২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৭:৩৩:৩৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :


বিএনপির টেক ব্যাক কর্মসূচি কেন্দ্রীয় নেতারা চাপিয়ে দিলের তৃণমূলে
বিএনপির তৃণমূল আন্দোলনের সুফল কার?
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩১-০৮-২০২২
বিএনপির তৃণমূল আন্দোলনের সুফল কার?


জ্বালানি তেল, পরিবহন ভাড়াসহ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে দেশব্যাপী ধারাবাহিক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে এখন বিএনপি। জনসম্পৃক্ত এসব ইস্যুতে ২২ আগস্ট থেকে সারা দেশের উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সভা-সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে দিয়েছে দলটি। কিন্তু বিএনপির এ কর্মসূচি নিয়ে ইতিমধ্যে খোদ বিএনপির তৃণমূলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

কেন্দ্রেরও অনেকেই নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, এমন কর্মসূচি হঠাৎ করে দেয়ার কী অর্থ হতে পারে। যেখানে বিএনপির শীর্ষনেতারা বড় ধরনের কর্মসূচি দিতেই ভয় পাচ্ছে, সেখানে শাসক আওয়ামী লীগের সামনে কেন তৃণমূলের নেতাদের ঠেলে দিয়ে পুলিশ ও হামলা-মামলার সামনে দাঁড় করানো হচ্ছে। গত দেড়যুগের বেশি সময় ধরে বিএনপির তৃণমূলের কর্মীরা মূলত বাড়িঘর ছাড়া। যারা রয়েছেন অনেক কায়দা করে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে মানিয়ে ব্যবসা, সংসার নিয়ে টিকে রয়েছেন। 

যেখানে সেন্ট্রালেই বড় কোনো কর্মসূচি নেই। শীর্ষনেতারা ভয় পাচ্ছেন মাঠে নামতে। সেখানে তৃণমূলকে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ক্যাডারদের সামনে ঠেলে নিশ্চিহ্ন ও মার্কিং করে দেয়ার কী যুক্তি হতে পারে। এমন কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে প্রায় সবস্থানে নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা হচ্ছে, মার খাচ্ছে। উল্টা মামলাও হচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। বিএনপির মামলা থানা পুলিশ গ্রহণ করে না। মার দিয়ে উল্টা আওয়ামী লীগ মামলা দিচ্ছে। যেখানে শত শতদের নাম দিয়ে অজ্ঞাত দেখানো হয় হাজার হাজার। ফলে যেসব কর্মীর ওপর দীর্ঘ প্রায় ১৫-১৬ বছর ধরে ৩৫ লাখের বেশি মামলা ঝুলছে। সে সংখ্যা এ তৃণমূলের কর্মসূচিতে ভারী হচ্ছে। সামনেই নির্বাচন। এমনি সময়ে এমন মামলার শিকার হওয়া নেতাকর্মীরা কীভাবে বের হবেন যখন দলের প্রয়োজনে মাঠে থাকতে হবে ঠিক তখন? 

পুলিশ তো তার কাজ করবে। মামলা হলে তারা আটক করার চেষ্টা করবে। অর্থ গ্রহণ করবে। নানা হয়রানি। তাহলে বিএনপি এখান থেকে কী উপকার পাচ্ছে। নাকি অন্য কোনো উদ্দেশ্য যেটা তৃণমূলে বিএনপিকে পরিকল্পিতভাবে দুর্বল করে দেয়া যায়?  

বিএনপির শীর্ষনেতাদের দৌড় ইতিমধ্যে দেখেছে সাধারণ মানুষ। বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয় (গুলশান), না হয় পল্টন অফিস বা জাতীয় প্রেসক্লাব বা রিপোর্টার্স ইউনিটি। সবস্থানেই এসি রুমের ব্যবস্থা। এর বাইরে কর্মসূচি বলতে বিএনপির কী। 

অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘ দেড়যুগেরও বেশি সময় ধরে মামলা হামলার শিকার হওয়া নেতাদের বেশিরভাগেরই কোনো খবর নেয়া হয়নি। মামলায় আইনি সহায়তাও পাননি তারা। কোনো মতে নিজেদের কাজ নিজেরা করে এগিয়েছেন। সে সকল নেতাকর্মীরা আবারো সেই পুলিশের হাতে ধরা পড়বেন। মামলা খাবেন? 

