২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৬:০৫:১৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


শীর্ষ নেতাদের কথা-বার্তায় বিএনপিতে কৌতূহল
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০৩-২০২৪
শীর্ষ নেতাদের কথা-বার্তায় বিএনপিতে কৌতূহল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ


চলতি বছরের সাত জানুয়ারিতে বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়ে গেলো। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আবারো পাঁচ বছরের ক্ষমতায় আসীন হয়ে গেছে। অন্য দিকে নির্বাচন শেষ হওয়ার চারদিনের মাথায় ১১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার রাজধানীতে রাজনীতির মাঠে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির প্রধান কার্যালয় টানা দুই মাস ১৪ দিন খোলা পাওয়া যায় বা খুলে দেয়া হয়। অন্যদিকে বিএনপি’র প্রধান কার্যালয় খোলা পাওয়ায় অল্প সময়ের ব্যবধানে প্রায় ৫ মাস পর বাসায় ফিরে গেছেন বিএনপি’র চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। পরপর বিএনপি’র শীর্ষ পর্যায় থেকে নিয়ে তৃণমূলসহ একে একে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও বিনা বাধায় মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে, নানান ধরনের নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে। আর মুক্তি পাওয়া নেতাদের বিভিন্ন বক্তব্য প্রকাশিত হচ্ছে একে একে। আবার কেউ কেউ বিভিন্ন গণমাধ্যমেও তাদের বক্তব্য তুলে ধরছেন সাক্ষাৎকারে। প্রকাশ পাচ্ছে নানান ধরনের তথ্যভিত্তিক খবর। কোখাও কোথাও সাত জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে বিএনপি’র ভেতরে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেছেন। কিন্তু এসব নিয়ে রাজনৈতিক মহলে যেমন বেশ কৌতূহলের জন্ম দিচ্ছে, তেমনি বিএনপি’র সর্বস্তরের কর্মীদের মধ্যেও দেখা দিচ্ছে নানান ধরনের প্রশ্ন, সৃষ্টি হচ্ছে রহস্যের। 

মুক্তিপ্রাপ্তদের মুখে এসব কী?

গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সহিংসতা, নাশকতা, পুলিশকে মারধর, পুলিশ সদস্য হত্যা ও চলমান অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগসহ নানা ঘটনার পরপরই ৮৯টি মামলা হয়েছে। ওই ঘটনার পর আট দিনেই রাজধানীর বিভিন্ন থানায় এসব মামলা দায়ের করা হয়। অপরদিকে গত ২৮ অক্টোবরের সহিংসতা এবং এদিন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির অভিযোগে মাত্র ১৫ দিনের মাথায় রাজধানীতে ২ হাজার ৩৫৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে এসব নেতাদের অনেকেই এখন আস্তে আস্তে মুক্তি পাচ্ছে। তবে সিনিয়র নেতারা একটু আগে ভাগেই মুক্তি পাচ্ছে। কিন্তু মুক্তি পাওয়ার পর থেকে দলের সিনিয়র নেতারা নানান ধরনের বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। কারো বক্তব্যে ফুটে উঠছে হতাশা কারো কণ্ঠে শোনা যাচ্ছে অন্যরকম কোনো কিছুর আভাস। 

কে কী বললেন

এখন দেখা যাক কে কি বলছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের ‘চক্রান্ত’ বিএনপি বুঝতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেছেন, ‘বিএনপি যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে, সে জন্য বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার চক্রান্ত ছিল। আমরা বুঝতে পারিনি।’ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রচারপত্র বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচিতে তিনি এধনরনের মন্তব্য করেন। এর পাশাপাশি মির্জা আব্বাস বলেন, ‘২৮ তারিখ (২৮ অক্টোবর) ছক কষে চক্রান্ত করা হয়েছে। বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য এ চক্রান্ত ছিল। দুই বছর আগে থেকে নকশা করে বেছে বেছে আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা বুঝতে পারিনি। বোঝার ভুল হয়েছিল।’ বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, বিএনপির লোকজনের ওপর নির্যাতন ও অত্যাচার সীমা ছাড়িয়েছে। আবার বলেছেন বিএনপি নেতা-কর্মীদের মুক্তি মিললেও আমরা এখনো পরোক্ষভাবে বন্দি আছি। বলেছেন, ‘খালাস নয়, সাময়িক সময়ের জন্য জামিন পেয়েছি। আমরা এখনো স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে পারি না। আমরা এখন খাঁচায় পোষা মুরগির মতো। যখন দরকার, ধরে নিয়ে জবাই করে দেবে।’

