২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৯:০৩:৪৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :


একতরফা নির্বাচনে জামায়াতকে চায় আ.লীগ
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-০৬-২০২৩
একতরফা নির্বাচনে জামায়াতকে চায় আ.লীগ


বিএনপি’কে বাদ দিয়েই একতরফাভাবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে জামায়াতকে সাথী হিসাবে পেতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এর পাশাপাশি পরিকল্পনায় রওশনপন্থী জাতীয় পার্টিকে সম্পৃক্ত করতে চায় ক্ষমতাসীনরা। এ ধরনের পরিকল্পনা সফল হলে প্রয়োজনে জামায়াত ও জাতীয় পার্টি মিলে আগামী জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদায় তাদের উভয়কে অলংকিত করতেও প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। খবর নির্ভরযোগ্য সূত্রের। 

রাজনৈতিক অঙ্গনে হঠাৎ জামায়াতে ইসলামী নিয়ে আলোচনার ঝড় বইছে। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু কেনো কি ভাবে জামায়াতে ইসলামী ঠিক এমন সময়ে মাঠে নেমেছে। যে জামায়াতে ইসলামীকে একশ’ হাত দূরে রেখে বিএনপি নতুন করে একটি শক্তিশালী অহিংস আন্দোলনে চূড়ান্ত পর্যায়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ঠিক তখনই স্বাধীনতা বিরোধী বলে পরিচিত দলটি মাঠে নেমেছে। কিন্তু তারা কেনো কিভাবে এতো সহজে একটি সমাবেশ পর্যন্ত করে ফেলে তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে বড়ো ধরনের প্রশ্ন আর রহস্যের সৃষ্টি করেছে। 

রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে গত ১০ জুন শনিবার সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী। এতে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত হন। এমনকি সমাবেশস্থল ছাপিয়ে তা বহুদূর পর্যন্ত চলে যায় পুলিশের কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই। তার উপরে  বলা হয় এই সমাবেশ করা হয় পুলিশে মৌখিক অনুমতি নেয়ার ভিত্তিতে। সমাবেশ ভালোভাবে শেষ করতে পারায় উপস্থিত আইন শৃংখলা বাহিনীকে তারা ধন্যবাদ জানায়। তবে জামায়াতের সমাবেশের ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা ও বিচার বিশ্লেষণ।

সমাবেশের পর কে কি বললেন..

রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশ নিয়ে সবচেয়ে রহস্যময় বক্তব্য দিয়েছে সরকারের একেবারে শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, চূড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত জামায়াতকে দোষী বলা যাবে না। বিচার করার পর যতক্ষণ পর্যন্ত রায় না হয়, দোষী সাব্যস্ত না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত বলতে পারবেন না, জামায়াত নিষিদ্ধ। দেশব্যাপী আবারও ‘সন্ত্রাসী কর্মকান্ড’ ও ‘অগ্নি-সন্ত্রাস’ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে জামায়াতে ইসলামীকে বিরোধী দল বিএনপি মাঠে নামিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘যারা রক্তে রক্তে বাংলাদেশকে রক্তের দরিয়া বানাতে চায়, সেই অপশক্তি জামায়াত মাঠে নেমেছে। জামায়াতকে মাঠে নামিয়েছে তাদের বিশ্বস্থ ঠিকানা, তাদের আসল মুরব্বি বিএনপি।’ জামায়াতে ইসলামীকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। জামায়াতের বিষয়ে আওয়ামী লীগের নীতির কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। অন্যদিকে জামায়াত যেহেতু নিষিদ্ধ দল নয়, তাই তাদের সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