কার্যত বিএনপি নীরব 

দেশে ইস্যুর অভাব রয়েছে? যে দাবি নিয়ে এখন তৃণমূলে, সে দাবিতে বাম দল হরতাল ডাকলেও বিএনপি অজ্ঞাত কারণে নীরব। কার সার্থে বিএনপির ওই নীরবতা। দেশের সাধারণ মানুষ ভয়ানক কষ্টে। বিএনপি যদি তাদের জন্য আন্দোলন না করতে পারে, তাহলে বিএনপি নেতাদের আন্দোলনটা কী। ক্ষমতায় যাওয়ার? শটকাট পথে কী ক্ষমতায় যাওয়া যায়? দেশে শাসক আওয়ামী লীগ যতটুকু টালমাটাল বা চাপে। সেটা কতিপয় এনজিও কর্মী ও মানবাধিকার কর্মীদের আন্তর্জাতিক মহলে অভিযোগের প্রেক্ষিতে। বিএনপির এখানে কী ভূমিকা? 

বিএনপি চলন-বলনে ভাবছে আওয়ামী লীগের পতন হলেই বিএনপি ক্ষমতায়। এতোই সহজ। পলিটিক্যাল দল আওয়ামী লীগ। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তারা ক্ষমতা কন্টিনিউ করতে চেষ্টা করে যাবে। বিএনপির মধ্যে সে বুঝের লেশমাত্রও নেই। অহেতুক তৃণমূলের নিরীহ কর্মীদের একটা হয়রানির মধ্যে ঠেলে দেয়া হয়েছে। যাতে এখন মার্কিং করে তৃণমূলে বিএনপির উত্থান এখন আওয়ামী লীগ যেন সুন্দরভাবে দমন করে রাখতে পারে। 

করোনার পর থেকে সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্টের আর সীমা নেই। বিএনপি জনগণের অধিকারের জন্য কথা বলে। ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে চায়। মানুষকে কষ্টে দেখতে চায় না। কিন্তু আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতারা যে প্রশ্নগুলো করেন- যে এসব কারণ যথার্থ কিন্তু বিএনপি এগুলোর জন্য কী কর্মসূচি দিয়েছে? কী দায়িত্ব পালন করেছে? আওয়ামী লীগের কথাই যথার্থ, যে বিএনপি অপেক্ষায় বসে আছে। বিদেশিদের কাছে ধরনা দিচ্ছে বা চান্সের জন্য বসে রয়েছে। কখন বিদেশিদের হাত ধরে তারা ক্ষমতা পাবে। এসব প্রশ্নের উত্তর বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের নেই। 

আন্দোলন মানেই জ্বালাও পোড়াও বা মানুষের কষ্ট এমনটা নয়। শান্তিপূর্ণ অনেক কর্মসূচি রয়েছে। কিন্তু পল্টনে গোটা পাঁচেক সম্মেলন বা প্রেসক্লাব, রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আলোচনা সভায় জ্বালাময়ী বক্তব্য দিয়েই দায়িত্ব শেষ করে ফেলা যায় না। হরতাল ধর্মঘট বা গণতান্ত্রিকভাবে কর্মসূচি সেন্ট্রাল থেকে দিয়ে দেশব্যাপী পালনের নির্দেশনা দিতে যাদের ভয়- তারা হঠাৎ তৃণমূলে অনেকটা পুলিশের মামলা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের ভয়ে চুপ করে থাকাদের টেনে বের করে আগুনের মুখে দাঁড় করিয়ে দেয়ার লাভ বিএনপির নয়। সেটা আওয়ামী লীগেরই।  