অপর দিকে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম একটি গণমাধ্যমে বলেছেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির যে আন্দোলন ছিল, সেই আন্দোলনে তো কাজ হয়নি; নির্বাচন হয়েছে। বলেছেন, জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত ছিল। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যাতে মধ্যস্থতা করে, সে ব্যাপারে বিএনপির চেষ্টা করতে হতো; কিন্তু সেটা হয়নি। এ ছাড়া বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশ নিত, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে সম্পৃক্ত থাকার চেষ্টা করত বলে তার ধারণা। জানতে চাওয়া হয়েছিল বিএনপি কি তাহলে নির্বাচনে অংশ না নিয়ে ভুল করেছে? হাফিজ উদ্দিন এতে বলেছেন, বিএনপির আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতার ব্যবস্থা করে নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত ছিল। অন্যদিকে একটি গণমাধ্যমে তাকে নিয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করে। এতে বলা হয় কিংস পার্টি খ্যাত বিএনএমে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ না দিলেও নতুন এই দল গঠনে নেপথ্যের কারিগর বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম। বহুল আলোচিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন-বিএনএমের জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে আবেদন ফরম সংগ্রহ করিয়েছেন তিনি। এমনকি দলের নামটিও তাঁর দেওয়া বলে দাবি করেছেন এর নেতারা। শুধু তাই নয়, নতুন এ দলে যোগ দিতে মেজর হাফিজের হাতেই আবেদন ফরম তুলে দিয়েছিলেন ক্রিকেটের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এসব নিয়ে নিয়ে যেমন চলছে বিএনপি’র ভেতরে বাইরে তোলপাড় তেমনি রাজনৈতিক অঙ্গনেও। আবার এধরনের ঘটনার ব্যাপারটি নিয়ে না বললেও এর আগে বিএনপি নেতাদের নিয়ে ভুয়া ভিডিও তৈরি করে অপপ্রচার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি’র জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মাধ্যমে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের ভুয়া ভিডিও তৈরি করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় এসব করা হচ্ছে। অপরদিকে এধরনের ঘটনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাব দেন। বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার একটি প্রকল্প নিয়েছিল, সে প্রকল্প ব্যর্থ হলে আরও ভিন্ন ভিন্ন প্রকল্প নেয় সরকার। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিনকে আহমেদকে নিয়ে গণমাধ্যমে যে প্রতিবেদন এসেছে, সেটি সরকারে ব্যর্থ প্রকল্পের বহিঃপ্রকাশ।

সিনিয়র নেতাদের বক্তব্যের বিশ্লেষণ

স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। একজন সিনিয়র নেতার পাশাপাশি প্রবীণ নেতার কাতারে আছেন তিনি। দলের অত্যন্ত ত্যাগী পাশাপাশি স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন সক্রিয় থেকে নিয়ে বিভিন্ন সময়ে তিনি সাহসী ভূমিকা রেখেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে এই নেতার মুখে এখন এসব কি শোনা যাচ্ছে? দলের মধ্যে সিনিয়র ও সাহসী এই নেতা কি করে এখন বলেন- তাদের দল সরকার যে গত বছরের ‘২৮ তারিখ (২৮ অক্টোবর) ছক কষে চক্রান্ত করেছিল তা বুঝতেই পারেনি। বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য এ চক্রান্ত ছিল তাও তারা বুঝতে পারেনি। দুই বছর আগে থেকে নকশা করে বেছে বেছে আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয় তাও বুঝতে পারেনি? একজন সিনিয়র নেতা যখন দলের এমন অবস্থা তুলে ধরেন তখন স্বাভাবিক হবে প্রশ্ন হচ্ছে বিএনপি’র কি রাজনৈতিক দূরদর্শিতা অভাব আছে? তারা কি এখনো রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিপক্ত হয়নি? না-কি দলের সিনিয়র নেতাদের পরামর্শ না নিয়েই উঠতি কিছু বিএনপি নেতা হাইকমান্ডকে ভুল বুঝিয়ে আন্দোলনকে ভুল পথে পরিচালিত করেছে? তা না হলে সাধারণ নেতাকর্মীদের কেনোই বা এভাবে আগুনে ঝাপ দিতে অনুপ্রাণিত করা হলো? তাদের বোঝার ভুলের দায়িত্ব এখন কে নেবে? এইরকম বোঝার ভুলের কারণে নেতাকর্মীদের কাউকে তীব্র শীতে মশারি টানিয়ে দিন পার করতে হয়েছে, কারো কারো কপালে আরো ২০ থেকে ৩০টি মামলা ঝুলে গেছে। স্থায়ী কমিটির এই নেতার বক্তব্যে পর থেকে এসব প্রশ্ন এখন বিএনপি’র নেতা কর্মীদের মধ্যে ।

