প্রবাসের মাদার সংগঠন হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ সোসাইটি। সেই বাংলাদেশ সোসাইটির আলোচিত এবং ব্যয়বহুল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, আগামী ২৭ অক্টোবর। এবারের নির্বাচনের কপাল ভালো যেন নির্বাচনের আগে কোনো মামলা এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হয়নি। সেদিক থেকে অনেকেই কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছেন। তবে দুষ্টু লোকগুলো এখনো কমিউনিটিতে বিদ্যমান। বাংলাদেশ সোসাইটির গতবারের নির্বাচনটি ছিল মামলা নিয়ে বেশ আলোচিত। বেশ কয়েক বার মামলা করা হয়েছে, মামলা নিয়ে আবার চড়ুইভাতি খেলাও হয়েছে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ সোসাইটিরই জয় হয়েছে। অপশক্তি পরাজিত হয়েছিল। সেদিক থেকে এবারের নির্বাচনে কোনো অশুভ শক্তির ছায়া দেখা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জামাল আহমেদ জনি জানিয়েছেন, নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। পাঁচটি কেন্দ্রে ৬০টি মেশিনে বাংলাদেশ সোসাইটির ১৮ হাজার ৬১৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে আজীন সদস্য রয়েছেন ৮৫৪ জন। নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান আরো জানান, সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হবে। ভোটগ্রহণ শেষে ওইদিন রাতেই নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করা হবে। তিনি বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশন সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন। তিনি বলেন, নো আইডি নো ভোট। তাছাড়া যার যেখানে ভোট তাকে সেখানেই তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হবে।
বাংলাদেশ সোসাইটির এবারের নির্বাচনে দুটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। কার্যকরি কমিটির ১৯টি পদে ৩৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে প্রচার সম্পাদক পদে রিজু মোহাম্মদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছেন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেলের মধ্যে রয়েছেন রুহুল-জাহিদ প্যানেল এবং সেলিম-আলী প্যানেল। রুহুল-জাহিদ প্যানেলের প্রার্থী সংখ্যা ১৭ এবং সেলিম-আলী প্যানেলে প্রার্থী সংখ্যা ১৯। চার দিন পরই নির্বাচন। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা নিউইয়র্কে দুই প্যানেলের সভা-সমাবেশে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। নিউইয়র্কে বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে বিরামহীনভাবে প্রচার-প্রচারণা চলছে। চলছে ভাঙাগড়ার খেলা। যে খেলায় পাল্টে যেতে পারে গণেশ, পরিবর্তন হচ্ছে সমীকরণ। এক প্যানেলের প্রার্থীদের হাসি শোভা পেতে পারে আরেক প্যানেলের প্রার্থীদের মুখে। নির্বাচন নিয়ে দুই সপ্তাহ আগেও উদ্বেগ-উকণ্ঠা না থাকলেও তা এখন ভর করেছে কোনো কোনো প্রার্থীর ক্ষেত্রে। সহজ-সরল হিসাব জটিল আকার ধারণ করছে। তবে সবশেষ কথা হচ্ছে, যারাই কেন্দ্রে ভোটার আনতে পারবে বেশি এবং ভোট কাস্ট করাতে পারবে বেশি, তাদেরই জয়ের সম্ভাবনা বেশি।
২৭ অক্টোবরের নির্বাচনে সভাপতি পদে রুহুল আমিন সিদ্দিকীর সঙ্গে আতাউর রহমান সেলিমের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে মহিউদ্দিন দেওয়ানের, সহ-সভাপতি পদে আমিনুল ইসলাম চৌধুরীর সঙ্গে কামরুজ্জামান কামরুলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এবারের নির্বাচনের ম্যাজিক প্রার্থী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, মানবদরদী ও মানবতার ফেরিওয়ালা জাহিদ মিন্টু। তার কারণেই এবারের নির্বাচনের হিসাব-নিকাশে ম্যাজিকেল পরিবর্তন এসেছে। সাধারণ সম্পাদক পদে ম্যাজিকম্যান জাহিদ মিন্টুর সঙ্গে মোহাম্মদ আলী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে সরোয়ার খান বাবুর সঙ্গে আবুল কালাম ভূইয়ার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। কোষাধ্যক্ষ পদে নওশেদ হোসেনের সঙ্গে মফিজুল ইসলাম ভুইয়া রুমির প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। সাংগঠনিক সম্পাদত পদে সাদী মিন্টুর সঙ্গে ডিউক খানের, সাংস্কৃতিক সম্পাদিকা পদে মনিকা রায়ের সঙ্গে মোস্তফা অনিক রাজের, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক পদে নাদের এ আইয়ুবের সঙ্গে জামিল আসারির, সাহিত্য সম্পাদক পদে রুমানা আহমেদের সঙ্গে আক্তার বাবুলের, ক্রীড়া ও আপ্যায়ন সম্পাদক পদে আলমগীর হোসেনের সঙ্গে আশ্রাব আলী লিটনের, স্কুল ও শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক পদে শাহনাজ হোসেনের সঙ্গে হাসান জিলানীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে এবং কাযকরি সদস্য পদে আব্দুর রব মিয়া, তাজু মিয়া, নজরুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম ডালিম, মোহাম্মদ সিদ্দিক পাটোয়ারি, মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, হারুণ চেয়ারম্যান, আবুল কাশেম চৌধুরী, জাহাঙ্গীর সরওয়ার্দী, মনসুর আহমেদ এবং হাসান খানের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।