বিএনপির তৃণমূলের কর্মসূচি 

বিএনপির দেয়া ওই কর্মসূচিতে মাঝারি ধরনের নেতারা মাঠে নামলেও শীর্ষ অনেক নেতাই আসলে এ কর্মসূচি সেন্ট্রালে বসে তদারকি করছেন। মাঝারি সারির কিছু নেতাকে দায়িত্ব দিয়ে তৃণমূলে এ কর্মসূচি কঠোরভাবে পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তৃণমূলে এসব কর্মসূচিতে গাফিলতিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারিও দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতর থেকে ৮২টি সাংগঠনিক জেলায় চিঠি দেয়া হয়েছে। এতে সব পর্যায়ের কর্মসূচিতে স্ব স্ব জেলার কেন্দ্রীয় নেতা, সাবেক সংসদ-সদস্য ও গত জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া নেতাদের উপস্থিত থাকাসহ ৬টি নির্দেশনা রয়েছে। এছাড়াও মৌখিকভাবে জেলা শাখার নেতাদের জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী ধারাবাহিক কর্মসূচি পালনে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট নেতাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

তৃণমূলে কঠোর হুঁশিয়ারি 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে কর্মসূচি বাস্তবায়নে জেলা শাখার নেতাদের কাছে দেয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘প্রতিটি উপজেলা/থানা/পৌর কর্মসূচির তারিখ নির্ধারণ করবেন জেলার নেতারা। ২২ আগস্ট থেকে প্রতিদিন প্রতিটি জেলা/মহানগরের কমপক্ষে একটি উপজেলা/থানায় কর্মসূচি পালিত হবে। সেসব কর্মসূচিতে জেলার নেতারা এবং ওইসব জেলার অধিবাসী কেন্দ্রীয় নেতারা ও সাবেক সংসদ-সদস্য উপস্থিত থাকবেন। পরের নির্দেশনায় বলা হয়, প্রতিটি ইউনিয়ন/ওয়ার্ড পর্যায়ের কর্মসূচির তারিখ নির্ধারণ করবেন উপজেলা/থানা/পৌর নেতারা। ২২ আগস্ট থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে একটি ইউনিয়ন/ওয়ার্ডে কর্মসূচি পালিত হবে। সেসব কর্মসূচিতে উপজেলা/থানা/পৌর নেতারা উপস্থিত থাকবেন। আরো বলা হয়, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের স্ব স্ব ইউনিটের নেতারা কর্মসূচি সফল করতে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করবেন। এ বিষয়ে স্ব স্ব সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সার্বিক সমন্বয় করবেন এবং ইউনিটগুলোকে নির্দেশ প্রদান করবেন। এছাড়া বিভাগীয় সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকরা ঘোষিত কর্মসূচি সফল করতে সার্বিকভাবে সমন্বয় করবেন। প্রতিটি ইউনিটের কর্মসূচি পালনের তারিখ নির্ধারণ করে কেন্দ্রীয় দফতরে প্রেরণ করবেন।’ কর্মসূচি সফল করার এবং আন্দোলন বেগবান করার প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বানও জানানো হয় ওই চিঠিতে।

টেক ব্যাক কর্মসূচি 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, সরকার পতন আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ইতোমধ্যে ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন। ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ আন্দোলন শুধু বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার আন্দোলন নয়, এই আন্দোলন মাতৃভূমির স্বাধীনতা রক্ষার আন্দোলন, জনগণের বাংলাদেশ জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার আন্দোলন। গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, বাক ও ব্যক্তিস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। জ্বালানি তেলসহ দ্রব্যমূল্য লাগামহীন বৃদ্ধির কারণে মানুষ আজ দিশেহারা। বেঁচে থাকার প্রয়োজনে মানুষ জেগে উঠেছে। এখন সবাই চায় এই সরকারের পতন। বিএনপি আন্দোলনে আছে। ২২ আগস্ট থেকে তৃণমূল পর্যায়ে ধারাবাহিক কর্মসূচি শুরু হবে।

উল্লেখ্য, জ্বালানি খাতের অব্যবস্থাপনা ও বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে গত ৩১ জুলাই ভোলায় বিএনপির বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ছাত্রদল নেতা নূরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুর রহিম। এর প্রতিবাদে সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিএনপি। সর্বশেষ ১১ আগস্ট রাজধানী ঢাকায় বড় জনসমাবেশ করে।

