২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৭:৫৭:৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :


যুক্তরাষ্ট্রকে দিল্লির বার্তা নিয়ে ধোয়াশা
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০৮-২০২৩
যুক্তরাষ্ট্রকে দিল্লির বার্তা নিয়ে ধোয়াশা


যুক্তরাষ্ট্রকে দিল্লির বার্তা নিয়ে প্রকাশিত একটি সংবাদে রাজনৈতিক অঙ্গণে চলছে আলোচনার ঝড়। একইি সাথে একটি স্বাধীন স্বার্বভৌম দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে এই ধরনের কূটনৈতিক তৎপরতা খবরের সত্যতা নিয়ে সন্দেহ- অবিশ্বাস দেখা দিয়েছে। এনিয়ে বাংলাদেশের সচেতন মহলের পাশাপাশি এমনকি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি’ও মধ্যে ধোয়াশায় সৃষ্টি হয়েছে।  ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি’র বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার কাছে কথা বলে এমন সন্দেহ ও তাদের মধ্যে ধোয়াশার তথ্য মিলেছে। যদিও ক্ষমতাসীন ও তাদের সাথে সম্পৃক্তরা এমন খবরে বেশ পুলকিত বোধ করছে।

খবরে কি আছে?

ভারতের একটি প্রভাবশালী দৈনিকে খবর বেড়িয়েছে যে তারা জানতে পেরেছে  বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নয়াদিল্লির বার্তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রকে। প্রকাশিত খবরে বলা হয়, ওই বার্তায় বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন শেখ হাসিনার সরকার দুর্বল হলে তা ভারত বা যুক্তরাষ্ট্র কারও জন্যই সুখকর হবে না বলে মনে করছে নয়াদিল্লি। খবরে দাবি করা হয় সম্প্রতি একাধিক স্তরের বৈঠকে মার্কিন প্রশাসনকে ভারতের পক্ষ থেকে এমন বার্তাই দেওয়া হয়েছে বলে দেশটির কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে জানিয়েছে সে পত্রিকাটি। এমনকি খবরে এমনটাই দাবি করা হয় যে, বাংলাদেশে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বাইডেন প্রশাসনের নানা পদক্ষেপে ভারত যে খুশি নয়, সেটিও তাদের জানানো হয়েছে বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

কি বলেছে বিএনপি’র নেতা

এমন খবরের রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়াতে বিএনপি মহাসচিব বড়োই দু:খ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলে ফেলেছেন যে, ভারতের পদক্ষেপ হবে দুর্ভাগ্যজনক। প্রতিবেশী ভারত সরকার বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক আকাঙ্খাকে মর্যাদা দেবে-এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা বাংলাদেশের মানুষের আস্থা ও শক্তির ওপর আস্থা রাখি। ভারত দেখবে বাংলাদেশের মানুষ কী চায়? বাংলাদেশের মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যদি তারা (ভারত) কোনো পদক্ষেপ নেয়, সেটি হবে অত্যন্ত দুঃখজনক। এর পাশাপাশি নিরপেক্ষ নির্বাচনে পূর্ণ সমর্থন করবে ভারত- এমনটাও আশা  করে বিএনপি’র এই নেতা। অতি সম্প্রতি তিনি বিএনপি’র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে আগের অবস্থান থেকে একটু দৃঢ়তা দেখিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমরা এখনো রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হইনি। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করি। তাদের নিয়েই আমরা আছি। আজ দেশের মানুষ নির্বাচন চায়। তার মুক্তি চায় এবং দুবেলা খেয়ে বাঁচতে চায়। মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, সেই বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে এ ধরনের কথাবার্তা হচ্ছে। কিন্তু এ বিষয়ে আমেরিকা ও ভারতের কেউ স্বীকার করেনি।

আওয়ামী লীগের সর্তক প্রতিক্রিয়া

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বেশ সর্তকতার পরিচয় দিয়েছে এমন খবরের প্রতিক্রিয়ায়। তিনি বলেছেন, বিদেশিদের দিকে তাকিয়ে আছে বিএনপি। তারা মনে করছে, বিদেশিরা এসে তাদের ক্ষমতায় বসাবে। তারা (বিএনপি) বলে আওয়ামী লীগকে নাকি ভারত ক্ষমতায় বসাবে। আমরা বলতে চাই-ভারত নয়, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসাবে দেশের জনগণ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ- এমন কোনো মন্তব্য ভারত থেকে পাইনি। আমাদের ক্ষমতায় বসাবে জনগণ, বরং বিএনপি তাকিয়ে আছে বিদেশিদের দিকে। এর পাশাপাশি তিনি আরো বলেন, ভারত যদি আমেরিকাকে কিছু বলে, তা তাদের স্বার্থে বলেছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী যা বললেন