প্রশ্ন দেখা দিয়েছে কেনোইবা স্থায়ী কমিটির এই প্রভাবশালী সদস্য এখন বলছেন ‘নিজের মধ্যে মনোবল রাখতে হবে, নিজেদের আরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে আর নিজেদের ভেতরেও গণতান্ত্রিক চর্চা করতে হবে। কি বোঝালেন তিনি? ‘নিজেদের ভেতরেও গণতান্ত্রিক চর্চা থকতে হবে- তার মানে কি দাঁড়ায় নিজেদের ভেতরে গণতান্ত্রিক চর্চার অভাব বা খোলামেলা কথা বা মতামত না জানানোর পরিস্থিতি বিদ্যমান? একারণে কি ক্ষমতাসীন আওয়ামী এমন সুযোগ লুফে নিলো?

প্রশ্ন হচ্ছে বিএনপি কি অসহায়?

স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। অথচ এমন সিনিয়র নেতার মুখে শোনা গেলো আরো হতাশার কথা। তিনি বলেছেন, ‘খালাস নয়, সাময়িক সময়ের জন্য জামিন পেয়েছি। আমরা এখনো স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে পারি না। আমরা এখন খাঁচায় পোষা মুরগির মতো। যখন দরকার, ধরে নিয়ে জবাই করে দেবে।’ তার এমন বক্তব্যে বার্তা কি? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের মুখে এমন বক্তব্যে মধ্য দিয়ে একটা হতাশার চিত্র ফুটে উঠেছে। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে বিএনপি’র এই পর্যায়ের নেতারা নিজেরাই কি হতাশ?

মেজর (অব.) হাফিজ আসলে কি বোঝালেন?

এদিকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রমের বক্তব্য নিয়েও দলের কর্মীদের মধ্যে চলছে নানান ধরনের হিসাব-নিকাশ। অবশ্য দলে এই প্রবীন ত্যাগি নেতার হঠাৎ করে গুরুত্ব কমে গিয়েছিল। অথচ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা পাশাপাশি দলের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সাথে তার জীবনে অনেক কঠিন সময়ে ঘনিষ্ঠতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। কিন্তু তা-কে নিয়ে দলের মধ্যে প্রায়ই একটি মহল নানান ধরনের সন্দেহ সৃষ্টি করা হতো। তার অনেক ভালো সৎ পরামর্শ দলের ভেতরে ঘাপটি মারা স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের কূটকৌশলীরা ভণ্ডুল করে দিতো বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, দলের হাই কমান্ডও সাধারণ তুচ্ছ ব্যাক্তিদের কানকথায় ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রমের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতো কিংবা তাকে নিস্ক্রিয় করে রাখার সব ব্যবস্থা নেয়া হতো। এই হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘এককভাবে নয়, গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে ভবিষ্যৎ করণীয় বা কৌশল ঠিক করতে হবে। ’প্রশ্ন হচ্ছে এর মাধ্যমে কী বোঝাতে চাইলেন তিনি? শোনা যায়, বিএনপি’র দলের হাইকমান্ডের আশেপাশে রয়েছে কিছু ব্যক্তি, বিশেষ করে যারা দলের জন্য কোনো কাজ করে না কিন্তু পার্টির সিনিয়র বয়োঃজ্যেষ্ঠদের পাশাপাশি ত্যাগী নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে কান ভারী করতে বেশ পারদর্শী। প্রশ্ন হচ্ছে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম গণমাধ্যমটিকে দেয়া তার ওই বক্তব্যে মাধ্যমে সেদিকটির প্রতিই কি ইঙ্গিত করেছেন? বোঝাতে কি চাইলেন যে আশে পাশে ঘুরঘুর কারীদের কানকথায় যেন- নীতি নির্ধারকরা সিদ্ধান্ত না নেয়? মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম কি বোঝাতে চাইছেন দলের সিনিয়র নেতাদের সম্মান দিয়ে তাদের থেকে পরামর্শ আদায় করে নিতে হয়, যা এবারের আন্দোলনের সময় নেয়া হয়নি। বোঝাতে কি চাইলেন কি কারণে দলের অনেক মুক্তিযোদ্ধার পাশাপাাশি সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বিশ্বস্ত সেসব সিনিয়র নেতা একারণে ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছেন বা নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে? একাণেরই কি অনেক দক্ষ সিনিয়র কূটনীতিকরা দল ছেড়েছেন বা নিষ্ক্রিয় আছেন। তিনি কি বলতে চাইছেন দলের এসব সিনিয়রদের পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়ে বিএনপি’কে এখন পরিচালনা করতে হবে? তাদের পরামর্শ নিয়েই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কূটকৌশলের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গন ম্যানেজ করে সামনের দিনে বিএনপি’কে এগিয়ে নিতে হবে। 

