২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০২:০০:২৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা ভিসানীতি হাইকমান্ড হালকাভাবে নেয়ায় দুশ্চিন্তা আওয়ামী লীগে...
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৬-২০২৩
র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা ভিসানীতি হাইকমান্ড হালকাভাবে নেয়ায় দুশ্চিন্তা আওয়ামী লীগে...


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা থেকে শুরু করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন ধরনের সর্তক বার্তার পাশাপাশি আমেরিকার নতুন ভিসানীতিকে মোটেই আমলে নিচ্ছে না ক্ষমতাসীন সরকার। একেবারে শীর্ষ পর্যায়েরও নেতারাই বিষয়কে হালকাভাবে নিয়ে মাঠ গরম করে রাখছে। এমনকি ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের কাছে গিয়েও বিষয়টি হালকাভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকমহল মনে করেন, ক্ষমতাসীনদের এমন ধরনের হালকাভাব দেশের জন্য বাস্তবে ভয়াবহ সঙ্কট বিপর্যয় দেখা দেবে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, এতে করে দেশে বিদেশে কর্মরত সাধারণ মানুষ মহাসঙ্কটে পড়বে। বিপদে বা বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে পারে দেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধারা। 


নিষেধাজ্ঞাকে হালকাভাবে নেয়ার অভিযোগ

২০২১ সালের ডিসেম্বরে গুরুতর মানবাধিকার লংঘনমূলক কাজে জড়িত থাকার' অভিযোগে বাংলাদেশের বিশেষ পুলিশ র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং এর ছয়জন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এমন ঘটনাকে বলা যায় পাত্তাই দেয়নি আওয়ামী লীগ। বরং পুলিশ প্রধান বেনজির আহমেদ ও কয়েকজন র‌্যাব কর্মকর্তার উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ঘটনায় বাংলাদেশ অসন্তোষ জানিয়েছে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। ওই সময়ে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলারকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে এই অসন্তেষের কথা জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এপ্রসঙ্গে বলা হয়েছে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে সকালে আমরা ডেকে নিয়েছি। আমার পররাষ্ট্র সচিব আলোচনা করেছেন। বলা হয় যে, মার্কিন রাষ্ট্রদূতও অনেকটা সারপ্রাইজের মতো যে এরকম হয়েছে। তবে পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলারের কাছে পুলিশ ও র‌্যাব প্রধানের ওপর দেয়া নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে বাংলাদেশের অসন্তুষ্টি জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব। আর এধরনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরো বলা হয়, রাষ্ট্রদূত মি. মিলার বাংলাদেশ সরকারের উদ্বেগ তার সরকারের কাছে পৌঁছে দেবেন বলে পররাষ্ট্র সচিবকে জানান। 

এ-ভাবে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং এর ছয়জন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘটনাকে হালকাভাবে দেখালেও মাঠে ময়দানে পরিস্থিতির অনেক পরিবর্তন হয়ে যায়। রাজনৈতিক মাঠে প্রধান বিরোধী দল বলা চলে ব্যাপকভাবে চাঙ্গা হয়ে উঠে। অন্যদিকে প্রথমে তেমন পাত্তা না দিলেও এই র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং এর ছয়জন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সরকার রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়। তবে এখন পর্যন্ত তার কুলকিনারা করতে পারেনি সরকার। বরং কয়েকদিন পরেই বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বলেছেন, র‌্যাবের উপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হলে মানবাধিকার রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। প্রথমেই হালকাভাবে নেয়ার জন্যও এমনটা হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন। 

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবিও হালকাভাবে নেয়ার অভিযোগ

র‌্যাবের উপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে মানবাধিকার রক্ষায় প্রয়োজনীয় সংস্কার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের দাবি যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আওয়াজ জোরালোভাবে উঠেছে তখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলা যায় গর্জে উঠে একিই ইস্যুতে। অথচ দেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দিতে হবে- এমন কথা ইইউও বলছে, যা প্রথমে সরকার পাত্তাই দেয়নি বলা চলে। ইইউ-ও দাবি করে যাচ্ছে বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে হবে পাশাপাশি বলতে থাকে মানবাধিকারের বিষয়টি। অন্য রাষ্ট্ররাও আওয়াজ তোলে। এমনকি আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি যা অন্য কোনো দেশে শোনেননি বলে জাপানি রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি। বাংলাদেশে নিযুক্ত এই জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি এসব বলে আরো বলেছেন, তারা আশা করছেন- বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন সব প্রধান রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে। পরে এটি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনের পাশাপাশি কূটনৈতিক পাড়ায়ও তোলপাড় হয়, এতে সরকার নড়ে চড়ে বসে। পরে অবশ্য ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের আরেক রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেছেন, ‘রাষ্ট্রদূতেরা যেকোনো দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি এবং রাজনীতির বিষয়ে যথেষ্ট কৌতূহলী থাকেন। তবে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকব। 

এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবি জানানো হয়েছে। আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ‘অংশগ্রহণমূলক’ হলে পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে বলে সম্প্রতি জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয় পর্যলোচনার জন্য নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে জুলাইয়ে ইইউ থেকে একটি ‘স্বাধীন পর্যালোচনা মিশন’ আসবে।  ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের জনগণের মতো ইউরোপীয় ইউনিয়নও এ দেশে সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়। যেই নির্বাচন হতে হবে সংঘাতহীন। ওই স্বাধীন পর্যালোচনা মিশন দেখবে র্পর্ণাঙ্গ ইইউ পর্যবেক্ষক দল পাঠানো ‘কার্যকরী ও সম্ভাব্য’ কি-না। তকে শক্ত বার্তা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অংশগ্রহণমূলক করতে ও অংশ নিতে নতুন ভিসানীতিই গ্রহণ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। 

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসার ব্যাপারে যে ‘নতুন ভিসা নীতি’ ঘোষণা করেছে, তার লক্ষ্য বিষয়ে সরাসরি বলে ফেলেছে। স্পস্ট করে বলা হয়েছে যে এর লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করা। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে’ এই নতুন নীতি ঘোষণা করা হয়েছে এবং এর লক্ষ্য হচ্ছে ‘যারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায়, তাদের সবাইকে সমর্থন’ দেওয়া। নতুন ভিসানীতি আসাকেও অনেকে আওয়ামী লীগের শীর্ষদের বক্তব্যকে দায়ি করতে চায়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকমহল মনে করে উচ্চ পর্যায়ে এধরনের বিষয়গুলি হালকাভাবে নেয়ার কারণে সরকার বারবার হোচট খাচ্ছে।

সরকারের শীর্ষরা এবার কি বলছে?

এই ভিসানীতি নিয়ে যখন সারাদেশে তোলপাড় তখন সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে নানান ধরনের বক্তব্য দিয়ে হালকা করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কয়েকদিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি নিয়ে আওয়ামী লীগের কোনো মাথাব্যথা নেই। ওবায়দুল কাদের আরেক জায়গায় বলেন, কারও ভিসা নীতি, নিষেধাজ্ঞায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকে থাকবে না। তিনি বলেন, আমাদের গণতন্ত্রে কেন বাইরে থেকে হস্তক্ষেপ হবে? আমরা বাইরের হস্তক্ষেপে গণতন্ত্র, নির্বাচন চাই না।’ গত শনিবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নির্বাচন করতে না দেওয়ার ঘোষণার পর মার্কিন ভিসা নীতি কী করে, সেটাই এখন দেখার বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন। আবার এক ধরনের হুমকি দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘ভিসা নীতি আমরাও করতে পারি, অপেক্ষায় থাকুন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মার্কিন ভিসা নীতিতে তারা বলেছে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে যারা বাধা দেবেন, তাদের ক্ষেত্রে এ ভিসা নীতি প্রয়োগ করা হবে। এ নীতি এখন অন্ধ-বধির হয়ে থাকবে, না বাস্তববাদী হবে-আমরা দেখব।’ এমনকি শরিকদের কেউ কেউ বলে যাচ্ছেন ভোটের আগে বাংলাদেশের জন্য যে ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, তাতে ‘কন্টেস্ট’ করা জরুরি নয় বলে বলেছেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু।

যদিও অন্যদিকে আওয়ামী লীগ কৃষিমন্ত্রী ও সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি সবার জন্য সতর্কবার্তা। এই সতর্কবার্তা সব দলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। আমরা বিষয়টা পর্যবেক্ষণ করছি।  আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীয় সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান দাবি করেছেন আমেরিকার ভিসা নীতিতে আওয়ামী লীগ নয়, বেশি ক্ষতি হবে বলে বিএনপির। 

শেষ কথা..

