২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০২:১৮:১২ পূর্বাহ্ন


পদ্মা সেতুতে গর্বিত বাংলাদেশ লজ্জায় অবনত রাজনীতি
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-০৬-২০২২
পদ্মা সেতুতে গর্বিত বাংলাদেশ লজ্জায় অবনত রাজনীতি


অবশেষে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ২৫ জুন শনিবার বেলা ১১টা ৫৮ মিনিটে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে এর ফলক উন্মোচন করে স্বপ্নের দুয়ার খুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১১ সালে এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়ে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাইকা ও ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) সঙ্গে ঋণচুক্তি সই করা হয়। পরে বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে অর্থায়ন বন্ধ করে। বাকি দাতা সংস্থাগুলোও পিছিয়ে যায়। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে ঘোষণা করেন, বাংলাদেশ নিজেদের সামর্থ্যেই গড়ে তুলবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু।

২০১৪ সালের শেষের দিকে সেতুর মূল কাজ শুরু হয়। এতে একদিকে সক্ষমতার জানান দিল বাংলাদেশ। অন্যদিকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার খুলে গেলো। বুঝিয়ে দিলো আমরা বিজয়ী জাতি, বিশ্বের মধ্যে মাথা উঁচু করে চলবো। এ দেশ আমাদের। আমরা এ দেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলবো। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ সর্ম্পকে এমনই ধারণা। যে দেশ নয়  মাসে স্বাধীনতা লাভ করেছে সে দেশে নিজ অর্থেই এমন অসাধ্য সাধন করতে পেরেছে। কিন্তু এতো সব প্রশংসা আর জয়জয়কার অবস্থায় বাংলাদেশের শির এখন বিশ্বের দরবারে অনেক উঁচুতে, কিন্তু কাদাছোড়াছুড়ি রাজনীতি দেশটাকে নামিয়ে দিয়েছে অনেক নিচে। মনে হচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সফল নির্মাণে সুউঁচ্চে বাংলাদেশ আর লজ্জায় অবনত হয়ে আছে বাংলাদেশের রাজনীতি। পরিস্থিতি এমন যে দেশে পদ্মা সেতুরও পক্ষ বিপক্ষ আছে। 

পদ্মা নিয়ে বিশ্ববাসীর মন্তব্য

স্বপ্নের পদ্মা সেতুর নির্মাণে সফলতায় কে কি বলেছেন এবিষয়টা আগে দেখা যাক। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের মাত্র কয়েকদির আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাজনৈতিক অঙ্গনে চরম অস্থিরতায় থাকায় দেশ পাকিস্তাানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। বাংলাদেশের উন্নয়নযাত্রায় পদ্মা সেতুর উদ্বোধন একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত বলে অভিহিত করেছেন তিনি। শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে লেখা এক বার্তায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এ অভিনন্দন জানান। শুভেচ্ছা বার্তাটি ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশন থেকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছানো হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্র। একই সঙ্গে বার্তাটি ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনেও পৌঁছানো হয়। 

অন্যদিকে  পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছে ভারত। ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই শুভেচ্ছা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পদ্মা সেতু প্রকল্প সফলভাবে শেষ হওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী সিদ্ধান্তও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের সাক্ষ্য দেয়। এ প্রকল্প একাই সামনে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের সিদ্ধান্তকে অবিচলভাবে সমর্থন করে এসেছে ভারত। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে জাপান সরকারের উন্নয়ন সংস্থা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। সংস্থাটির ঢাকা অফিসের প্রধান ইউহো হায়াকাওয়া অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে বাংলাদেশ তার সক্ষমতা দেখিয়েছে। অপরদিকে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ অভিনন্দন জানানো হয়। অভিনন্দন বার্তাটিতে বলা হয়, অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির জন্য টেকসই পরিবহন পরিকাঠামো নির্মাণ করা গুরুত্বপূর্ণ। এতে মানুষের মধ্যে যোগাযোগ ও পণ্য পরিবহন কার্যকরিভাবে করা যায়। পদ্মা সেতু বাংলাদেশে নতুন এবং গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ তৈরি করবে এবং বাণিজ্য ও জীবনমানের উন্নতি করবে। এই সেতু দক্ষিণ এশিয়াতে কানেক্টিভিটি প্রসারে বাংলাদেশের নেতৃত্বের একটি অনন্য উদাহরণ বলেও মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হওয়ায় আনন্দ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়াং টেমবন। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ লাভবান বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।