কি বললেন এক সময়ের মিত্র বিএনপি

বিএনপি’র বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সাথে এনিয়ে আলাপকালে দেখা গেছে তারা বিষয়টির ব্যাপারে তেমন আগ্রহী না বলে জানান। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বিএনপি কেন জামায়াকে মাঠে নামাবে? তারা তো একটা দল। সরকার তাদের পারমিশন দিছে, সেই মোতাবেক তারা সভা করেছে। আমরা অনুমতি দিলাম কেমনে? দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘আমরা শুনেছি, জামায়াতে ইসলাম নিষিদ্ধ। আর সারাক্ষণ যিনি অকথ্য কথা বলে বেড়ান, হাসান মাহমুদ (তথ্য মন্ত্রী) ঘুমের মধ্যেও বলেন। সেই অবস্থার মধ্যে জামায়াতের সঙ্গে এমন কি হলো, এমন গোপন চুক্তি বা ষড়যন্ত্র হলো যে, জামায়াতকে এতো নির্বিঘ্নে একটা কর্মসূচি পালন করতে দেয়া হলো।”

বিএনপি’র নতুন মিত্ররা কি বললেন

জামায়াতে ইসলামীর ‘হঠাৎ’ সমাবেশের অনুমতি পাওয়া এবং বিএনপির ওপরে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদকের দায় চাপানোর বিষয়টিকে ‘সরকারের রাজনৈতিক কূটকৌশল’ হিসেবে দেখছে বিএনপি’র এখনকার সময়ে শক্ত মিত্র গণতন্ত্র মঞ্চ। উদার গণতান্ত্রিক ও এর পাশাপাশি বাম প্রগতিশীলদের নিয়ে গড়া গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এই প্রসঙ্গে বলেন, ১০ বছর তাদেরকে (জামায়াত) সমাবেশ করার অনুমোদনে দেয়নি। আবার হঠাৎ করে এখন অনুমোদন দিয়ে আবার দায় চাপানো হচ্ছে বিএনপির উপরে। এটাই হলো সরকারের রাজনৈতিক কূটকৌশল.. এটা সর্বশেষ আরেকটা নজির। সাইফুল হক বলেন, কালকে (শনিবার) জামায়াতে ইসলামী যে সমাবেশ করেছে এটা সরকারের অনুমোদন নিয়েই। সরকারি দলের সাধারণ সম্পাদক (ওবায়দুল কাদের) গতকাল বললেন, বিএনপি উস্কানি দিয়ে, বিএনপির মদদে জামায়াতে ইসলামী এই সমাবেশ করেছে। ‘তুমি তাদেরকে অনুমোদন দিচ্ছো, ১০ বছর পরে তাদেরকে অনুমোদন দিলে আর তুমি বলছো যে, বিএনপি উস্কানি দিয়ে তাদেরকে রাজপথে নামিয়েছে। সরকার যে অসংলগ্ন আচরণ করছে, তাদের নানা বিষয় যে নার্ভাসনেস- এগুলো হচ্ছে তার একটা বর্হিপ্রকাশ।’ অন্যদিকে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান এই অনুমতি প্রদানকে ‘বিষ্ময়কর বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, জামায়াতের ব্যাপারটা কিন্তু বিস্ময়কর। দেখেন সরকার কতখানি দ্বিধান্বিত, দ্বিধাগ্রস্থ, বুঝতে পারছে না-কি করবে? কারণ জামায়াতের লোকজন যখন পারমিশন চাইতে গেছে তাদেরকে গ্রেফতার করেছে, আবার দেড় ঘন্টার মধ্যে ছেড়েও দিয়েছে। পরে পারমিশনও দিয়েছে। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘সভা-সমাবেশের অধিকার সকলের। যারা বাংলাদেশে রাজনীতি করবে, রাজনৈতিক দল হিসেবে যাদের অস্তিত্ব আছে তারা সভা-সমাবেশ করবে। করতে না দেয়াটা তো একটি সরকারের থেকে তাদের যে অগণতান্ত্রিক আচরণ সেটা তো আছেই।’

