২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৩:৩২:০৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


ইউক্রেনে রাশিয়ার ১৭ হাজারের বেশি ‘দখলদার’ নিহত
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩১-০৩-২০২২
ইউক্রেনে রাশিয়ার ১৭ হাজারের বেশি ‘দখলদার’ নিহত ধংসস্তুপের কাছে দাড়িয়ে এক রাশিয়ান সৈন্য: ছবি ইন্টারনেট


ইউক্রেনে আগ্রাসন অব্যাহত থাকলেও শান্তি আলোচনার জন্য বৈঠকে বসে ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধি দল। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে গত ২৯ মার্চ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বৈঠকে এবার ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ও চেরনিহিভে সামরিক কার্যকলাপ হৃাস করার আশ্বাস দিয়েছে মস্কো। দুদেশের মধ্যে আস্থা বাড়ানোর এটি প্রথম পদক্ষেপ বলে জানা গেছে। এর আগে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) সকালে শুরু হওয়া বৈঠকে বক্তব্য দেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেব তাইয়্যেব এরদোয়ান। এ সময় তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে তার গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করেন।


এরদোয়ান বলেন, এই আলোচনার অগ্রগতি দুই নেতার সাক্ষাতের সুযোগ তৈরি করবে। আর সেই আলোচনা আয়োজনের জন্যও তুরস্ক প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া আগ্রাসনের (২৯ মার্চ) পর্যন্ত দেশটিতে সংঘাত শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার ১৭ হাজার ২শ ‘দখলদার’ নিহত হয়েছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়া। তারপর থেকে সংঘাত চলছেই। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের এক পোস্টে জানিয়েছে, সেখানকার সংঘাতে ৫৯৭টি ট্যাঙ্ক, ১ হাজার ৭১০টি সামরিক যান, ১২৭টি যুদ্ধবিমান, ১২৯টি হেলিকপ্টার এবং সাতটি জাহাজ হারিয়েছে রাশিয়া।


এর আগে গত শুক্রবার মস্কোর পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, ইউক্রেন যুদ্ধে ১ হাজার ৩৫১ জন সৈন্যকে হারিয়েছে তারা। এদিকে দেশটির অবরুদ্ধ মারিউপোল শহরে রাশিয়ার হামলার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে পাঁচ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। অপরদিকে ইউক্রেনে এক হাজারেরও বেশি ভাড়াটে যোদ্ধা পাঠিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের প্রতিরোধে যখন রুশ বাহিনী কয়েকটি শহরে পিছু হটতে শুরু করেছে তখন এই ভাড়াটে যোদ্ধা পাঠানোর খবর পাওয়া গেলো। বৃটিশ গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, রাশিয়ার সরকার ‘ওয়াগনার গ্রুপ’ নামের একটি সামরিক কন্ট্রাক্টিং প্রতিষ্ঠান থেকে এই যোদ্ধাদের ভাড়া করেছে। এরপর তাদেরকে ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলে যুদ্ধের জন্য পাঠানো হয়েছে। বৃটিশ এয়ার ভাইস-মারশাল মিক স্মিথ বলেন, এই ভাড়াটে যোদ্ধাদের সঙ্গে সংগঠনটির সিনিয়র নেতারাও থাকবেন।


তারা ওই অঞ্চলের রুশ অভিযানের নেতৃত্ব দেবেন। ইউক্রেনে রাশিয়া ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং তাদের অভিযান স্থগিত হয়ে পড়েছে। তাই রাশিয়া এখন ওয়াগনার যোদ্ধাদের ওপর ভরসা করছে।

চলমান যুদ্ধ থামাতে গত ২৯ মঙ্গলবার ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিরা ইস্তানবুলে বৈঠকে বসেন। এ বৈঠকে বেশ কয়েকটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই দেশই। রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা রাজধানী কিয়েভ ও চেরনোহিভের দিকে আক্রমণ প্রায় বন্ধই করে দেবে। অন্যদিকে ইউক্রেন ওই বৈঠকের পর ঘোষণা দিয়েছে, রাশিয়ার দাবি অনুযায়ী ন্যাটো বা কোনো সামরিক জোটে যোগ দেবে না ইউক্রেন।

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ পঞ্চম সপ্তাহে গড়িয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গভীর দুঃখপ্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। তিনি বলেন, এই সংঘাত বন্ধ করা উভয়পক্ষেরই দরকার। এর আগে ইউক্রেনের প্রতিনিধি দল তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে পৌঁছায়। কয়েকদিন আগেও দুদেশের মধ্যে কয়েক দফা শান্তি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি শুধু মানবিক করিডোর চালু করা ছাড়া। এই বৈঠকে ইউক্রেনের প্রতিনিধি দলের হয়ে নেতৃত্ব দেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেকসি রেজনিকোভ এবং প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কার্যালয়ের প্রধান মিখাইল পোডোলিয়াক।

রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের নির্দেশের পর স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ভোরে স্থল, আকাশ ও জলপথে ইউক্রেনে হামলা শুরু করেন রাশিয়ার সেনারা। উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব দিক থেকে, এমনকি বেলারুশ থেকেও হামলা চালানো শুরু হয়। ধীরে ধীরে রাজধানী কিয়েভের দিকে অগ্রসর হয় রুশ সেনারা। এক মাসের বেশি ধরে চলছে দু’পক্ষের লড়াই। এতে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। দেশছাড়া হয়েছেন প্রায় ৩০ লাখ ইউক্রেনীয়। ইউক্রেন আগ্রাসনের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের একের পর এক নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে রাশিয়া। যার প্রভাব পড়ে বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও। কয়েক দফায় আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে তেলসহ সব ধরনের পণ্যের দাম।

নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিলে রাশিয়ার ‘দাবি মেনে নেবে’ ইউক্রেন

চলমান যুদ্ধ থামাতে মঙ্গলবার ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিরা ইস্তানবুলে বৈঠকে বসেন। এ বৈঠকে বেশ কয়েকটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই দেশই। রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা রাজধানী কিয়েভ ও চেরনোহিভের দিকে আক্রমণ প্রায় বন্ধই করে দেবে। অন্যদিকে ইউক্রেন ওই বৈঠকের পর ঘোষণা দিয়েছে, রাশিয়ার দাবি অনুযায়ী ন্যাটো বা কোনো সামরিক জোটে যোগ দেবে না ইউক্রেন। তারা নিরপেক্ষ দেশ থাকবে। তবে এর বদলে তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে হবে। ইউক্রেন নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বলতে বুঝিয়েছে, বাইরের কোনো দেশ যদি তাদের আক্রমণ করে তখন তাদের সহায়তা করতে হবে।  আর ইউক্রেনকে নিরাপত্তা  নিশ্চয়তা দেওয়া দেশের তালিকায় থাকতে পারে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, তুরস্কের মতো দেশগুলো। অন্যদিকে নিরপেক্ষ থাকা মানে হলো ইউক্রেন কোনো জোটে যোগ দিতে পারবে না। কোনো বিদেশী দেশের সৈন্যদের ঘাঁটি স্থাপন করতে দিতে পারবে না। তাছাড়া ক্রিমিয়া নিয়েও রাশিয়ার কাছে প্রস্তাব দিয়েছে ইউক্রেন। তারা বলেছে আগামী ১৫ বছরের মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে ক্রিমিয়া নিয়ে আলোচনা করতে চায় তারা এবং সমস্যাটির সমাধান চায়। সূত্র: বিবিসি


শেয়ার করুন