নয়াদিল্লি শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে বার্তা দেওয়ার খবর ঘিরে আলোচনার মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ভারত যদি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য কিছু বলে থাকে, নিশ্চয় তা অত্র এলাকার উপকারে আসবে। তিনি এমন খবরটি সত্য কি-না তা না তুলে ধরে বলেন, ভারত সরকার অত্যন্ত পরিপক্ব সরকার বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, তারা একটা শক্তিশালী গণতান্ত্রিক দেশ। তারা যেটা ভালো মনে করেছে, সেটাই করেছে। এটা সম্পর্কে কোনো কিছু বলার নেই। তবে ভারতে প্রকাশিত দৈনিকটির খবর সঠিক কি-না সেব্যাপারে তিনি কিছু জানাননি। কিন্তু তার দেয়া বক্তব্যে মনে হয় পত্রিকার খবরটি সত্য মনে করেই তার অভিমত দিচ্ছেন।

দিল্লির বার্তা নিয়ে যে কারণে ধোয়াশা

ভারতের একটি প্রভাবশালি গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যটি নিয়ে ধোয়াশা বেশ কয়েকটি কারণে সৃষ্টি হয়েছে সচেতন এবং বিচক্ষণ কূটনীতিকদের মধ্যে। তা হলো, খবরটি অজানা সূত্রের বরাতে প্রকাশ করা হয়েছে। কেননা ভারতের সরকারের পক্ষ থেকে এমন বলা হয়নি এমনটা। একথা বিএনপি তার সর্বশেষ অবস্থান জনাতে গিয়েই বলেছেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে এ ধরনের কথাবার্তা হচ্ছে। কিন্তু এ বিষয়ে আমেরিকা ও ভারতের কেউ স্বীকার করেনি। তবে একথাও ঠিক যে, এখন পর্যন্ত ভারতের সরকারি বক্তব্যে তারা সর্বশেষ যা বলেছে তাতে কারো পক্ষ নিয়ে কথা বলা হয়নি। ভারতও বলেছে, তারা চায়, বাংলাদেশে অবাধ শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। ভারত কিন্তু কোথাও এমনটা দাবি করেনি যে বির্তকিত প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে কোনো দল বিশেষ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসুক। সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদির সফরের আগে বাংলাদেশ প্রশ্নে ভারতের মনোভাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান পরিষ্কার করেছে। ভারত তার নিজ অবস্থান জানাবে, তবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। যুক্তরাষ্ট্রকে দিল্লির বার্তা নিয়ে প্রকাশিত খবরটিতে আরো যে কারণে ধোয়াশার সৃষ্টি করেছে তা হলো, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতীয় একজন মন্ত্রীর মন্তব্যে। এমন একটি মন্তব্য গত ১৪ আগস্ট সোমবার প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, ভারতের কেন্দীয় বন্দর ও জাহাজমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল বলেছেন, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ বিষয় যে কোনো মন্তব্য অনুচিত। গত সোমবার (১৪ আগস্ট) কলকাতায় ‘গ্লোাবাল মেরিটাইম ইন্ডিয়া সামিট ২০২৩’ (জিএসএম) সামিটের সূচনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। আরেকটি কারণে প্রকাশিত ঔ সংবাদটি ধোয়াশার সৃষ্টি করেছে বলে কেউ কেউ মনে করেন। তা হলো আগামী সেপ্টেম্বর মাসে দিল্লিতে জি-২০ সম্মেলন শুরু হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সেখানে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও আসবেন ভারতে। সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা। এমন স্পশকাতর সময়ে দিল্লি ওয়াশিংটনে এমনভাবে বার্তা দেবে তা কোনো বিচক্ষণ কূটনীতিকরা মনে করেন না। কূটনীতিকেরা কখনো এভাবে প্রকাশ্যে মূল উদ্দেশ্য প্রকাশ করেন না-এমনটাই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকমহল মনে করেন। এর পাশাপাশি এধরনের ভাষাও ব্যবহার করেন না। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকমহল মনে করেন, ভারত যদি যুক্তরাষ্ট্রকে এমন বার্তা দিয়েও থাকে তাতে কি কোনো লাভ হবে? বাকি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নকে কারা সামলাবে? যুক্তরাজ্যকে কে সামলাবে?  দিল্লী ওয়াশিয়টনকে বার্তা দিয়েছে এমন সংবাদ প্রকাশের পরেও তো  বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে সম্প্রতি সাফ নিজেদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে যুক্তরাজ্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। সোমবার (১৪ আগস্ট) গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সংবাদ সম্মেলনে কুককে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এসব কথা জানান। অন্যদিকে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের উন্নয়নে ভারত পাশে থাকতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। তিনি জানান, সহিংসতা ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে ঢাকার সঙ্গে এক হয়ে কাজ করবে নয়াদিল্লি। রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতির উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। এখানে  অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে দুই দেশ এক হয়ে কাজ করার অঙ্গীকারের কথা জানিয়ে প্রণয় ভার্মা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে পূর্ণ সমর্থন আছে ভারতের। এ ছাড়া বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং যোগাযোগ প্রাধান্য দিচ্ছে দিল্লি। এসব ক্ষেত্রে ভারত সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে আগ্রহী বলেও জানান তিনি। ভারতীয় হাইকমিশনার আরো বলেছেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমরা একযোগে কাজ করব। ন্যায়বিচার, সমতা এবং মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা পাবে এমন বিশ্ব বিনির্মাণের লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাব। নির্বাচন বা বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকাকে সমর্থন করার ব্যপারে প্রণয় ভার্মা তার বক্তব্যে কোথাও কিছু বলেলনি। বরং তার বক্তব্যে রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশের নাম নেয়া হয়। কোনো বর্তমান বা অতীত বা বিরোধী দলের নাম নেননি তিনি।

