২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৭:০১:১৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :


খালেদার চিকিৎসা ইস্যুতে রাজপথেই বিএনপিকে ব্যস্ত রাখতে চায় সরকার
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-১০-২০২৩
খালেদার চিকিৎসা ইস্যুতে রাজপথেই বিএনপিকে ব্যস্ত রাখতে চায় সরকার খালেদা জিয়া


বিএনপিসহ তাদের সাথে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলি এই অক্টোবরেই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের একটা ফয়সালা করে ফেলবে। অর্থাৎ তারা সরকারের পদত্যাগের এক দফার আন্দোলনে অক্টোবরে একটা চূড়ান্ত দফারফায় পৌঁছে যাবে- এমনসব খবরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড চিন্তিত, বিচলিত। একারণেই বিএনপি’র আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যেতে দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়টি নিয়ে কৌশল হাতে নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। কৌশলের ব্যাপারে জানা যাচ্ছে যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার চায় বিএনপি এখন একদফা আন্দোলন বাদ দিক। এর বদলে এধরনের দাবিকে অতটা গুরুত্ব না দিয়ে খালেদার মুক্তি এবং এর পাশাপাশি তাকে বিদেশে পাঠানোর আন্দোলন জোরদার করুক। এটি নিয়েই সরকারের সাথে দফারফা করুক। একদফার আন্দোলন অর্থাৎ সরকার পতনের পাশাপাশি তত্ত্বাবধায়ক ইস্যু থেকে দলটি আন্দোলনে মুখ ঘুরিয়ে নিক। আর একারণে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির পাশাপাশি তার সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ইস্যুটি জিইয়ে রাখছে আওয়ামী লীগ। এমন রাজনৈতিক কৌশলের খবর মিলেছে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বিএনপি’র বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার সাথে একান্তে কথা বলে।  

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন তিনি। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে সরকার তাকে শর্তসাপেক্ষে কারামুক্তি দেয়। এরপর পরিবারের আবেদনে ছয় মাস পরপর তার মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার। সর্বশেষ গত ১২ সেপ্টেম্বর এই মেয়াদ আরও ছয় মাসের জন্য বাড়ানো হয়। 

৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বর্তমানে লিভার জটিলতা ছাড়াও ফুসফুস, কিডনি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। গত ৯ আগস্ট গুলশানের বাসা ফিরোজায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে তাকে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। টানা প্রায় ৬০ দিন ধরে তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে গত একবছর ধরে শরীরের এমন সব জটিলতার কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তিনি হাসাপাতালেই কাটিয়েছেন অধিকাংশ সময়। বর্তমানে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দিচ্ছে। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমে বলেছেন যে তাকে বোর্ডের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, উনার (খালেদা জিয়ার) লিভার প্রতিস্থাপন জরুরি হয়ে পড়েছে। সেজন্য তাকে দ্রুত বিদেশে উন্নত মাল্টিডিসিপ্লিনারি সেন্টারে পাঠানো দরকার। 

প্রথমে আশার আলো ও নানান জল্পনা-কল্পনা গল্প..

এসব পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় এনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে কিছুদিন ধরে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা চলছে। সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে কথাবার্তা বলে তার পরিবার প্রথমে বেশ আশাবাদী হয়ে উঠেছিল। অন্যদিকে রাজনৈতিক অঙ্গনেও আশার আলো দেখা দেয় সরকারের পক্ষ থেকে একটা ইতিবাচক সিদ্ধান্ত দেশবাসি দেখতে পাবে, অন্তত একজন জাতীয় রাজনৈতিক নেতার চিকিৎসা ইস্যুতে। ধরে নেয়া হয় শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় সাবেক  প্রধানমন্ত্রীকে এবার অন্তত বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কথাবার্তাতেও এটা ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল যে, খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য করা পরিবারের আবেদন ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করা হবে তাদের পক্ষ থেকে। 

কে কি বলেছিলেন..