মতামত বিশ্লেষণ

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকমহল মনে করেন ক্ষমতাসীন সরকারের সাথে বিভিন্নভাবে জামায়াতে ইসলামী দলটির একটি বড়ো অংশের নেতাকর্মীদের সাথে গভীর সর্ম্পক গড়ে উঠেছে বিভিন্নভাবে। কখনোবা প্রশাসনিক প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে এই সম্পর্ক গড়ে তুলেছে যদিও মাঝে মাঝে ধড়পাকড় আর নানান ধরনের তৎপরতা রয়েছে। তবে জামায়াতে ইসলামীর একটি বড়ো অংশ এখন সরকারের সাথে আছে বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন। বিএনপিকে এর সাথে জড়ানো হচ্ছে সরকারের পুরাতন কৌশল। দেশে বিদেশে এই সময়ে ক্ষমতাসীনমহল দেখাতে চায় যে বিএনপি জামায়াতে ইসলামীকে মাঠে নামিয়েছে। যদিও এখন এই সময়ে কোনোভাবেই তা বিশ্বাস করছে না। এবং জনগণের একটি বড়ো অংশই এখন বিশ্বাস করে নতুন কোনো গেমের অংশ একটি। 

ক্ষমতাসীনদের আসল উদ্দেশ্য

রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে গত ১০ জুন শনিবারে জামায়াতে ইসলামীর অনুষ্ঠিত সমাবেশ নিয়ে আসল উদ্দেশ্য বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্ষমতাসীনরা জামায়াতে ইসলামীকে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে মূলত আমেরিকার ভিসানীতিকে উসিলা করে। কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে ভিসানীতির আগেই আওয়ামী লীগ-জামায়াতে ইসলামীর সর্ম্পক গভীর হয়ে গেছে। উপরে উপরে ধড়পাকড় চললেও তলে তলে সম্পর্ক মধুরই হয়েছে দুই দলের মধ্যে। সম্প্রতি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ঠিকই জামায়াত অংশ নিয়েছে। আর এমন চিত্রই ফুটে উঠেছে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে গত শনিবারে জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশের পর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের অত্যন্ত কৌশলী মন্তব্যেও। তবে এ সম্পর্কের অন্যতম কারণ হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্লেসিং। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মার্কিন ভিসানীতির অনেক আগেই জামায়াতে ইসলামীর প্রতি এই রাষ্ট্রটির সহানুভতি তৈরি হয়েছে। এর প্রতিফলন দেখা গেছে, এবছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টে। এতে  আমেরিকার জামায়াত প্রীতি ও বান্ধবনীতি প্রমাণ মিলেছে যখন তারা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) সে রিপোর্টে জামায়াতে ইসলামের সাংবিধানিক রাজনৈতিক অধিকারের কথা বলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতিবেদনে ৭১-এর গণহত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে বলা হয়েছে; ’আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হয়রানির কারণে বাংলাদেশের বৃহত্তম মুসলিম রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও সদস্যবৃন্দ তাদের সংবিধান প্রদত্ত বাকস্বাধীনতা ও সমাবেশের স্বাধীনতা ভোগ করতে পারছেন না।’ এবং ’সরকার কর্তৃক রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন বাতিলের কারণে জামায়াত প্রার্থীরা দলের নামে নির্বাচন করতে পারছেন না- ইত্যাদি।’ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সাম্প্রতিক এমন প্রতিবেদনের কঠোর সমালোচনা ও নিন্দা করেছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।  এনিয়ে সেসময়ে ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য গণমাধ্যমে এক বিবৃতিতে গণহত্যার দোসর জামায়াত পুনর্বাসনের মার্কিন প্রস্তাবের প্রস্তাবের নিন্দা জানিয়েছিলেন। জামায়াত পুনর্বাসনের মার্কিন প্রস্তাবের নিন্দা জানিয়েছিলেন বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামালও। ধারণা করা হয় যে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতের ইসলামীর প্রতি মার্কিনীদের এমন সহানুভতিকে কৌশলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি’কে ঘায়েলের কৌশল হিসাবে ব্যবহার করতে চায়। জানা গেছে, বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের একটি শক্তিশালি প্রতিনিধি দল এর আগে প্রতিবেশি দেশের কাছে গিয়েও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি যেনো কোনোভাবেই অংশ নিতে না পারে সেব্যাপারে তাদের প্রভাব খাটাতে অনুরোধ করেন। এর পাশাপাশি ক্ষমতাসীন সরকারের ওই শক্তিশালি প্রতিনিধি দলটি বিএনপি’র ব্যাপারে প্রতিবেশী দেশটিকে নেতিবাচক ধারণাও দেয়। বলা হয়, বিএনপি বাংলাদেশের মৌলবাদি, স্বাধীনতা ও ভারত বিরোধী দল নিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায়। তাই প্রতিবেশী দেশটিকে এব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখতে পরামর্শ দেয়। একটি সূত্র জানায়, সরকার গোড়া থেকেই চায় না বিএনপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিক। আর একারণে মার্কিনীদের জামায়াত প্রীতিকে কাজে লাগিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ধারণা করা হচ্ছে, মার্কিনীদের জামায়াত প্রীতিকে কাজে লাগিয়ে বিএনপি ছাড়াই তাদেরকে নিয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে চায় ক্ষমতাসীনরা। এতে করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের ইচ্ছা বিএনপি’কে বাইরে রেখেই নির্বাচন করার টার্গেট পূর্ণ করা যাবে। আর একাজটি সফলভাবে সম্পন্ন করতে জামায়াতকে মাঠে নামিয়ে মার্কিন নয়া ভিসানীতির দোহাই দিচ্ছে সরকার। বলা হচ্ছে, যে নয়া মার্কিন ভিসানীতির কারণে সরকার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে গত শনিবারে জামায়াতে ইসলামীর সমাবশেটি করতে দিয়েছে। এমনও শোনা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগ-জামায়াত সমঝোতা হয়ে গেছে মার্কিনীদেরই বিশেষ সহায়তায়। 