শেষ কথা..

গতবছরের ২৮ অক্টোবরের ঘটনা এবং এর পরে গণগ্রেফতার ও তাদের মুক্তি পাওয়া নেতারা এখন অনেক কথা বলে যাচ্ছেন। বিএনপি একজন নেতা এই প্রতিনিধিকে বলেন, নেতাদের এমন বক্তব্য কিসের আভাস? এমনিতেই এখন নেতাকর্মীদের মধ্যেই প্রশ্ন বিএনপি কি হেরে গেলো সরকারের রাজনৈতিক কূটকৌশলে? নাকি ভূ-রাজনৈতিক শিকার হতে হলো বিএনপিকে? নাকি পশ্চিমাদের স্বার্থের বলির পাঠা হলো বিএনপি? এসব প্রশ্ন নেতাকর্মীদের মধ্যে যখন ঘুরপাক আছে ঠিক তখনই মুক্তি পাওয়া খোদ সিনিয়র নেতারা বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন। দলের ভেতরে এমনকি বিএনপি’র সাথে আন্দোলনে ছিল এমন শরিকরাও প্রশ্ন তুলেছেন এধরনের বক্তব্যে কারা লাভবান হবে বা হচ্ছে? আওয়ামী লীগ না বিএনপি? নাকি অন্য পক্ষ? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনীতিতে। তবে বিএনপি এক অংশের নেতারা মনে করেন, নেতিবাচক নয় দিকনিদের্শনামূলক বক্তব্য দিচ্ছেন সিনিয়র নেতারা। বিএনপি’কে সামনের দিনে আরো শক্তিশালী পর্যায়ে নিতে তারা সাহস করে বলে যাচ্ছেন। কেননা এসব নেতাদের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দলের ভবিষ্যও দেখা যাচ্ছে বলে বিএনপি এই অংশের নেতারা মনে করেন। তিনি মনে করে সিনিয়রদের এসব বক্তব্য বা সাক্ষাৎকারেই আশার কথা শুনিয়েছেন হাফিজ-মির্জা আব্বাসের মতো নেতারা। কেননা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, নির্বাচনের আগে দীর্ঘ আন্দোলনের বিষয়ে ও বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। গুরুত্বপূর্ণ নেতাসহ সবার মতামত বা সবাই মিলে পর্যালোচনা করে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হলে তা দলের জন্য ভালো হবে। বলেছেন, ভুলগুলো চিহ্নিত করতে পারলে, তা শুধরিয়ে সামনে এগোলে ভবিষ্যতে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। আন্দোলনে বিকল্প উপায় রাখতে হয়। আবার এই নেতা একটি সমাবেশে আশার বাণী শুনিয়ে বলেছেন, জনগণের সমর্থন নিয়ে অল্পসময়ের মধ্যে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। অন্যদিকে মির্জা আব্বাসও বলেছেন, ‘নিজের মধ্যে মনোবল রাখতে হবে, নিজেদের আরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বলেছেন, পরবর্তী প্রজন্ম আন্দোলনে এগিয়ে এলে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পরাজয় হবেই। বলেছেন, এ আন্দোলন চলবে, থেমে থাকবে না। 

শেয়ার করুন