কেননা খোদ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন যে, ‘খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে তাঁর পরিবারের করা আবেদন পেয়েছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ আবেদনের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছে। আমরা যাচাই-বাছাই শেষে ১ অক্টোবর রোববার আমাদের মতামত জানিয়ে দেব। সরকারের এই মন্ত্রীর কথায় সবাই ধরে নিয়েছিল সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী সহসাই দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে অনুমতি পাচ্ছেন।  যদিও অনুমতি দেয়া হচ্ছে-এনিয়ে অনেক গল্প গুঞ্জন আকাশে বাতাসে ভেসে বেড়ায় এই বলে যে তলে তলে সমঝোতার ভিত্তিতে এটা হচ্ছে। জানা গেছে, গত ২৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার বোনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ আবেদন মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। 

আইন বিশেষজ্ঞরা যা বললেন

দেশের শীর্ষ আইন বিশেষজ্ঞরা এ ধরনের বিষয়ে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে তাদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন। এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী শাহদীন মালিক একটি গণমাধ্যমে বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী সরকার নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়াকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছে। ফলে এখন জেলে যাওয়া বা আদালতের আশ্রয় নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। ওই ৪০১ ধারাতেই বলা আছে, নির্বাহী আদেশে শর্ত ছাড়াই মুক্তি দেওয়া যায়। এমনকি সরকার সাজা মওকুফও করতে পারে। ফলে সরকারই শর্তহীন মুক্তি দিয়ে খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম বলেছেন, আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন খারিজ করেছিলেন। কিন্তু আদালতকে কিছু না জানিয়ে সরকার মানবিক দিক বিবেচনার কথা বলে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়েছিল। ফলে বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত ও মুক্তি আদালতের নির্দেশে হয়নি। সরকার নির্বাহী আদেশে তা করেছে। ফলে মন্ত্রীরা এখন আদালতের এখতিয়ারের কথা বললে, সে বক্তব্য ঠিক নয়। এটি সরকারের বিবেচনার বিষয় বলেই তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর এক মন্তব্যেই সব ঘুরে গেলো

সরকারের একেবারে শীর্ষ পর্যায়ের যখন বিশেষ করে আইনমন্ত্রীর কাজ থেকে যখন সবাই একটি ইতিবাচক মত আশা করছিলেন ঠিক তখনই দেশের বাইরে অবস্থানরত খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকাকে সাক্ষাৎকার দেন। এতে ঠিক এই প্রসঙ্গেই সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হলে এখন যে সাজা স্থগিত করে তাঁকে বাসায় থাকার অনুমতি দিয়েছি, তা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। আবার তাঁকে জেলে যেতে হবে, আদালতে যেতে হবে। আদালতের কাছ থেকে তাঁকে অনুমতি নিতে হবে। সাক্ষাকারের তিনি বিস্তারিত তুলে ধরে আরো বলেন, ‘আমি জিজ্ঞেস করি, পৃথিবীর কোন দেশে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে পেরেছে। পৃথিবীর কোনো দেশ দেবে? তাঁদের যদি চাইতে হয়, আদালতে যেতে হবে। আদালতের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। এখানে আমাদের কোনো আদালতের কাজের ওপর কোনো হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ নেই। 

মানবিকত না রাজনৈতিক কূটকৌশলই গুরুত্ব পেলো

আর এর পরেই দেখা যায় যে আবেদন নাকচ করে আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিদেশে যেতে হলে খালেদা জিয়াকে জেলে গিয়ে আবার আদালতে আবেদন করতে হবে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে স্থায়ী মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি চেয়ে করা আবেদন কী কারণে নাকচ করা হয়েছে, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। গত ১ অক্টোবর রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ বিষয়ে বিস্তারিত আইনি ব্যাখ্যা তুলে ধরেছেন তিনি। আইনমন্ত্রী জানান, প্রথম যে আবেদনটি ছিল, যা ২০২০ সালের মার্চে নিষ্পত্তি হয়, সেই আবেদনে বলা ছিল, খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ, তাঁকে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়ে তাঁর সুচিকিৎসার ব্যবস্থা যেন করা হয়। তখন দুটি শর্তে তাঁর দন্ডাদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত রেখে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। এটি ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১-এর উপধারা-১-এর ক্ষমতাবলে দেওয়া হয়েছিল। শর্তগুলো হলো, প্রথমত তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন। দ্বিতীয়ত, তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না। সেই শর্তগুলো মেনে খালেদা জিয়া কারাগার থেকে মুক্ত হন এবং বাসায় ফিরে যান। সেভাবেই সেই দরখাস্ত নিষ্পত্তি করা হয়। তবে প্রতি ছয় মাস বৃদ্ধি করা যাবে কি না, বিষয়টি উন্মুক্ত ছিল। এরপর সেই সময় ছয় মাস করে মোট আটবার বাড়ানো হয়েছে। মোদ্দাকথা তিনি আরো পরিস্কার করে বলেন, ‘এর আগে খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে মতামত দিয়েছেন, তা-ই আইনের অবস্থান এবং সেটিই সঠিক। 

কিন্তু কেনো এমন হলো বা হয়েছে?