শনিবার পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। পদ্মা সেতু উদ্বোধন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে মার্সি টেমবন বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী। আমরা এ সেতুর গুরুত্ব স্বীকার করি। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ বিপুল অর্থনৈতিক সুবিধা পাবে।’ মার্সি টেমবল আরও বলেন, এ সেতুর মধ্য দিয়ে চাকরির ক্ষেত্র তৈরি হবে, যাত্রাপথে সময় কমবে, জনগণের আয় বাড়বে। সর্বোপরি বিনিয়োগের বাজার তৈরি হবে এবং জনগণের দারিদ্র্য কমানোর সম্ভাবনা তৈরি হবে। মার্সি টেমবল বলেন, ‘পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হওয়ায় আমরা আনন্দিত। খুশি লাগছে বাংলাদেশ এ সেতুর মধ্য দিয়ে লাভবান হবে। দীর্ঘদিনের সহযোগী হিসেবে আমরা নিবিড়ভাবে বাংলাদেশের পাশে আছি।’

এবার দেখা যাখ দেশে কি প্রতিক্রিয়া

বাংলাদেশে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের বেশ কয়ে কদিন আগে এ নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন হঠাৎই উত্তপ্ত হয়ে উঠে যা চলে বেশ কয়েকটিদন ধরে।অবশ্য এর রেশ এখনো শেষ হয়নি। বিষয়টি শুরু হয় সরকারের একেবারে শীর্ষ পর্যায় থেকে একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। যখন দেশের একাবোরে শীর্ষ পর্যায় থেকে বলা হয় যে, ইউনূসকে (অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশী নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদ) চুবানি দিয়ে পদ্মা সেতুতে তোলা, আর খালেদাকে (সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া) টুস করে নদীতে ফেলা উচিত। আর এনিয়ে দেশে শুরু হয় নানান ধরনের আলোচনা সমালোচনার ঝড়। রাজনৈতিক অঙ্গন বলা চলে ফুসে উঠে।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হত্যার হুমকি’র অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করছে ঢাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডের বিএনপি ও দলটির অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সেই সঙ্গে সড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং বিচ্ছিন্ন ঘটনা এড়াতে সতর্ক অবস্থানে থাকতে হয়েছে বেশ কয়েকদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। দেখা গেছে এমন ধরনের বক্তব্যের বিরুদ্ধে বিএনপি’র পক্ষ থেকে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এটা স্পষ্টই হত্যার হুমকি। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দেশের সিনিয়র নাগরিক সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ভাষায় কথা বলেছেন তা গোটা জাতির জন্য লজ্জাজনক।

দেশবাসী তার কথায় বিস্মিত। ‘পদ্মা সেতুতে নিয়ে খালেদাকে ‘টুস’ করে ফেলে দেয়া উচিত’ এমন বক্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রদল। অন্যদিকে কাউকে সেতু থেকে ‘টুস’ করে ফেলে দেওয়ার নির্দেশ সরকার দিতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন  জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান এক বিবৃতিতে বলেছেন কাউকে পদ্মা সেতু থেকে ‘টুস করে ফেলে দেওয়া’ এবং ‘নদীতে চুবনি দিয়ে ওঠানো’র মতো বক্তব্য দেওয়া কেবল হিংসাত্মকই নয়, ক্ষমতার দম্ভের উগ্র প্রকাশ।

পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন,কাদেরকে শেষ মেষ বলতে হয়েছে পদ্মা সেতুতে নিয়ে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে টুস করে ফেলে দেওয়ার যে কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন সেটার অর্থ খালেদার মৃত্যু কামনা নয়। এপ্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ভালো করেই জানা উচিত বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যদি খালেদা জিয়ার মৃত্যুই কামনা করতেন তাহলে উচ্চ আদালত কর্তৃক একাধিকবার জামিন বাতিল হওয়ার পরেও দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে ঘরে রেখে উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করতেন না।