কর্মসূচি বাস্তবায়নে হামলা-মামলার মুখে বিএনপি 

সোনাইমুড়ী

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বিএনপি-আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব এ এম এম মাহবুব উদ্দিনসহ ৪৯৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। গত ২৭ আগস্ট দিবাগত রাতে সোনাইমুড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম বাদী হয়ে ওই মামলা করেন।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ বলেন, মামলায় মাহবুব উদ্দিনসহ ৯৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বাকি ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। 

মামলার অপর আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনোয়ারুল হক ও পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক মোতাহের হোসেন ওরফে মানিক। 

ওসি হারুন অর রশিদ জানান, এ মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধা দেয়া, ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি এবং সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় দু’জন বিএনপির কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশিদ জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় আওয়ামী লীগের লোকজন আহত হওয়ায় দলটির পক্ষ থেকে আরেকটি মামলা করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে। তাদের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।

টাঙ্গাইলের কালিহাতী 

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে রোববার বিএনপির সমাবেশে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিএনপির ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ হামলার জন্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কর্মীদের দায়ী করেছে বিএনপি। দুপুরে উপজেলা সদর ও বল্লা সড়কের চারান এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।

যশোরে তরিকুলের বাড়িতে হামলা 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য প্রয়াত তরিকুল ইসলামের ঘোপ এলাকার বাড়িতে আওয়ামী লীগের কর্মীরা আবারো হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে দলটি। এছাড়া তার ছেলে ও বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলামের গাড়ি এবং দলটির জেলা কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল ছুড়েছেন এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে পাল্টা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। রোববার বেলা তিনটা থেকে বিকেল পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, পুলিশ সদস্যের সামনে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের লোকজন ওই হামলা করেন। 

মাগুরায় মামলা 

মাগুরায় বিএনপির সমাবেশ ঘিরে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় দলটির ৩৬ জন নেতা কর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেছেন ছাত্রলীগের এক নেতা। আসামিদের মধ্যে জেলা ছাত্রদল ও যুবদলের পাশাপাশি অঙ্গসংগঠনের শীর্ষনেতারা আছেন। 

গত রোববার মাগুরা সদর থানায় আদর্শ কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ মোল্লা (২৩) বাদী হয়ে বোমা হামলা, ভাঙচুর ও হামলার অভিযোগে এই মামলা করেন। আসামিদের মধ্যে ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, শোকের মাস উপলক্ষে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ছাত্রলীগের একটি মিছিল দলীয় কার্যালয় থেকে ভায়নার মোড় হয়ে ইটখোলার দিকে যাচ্ছিল। মিছিলটি সদর উপজেলা পরিষদের সামনে পৌঁছলে উল্টো দিক থেকে আসা বিএনপির মিছিল থেকে লাঠি, রামদা, চায়নিজ কুড়াল, লোহার রডসহ অন্যান্য দেশি অস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণের পাশাপাশি তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন দেন বিএনপির নেতা কর্মীরা। হামলায় ছাত্রলীগের তিন কর্মী আহত হয়েছেন।

অন্যান্য স্থানে মামলা-হামলা  

এছাড়াও দ্রব্যমূল্যের মুন্সীগঞ্জ, নোয়াখালী, নরসিংদী, নেত্রকোনা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হামলায় ৫০ জন আহত হয়েছে। এছাড়া শ্রীনগর সদর অভিমুখে বিএনপির মিছিল পুলিশি বাধার মুখে পড়ে এবং ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ক্যাডাররা হামলা চালিয়ে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়। চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। নোয়াখালীর চাটখিলে বিএনপির প্রতিবাদ সভামঞ্চ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ক্যাডাররা ভাঙচুর করেছে। তাদের হামলায় বিএনপির ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।

এছাড়া নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় আওয়ামী লীগের হামলায় বিএনপির ২৮ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। নরসিংদীর রায়পুরায় একইস্থানে সভা করাকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। এমন খবর আসছে প্রতিনিয়ত এবং প্রায় প্রতিটা স্থান থেকেই। 

শেয়ার করুন