এব্যাপারে বিভিন্ন নেতাদের পাশাপাশি অনেকে তাদের মন্তব্য দিয়েছেন কোনা সরকার সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেয়া হচ্ছে না? এপ্রসঙ্গে বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল বলেছেন, সরকার চাইলে নির্বাহী ক্ষমতাবলে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি দিতে পারত। তবে সরকারের পক্ষ থেকে আইনি প্রক্রিয়ার কথা বলা হলেও খালেদা জিয়ার আবেদন বাতিল হওয়ার পেছনে অন্য কারণের কথা বলছে বিএনপি। দলটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল দাবি করেছেন, শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের শর্ত না মানায় খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।

ঘটনার নেপথ্যে ও শেষ কথা

মোদ্দাকথা, সরকার বিএনপি’কে তাদের পরিকল্পনা মাফিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করিয়ে সেটিকে আন্তর্জাতিকভাবে অংশগ্রহণমূলক প্রমাণে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্ট করে আসছে। কিন্তু বিএনপি এতে মোটেই কর্ণপাত করছে না। বরং অক্টোবরে বিএনপি’র ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ, ঘেরাও ও অবরোধের মতো কর্মসূচির খবর পৌঁছে গেছে সরকারের দরজায়..। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ যেকোনো মূল্যে  এবারেও নির্বাচন করার অবস্থানে থেকে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক শক্তি নিয়ে মাঠে থাকার পরিকল্পনা নিয়ে আছে। এমন অবস্থায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পঠানোর বিষয়টিকে সরকার বেশ কয়েকটি কৌশল হাতে নিয়েছে। তার একটি হচ্ছে বিএনপি’কে এখন বিদেশে খালেদার চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর পাশাপাশি মুক্তি আন্দোলন নিয়ে দলটিকে রাজনৈতিক ময়দানে ব্যস্ত রাখা। এতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনে করে দু’টি লাভ। এক হচ্ছে সরকারের পদত্যাগ বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি রাজনৈতিক মাঠে চূড়ান্ত পর্যায়ে সরে যাওয়া বা পিছুটান দেয়া। আর বিএনপি যদি এখন ঘন ঘন খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা জন্য পাঠানোর দাবিতে কর্মসূচি দিতে থাকে এতে তাদের দলের নেতাকর্মীরা নিঃসন্দেহে অংশ নেবে। কেননা বিএনপি’র নেতাকর্মীদের কাছে খালেদা জিয়া সুচিকিৎসার পাশাপাশি তার মুক্তির ইস্যুটি খুবই স্পর্শকাতর এবং আবেগে মেলানো। তাই এটির ব্যাপারে আন্দোলন সংগ্রামে নিয়োজিত থাকলে দলের নেতাকর্মীরা উৎসাহী হবে। আর এর পাশাপাশি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নির্বিঘ্নে তাদের রাজনৈতিক লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে। কিন্তু একপর্যায়ে বিএনপি’র সাথে একদফা ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে শরিকরা ঠিকই বিগড়ে যাবে। যদিও তারা খালোদা জিয়ার মুক্তির ইস্যুতে বিভিন্ন সভা সেমিনারে কথা বলে যাচ্ছেন। কিন্তু লাগাতারভাবে খালেদার মুক্তি কিংবা বিদেশে চিকিৎসার ব্যাপারে বিএনপি নিজস্ব কর্মসূচি নিয়ে চললে তাতে বিপত্ত বাধবেই-যা সরকার ভালোভাবেই জানে। এতেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে লাভবান হবে, পালে হাওয়াও লাগবে-এমনটাই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।  মোদ্দাকথা, খালেদার চিকিৎসায় বিদেশে পাঠানো মুক্তির আন্দোলনেই বিএনপিকে এসময়ে ব্যস্ত রাখার কৌশল নিয়েছে আওয়ামী সরকার। তবে বিএনপি’র একজন নেতা এই প্রতিনিধিকে জানান তারাও বুঝতে পেরেছেন এই ইস্যুতে সরকারের আসল রাজনৈতিক কূটকৌশলটা। আর একারণে গণতন্ত্র ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন একসাথে আরো জোড়ালোভাবেই চালিয়ে যাবে বিএনপি, পা দেবে না কোনো ধরনের ফাঁদে।

শেয়ার করুন