আর এমন পরিস্থিতি দেখিয়ে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপি যাবে না বলে জানিয়ে দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সংবাদ সম্মেলন করে। যদিও পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপি’র চেয়ারপারস খালেদা জিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে পদ্মাসেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়াকে ছাড়া বিএনপিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানান হয় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ মোট ৭ জনকে। আমন্ত্রণ পাওয়া অন্যরা হলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বিএনপি বলা চলে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বর্জন করে। তবে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রেরপ্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরল্লা চৌধুরী পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গিয়ে বলেছেন,  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে জাতিকে পদ্মা সেতু উপহার দিয়েছেন। জাতি এতে গৌরবান্বিত। প্রধানমন্ত্রী প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছেন, যেমনটা তার বাবা প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছিলেন ৭ মার্চ। অন্যদিকে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্ধোধন প্রসঙ্গে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, কোনো কাজ থাকলে তার বাধা থাকে, বাধা অতিক্রম করে কাজ করায় আনন্দ আছে। আজকে এত কিছুর পরও এই যে পদ্মা সেতু হয়েছে, এ জন্য অহংকার করারও কিছু নেই, দুঃখিত হওয়ারও কিছু নেই। যারা এর সমালোচনা করেছে তারাও ঠিক করেছে, যারা আশান্বিত হয়েছে, তারাও ঠিক আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শেষ কথা এবং বিএনপি’কে ঘায়েলের চেষ্টা অব্যাহত

বাংলাদেশে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে সর্বমহলের অভিনন্দনতো দূরের কথা শুরু হয়ে গেছে কাদাছোড়াছুড়ির মতো অবস্থা, যা এখনো মারাত্মক অবস্থায় রযেছে। একটা গুমোট পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।  রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকমহল মনে করেন বাংলাদেশ পদ্মা সেতু নির্মাণ করে যে কৃতিত্ব দেখিয়েছে তার বিপরীতে রাজনৈতিক অঙ্গনে কাদাছোড়াছুড়ির মহাআয়োজনে তা অনেকটা ম্নান করে দিয়েছে যেনো, দেশটি রাজনৈতিকভাবে বহুধাবিভক্ত। এক্ষেত্রে বিএনপিও কম দায়ী না। তারাও সব সময় রাজনৈতিক দৃঢ়তা ও কৌশল করে চলতে ব্যর্থতা দেখিয়েছে। ফলে এক্ষেত্রে বিরোধী দল বিশেষ করে বিএনপি’কে সহজেই ঘায়েল করার চেষ্টা করা হচ্ছে এই বলে যে দলটি দেশী বিদেশী একটি চক্রের সাথে মিলে পদ্মা সেতুর নির্মাণে বাধা দিয়েছে এবং এ সেতু নির্মাণে বিএনপি’র কোনো তৎপরতাই ছিল না। এবং ক্ষমতাসনীরা এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে যে পদ্মা সেতুর বিরোধীতাকারীও স্বাধীনতা বিরোধীর সমতুল্য। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকমহল মনে করেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়াকে ছাড়া বিএনপিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানান হয় শুধুমাত্র সরকারের মুখ রক্ষার খাতিরে।

আসলে সরকার চায়নি সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপি উপস্থিত হউক। বিএনপি’র এমন বর্জন যেনো চেয়েছে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে, যা দলটি ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেনি। কেনোনা এতে করে সরকার দেশে বিদেশে বলতে মোক্ষম সুযোগ পেয়ে গেলো বিএনপি পদ্মা সেতু চায়নি। তাই বিএনপি পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও যোগ দেয়নি। অবস্থা এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে মনে করা হচ্ছে দেশে পদ্মা সেতুর নির্মাণে একটি বড়ো বিরোধীতাকারী শক্তি সক্রিয় ছিল এবং এখনো আছে, যা দেশের স্বাধীনতা বিরোধীতাকারীদের মতোই। এমনকি শেষতক দেখা যাচ্ছে পদ্মা সেতু নিয়ে নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করতে কমিশন গঠনের নির্দেশও মিলেছে হাইকোর্টের। তাই এমন বিষয়টি আসলে কোথায় গিয়ে ঠেকে তা ভবিষ্যত বলে দেবে। 


শেয়ার করুন