সাথে আছে রওশনপন্থী জাতীয় পার্টি

এদিকে বিএনপি’কে দূরে রেখে এধরনের একতরফা নির্বাচনের ব্যাপারে রাজনৈতিক মাঠে শক্ত অবস্থান গড়তে আপদকালীন সময়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের স্ত্রী বেগম রওশন এরশাদকে সঙ্গে নিতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ মহল। কারণ রওশন এরশাদ বিগত ২০১৪ আর ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার বিশেষভাবে সহায়তা করেছেন অনেক ঝুঁকি নিয়েও। একারণে রওশন এরশাদকে আওয়ামী লীগের খোদ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুবই আস্থাভাজন বিশ্বস্থ বলে মনে করেন।  জানা গেছে, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলের উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরকে কোনোভাবেই কখনোই আস্থায় নেয়নি এবং এখনো নিচ্ছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টিতে জিএম কাদেরের ভূমিকা কমাতে বিভিন্নভাবে চেষ্টা কৌশল করে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আর এজন্যই মাঝে মাঝে সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের স্ত্রী বেগম রওশন এরশাদ আলোচনা চলে আসে। তবে জামায়াতের পাশাপাশি রওশন এরশাদকে নিয়েই আওয়ামী লীগের পরিকল্পনা এখন চূড়ান্ত রূপ নিতে যাচ্ছে বলেই বলেই একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়। 

শেষ কথা..

কোনোভাবেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি’কে ক্ষমতায় বসতে বা রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রভাব বিস্তারে সুযোগ দিতে চায় না। তারা চায় বিএনপি’র অংশগ্রহণ ছাড়াই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ইতোমধ্যে মাঠে একটি বড়ো ইসলামী দল সরকারের সাথে আছে বলে শোনা যাচ্ছে। যদিও এনিয়ে নানান ধরনের বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, মাঠে বর্তমানে সক্রিয় এই ইসলামী দলটির পেছনে রয়েছে প্রতিবেশী একটি দেশের সক্রিয় সহযোগিতা ও সমর্থন। এটিকে আবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ খুব একটা পছন্দ করে না। সেদিকে থেকে এতোদিন যাদেরকে স্বাধীনতা বিরোধী বলে মনে অভিহিত করতো সেই জামায়াতে ইসলামীকে তারা সঙ্গী হিসাবে বাছাই করেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনে করে জামায়াত ইসলামীকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আসলে একদিকে মার্কিনীদের মন জয় করা যাবে। অন্যদিকে বিএনপি’কে রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করা যাবে। আর একারণে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত একতরফা নির্বাচনে ব্যাপারেই অনড়। সরকারের খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রী এমপি’দের বক্তব্যেই তা ফুটে উঠছে। 

শেয়ার করুন