একই রকম খবর আরো একটি পত্রিকায়

যুক্তরাষ্ট্রকে দিল্লির বার্তা-এমন সংবাদের পর ভারত থেকে প্রকাশিত আরো একটি খবর ঠিকই একিই রকম ভঙ্গিতে বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাসীনদের পক্ষে সাফাই গেয়ে তুলে ধরা হয়। এতেও ধোয়াশার সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে যে এমন আসলে কি কারণে কার স্বার্থে সংবাদগুলি প্রকাশিত হচ্ছে। এতেও তে ঠিক একিই কায়দায় একটু ঘুরিয়ে পেচিয়ে বলা হয়েছে, জানুয়ারির নির্বাচনে শেখ হাসিনা হারলে বাংলাদেশ দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার মুখোমুখি হতে পারে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতা হারালে ভারত ‘চিন্তিত’ হয়ে পড়বে। এজন্য দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহিংসতাও বাড়তে পারে।

শেষ কথা

রাজনৈতিক মহলে মনে করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রকে দিল্লির বার্তা কিংবা নির্বাচনে শেখ হাসিনা হারলে ‘চিন্তিত’ হয়ে পড়বে ভারত-এমন খবরের পেছনেও খবর আছে। সম্প্রতি ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির আমন্ত্রণে নয়াদিল্লি সফর করে আসেন আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদল। বাংলাদেশে এসে এই প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ধানমন্ডিতে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনও করেন। এতে অনেকটাই খোলামেলাভাবেই বলা হয় যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভারতকে পাশে পাবে আওয়ামী লীগ-এমন একটা ধারণা নিয়ে দেশে ফিরেছেন ক্ষমতাসীন দলটির প্রতিনিধিরা। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় তিন দিনের ভারত সফরে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলটি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সভাপতি জেপি নাড্ডাসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে। বিজেপির আমন্ত্রণে ৬ থেকে ৯ আগস্ট ভারত সফর করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। এতে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সফরে তাঁরা জেনেছেন যে, ভারত বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা চায়। রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহল মনে করেন আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দলের এই সফরের পরপরই’ যুক্তরাষ্ট্রকে দিল্লির বার্তা’ এবং ’নির্বাচনে শেখ হাসিনা হারলে ‘চিন্তিত’ হয়ে পড়বে ভারত’- ভারত থেকে প্রকাশিত দু’টি পত্রিকায় এধরনের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন সামনের দিনে হয়তো এমন ধাচে আরো সংবাদ ভারতীয় প্রভাবশালী গণমাধ্যমে প্রকাশিত হবে। ইতোমধ্যে এসব সংবাদের পেছনে কারা ভারতে এবং বাংলাদেশে বসে কলকাটি নাড়াচ্ছেন সেব্যাপারে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে মন্তব্যের ঝড় বইছে। এমনও শোনা যাচ্ছে যে ভারত থেকে প্রকাশিত দু’টি পত্রিকায় এধরনের সংবাদ প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে খোদ ভারতর সরকারই বিব্রত, যদিও তারা এনিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। তবে প্রভাবশালী পত্রিকার সংশ্লিস্ট রির্পোটারকে ভৎসনা করা হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানায় এই প্রতিনিধিকে। আর একারণেই বাংলাদেশের জনগণের মধ্যেও ধোয়াশার সৃষ্টি করেছে। তাদের অভিমত বিশ্বের অন্যতম একটি গণতান্ত্রিক দেশ ভারত এভাবে বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠির মানুষের মতামতকে উপেক্ষা করা বর্তমান বাস্তবতায় অসম্ভব। কেননা ওই দু’টি পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে যে শেখ হাসিনার সরকার দুর্বল হয়ে পড়লে জামায়াতে ইসলামীর মতো সংগঠনের ক্ষমতা বাড়বে বলে মনে করে ভারত। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে বর্তমানে বাংলাদশের স্বাধীনতা বিরোধী সাম্পদায়িক দল জামায়াতে ইসলামীর মতো আরো কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সাথে বিএনপি নয় বরং খোদ আওয়ামী লীগের যে গভীর যোগাযোগ আছে সে বার্তাও দিল্লীর কাছে আছে। এমন আঁতাতেরর কথা এনিয়ে দিল্লীর পাশাপাশি বাংলাদেশেও আসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল উদার গণতন্ত্রে বিশ্বাসীরাও জানে। একারণেই যুক্তরাষ্ট্রকে দিল্লির বার্তা কিংবা নির্বাচনে শেখ হাসিনা হারলে ‘চিন্তিত’ হয়ে পড়বে ভারত-এমন খবর সব মহলেই ধোয়াশার সৃষ্টি করেছে।

শেয়ার করুন