছরে আমি গবেষণা করেছি এবং সেই গবেষণার ফল হচ্ছে কেন আমাদের সরকার প্রধানদের মেরে ফেলা হয়। তিনি ৭১ সালে আমেরিকার ভ‚মিকার কথা বলতে গিয়ে বলেন, ’৭১ সালে আমেরিকার ভ‚মিকার জন্য তাদের আমি ধন্যবাদ দিতে চাই। কারণ তারা সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েও তা ফিরিয়ে নিয়ে আসে। এর কারণ ছিল। আর কারণটি হলো আমেরিকার সিআইএ সেই সময় আমাদের নেতা বঙ্গবন্ধুর সাথে কথা বলেছিল এবং তারা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছিল যে বাংলাদেশ স্বাধীন হচ্ছে এবং বঙ্গবন্ধু আমাদের নেতা হচ্ছেন। তারা এটা জানতে পেরেই সপ্তম নৌবহর ফিরিয়ে নিয়ে আসে। সেজন্য আমেরিকাকে ধন্যবাদ। তারা যদি সেই সময় আক্রমণ করতো, তাহলে আমাদের নেতার জীবন হুমকির মুখে পড়তো, বাংলাদেশের হাজার হাজার মানুষ মারা যেত। এসব জীবন বাঁচানোর জন্য তাদের ধন্যবাদ। রাশিয়ার ভয়ে আমেরিকা পালায়নি- এই সব ডকুমেন্ট আমার হাতে রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে ভ‚মিকা নিয়েছেন, ’৭১ সালেও আমেরিকার সরকার সেই ভ‚মিকা নিয়েছিল। আমেরিকার যদি ইউক্রেন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে তাহলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ অনিবার্য। বিশ্বকে রক্ষার জন্যই বাইডেন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাছাড়া বাইডেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে যুদ্ধাপরাধী আখ্যায়িত করেছেন আমি তাকে সমর্থন করি। জাতিসংঘে বাংলাদেশ ইউক্রেনের পক্ষে ভোট দেয়ার জন্য তিনি বর্তমান সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আরো বলেন, একটি ক্রিটিক্যাল সময় বাংলাদেশ অতিক্রম করছে। সুতরাং আমাদের সবাইকে আবারো প্রস্তুতি নিয়ে হবে। কারণ আমাদের রাষ্ট্রের পক্ষে আমরা সবাই এক। প্রধানমন্ত্রী বা সরকার আসবে যাবে কিন্তু রাষ্ট্রকে আমাদের রক্ষা করতে হবে।

পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ছন্দা বিনতে সুলতান এবং শাহেদ আলী।

শেয়ার করুন