২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ৬:২০:২২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


সংবাদ সম্মেলনে বাপার নেতৃবৃন্দ
রাজনীতিকদের কঠোর বার্তা দিতে সমাবেশ ডেকেছে পরিবেশবাদিরা
বিশেষ প্রতিবেদক
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-১২-২০২২
রাজনীতিকদের কঠোর বার্তা দিতে সমাবেশ ডেকেছে পরিবেশবাদিরা


শহীদ মিনারে রাজনীতিকদের কঠোর বার্তা দিতে আগামী বছর জানুয়ারিতে সমাবেশ ও বিশেষ সম্মেলন ডেকেছে পরিবেশবাদিরা। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন)-এর যৌথ উদ্যোগে একর্মসূচি পালিত হতে যাচ্ছে। 

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশের সার্বিক পরিবেশ বিষয়ক ‘পরিবেশ সমাবেশ’ এবং ‘বাংলাদেশের হাওর, নদী ও বিল সমস্যা ও প্রতিকার’ বিষয়ক বিশেষ সম্মেলন সম্পর্কে দেশবাসীকে অবহিত করণ ও সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি’ প্রদান উপলক্ষ্যে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাপা’র সহ-সভাপতি ও পরিবেশ সমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যন অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যৌথভাবে সম্মেলন প্রস্তুত কমিটি’র বিশেষজ্ঞ অধিবেশন উপ-কমিটির আহ্বায়ক ও বাপা নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক এম শহীদুল ইসলাম এবং পরিবেশ সমাবেশ প্রস্তুতি কমিটি’র সদস্য সচিব আলমগীর কবির। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন সম্মেলন এ কমিটির সদস্য সচিব, অধ্যাপক ড. আহম্মদ কামরুজ্জমান মজুমদার এবং বাপা’র যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস। এছাড়াও এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এব্যাপারে বক্তব্য রাখেন সম্মেলন কমিটির চেয়ারম্যন ও বাপা’র সহ-সভাপতি অধ্যাপক এম ফিরোজ আহমেদ, বাপা’র সহ-সভাপতি ও বেনের প্রতিষ্ঠাতা ড. নজরুল ইসলাম, বেন-এর বৈশ্বিক সমন্বয়ক ড. মো. খালেকুজ্জামান এবং বাপা’র সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাপা’র কোষাধ্যক্ষ মহিদুল হক খান, নির্বাহী সদস্য আমিনুর রসুল, ইবনুল সাঈদ রানা এবং যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ন কবির সুমন প্রমুখ।

এতে জানান হয় যে আগামী ২০২৩ সালের ১৩-১৪ জানুয়ারি তারিখে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার ও কাজী মোতাহার হোসেন ভবন (সাইন্স এনেক্স বিল্ডিং) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) এর যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশের পরিবেশ বিষয়ক ‘পরিবেশ সমাবেশ’ এবং ‘বাংলাদেশের হাওর, নদী ও বিল সমস্যা ও প্রতিকার’ বিষয়ক বিশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। 

এব্যাপারে অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক বলেন, যদিও আমাদেরে এ আয়োজন জাতীয় পর্যায়ে কিন্তু পরিবেশের সমস্যাটি এখন আর জাতীয় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নেই বরং এটি আন্তর্জাতিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। আমাদের এ সমাবেশ এবং সম্মেলনের ফলে পরিবেশের বিষয়টি যেন আগামী নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দলের ইস্তেহারে স্থান পায় এবং ডেল্টাপ্লান ও এসডিজি বিষয়ে গুরুত্ব পায় সেজন্যই। 

ড. নজরুল ইসলাম বলেন, দেশের জনগণ যদি পরিবেশের সমস্যার জন্য এগিয়ে না আসে তা হলে সরকার কোন কার্যকরি ভূমিকা নিবে না। তাই দেশের সাধারণ জনগণকে পরিবেশের বিষয়ে সচেতন করা এবং পরিবেশ রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ করার মধ্যদিয়েই দেশের পরিবেশ রক্ষা করা সম্ভব। সমাবেশে ও সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন স্থানের পরিবেশের ক্ষতির স্বীকার এমন জনগণ জমায়েত হয়ে তাদের দূর্ভোগের কথা বলবে; সেই কথাগুলো বাপা সরকার ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের নিকট পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন। 

অধ্যাপক এম ফিরোজ আহমেদ দেশের সকল উন্নয়নমূলক প্রকল্প গ্রহণের আগে পরিবেশের দিকটি বিবেচনায় নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

অধ্যাপক এম শহীদুল ইসলাম বলেন, নদ-নদী বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতি, অর্থনীতি, ইতিহাস, এবং সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। হাওর এবং বিলসমূহ দেশের নদ-নদী কাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ অংশ। হাওরসমূহ বাংলাদেশের মূলত উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। তবে বিলসমূহ সারা দেশ জুড়েই ছড়ানো। তারমধ্যে সবচেয়ে বড় হলো চলন বিল, যা উত্তরবঙ্গের বেশ কটি জেলা জুড়ে বিস্তৃত। সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য পুকুর এবং জলাধারগুলিও পরিবেশ এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেশের হাওর, নদী, এবং বিলসমূহের বিভিন্নমুখী সংকটের পেছনে বিভিন্ন বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক কারণ। বৈশ্বিক কারণসমূহের মূলে রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন যার ফলে বাংলাদেশের নদ-নদী প্রবাহের ঋতুভেদ আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আঞ্চলিক কারণসমূহের মধ্যে রয়েছে উজানের দেশসমূহ কর্তৃক বাংলাদেশে প্রবেশকারী নদনদীর প্রবাহ অপসারণকারী ও বাধা সৃষ্টিকারী বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ এবং অববাহিকা অঞ্চলে বনাঞ্চল নিধন ও অবাঞ্ছনীয় ভূমি-ব্যবহার ও ভূমি-রূপ পরিবর্তন; ইত্যাদি। এর ফলে শুষ্ক মৌসুমে পানি প্রবাহ ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে; এই প্রবাহের হঠাৎ উত্থানপতনের মাত্রা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে; এবং সাধারণভাবে প্রবাহের পরিমাণ সম্পর্কে অনিশ্চয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। 

দেশের পরিবেশ রক্ষার সংগ্রামের সাফল্য, সমস্যা, বাধা এবং পরিবেশের অবক্ষয় বিষয়ে আলমগীর কবির তার পরিবেশ সমাবেশ বিষয়ের মূল বক্তব্যে তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রতিককালে অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জন করছে এবং বহু রাস্তাঘাট, সেতু, বিদ্যুৎ কেন্দ্র ইত্যাদি নির্মিত হয়েছে এবং হচ্ছে। কিন্তু দেশের পরিবেশের দ্রুত অবক্ষয় সাধিত হচ্ছে। এই অবক্ষয়ের চিত্র সর্বত্রই দৃশ্যমান। 

শেয়ার করুন