২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৭:৩৬:৩৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


পল্টনের মহা সমাবেশ থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের আহ্বান
‘যদি নিজেদের ভালো চান, এক দফা দাবি মেনে নিন পদত্যাগ করুন’
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-০৭-২০২৩
‘যদি নিজেদের ভালো চান, এক দফা দাবি মেনে নিন পদত্যাগ করুন’


‘টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া সবাই কী বলে? নেতা কর্মীরা বলেন... ‘খালেদা জিয়া,খালেদা জিয়া।’ সে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া সমগ্র বাংলাদেশ থেকে এ ঢাকা মহনগরে, এ নয়াপল্টনের গনতান্ত্রকামী পুরুষ মহিলা সবাই এসে এ মহাসমাবেশে এসে হাজির হয়েছেন। এটা একটা মাইল ফলকের সমাবেশ। এটা একটা পরিবর্তনের মাইল ফলকের মহাসমাবেশ বন্ধুগন। সারা দেশ থেকে গণতন্ত্রকামী সাধারণ মানুষ, ছাত্র-যুবসমাজ, নারী, প্রবীণ মানুষ আজকের এ মহাসমাবেশে উপস্থিত হয়েছেন।’


আজ শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। বর্তমান সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে এ মহাসমাবেশ করে বিএনপি।


এ সমাবেশের আগের রাতেই পল্টন সমাবেশস্থলে ব্যাপক মানুষের সমাগম ঘটে। তারা ওইস্থানেই অনেকে ঘুমিয়ে রাত কাটান। গভীর রাতে তাদের মাঝে রান্না করার খাবার পরিবেশন করা হয়। মোবাইল টয়লেটেরও ছিল ব্যবস্থা। সকাল হতেই সমাবেশ স্থলে লোকারন্য হতে থাকে। মিছিল সহকারে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে উপস্থিত হতে থাকে মানুষ। সমাবেশের আগেই কাকরাইল ও তার আশপাশ, ফকিরাপুল ও তার আশপাশ জনসমুদ্রে রুপান্তরিত হয়। জুময়ার নামাজের পর শুরু হয় সমাবেশ।

মির্জা আব্বাসের সভাপতিত্বে এ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দ ও কেন্দ্রীয় অপর নেতৃবৃন্দও এতে উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তব্য দেন।


সমাবেশ থেকে আবারও বর্তমান সরকারের পদত্যাগ দাবি জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যদি নিজেদের ভালো চান, এখনো সময় আছে। আমাদের এক দফা দাবি, সেটা মেনে নিন আর পদত্যাগ করুন। কারণ, সমগ্র বাংলাদেশ আজ জেগে উঠেছে। যদি পদত্যাগ না করেন, এ দেশের মানুষ আপনাদের পতন করেই ছাড়বে।’ তিনি বলেন ‘শুধু আমরা একারাই নই। বিদেশী রাষ্ট্রগুলোও বলছে বাংলাদেশে আমরা একটি অবাধ সুষ্ট নির্বাচন দেখতে চাই। তারাও পরিবর্তন চায়।’


বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমরা সমমনা সব দলকে নিয়ে একটা জাতীয় সরকার গঠন করবো। আমরা যে ৩১ দফা দিয়েছি। তার ভিত্তিতে রাষ্ট্রকে মেরামত করবো। রাষ্ট্রকে সাঝাবো। তার মধ্যে রয়েছে, তরুনদের চাকরির ব্যাবস্থা করন। চাকরি না পেলে ভাতার ব্যাবস্থাকরন। প্রশিক্ষনের ব্যাবস্থা গ্রহন। যেখানে শিখে যাতে বিদেশে যেতে পারেন।’


প্রশাসনকে হুঁশিয়ার করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দলীয় সরকারের অধীনে বেআইনিভাবে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না। সংবিধান অনুযায়ী, আইনের শাসন মেনে কাজ করেন। গ্রেপ্তার, হয়রানি বন্ধ করুন, কারাগারে যাঁদের আটক রেখেছেন, তাঁদের মুক্তি দিন।’ তিনি অভিযোগ করেন, সাধারণ মানুষের হয়ে যিনি আন্দোলন সংগ্রাম করেন, সেই তারেক রহমানকে বেআইনি ভাবে সাজা দিয়ে, অত্যাচার করে এ দেশ থেকে নির্বাসিত করা হয়েছে। খালেদা জিয়াকে অবৈধভাবে সাজা দিয়ে কারাবন্দী করেছে।’


পল্টনে মহাসমাবেশের একটি মুহূর্ত /ছবি সংগৃহীত



মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকারের পদত্যাগ এবং নিরপেক্ষ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন করছি। এ আন্দোলনে শরিক ৩৬টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে একমত হয়েছি যে এই অবৈধ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। কারণ, তাদের অধীনে নির্বাচন হলে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারবেন না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এই অবৈধ সংসদকে বিলুপ্ত করতে হবে। আমাদের পরিষ্কার কথা, দফা এক, দাবি এক, এই সরকারের পদত্যাগ।’

মির্জা ফখরুলের অভিযোগ, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাষ্ট্রযন্ত্র  সবকিছুকে দলীয়করণ করা হয়েছে। তারা প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে আবারও একটা যেন তেন নির্বাচনের চেষ্টায় মত্ত হয়ে উঠেছে। এটা কী জনগন মেনে নেবে? এ দেশের জনগণ আর এটা মেনে নেবেন না। তিনি বলেন, ‘আমরা একা নই, বাইরের দেশগুলো, আন্তর্জাতিক বিশ্বও দেশে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়।’


তিনি বলেণ, ‘আমি পরিস্কারভাবে বলতে চাই, পুলিশকে বলতে চাই। প্রশাসনকে বলতে চাই, এ ভয়াবহ একটা দলীয় সরকারের বেআইনি আদেশ নির্দেশে জনগনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না। আপনারা শপথ নিয়েছে এ দেশের স্বার্থে সংবিধান অনুসারে দ্বায়িত্ব পালন করবেন। আইনের শাসন কায়েম করুন। আইনের শাসন অনুসারে কাজ করুন। অযথা সাধারন মানুষের বিরুদ্ধে দাড়াবেন না গ্রেফতার করবেন। আমরা পরিস্কার বলতে চাই- গ্রেফতার বন্ধ করুন।’ আমরা চাই, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেন।’


এক তরুনের হাতে খালেদা জিয়ার পোষ্টার। ভি দেখাচ্ছেন ওই তরুন/ছবি সংগৃহীত


তিনি অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘তাদের অপকর্মের জন্য আমাদের একটি সংস্থা র‌্যাবকে শ্যাংসন দেয়া হয়েছে। এটা কোনো ভাল কাজ নয়।  চল্লিশ লাখ নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। এরপর আবার শুরু হয়েছে গায়েবী মামলা। গত কয়েকদিনে আমাদের অনেক নেতাকর্মী আটক করেছে। কিন্তু আটক গ্রেফতার করে কী গনতান্ত্রিক আন্দোলন দমানো যাবে? যাবে না।’

তিনি এ মহাসমাবেশের পরের যে কর্মসূচি সেগুলো সুন্দর ও অহিংসভাবে পালন করার আহ্বান জানান। 


শেয়ার করুন