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকমহল মনে করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কতৃক র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা থেকে শুরু করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন ধরনের সর্তক বার্তার পাশাপাশি আমেরিকার নতুন ভিসানীতি সরকারের পক্ষ থেকে আমলে না নেয়াটা দেশের জন্য অশনি সংকেত। তারা মনে করে, সরকার এতোগুলি রাষ্ট্রের মতামতসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের দখল এমন সঙ্কটকালীন সময়ে সামলাতে পাবে না। উপরন্ত বিদেশে মার্কিন বলয়ে থাকা বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশের নাগরিক বিশেষ করে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের কথাও সরকারকে মাথায় রেখে চিন্তা করতে হবে। কথা বলতে হবে ভেবে চিন্তে। ’কে আমাদের ভিসা দেবে না, নিষেধাজ্ঞা দেবে- ওনিয়ে মাথা ব্যথা করে লাভ নেই। ২০ ঘণ্টা প্লেনে জার্নি করে, আটলান্টিক পার হয়ে ওই আমেরিকায় না গেলে কিচ্ছু আসে যায় না। পৃথিবীতে আরও অনেক মহাসাগর আছে, অনেক মহাদেশ আছে। সেখানেই আমরা যাতায়াত করবো’-এমন ধরনের বক্তব্য দেয়ার আগে অবশ্যই ভাবতে হবে এটা কার ওপর এসে পড়তে পারে। তাই ভেবে চিন্তে বলে বিষয়গুলিকে হালকাভাবে নিলে দেশ ও জাতির জন্য অনেক বড়ো মাসুল দিতে হবে বলে তারা মনে করেন।  জানা গেছে, এসব বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে একটি বিচলিত ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে দলের একটি সূত্র জানায়, দেশে বিদেশে মাঠ পর্যায়ের নেতারা অন্যরকম অস্বস্থিতে আছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় দেশগুলি বিভিন্ন ধরনের নীতি ও বক্তব্যের প্রভাব কী হতে পারে, সেই ভাবনায় যতো না বেশি চিন্তিত তার চেয়ে বেশি অশ্বস্থিতে আছে এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে আওয়ামী লীগে শীর্ষ পর্যায়ে নেতাদের হালকা ভাবে নেয়াকে। কেনোনা দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা এধরনের বিষয়গুলিকে এতো হালকাভাবে নিচ্ছে তা তাদের বোধগম্য নয়। তাদের মতে, প্রথমে হালকাভাবে নিয়ে এখন কেনো হা-হুতাশ বা ক্ষোভ প্রকাশ করা হচ্ছে । কেনোইবা এখন দেয়া হচ্ছে আরেক ধরনের কথা। বিদেশ থেকে পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে বিএনপি দেশে অর্থনৈতিক নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আবার বলা হচ্ছে, শান্তিরক্ষী বাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে অপপ্রচার চালাচ্ছে বিএনপি। প্রশ্ন হচ্ছে আমেরিকা বা ইউরোপীয় ইউনিয়েনের বক্তব্যকে হালকাভাবে নেয়ার পর এখন কেনো বিএনপি’র বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আনা হচ্ছে। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যারা আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা, নতুন ভিসানীতি বা ইইউদের দাবিকে পাত্তা দেয় না তাদের কাছে বিএনপি’র মতো দল কি করলো না করলো তাতে কি যায় আসে? তাহলে কি বলা যায় র‌্যাবের বিরুদ্ধে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা, নতুন ভিসানীতি বা ইইউ’র দাবিকে হালকাভাবে নিয়ে আওয়ামী লীগ এখন গ্যারাকলে? তারা কি পস্তাচ্ছে? কেননা ইতোমধ্যে আরো খবর বেরিয়েছে যে, দেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজার যুক্তরাষ্ট্রে গত কয়েক মাস ধরে রপ্তানি কমছেই। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে মাস পর্যন্ত ১১ মাসে রপ্তানি কমেছে ৫ শতাংশেরও বেশি। কিন্তু একই সময়ে অন্যান্য দেশে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে বড় অঙ্কের। এ সময় সার্বিক পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে ১১ শতাংশেরও বেশি। কিন্তু প্রশ্ন হলো এমন হচ্ছে বা হলো কেনো? সব বিষয়ে হালকাভাবে নেয়ায়? এমন দুশ্চিন্তা আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ে।

শেয়ার করুন